Close Menu
এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    What's Hot

    আলো হাতে সেই মেয়েটি – তপন বন্দ্যোপাধ্যায়

    August 20, 2025

    গোয়েন্দা গার্গী সমগ্র – তপন বন্দ্যোপাধ্যায়

    August 20, 2025

    রবিনসন ক্রুসো – ড্যানিয়েল ডিফো

    August 19, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    • 📙
    • লেখক
    • শ্রেণী
      • ছোটগল্প
      • ভৌতিক গল্প
      • প্রবন্ধ
      • উপন্যাস
      • রূপকথা
      • প্রেমকাহিনী
      • রহস্যগল্প
      • হাস্যকৌতুক
      • আত্মজীবনী
      • ঐতিহাসিক
      • নাটক
      • নারী বিষয়ক কাহিনী
      • ভ্রমণকাহিনী
      • শিশু সাহিত্য
      • সামাজিক গল্প
      • স্মৃতিকথা
    • কবিতা
    • 🔖
    • লিখুন
    • চলিতভাষার
    • শীর্ষলেখক
      • শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
      • মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়
      • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
      • বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • সত্যজিৎ রায়
      • সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
      • জীবনানন্দ দাশ
      • আশাপূর্ণা দেবী
      • কাজী নজরুল ইসলাম
      • জসীম উদ্দীন
      • তসলিমা নাসরিন
      • তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
      • মহাশ্বেতা দেবী
      • মাইকেল মধুসূদন দত্ত
      • মৈত্রেয়ী দেবী
      • লীলা মজুমদার
      • শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
      • সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়
      • সমরেশ মজুমদার
      • হুমায়ুন আহমেদ
    Subscribe
    সাইন ইন
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)

    দ্য ডিভোশন অব সাসপেক্ট এক্স – কিয়েগো হিগাশিনো

    কেইগো হিগাশিনো এক পাতা গল্প323 Mins Read0

    দ্য ডিভোশন অব সাসপেক্ট এক্স – ৪

    অধ্যায় ৪

    সাবওয়ে স্টেশন থেকে নেমে ডানদিকে মোড় নিয়ে শিনোহাশি ব্রিজ ধরে এগোল ওরা। একটা আবাসিক এলাকার মধ্যে ঢুকে পড়েছে এখন। যদিও আশেপাশে কিছু ছোটখাটো দোকানপাট চোখে পড়ছে। কিন্তু সেগুলোকে দেখে মনে হচ্ছে যেন অনন্ত কাল ধরেই এখানে আছে। আসলে শহরের পুরনো অংশগুলোর চেহারা এমনই হয়।

    সাড়ে আটটার মত বাজছে এখন। এক মহিলাকে দেখা গেলো তিনটা কুকুর নিয়ে হাটতে বের হয়েছে। নিশ্চয়ই আশেপাশে কোন পার্ক আছে- কুসানাগি ধারণা করলো।

    “স্টেশন থেকে কাছে, দোকানপাটও কম না। থাকার জন্যে খারাপ না কিন্তু জায়গাটা,” কিশিতানি মন্তব্য করলো।

    “কি বোঝাতে চাইছো?”

    “সেরকম কিছু না। ডিভোর্স হয়ে যাওয়া একজন মহিলার পক্ষে তার মেয়েকে নিরিবিলিতে বড় করে তোলার জন্যে জায়াগাটা আদর্শ।“

    কুসানাগি কিছু না বলে মাথা নাড়লো শুধু। জুনিয়র ডিটেক্টিভের এই কথাগুলো বলার কারণ তারা একজন মহিলার সাথে দেখা করতে এসেছে এখন। এক মেয়ে আছে তার। কুসানাগি জানে, কিশিতানি নিজেও তার বাবাকে ছাড়াই বড় হয়েছে।

    একটা কাগজের টুকরোর লেখার সাথে ঠিকানা মিলিয়ে মিলিয়ে সামনের দিকে হাটতে লাগলো তারা। খুব তাড়াতাড়িই গন্তব্যস্থানে পৌঁছে যাবে বলে মনে হচ্ছে। কাগজের টুকরোতে একটা নামও লেখা আছে-ইয়াসুকো হানাওকা।

    মারা যাবার আগে শিনজি টোগাশি একটা বোর্ডিং হাউজে অবস্থান করছিল। কিন্তু ওটা তার স্থায়ি ঠিকানা নয়। ভিক্টিমের নামটা খুঁজে পাওয়ার পর অন্যসব তথ্য জোগাড় করতে খুব একটা বেগ পেতে হয়নি পুলিশ ডিপার্টমেন্টকে। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ভাড়া না দেবার কারণে আগের বাসা থেকে তাড়িয়ে দেয়া হয় তাকে। সেখান থেকে টোগাশির আগের কর্মস্থলের ঠিকানাও জোগাড় করে পুলিশ। দেখা যায়, একটা বিদেশি গাড়ি আমদানিকারক কোম্পানির সেলসম্যান ছিল সে। কিন্তু ফান্ডের টাকা নিয়ে গোলমাল করার অপরাধে চাকরি চলে যায়। কোম্পানিটা এখনও ব্যবসা করছে। নতুন কর্মচারিরা অবশ্য তার ব্যক্তিগত জীবন সম্পর্কে কিছু বলতে পারেনি। তবে আরো কিছুক্ষণ জিজ্ঞাসাবাদের পর মালিকপক্ষের একজন জানায় চাকরি চলে যাওয়ার কিছুদিন পরে ডিভোর্স হয়ে যায় টোগাশির। তা সত্ত্বেও মাঝে মাঝে প্রাক্তন স্ত্রী’র বাসায় গিয়ে হাজির হত সে টাকার জন্যে। সেখান থেকেই ইয়াসুকো হানাওকার নাম বের হয়ে আসে। তার ঠিকানাও খুঁজে বের করে পুলিশ। সেখানেই যাচ্ছে এখন তারা।

    “আসলে এখানে না আসলেই ভালো হত,” কিশিতানি একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বলল।

    “কেন? আমার সাথে কাজ করতে ভালো লাগছে না?”

