Close Menu
এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    What's Hot

    রবিনসন ক্রুসো – ড্যানিয়েল ডিফো

    August 19, 2025

    দ্য দা ভিঞ্চি কোড – ড্যান ব্রাউন

    August 19, 2025

    এঞ্জেলস এন্ড ডেমনস – ড্যান ব্রাউন

    August 19, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    • 📙
    • লেখক
    • শ্রেণী
      • ছোটগল্প
      • ভৌতিক গল্প
      • প্রবন্ধ
      • উপন্যাস
      • রূপকথা
      • প্রেমকাহিনী
      • রহস্যগল্প
      • হাস্যকৌতুক
      • আত্মজীবনী
      • ঐতিহাসিক
      • নাটক
      • নারী বিষয়ক কাহিনী
      • ভ্রমণকাহিনী
      • শিশু সাহিত্য
      • সামাজিক গল্প
      • স্মৃতিকথা
    • কবিতা
    • 🔖
    • লিখুন
    • চলিতভাষার
    • শীর্ষলেখক
      • শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
      • মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়
      • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
      • বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • সত্যজিৎ রায়
      • সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
      • জীবনানন্দ দাশ
      • আশাপূর্ণা দেবী
      • কাজী নজরুল ইসলাম
      • জসীম উদ্দীন
      • তসলিমা নাসরিন
      • তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
      • মহাশ্বেতা দেবী
      • মাইকেল মধুসূদন দত্ত
      • মৈত্রেয়ী দেবী
      • লীলা মজুমদার
      • শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
      • সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়
      • সমরেশ মজুমদার
      • হুমায়ুন আহমেদ
    Subscribe
    সাইন ইন
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)

    দ্য নেম অব দ্য গেম ইজ অ্যা কিডন্যাপিং – কেইগো হিগাশিনো

    কেইগো হিগাশিনো এক পাতা গল্প310 Mins Read0

    অ্যা কিডন্যাপিং – ১৪

    চৌদ্দ

    কার্ডবোর্ডের বাক্স থেকে টাকাগুলো ভরে নিলাম আরেকটা ব্যাগে। গাড়িতে ঢোকানোর আগে তাতে কোনো ধরনের বাগ বা ট্রান্সমিটার আছে কিনা, তা পরীক্ষা করে নিলাম। তারপর বাক্সটা ছুঁড়ে ফেলে পথ ধরলাম বাসায় ফেরার। স্বাভাবিকভাবেই পালসের গতি অনেক বেড়ে গিয়েছিল। নিজের হৃৎপিণ্ডটা ধুকপুক করছিল। শান্ত করার জন্য লম্বা করে শ্বাস টানতে লাগলাম। জুরি নিজেও গাড়িতে চুপচাপ বসে ছিল।

    বাসায় ঢুকতেই সে আমাকে জড়িয়ে ধরলো। “আমরা করে ফেলেছি! বিশাল একটা কাজ আমরা সাফল্যের সাথে সম্পন্ন করেছি!” সে হাঁফাতে হাঁফাতে কথাগুলো বলল। ব্যাপারটাতে অবাক হবার কিছু নেই—কাজটা সফল হবার পেছনে তার প্রচুর অবদান রয়েছে।

    আমার গলা থেকে তার হাত দুটো সরালাম। তার চোখের দিকে তাকিয়ে লক্ষ করলাম, তার চোখ দুটো লাল টকটকে হয়ে আছে। “তুমি অনেক ভালোভাবে কাজ করেছ। কিন্তু এত আগে উদযাপন করাটা ঠিক হবে না। একটু অপেক্ষা করো। এখনো কাজটা পুরোপুরি শেষ হয়নি।”

    “এখন আবার কী করতে হবে?”

    “সবার আগে আমাকে অফিসে ফিরতে হবে। তুমি এখন বিশ্রাম নিতে পারো।”

    “টাকাটা বসে বসে গুনি?”