    “না, সেটা না। এভাবে একজন ভদ্রমহিলাকে বিরক্ত করতে যাওয়ার ব্যাপারটা ভালো ঠেকছে না আমার কাছে। সাথে কমবয়সি একটা মেয়েও আছে তার।”

    “যদি খুনের সাথে তাদের কোন সম্পর্ক না থাকে তাহলে তো বেশিক্ষণ বিরক্ত করবো না আমরা।”

    “কেসটা নিয়ে এতক্ষণে যা বুঝলাম তাতে তো মনে হচ্ছে না টোগাশি লোকটা খুব ভালো কেউ ছিলো। স্বামী আর বাবা হিসেবেও অতটা সুবিধার ছিলো না। কে চাইবে এই পুরনো কাসুন্দি আবার ঘাটতে?”

    “তাই যদি হয়ে থাকে, তাহলে তো আমরা একটা ভালো খবর দিতেই যাচ্ছি। শয়তানটা মারা গেছে। মুখটা ওরকম পেঁচার মত করে রেখো না, ঠিক আছে? তোমাকে দেখে তো আমার নিজেরই হতাশ লাগছে। এই তো পৌছে গেছি আমরা,” একটা পুরনো অ্যাপার্টমেন্ট বিল্ডিঙের সামনে দাঁড়িয়ে বলল কুসানাগি।

    বিল্ডিঙটা ধূসর রঙের। দীর্ঘদিন রঙ না করায় মলিন হয়ে গেছে সেটা। জায়গায় জায়গায় মেরামতের চিহ্ন। দোতলা বিল্ডিঙটার প্রতি তলায় চারটা করে ইউনিট। বেশিরভাগ বাসারই আলো নেভানো এখন।

    “২০৪, তার মানে দোতলায় যেতে হবে আমাদের,” এই বলে কংক্রিটের সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠতে শুরু করলো কুসানাগি। কিশিতানি আসতে লাগলো তার পেছন পেছন।

    অ্যাপার্টমেন্টটা সিঁড়ির একদম শেষ মাথায়। সেটার জানালা দিয়ে আলো জ্বলতে দেখে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলল কুসানাগি। আগে থেকে জানিয়ে আসেনি তারা। মিস হানাওকা যদি বাইরে থাকতেন তাহলে ফিরে যেতে হত তাদেরকে।

    কলিংবেলে চাপ দিলো সে। সাথে সাথে ভেতরে কারো নড়াচড়ার আওয়াজ পাওয়া গেলো। কিছুক্ষণ পরে দরজাটা খুলে গেলো ঠিকই, তবে ভেতর থেকে একটা চেইন দিয়ে আটকানো থাকায় চার ইঞ্চির মত ফাঁকা হলো শুধু। নিরাপত্তার জন্যে বোধহয় ভাবলো কুসানাগি।

    একজন মহিলার চেহারা দেখা যাচ্ছে ওপাশে। চোখে সন্দেহ নিয়ে গোয়েন্দাদের দিকে তাকিয়ে আছে। মহিলার মুখটা ছোটখাটো, কিন্তু চোখজোড়া জ্বলজ্বল করছে। চেহারা দেখে মনে হচ্ছে তার বয়স ত্রিশের কাছাকাছি হবে, কিন্তু হাতগুলো অন্য কথা বলছে।

    “এভাবে হঠাৎ করে আসার জন্যে দুঃখিত, ম্যাম। আপনিই কি মিস হানাওকা?” কুসানাগি যতটা সম্ভব ভদ্রভাবে জিজ্ঞেস করলো।

    “জি, আমিই,” অস্বস্তির সাথে জবাব দিলেন মহিলা।

    “আমরা পুলিশ ডিপার্টমেন্ট থেকে এসেছি। একটা খারাপ খবর আছে,” কুসানাগি তার ব্যাজ বের করে দেখালো। একই কাজ করলো কিশিতানিও।

    “পুলিশ?” ইয়াসুকোর চোখদুটো বড় বড় হয়ে গেলো।

    “আমরা কি ভেতরে আসতে পারি?”

    “অবশ্যই, আসুন,” ইয়াসুকো চেইনটা খুলে দরজা ফাঁক করে দিলো। “আমি কি জানতে পারি আপনারা কেন এসেছেন?”

    কুসানাগি অ্যাপার্টমেন্টটার ভেতরে প্রবেশ করলো কিশিতানিকে নিয়ে। “ম্যাম, আপনি কি শিনজি টোগাশি নামে কাউকে চেনেন?”

    কুসানাগি খেয়াল করলো নামটা শোনার সাথে সাথে ইয়াসুকোর চেহারা শক্ত হয়ে গেছে।

    “হ্যা, ও আমার প্রাক্তন স্বামী…কেন, কিছু করেছে নাকি ও?”

    এখনও আসল ঘটনা জানে না মহিলা। রাতের খবর দেখে না বোধহয়। অবশ্য তেমন একট গুরুত্ব দিয়ে খবরটা প্রচারও করা হয়নি।

    “আসলে,” বলতে শুরু করলো কুসানাগি। এই সময় তার দৃষ্টি গেলো পেছনের দরজাটার দিকে। বন্ধ ওটা। “বাসায় কি আর কেউ আছে এখন?”

    “হ্যা, আমার মেয়ে।”

    “ঠিক আছে,” দরজার পাশে একজোড়া স্নিকারস চোখে পড়লো কুসানাগির। “দুঃখের সাথে আপনাকে জানাতে হচ্ছে, মি. টোগাশি মারা গেছেন।”

    ইয়াসুকোর চেহারা দেখে মনে হলো সে বিশ্বাসই করতে পারছে না কথাটা, চোখজোড়া বড় বড় হয়ে গেছে তার। “সে…সে মারা গেছে…কখন? কিভাবে? কোন দুর্ঘটনা ঘটেছিল নাকি?”

    “ওনার লাশটা এডোগাওয়া নদীর পাশ থেকে উদ্ধার করা হয়। আমাদের সন্দেহ তাকে খুন করা হয়েছে,” কুসানাগি বলল। তার কাছে মনে হচ্ছে এভাবে সোজাসুজি বলে দেয়াতেই ভালো হলো। তাহলে পরে জিজ্ঞাসাবাদের সময় কিছুটা হলেও সাহায্য করতে পারবে মহিলা।

    “ওকে খুন করতে যাবে কে?” অবাক সুরে প্রশ্নটা করলো ইয়াসুকো।

    সেটাই তদন্ত করছি আমরা এখন। মি. টোগাশির পরিবারের কাউকে তো খুঁজে পাইনি, তাই ভাবলাম আপনারা হয়তো কিছু তথ্য দিতে পারবেন। এই অসময়ে আসার জন্যে দুঃখিত,” কুসানাগি বাউ করে বলল।

    “না, অসুবিধা নেই। কিন্তু আমি বিশ্বাসই করতে পারছি না,” ইয়াসুকো চোখ নিচু করে বলল।

    কুসানাগির চোখ আবার পেছনের দরজাটার দিকে চলে গেলো। মিস হানাওকার মেয়েটা কি এখন ওখানে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে তাদের কথা শুনছে? সৎবাবার মৃত্যুর সংবাদটা সে কিভাবে নেবে?

    “আমরা কিছুটা খোঁজ খবর নিয়েছি। আপনার সাথে তো মি. টোগাশির পাঁচবছর আগে ডিভোর্স হয়ে গিয়েছিল, তাই না? এরপরে কি তার সাথে দেখা হয়েছিল আপনার?”

    ইয়াসুকো মাথা নেড়ে না করে দিলো, “খুব কমই দেখা হয়েছে আমাদের।”

    তার মানে হয়েছে, মনে মনে বলল কুসানাগি। “কখন দেখা হয়েছে?”

    “শেষবার আমাদের দেখা হয়েছিল প্রায় এক বছর আগে…”

    এরপরে তার সাথে আর কোন যোগাযোগ হয়নি আপনার?”

    “না,” দৃঢ়ভাবে মাথা নেড়ে জানাল ইয়াসুকো।

    “ঠিক আছে,” বলে আশেপাশে নজর বোলাতে লাগলো সে। জাপানিজ স্টাইলের ছোট একটা অ্যাপার্টমেন্ট। মেঝেতে টাটামি ম্যাট বিছানো। খুব পরিস্কার পরিচ্ছন্ন থাকতে ভালোবাসে মহিলা, সেটা আশেপাশে তাকালেই বোঝা যায়। দেয়ালে একটা ব্যাডমিন্টন র‍্যাকেট ঝুলছে। সেটা দেখে আগের স্মৃতি মনে পড়ে গেলো কুসানাগির। একসময় সে-ও খেলতো ব্যাডমিন্টন।

    “আমাদের ধারণা মি. টোগাশি দশই মার্চ সন্ধ্যায় মারা গেছেন, কুসানাগি বলল। “তারিখটা শুনে আপনার কি কিছু মনে পড়ছে? অথবা নদীর পাশে ঐ জায়গাটার কোন বিশেষত্ব আছে আপনার কাছে? বুঝতেই পারছেন, তদন্তে সাহায্য হবে আমাদের এ ব্যাপারে কিছু জানতে পারলে।”

    “আমি দুঃখিত, কিন্তু আমার ওরকম কিছুই মনে পড়ছে না। ইদানিং সে কি কাজ করতো এ ব্যাপারেও আমার কোন ধারণা নেই।”

    “আচ্ছা।”

    মহিলার চেহারা দেখে মনে হচ্ছে বিরক্তবোধ করছে। অবশ্য প্রাক্তন স্বামীর ব্যাপারে কথা বলতে কারই বা ভালো লাগে?

    এখন তাহলে যাওয়া যায়, ভাবলো সে। কিন্তু তার আগে আরেকটা প্রশ্ন করতে হবে। “আচ্ছা,” কুসানাগি যতটা সম্ভব স্বাভাবিকভাবে পরের প্রশ্নটা করলো, “দশ তারিখে কি আপনি বাসাতেই ছিলেন?”

    ইয়াসুকোর চোখজোড়া সরু হয়ে গেলো। অস্বস্তিতে যে ভুগছে সেটা বোঝাই যাচ্ছে। “সেদিন আমি কি করছিলাম এর একদম সঠিক তথ্য দিতে হবে নাকি?”

    “দয়া করে অন্যভাবে নেবেন না প্রশ্নটা। তবে যতটা নিখুঁত হবে উত্তর, আমাদের জন্যে ততটাই সুবিধার হবে।”

    “কিছুক্ষণ অপেক্ষা করুন তাহলে,” এই বলে ইয়াসুকো কুসানাগির পেছনে দেয়ালের দিকে তাকালো। সেখানে নিশ্চয়ই একটা ক্যালেন্ডার

    ঝোলানো আছে।

    “সেদিন সকালে কাজে যাই আমি। এরপর আমার মেয়েকে নিয়ে বাইরে বের হই,” ইয়াসুকো জবাব দিলো।

    “কোথায় গিয়েছিলেন আপনারা?”