    “না, আপাতত টাকাটা ধরো না। যদি ধরতেই হয়, তবে গ্লাভস পরে ধরো।”

    “গ্লাভস?”

    “এর পেছনের কারণটা বাসায় ফিরে বলবো।”

    জুরির ঠোঁটে একটা চুম্বন করে বেরিয়ে পড়লাম।

    নির্দোষের মতো মুখ করে অফিসে ঢুকে নিজের ডেস্কে গিয়ে বসলাম। কেউ আমি কী করছি না করছি, তাতে গুরুত্বই দিল না। বুঝতে পারলাম, নিসেই অটোমোবাইল থেকে কেউ এখনো ফেরেনি।

    কম্পিউটার চালু করে কিছুক্ষণ চিন্তা করার পর লেখা শুরু করলাম।

    মিস্টার কাতসুতোশি কাতসুরাগি,

    আমরা কার্গোটা ভালোয় ভালোয় হাতে পেয়েছি। ভেতরে কী আছে, তা অবশ্য এখনো পরীক্ষা করে দেখিনি। সব কাজ শেষ হলে আমরা জুরি কাতসুরাগিকে ফিরিয়ে দেবো। তবে পুলিশ কোনো তেড়িবেড়ি করলে সেটা করা সম্ভব হবে না। কীভাবে আমরা তাকে আপনার কাছে ফিরিয়ে দেবো, সেসব নিয়ে কথা বলার জন্য পরে আপনার সাথে যোগাযোগ করা হবে।

    কোনো বানান ভুল আছে কিনা দেখে নেবার পর নকল নামধাম ব্যবহার করে বানানো একটা অ্যাকাউন্ট দিয়ে ইমেইলটা পাঠিয়ে দিলাম। ঠিকঠাক মতো পৌঁছেছে কিনা দেখার পর সেটা কম্পিউটার থেকে মুছে দিলাম। এই অ্যাকাউন্টাও বোধহয় আর কখনো ব্যবহার করব না।

    অফিস ছুটির কিছুক্ষণ আগে কোজুকা আর বাকি সদস্যরা ফিরে এলো। আমাকে দেখতে পেয়ে কোজুকা আমার দিকে এগিয়ে এলো।

    “আজকের সবকিছুর জন্য দুঃখিত।”

    “সমস্যা নেই। যাকগে, মিটিং কীরকম হলো?”

    “কোনদিকে আমরা এগুবো, তা আজকে কোনোমতে ঠিক করলাম। আগামীকাল থেকে পুরোদমে কাজ শুরু করব।”

    “কিন্তু মিস্টার কাতসুরাগির সাথে আলাপ না করে এরকম সিদ্ধান্ত নেওয়া ঠিক হবে? তিনি তো মিটিংয়ের মাঝে চলে গেলেন।”

    “না, একটু পরেই তিনি ফিরে এসেছিলেন।”

    “তাই নাকি?” কৃত্রিমস্বরে বলে উঠলাম।

    “হুম। তার হাতের কাজটা শেষ করে মিটিংয়ের শেষের দিকে উপস্থিত হয়েছিলেন। ভালোই হয়েছে। তিনি ঢোকার আগ পর্যন্ত ভাবছিলাম সারাটা দিন শুধু শুধু নষ্ট হলো কিনা।”

    “তাই…”

    বিশ্বাস করতে কষ্ট হচ্ছে। এর মানে কাতসুতোশি কাতসুরাগি মুক্তিপণের টাকা অদলবদল করার পর সোজা কাজে ফিরে গিয়েছিলেন। কীভাবে? এ সময়ে তো তার পুলিশের সাথে যোগাযোগ করে সবকিছু খুলে বলার কথা।

    “কোনো সমস্যা?” কোজুকা আমার দিকে কৌতূহল নিয়ে হয়ে তাকালো।

    “না না, কোনো সমস্যা নেই। সবকিছু ভালোয় ভালোয় শেষ হয়েছে শুনে খুশি হলাম।” মেকি একটা হাসি তাকে উপহার দিলাম।