    “একটা সিনেমা দেখতে গিয়েছিলাম, কিনশিকোর রাকুটেঞ্চিতে।”

    “বাসা থেকে কখন রওনা দিয়েছিলেন? ধারণা করে বললেও চলবে। আর সিনেমার নামটা যদি মনে থাকে…”

    “ওহ্, আমরা সাড়ে ছটার দিকে বের হই…”

    এরপরে সে বলল তারা কি সিনেমা দেখেছিল। কুসানাগি নাম শুনেছে

    সিনেমাটার। হলিউডের একটি বিখ্যাত সিরিজের তিন নম্বর সিনেমা।

    “এর পরেই কি আপনারা বাসায় চলে আসেন?”

    “না, এরপরে একটা নুডলস শপে খাওয়া দাওয়া করি আমরা। তারপর একটা কারাওকেতে যাই?”

    “কারাওকে? মানে একটা কারাওকে বারে?”

    “হ্যা, আমার মেয়ের খুব যাওয়ার ইচ্ছে ছিল।”

    কুসানাগি মৃদু হেসে বলল, “প্রায়ই যান নাকি আপনারা?”

    “মাসে একবার কি দু-বার।”

    “ওখানে কতক্ষণ ছিলেন আপনারা?”

    “সাধারণত দেড়ঘন্টার মত থাকি, এর বেশি থাকলে বাসায় আসতে আসতে দেরি হয়ে যায়।”

    “তার মানে একটা সিনেমা দেখে খাওয়াদাওয়া করতে যান আপনারা। এরপরে একটা কারাওকে বারে ঢুঁ মারেন…তাহলে বাসায় ফেরেন কখন?”

    “রাত এগারোটার পরে হবে। একদম সঠিক সময়টা আমার মনে নেই।”

    কুসানাগি মাথা নাড়লো। কেমন যেন খটকা লাগছে তার গল্পটা শুনে। কিন্তু এ মুহূর্তে ধরতে পারছে না সেটা। হয়তো গুরুত্বপূর্ণ কিছু নয়, এমনিই মনে হচ্ছে।

    কারাওকে বারের নামটা জিজ্ঞেস করে বিদায় জানিয়ে বের হয়ে এলো তারা।

    X

    “আমার মনে হয় না মহিলার খুনের সাথে কোন কানেকশান আছে,“ অ্যাপার্টমেন্টটা থেকে নিচে নামতে নামতে মন্তব্য করলো কিশিতানি।

    “বলা যায় না।”

    “মা-মেয়ে একসাথে কারাওকেতে যায়। খুব ভালো লেগেছে আমার ব্যাপারটা শুনে। সচরাচর এই বয়সি মেয়েদের সাথে মায়েদের অতটা বনে না,” কিশিতানির গলা শুনেই বোঝা গেলো, ইয়াসুকোকে সন্দেহের আওতায় রাখছে না সে।

    সিঁড়ি বেয়ে নামার সময় মধ্যবয়সি এক লোককে উঠতে দেখলো তারা। ২০৩ নম্বর অ্যাপার্টমেন্টে চাবি ঘুরিয়ে সেটাতে ঢুকে পড়লো সে।

    কুসানাগি আর কিশানাগির মধ্যে একবার চোখাচোখি হলো। এরপর দু- জনেই ঘুরে আবার উপরে উঠতে শুরু করলো।

    ২০৩ এর বাইরে নেমপ্লেটে ‘ইশিগামি’ নামটা লেখা। কলিংবেলে চাপ দিতে সদ্য দেখা লোকটা দরজা খুলে দিলো। পরনের কোটটা খুলে রেখেছে সে, একটা সোয়েটার দেখা যাচ্ছে সে জায়াগায়।

    কোন প্রকার অভিব্যক্তি ছাড়াই কুসানাগি আর কিশিতানিকে দেখতে লাগলো লোকটা। কুসানাগি আগের অভিজ্ঞতা থেকে জানে, দরজা নক করার পরে বেশিরভাগ মানুষই তাদের দিকে সন্দেহের দৃষ্টিতে তাকায়। কিন্তু এই লোকটার মুখ দেখে কিছুই বোঝা যাচ্ছে না। একেবারে অনুভূতিশূন্যভাবে তাকিয়ে আছে।

    “আপনাকে বিরক্ত করার জন্যে দুঃখিত। একটা ব্যাপারে একটু সাহায্য দরকার আমাদের,” কুসানাগি তার পুলিশের ব্যাজটা দেখিয়ে বলল। মুখে বন্ধুসুলভ একটা হাসি ধরে রেখেছে।

    তবুও লোকটার মুখের একটা পেশিরও নড়ন চড়ন হলো না। কুসানাগি সামনে এগোল, “কয়েক মিনিটের ব্যাপার। কিছু প্রশ্ন করবো আমরা, আবারো ব্যাজটা দেখালো সে, আগেরবার হয়তো দেখতে পায়নি ঠিকমত।“

    “কিছু ঘটেছে?” ব্যাজটার দিকে দৃষ্টিপাত না করেই বলল লোকটা। সে মনে হয় বুঝতে পেরেছে তারা গোয়েন্দা বিভাগের লোক।

    কুসানাগি পকেট থেকে টোগাশির একটা ছবি বের করলো। বেশ আগের ছবি, টোগাশির সেল্সম্যান থাকাকালীন সময়কার।

    “এরকম কাউকে দেখেছিলেন নাকি আশেপাশে? ছবিটা অবশ্য কয়েক বছর আগের।”

    লোকটা মনোযোগ দিয়ে ছবিটা দেখলো কিছুক্ষণ, এরপর কুসানাগির দিকে তাকিয়ে বলল, “দেখেছি বলে মনে হচ্ছে না।”

    “আচ্ছা, দেখেননি। কিন্তু এই ছবির চেহারার সাথে মিলে যায় এমন কাউকে খেয়াল করেছেন ইদানিং?”

    “কোথায়?”

    “এই আশেপাশেই।“

    ছবিটার দিকে আবার ভুরু কুঁচকে তাকিয়ে থাকলো লোকটা। কিছু পাওয়া যাবে না এর থেকে, মনে মনে বলল কুসানাগি।

    “দুঃখিত, এরকম কাউকে দেখিনি আমি,” লোকটা বলল। “আর মানুষজনের চেহারা আমার অতটা মনেও থাকে না।”

    “আচ্ছা, অসুবিধে নেই,” কুসানাগি বলল। ফিরে এসে প্রশ্ন করার জন্যে পস্তাতে শুরু করেছে মনে মনে। কিন্তু এসেই যখন পড়েছে তখন বাকি প্রশ্নগুলোও করেই যাবে, “আপনি কি প্রতিদিন এ সময়েই বাসায় ফেরেন?”

    “আসলে কাজের ওপর নির্ভর করে। টিমের সাথে থাকলে মাঝে মাঝে দেরি হয়।”

    “টিম?”

    “একটা জুডো ক্লাবের পরিদর্শক আমি,” লোকটা উত্তর দিলো, এরপরে জুডো ক্লাবের নামটাও বলল সে।

    “জি, আচ্ছা। ঠিক আছে তাহলে। এভাবে বিরক্ত করার জন্যে দুঃখিত। সারাদিন খাটুনির পর আপনার নিশ্চয়ই ক্লান্ত লাগছে এখন,” কুসানাগি মাথা নিচু করে বলল।

    এই সময়ে দরজার বাইরে একগাট্টি গণিতের বইয়ের উপর চোখ পড়লো তার। সেরেছে, এ ব্যাটা দেখি গণিতের শিক্ষক। ছোটবেলা থেকেই গণিতভীতি আছে কুসানাগির।

    “না, মানে, আমি ভাবছিলাম…” গণিতের ভয়টা মন থেকে দূর করার চেষ্টা করে বলল সে, “নেমপ্লেটে ‘ইশিগামি’ লেখা…”

    “আমিই ইশিগামি।”

    “তো, মি. ইশিগামি, মার্চের দশ তারিখে কখন বাসায় ফিরেছিলেন আপনি?”

    “মার্চের দশ তারিখে? ঐদিন কিছু ঘটেছে নাকি?”

    “আপনার সাথে সেটার কোন সম্পর্ক নেই, স্যার। দশ তারিখে এই এলাকায় কি কি ঘটেছিল এই বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করছিলাম আমরা।”

    “ওহ্ আচ্ছা। মার্চের দশ তারিখ, তাই না?” ইশিগামি অন্যদিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করলো।

    “জি।”

    “আমি নিশ্চিত, ঐদিন কাজ শেষে সরাসরি বাসায়ই এসেছিলাম আমি। এই সাতটা নাগাদ।”

    “পাশের বাসা থেকে কোন শোরগোল শুনেছিলেন ঐদিন?”

    “পাশের বাসা থেকে?”

    “হ্যা, মানে, মিস হানাওকার বাসা থেকে?” কুসানাগি নিচু স্বরে জিজ্ঞেস করলো।

    “ওনার কিছু হয়েছে নাকি?”

    “না, কিছু হয়নি। আমরা এমনি তথ্য সংগ্রহ করছি।“

    এতক্ষণে মি. ইশিগামির চেহারায় একটা কৌতূহলি ভাব ফুটে উঠলো সে নিশ্চয়ই তার পাশের বাসার মহিলা আর তার মেয়ের কি হয়েছে সেটা নিয়ে চিন্তাভাবনা করা শুরু করে দিয়েছে ইতিমধ্যে। লোকটার অ্যাপার্টমেন্ট দেখে মনে হচ্ছে সে অবিবাহিত।

    “ও,” ঘাড় চুলকে বলল ইশিগামি। “আমার ওরকম কিছু মনে আসছে না।”

    “ঠিক আছে। মিস হানাওকা কি আপনার বন্ধু হয়?”

    “পাশের বাসায় থাকার সুবাদে মাঝেমধ্যে এক-আধটু দেখা হয়, এই যা।”

    “অনেক ধন্যবাদ আপনাকে সহযোগিতা করার জন্যে। আবারো ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি।”

    “না না, অসুবিধা নেই। আপনারা তো আপনাদের কাজ করছিলেন মাত্র,” ইশিগামি দরজার দিকে এগিয়ে আসতে আসতে বলল।

    কুসানাগি খেয়াল করে দেখলো লোকটা মেইল বক্স থেকে কিছু চিঠি বের করছে। কিন্তু একটা চিঠির খামের ওপর লেখাটা দেখেই তার চোখ বড় বড় হয়ে গেলো-’ইম্পেরিয়াল ইউনিভার্সিটি’ লেখা সেখানে।

    “না, মানে,” কুসানাগি একটু দ্বিধাগ্রস্তভাবে পরের প্রশ্নটা করলো, “আপনি কি ইম্পেরিয়াল ইউনিভার্সিটির গ্র্যাজুয়েট?”

    “জি?” ইশিগামি বলল। এরপর তার চোখও চিঠিটার দিকে গেলো, “ওহ্ এইটা, অ্যালুমনি অ্যাসোসিয়েশন থেকে এসেছে মনে হয়। আপনারা যে বিষয়ে তদন্ত করছেন তার সাথে ইম্পেরিয়াল ইউনিভার্সিটির কোন সম্পর্ক আছে নাকি?”