    অফিস থেকে সোজা বাসায় ফেরার পথ ধরলাম। কিন্তু মনের ভেতর অনেককিছু খচখচ করছিল। একটা যৌক্তিক ব্যাখ্যা খোঁজার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হলাম।

    আজ বিকেলে কাতসুতোশি কাতসুরাগি যে কথাগুলো বলেছিল, তা কানে বাজতে লাগল।

    এত কিছুর কোনো দরকার ছিল না। শুরু থেকেই কোনো পুলিশ ছিল না।

    জুরিকে অক্ষত দেহে ফিরে পাবার জন্য আমি যে-কোনো পরিমাণ টাকা দিতে রাজি আছি।

    আপনাদের এত কিছু করার কোনো প্রয়োজন নেই। আমি পুলিশের সাথে যোগাযোগ করব না।

    কাতসুরাগি আমাদের বারবার আশ্বস্ত করার চেষ্টা করেছে যে, পুলিশের সাথে সে যোগাযোগ করেনি। তখনো কথাগুলো বিশ্বাস করিনি, এখনো সেটা করার প্রশ্নই আসে না। কিন্তু কথাগুলোর মধ্যে অনেকগুলো অসঙ্গতি ছিল। হাকোজাকি জংশনের সময়কার ঘটনাগুলো আমার মনে পড়ে গেল। সেবারও সেই একইরকম অনুভূতি হয়েছে।

    বাসায় ফিরে দেখলাম, জুরি সোফায় বসে টিভি দেখছে। ঘরের মাঝখানে রাখা টেবিলের ওপর সবগুলো নোট সুন্দর করে স্তূপাকারে সাজিয়ে রাখা হয়েছে। তিনশ মিলিয়ন ইয়েন দেখে মনটা একদম ভরে যাচ্ছে।

    “খালি হাতে ধরোনি তো?”

    “ধরার আগে এটা হাতে পরে নিয়েছি।” জুরি একটা রাবারের গ্লাভস তুলে দেখালো। “কিন্তু খালি হাতে ধরা যাবে না কেন?”

    “কারণ, এর ভেতর কোনো ধরনের ফাঁদ পাতা হয়েছে কিনা, সেটা আমরা এখনো জানি না। ধরো, নোটগুলোতে এমন ধরনের জিনিস লাগানো সেটা হাতে ধরলে তোমার হাতের ওপর রঙের একটা আস্তরণ পড়ে যাবে। ঘষেও সেটা ওঠানো যাবে না। কেবল মাত্র নির্দিষ্ট একটা সলভেন্ট ব্যবহার করলেই সেটা ওঠানো সম্ভব হবে।”

    ওরকম কিছু আছে নাকি!” জুরি এবার একটা ভয়ার্ত দৃষ্টিতে নোটের স্তূপের দিকে তাকালো।

    “ওরকম জিনিসের কথা কানে এসেছে। তাছাড়াও এমন কিছু রাসায়নিক আছে, যেগুলো কিছু সময় পর রং পালটে ফেলে। তাই আমরা যদি না জেনেবুঝে টাকাগুলো খরচ করি, আমাদের পরবর্তী জনের কাছে রং পাল্টানোটা সন্দেহজনক মনে হতে পারে। এমনকি পুলিশের সাথে যোগাযোগ করাটাও অস্বাভাবিক কিছু না।”

    “অনেকগুলো নোট এখানে রয়েছে।”

    “তাই দুতিনদিন এগুলো না ধরাটাই ভালো। যদি ঐ সময়ের মধ্যে কোনো ধরনের পরিবর্তন না দেখা দেয়, তবে আমরা সেগুলো নিশ্চিতে ব্যবহার করতে পারব।”

    “তুমি আসলেই অসাধারণ।” জুরি বলল।

    তার কথার মধ্যে আসলেই মুগ্ধতা টের পাচ্ছিলাম। সাধারণত তার ব্যঙ্গ শুনে অভ্যস্ত, তাই এরকম মুগ্ধতায় অবাকই লাগছে। তার দিকে তাকালাম। “হঠাৎ এ কথা?”