    “না, আমার এক বন্ধু সেখান থেকে পাশ করেছে, এজন্যে বললাম।”

    “ওহ্, আচ্ছা।”

    “দুঃখিত বিরক্ত করার জন্যে,” একবার বাউ করে বেরিয়ে গেলো তারা।

    অ্যাপার্টমেন্ট বিল্ডিঙ থেকে বেরিয়ে আসার পর হঠাৎ করে কিশিতানি জিজ্ঞেস করলো, “স্যার, আপনি নিজেও তো ইম্পেরিয়াল ইউনিভার্সিটি থেকে পাশ করেছেন, সেটা এই লোকটাকে বললেন না কেন?”

    “কোন কারণ নেই আসলে। আমি মানবিক অনুষদ থেকে পাশ করেছি আর ঐ লোকটা নিশ্চয় বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র ছিল। ওদের সাথে আমাদের অতটা বনতো না।”

    “বিজ্ঞানের প্রতি আপনার একটু রাগ আছে, তাই না? ঐ বিষয়গুলো ভয় পান বোধহয়,” কিশিতানি মজা করার সুরে বলল।

    “ও ব্যাপারে কথা না বাড়ালেই খুশি হবো আমি,” কুসানাগি বলল। মানাবু ইউকাওয়ার ছবিটা ভেসে উঠলো তার মনে। ‘ডিটেক্টিভ গ্যালেলিও’ নামে চেনে সবাই তাকে।

    X

    গোয়েন্দারা চলে যাবার দশ মিনিট পরে ইশিগামি তার অ্যাপার্টমেন্ট থেকে বের হয়ে হলওয়েতে পা রাখলো। পাশের বাসার দিকে তাকিয়ে দেখলো দরজার নিচ দিয়ে আলো ভেসে আসছে। সিঁড়ি বেয়ে নিচে নামতে শুরু করলো সে।

    সবচেয়ে কাছের পাবলিক টেলিফোন বুথটা একটু দূরে তার বাসা থেকে। কিন্তু ওখানে তার ওপর কারো নজর রাখার সম্ভাবনা কম। নিজের কোন মোবাইল ফোন নেই তার। আর বাসার ল্যান্ডলাইন থেকে ফোন করার প্রশ্নই আসে না।

    রাস্তা দিয়ে হাটতে হাটতে পুলিশের সাথে তার আলাপের ঘটনাটা চিন্তা করতে লাগলো ইশিগামি। সে এমন কিছু করেনি যাতে করে পুলিশের মনে বিন্দুমাত্র সন্দেহের উদ্রেক ঘটে। কিন্তু সম্ভাবনার কথা উড়িয়ে দেয়া যায় না কোনভাবেই। পুলিশ যদি ইয়াসুকোকে সন্দেহ করে থাকে, তাহলে নিশ্চয়ই তারা খুঁজে বের করার চেষ্টা করবে সে কিভাবে লাশটা লুকিয়েছিল। তার কোন সাহায্যকারি ছিল কিনা সেটাও খতিয়ে দেখবে। সেক্ষেত্রে ইশিগামিকে সন্দেহ করতেই পারে তারা।

    পাশের অ্যাপার্টমেন্টে কোনভাবেই পা রাখা যাবে না। বাইরে থেকে লক্ষ্য করা যায় এমন সব প্রকার যোগাযোগই বিচ্ছিন্ন করে দিতে হবে। এজন্যেই সে নিজের বাসা থেকে ফোন করেনি। গোয়েন্দারা যদি ইয়াসুকোর ফোন রেকর্ড খতিয়ে দেখে সেক্ষেত্রে তার নিজের নাম উঠে আসলে বিপদে পড়ে যাবে।

    কিন্তু বেন্টেন-টেই এর ব্যাপারে কি করবে?

    সে ব্যাপারে এখনও কিছু ঠিক করা হয়নি। কিছুদিন এড়িয়ে চলতে পারলে ভালো হত। কিন্তু তাতেও ঝুঁকি থেকে যায়। দোকানের মালিকেরা যদি বলে দেয় ইয়াসুকোর পাশের ফ্ল্যাটের গণিতের শিক্ষক প্রতিদিন লাঞ্চ কিনতে আসতো, কিন্তু হঠাৎ করেই আসা বন্ধ করে দিয়েছে-সেটাতে সন্দেহ জাগবে সবার মনে। তার উচিত প্রতিদিন সেখানে যাওয়া, আগের মতই।

    বুথে পৌছে একটা কলিং কার্ড বের করে ঢোকাল সে ফোনের নিচের দিকে। এই কার্ডটা তাকে স্কুলের অন্য একজন শিক্ষক উপহার হিসেবে দিয়েছে।

    ইয়াসুকোর মোবাইলে ফোন করলো সে। ল্যান্ডলাইনে আড়িপাতার ব্যবস্থা করা হতে পারে, সেজন্যে এই ব্যবস্থা। পুলিশ অবশ্য বলে তারা নাগরিকদের ফোনে আড়ি পাতে না, কিন্তু সেটা বিন্দুমাত্র বিশ্বাস করে না সে।

    “হ্যালো?” ইয়াসুকোর কন্ঠ ভেসে আসল ফোনে। সে নিশ্চয়ই বুঝতে পেরেছে ইশিগামি ফোন দিয়েছে। কারণ এখন আর পাবলিক টেলিফোন থেকে অতটা ফোন করে না কেউ। আর সে আগে থেকেই বলে রেখেছিল এই নম্বর থেকে ফোন করবে।

    “আমি, ইশিগামি। আমার বাসায় কিছুক্ষণ আগে পুলিশ এসেছিল। আপনাদের ওখানেও এসেছিল নিশ্চয়ই?”

    “হ্যা, বেশ কিছুক্ষণ আগে।”

    “কি জানতে চেয়েছিল ওরা?”