    “তুমি সবকিছু জানো। সবসময় প্রতিপক্ষের থেকে কয়েক পা এগিয়ে থাকো। এমনকি মুক্তিপণের টাকাটাও কী সুন্দর পরিকল্পনা করে তুলে আনলে। কিছু না করেই আজ আমাদের হাতে তিনশ মিলিয়ন ইয়েন এসে ধরা দিয়েছে। আর সেটা করা সম্ভব হয়েছে কেবল কয়েকটা ফোন দিয়েই।”

    “চিন্তা কোরো না। আমি তোমার প্রাপ্য টাকা মেরে দেবো না। তুমি দুইশ সত্তর মিলিয়ন ইয়েনই পাবে।” হাসতে হাসতে বললাম। “আচমকা তুমি দুইশ সত্তর মিলিয়ন ইয়েনের মালিক। ধনী হয়ে গেলে দেখছি!”

    “তোমার কি মনে হয় আমি অতটা নিতে পারবো?”

    “তুমি এমনিতেও যে টাকা উত্তরাধিকারসূত্রে লাভ করবে, সেটার পরিমাণের কাছে এ টাকা একদম তুচ্ছ মনে হবে। তাছাড়া আমি ত্রিশ মিলিয়ন ইয়েন নিয়েই খুশি। এমন একটা মজার খেলাতে অংশ নিতে পারলাম, এটাই আমার জন্য যথেষ্ঠ ছিল। টাকাটা আমার জন্য বোনাস।”

    “আর হ্যাঁ, কাতসুতোশি কাতসুরাগিকে নাকে দড়ি লাগিয়ে ঘুরাতে পারলে। কি ঠিক না?”

    “সেটা তো বলার অপেক্ষা রাখে না।” হেসে ফেললাম। হৃদয়টাতে একটা প্রশান্তির বাতাস বয়ে যাচ্ছে। আসলেই কি কথাটা সত্য? আমি কি সত্যিই কাতসুতোশি কাতসুরাগির বিরুদ্ধে জয়লাভ করেছি?

    “কী হলো, কোনো সমস্যা?” জুরি আমার মুখভঙ্গি পালটে যেতে দেখে প্রশ্ন করলো। “হঠাৎ করে মনে হলো, খেলার এখনো সমাপ্তি ঘটেনি। এখনো একটা গুরুত্বপূর্ণ অংশ বাকি রয়ে গেছে।” তর্জনী তুলে বললাম। “জিম্মিকে তার পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া। তোমাকে একজন দুঃখভারাক্রান্ত জিম্মি হিসেবে তার হাতে তুলে দিতে হবে। জিম্মিকে শুধু বন্দি করেই রাখা হয়নি, তাকে দিয়ে কিডন্যাপাররা তাদের ইচ্ছামতো কাজ করিয়ে মুক্তিপণ আদায় করিয়ে নিয়েছে। তোমাকে তোমার প্রাণপ্রিয় পাপার কাছে ফিরিতে দিতে হবে।

    “তাহলে তো আমাকে আরো কিছুক্ষণ অভিনেত্রীর রোল চালিয়ে যেতে হবে।” জুরি বুক ফুলিয়ে বলল।

    “এবারের অভিনয়টা কিন্তু আগের চেয়েও কঠিন হবে। এবার আমি তোমার পাশে থাকবো না। যতকিছু হোক, সবকিছু তোমাকে একা সামলাতে হবে। আর এ অভিনয়টা কিন্তু স্বল্প সময়ের জন্য নয়, বরং তোমার গোটা জীবন চালিয়ে যেতে হবে। সারাটা জীবন তোমাকে একজন জিম্মির অভিনয় করে যেতে হবে।” আমি তার পাশে বসে একহাত দিয়ে তাকে জড়িয়ে ধরে কাছে টেনে আনলাম। “তুমি কি তার জন্য প্রস্তুত?” জুরি আমার দিকে তাকিয়ে দুবার চোখের পলক ফেলল। “আমাকে দেখে কী মনে হয়? মনে রেখো, আমি কাতসুতোশি কাতসুরাগির মেয়ে।”

    আমি তার কথায় সায় দিলাম। “অবশ্যই, সেটা ভুললে চলবে না।”

    জুরিকে বাসায় ফেরত পাঠানো খুব একটা শক্ত কাজ হবে না। একটা নিরিবিলি জায়গায় তাকে ঘুম পাড়িয়ে তার পাপার সাথে যোগাযোগ করলেই ল্যাটা চুকে যাবে। অবশ্য তাকে ঘুম না পাড়ালেও চলবে। ও যদি ভান করে শুয়ে থাকতে পারে, তাতেই চলবে।

    এরপরেই আসল কাহিনি শুরু হবে। তাকে তার জীবনের সেরা অভিনয় চালিয়ে যেতে হবে।

    “প্রথমত, তোমার কাছে পুলিশ তুমি কীভাবে কিডন্যাপ হলে, তা জানতে চাইবে।” তার দিকে তাকালাম। “আমরা আগেই এ ব্যাপারে আলোচনা করে নিয়েছি। মনে আছে তো? তোমাকে তারা জিজ্ঞেস করবে কেন তুমি সে রাতে বাড়ি থেকে দেওয়াল টপকে বেরিয়ে গিয়েছিলে। তখন কী উত্তর দেবে?”

    “সে রাতে…” সে মনে করার ভান করলো, “চিহারু আর আমার মধ্যে কসমেটিক ক্রিম নিয়ে কথা কাটাকাটি হয়েছিল। খুবই অসহ্য লাগায় আমি একটা পরিচিত বারে যেতে চেয়েছিলাম। ওখানে প্রায়ই যাই। আর লুকিয়ে লুকিয়ে বেরিয়েছিলাম কারণ, বাবা-মা এ ব্যাপারে জানুক সেটা আমি চাইনি।”

    যাক, তার সবই ভালোমতো মনে আছে। অবশ্য সেটা অপ্রত্যাশিত ছিল না। “তোমাকে কিডন্যাপ করার সময় যা যা ঘটেছিল, সবকিছু খুলে বলো।” তার মুখের সামনে একটা অলীক মাইক্রোফোন ধরলাম।

    “বাড়ি থেকে বের হবার কিছুক্ষণ পর একটা গাড়ি এসে আমার পাশে থেমেছিল। একটু কৌতূহলী হয়ে সেদিকে তাকাতেই কে যেন পেছন থেকে আমাকে শক্ত করে আঁকড়ে ধরলো। আমি চিৎকার করতে চেয়েছিলাম, কিন্তু রুমাল টাইপের কিছু একটা আমার মুখে ঠেসে দেওয়া হয়েছিল। এরপর কী ঘটেছে কিছু মনে নেই।” টানা কথা বলে শেষ করার পর সে আমার দিকে জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকালো, কী, কেমন হয়েছে?

    “এরপরে যেটা বলব, সেটাই কিন্তু সবকিছুর চাবিকাঠি। চেতনা ফিরে পেতেই তুমি দেখলে, তুমি কালপ্রিটদের আস্তানায় অবস্থান করছো। তোমাকে হয়তো তারা আস্তানাটার ব্যাপারে জিজ্ঞাসাবাদ করবে। তখন কীভাবে উত্তর দেবে?”

    এখন সে যা যা বলবে, সবই সতর্কতার সাথে বেছে নেওয়া হয়েছে। পুলিশ যদি এর মধ্যে অস্বাভাবিক কিছু খুঁজে পায়, তবে তারা সন্দেহ করা শুরু করবে। এটা যে সাজানো কিডন্যাপিং হতে পারে, সেটা কিন্তু তারা হিসেবে রেখেছে। যদি তাড়াহুড়ো করে কাহিনি বানানো হয়, তবে সেখানে অসংখ্য ত্রুটি ধরা পড়বে।

    “তোমার চোখ বেঁধে রাখা হয়েছিল।” আমি বললাম।

    “কী?”