    উত্তরে ইয়াসুকো যা যা বলল তার প্রতিটা শব্দ মগজে গেঁথে গেলো ইশিগামির। শুনে মনে হচ্ছে ইয়াসুকোকে এখনও সন্দেহ করছে না তারা। অবশ্য তার অ্যালিবাই খতিয়ে দেখা হবে এ ব্যাপারে সে নিশ্চিত।

    কিন্তু তারা যদি জানতে পারে টোগাশি মার্চের দশ তারিখে ইয়াসুকোর বাসায় এসেছিল, তাহলে আর এতটা বন্ধুসুলভ আচরণ করবে না। তখন সর্বপ্রথম তারা খতিয়ে দেখবে টোগাশির সাথে ইয়াসুকোর দেখা না হওয়ার ব্যাপারটা। কিন্তু এ ব্যাপারেও সবকিছু ঠিক করে রেখেছে ইশিগামি।

    “গোয়েন্দারা কি আপনার মেয়ের সাথে কথা বলেছে?”

    “না, মিশাতো পেছনের ঘরে ছিল সে সময়ে।”

    “আচ্ছা। কিন্তু যেকোন সময় তাকেও প্রশ্ন করতে পারে তারা। সেক্ষেত্রে কি করতে হবে মনে আছে তো?”

    “জি, মনে আছে। আপনি একদম পরিস্কারভাবে সব বুঝিয়ে দিয়েছিলেন ওকে। গড়বড় করবে বলে মনে হয় না।”

    “আবারো বলছি, একদম স্বাভাবিক আচরণ করবেন। কোন প্রকার অভিনয় করতে যাবেন না। আর মিশাতোকে বলবেন যতটা যান্ত্রিকভাবে সম্ভব প্রশ্নগুলোর উত্তর দেয়ার।”

    “জি, তাকে সেটা বলেছি আমি।”

    “পুলিশকে কি আপনার সিনেমার টিকেটের ছেঁড়া অংশটুকু দেখিয়েছিলেন?”

    “না, দেখাইনি। আপনি তো বলেই দিয়েছিলেন, তারা নিজে থেকে না দেখতে চাওয়ার আগপর্যন্ত ওগুলো না দেখাতে।”

    “ঠিক আছে তাহলে। কোথায় এখন ওগুলো?”

    “রান্নাঘরের ড্রয়ারে।”

    “ওখান থেকে বের করে অন্যকোন জায়গায় রাখুন। কেউ এত যত্ন করে টিকেট রেখে দেয় না ড্রয়ারে। এতে ওরা সন্দেহ করতে পারে।”

    “ঠিক আছে।”

    “আরেকটা কথা জিজ্ঞেস করতে চেয়েছিলাম আগেই…” ইশিগামি ঢোক গিলে বলল, ফোনটা শক্ত করে ধরে রেখেছে হাতের মুঠোয়। “বেন্টেন-টেই’র মালিকেরা কি আমার ব্যাপারে কিছু জানে? মানে, আমি যে সেখানে প্রতিদিন লাঞ্চ কিনতে যাই সে-ব্যাপারে।”

    “কি….?” ইয়াসুকো বেশ অবাক হয়ে গেলো প্রশ্নটা শুনে।

    “আমি যে সেখানে প্রতিদিন খাবার কিনতে যাই এজন্যে তাদের মনে কোন প্রশ্ন জেগেছে কিনা সেটা জানতে চাচ্ছিলাম। দয়া করে সত্যি কথাটা বলবেন।”

    “আসলে, তারা এ ব্যাপারে আলোচনা করছিল সেদিন। আপনি যে নিয়মিত আমাদের দোকানে আসেন সেটা নিয়ে তারা বেশ খুশি।”

    “তারা কি জানে আমি আপানার প্রতিবেশি?”

    “হ্যা…কেন? কোন সমস্যা হবে এতে?”

    “না। আপনাকে সেটা নিয়ে চিন্তা করতে হবে না। আমি যেভাবে বলেছি সবকিছু সেভাবেই করতে থাকুন, ঠিক আছে?”

    “জি।”

    “রাখি তাহলে,” ইশিগামি ফোনটা নামিয়ে রাখার প্রস্তুতি নিলো। “ওহ্, মি. ইশিগামি,” ইয়াসুকোর নরম কন্ঠস্বর ভেসে এলো।

    “জি?”

    “ধন্যবাদ আপনাকে। কোনদিনও আপনার ঋণ শোধ করা সম্ভব হবে না আমাদের পক্ষে।”

    “আরে…এভাবে বলবেন না দয়া করে,” মৃদু হেসে ফোনটা রেখে দিলো সে।

    ইয়াসুকো যখন ‘ধন্যবাদ’ বলছিল তখন বুকের ভেতরটা কেমন যেন করছিল। বলে বোঝাতে পারবে না সে। ঘামছিলও একটু একটু। বুথের বাইরে মৃদু বাতাসে একটু স্বস্তি লাগছে এখন

    ইশিগামি খুশিমনে বাসার দিকে রওনা দিলো, কিন্তু এই সময় একটা কথা মনে পড়ে গেলো তার। বেন্টেন-টেই’র ব্যাপারে ভুল করেছে ফেলেছে সে। গোয়েন্দারা যখন তাকে ইয়াসুকোর কথা জিজ্ঞেস করেছিল তখন সে বলেছিল খুব একটা কথাবার্তা হয় তাদের মাঝে। লাঞ্চ শপটার কথা তখন বলে দেয়া উচিত ছিল।

    X

    “মিস হানাওকার অ্যালিবাই খতিয়ে দেখেছো?” মামিয়া জিজ্ঞেস করলো কুসানাগি আর কিশিতানিকে। তার ডেস্কের সামনে দাঁড়িয়ে আছে দু-জন।

    “কারাওকে বারের কথাটা মিলে গেছে,” কুসানাগি রিপোর্ট করলো। “ওখানকার ম্যানেজার তাদের দু-জনকেই চেনে। আর সেদিনকার রেজিস্ট্রারে তাদের নাম ছিল। নয়টা চল্লিশের পর থেকে দেড় ঘন্টার মত সময় তারা ছিল সেখানে।”

    “এর আগে?”

    “আমার মনে হয় তারা সাতটার শো দেখেছিল সিনেমা হলে। নয়টা দশে শেষ হয় সেটা। এরপরে যদি তারা নুডলস খেতে যায়, তাহলে বলতে হবে কোন খুঁত নেই তাদের কথায়।”

    “আমি তো খুঁতের কথা জিজ্ঞেস করিনি, আমি বলেছি তোমরা নিজেরা খতিয়ে দেখেছো নাকি পুরো ব্যাপারটা।”

    কুসানাগি তার হাতের নোটবুকটা বন্ধ করে দিলো। “কেবল কারাওকে বারে খোঁজ নেয়া হয়েছে।”

    “এটাকে তুমি ঠিকভাবে কাজ করা বলো?” মামিয়া কড়া দৃষ্টিতে তার দিকে তাকিয়ে প্রশ্নটা করলো।

    “দেখুন চিফ, আপনি নিজেও জানেন নুডলস-শপ আর সিনেমা হলগুলোতে খোঁজখবর নেয়া কতটা ঝক্কির কাজ।“

    কুসানাগির কথা শুনতে শুনতে ড্রয়ার থেকে একটা কার্ড বের করে সেটা তাদের দিকে ছুড়ে দিলো মামিয়া। সেটার গায়ে লেখা- ‘ক্লাব ম্যারিয়ান।‘ নিচে একটা ঠিকানা লেখা।

    “এটা কি?”

    “মিস ইয়াসুকো আগে যেখানে কাজ করতেন। টোগাশি পাঁচ তারিখে সেখানে গিয়েছিল।”

    “মানে, খুন হওয়ার পাঁচ দিন আগে।”

    “ওখানে গিয়ে ইয়াসুকোর ব্যাপারে খোঁজ-খবর করছিল সে। আশা করি বুঝতে পারছো আমি কি বলতে চাচ্ছি?” মামিয়া দরজার দিকে নির্দেশ করে বললেন। “আমি চাই তোমরা অ্যালিবাইটা ভালোমত খতিয়ে দেখবে। কোনকিছু না মিললে দরকার হলে আবার মিস ইয়াসুকোকে গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করবে।“

    1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11 12 13 14 15 16 17 18 19
    Share. Facebook Twitter Pinterest LinkedIn Tumblr Email Reddit VKontakte Telegram WhatsApp Copy Link
    Previous Articleদ্য রেড ফিঙ্গার – কেইগো হিগাশিনো
    Next Article স্যালভেশন অফ আ সেইন্ট – কিয়েগো হিগাশিনো

    Related Articles

    কেইগো হিগাশিনো

    স্যালভেশন অফ আ সেইন্ট – কিয়েগো হিগাশিনো

    August 1, 2025
    কেইগো হিগাশিনো

    দ্য রেড ফিঙ্গার – কেইগো হিগাশিনো

    August 1, 2025
    কেইগো হিগাশিনো

    দ্য মিরাকলস অব দ্য নামিয়া জেনারেল স্টোর – কেইগো হিগাশিনো

    August 1, 2025
    কেইগো হিগাশিনো

    নিউকামার – কেইগো হিগাশিনো

    August 1, 2025
    কেইগো হিগাশিনো

    ম্যালিস – কিয়েগো হিগাশিনো

    August 1, 2025
    কেইগো হিগাশিনো

    দ্য নেম অব দ্য গেম ইজ অ্যা কিডন্যাপিং – কেইগো হিগাশিনো

    August 1, 2025
    Add A Comment
    Leave A Reply Cancel Reply

    Demo
    Most Popular

    আলো হাতে সেই মেয়েটি – তপন বন্দ্যোপাধ্যায়

    August 20, 2025

    অনুরাধা

    January 4, 2025

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025
    Demo
    Latest Reviews

    বাংলা গল্প শুনতে ভালোবাসেন? এক পাতার বাংলা গল্পের সাথে হারিয়ে যান গল্পের যাদুতে।  আপনার জন্য নিয়ে এসেছে সেরা কাহিনিগুলি, যা আপনার মন ছুঁয়ে যাবে। সহজ ভাষায় এবং চিত্তাকর্ষক উপস্থাপনায়, এই গল্পগুলি আপনাকে এক নতুন অভিজ্ঞতা দেবে। এখানে পাবেন নিত্যনতুন কাহিনির সম্ভার, যা আপনাকে বিনোদিত করবে এবং অনুপ্রাণিত করবে।  শেয়ার করুন এবং বন্ধুদের জানাতে ভুলবেন না।

    Top Posts

    আলো হাতে সেই মেয়েটি – তপন বন্দ্যোপাধ্যায়

    August 20, 2025

    অনুরাধা

    January 4, 2025

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025
    Our Picks

    আলো হাতে সেই মেয়েটি – তপন বন্দ্যোপাধ্যায়

    August 20, 2025

    গোয়েন্দা গার্গী সমগ্র – তপন বন্দ্যোপাধ্যায়

    August 20, 2025

    রবিনসন ক্রুসো – ড্যানিয়েল ডিফো

    August 19, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram Pinterest
    • Home
    • Disclaimer
    • Privacy Policy
    • DMCA
    • Contact us
    © 2025 Ek Pata Golpo. Designed by Webliance Pvt Ltd.

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.

    Sign In or Register

    Welcome Back!

    Login below or Register Now.

    Lost password?

    Register Now!

    Already registered? Login.

    A password will be e-mailed to you.