    “যখন তুমি জেগে উঠলে, তুমি টের পেলে তোমার চোখ বাঁধা ছিল। তাই তুমি কিছুই দেখতে পারোনি। এভাবেই তুমি উত্তর দেবে। আর হ্যাঁ, এটাও বলবে যে, তোমার হাত পেছনে নিয়ে বেঁধে রাখা হয়েছিল। ওরকম অবস্থাতে তোমাকে বিছানা টাইপ কিছু একটাতে ফেলে রাখা হয়েছিল।”

    “আর আমার পা?”

    “পা বাঁধা ছিল না।”

    ““কেন?”

    “কারণ সেটার কোনো প্রয়োজন নেই। যদি কোনো মানুষের চোখ আর হাত বেঁধে রাখা হয়, সে আর নড়াচড়া করতে পারে না। তাছাড়া তোমার পা বেঁধে রাখলে কিডন্যাপারদেরই সমস্যা। প্রত্যেকবার তোমার টয়লেট যাবার প্রয়োজন হলে পায়ের বাঁধনটা খুলতে হবে।”

    জুরি মাথা নাড়লো। “বুঝতে পেরেছি।”

    “আর তুমি যখন নড়াচড়া করতে গেলে, তখন একটা মহিলার গলা শুনতে পেলে—সেভাবেই উত্তর দেবে। মহিলা বলেছিল, ‘বিছানা থেকে ওঠার চেষ্টা করবে না। যদি লক্ষ্মী মেয়ে হয়ে থাকো, তবে আমরা তোমার কোনো ক্ষতি করবো না।”

    “মহিলাটা জোস তো।”

    “হ্যাঁ, সে একটা ‘জোস’ মহিলা। যখন তুমি জোস কোনো মহিলার কথা ভাবো, তাহলে কার কথা মনে পড়ে?”

    জুরি মাথাটা আলতো করে বাঁকিয়ে উত্তর দিলো, “মাকিকো এসুমির (বিখ্যাত মডেল, অভিনেত্রী) কথা মনে পড়ে।’

    আমি অবশ্য অন্য আরেকজনের কথা ভাবছিলাম, তবে তাতে সমস্যা নেই।

    “তাই সই। পুলিশ যখন জিজ্ঞেস করবে : মহিলার গলার স্বরে কোনো আলাদা বিশেষত্ব ছিল কি? বয়স কত হতে পারে বলে তোমার মনে হয়? তার গলায় আঞ্চলিকতার টান ছিল?—সেসব উত্তর দেবার সময় তুমি মাকিকো এসুমির কথা কল্পনা করে নেবে, তারপর সে অনুযায়ী উত্তর দেবে।”

    “যদি তারা জিজ্ঞেস করে, এ ধরনের গলা আমি আগে শুনেছি কিনা তখন কী উত্তর দেবো? তখন কি মাকিকো এসুমির গলার কথা বলা যাবে?”

    “একদম বলা যাবে। পুলিশ মাকিকো এসুমির দরজায় গিয়ে নক করার কথা চিন্তাও করে দেখবে না। অবশ্য করলেই বা কী?”

    “তাহলে ঐ মহিলার কাজ হলো আমাকে নজরে রাখা।”

    “সে তোমার জেলার আর ক্যাটারার। তোমার খিদে না পেলেও সে তোমাকে খেতে বাধ্য করবে। তুমি তাকে বাঁধা দেবারও সুযোগ পাবে না। চোখবন্ধ থাকা অবস্থাতেই তোমাকে খেতে হচ্ছিল, তাই গরম কিছু তোমাকে খেতে দেওয়া হয়নি। বোধহয় স্যান্ডউইচ খেতে দিয়েছিল। আমরা নাহয় এ জায়গায় বলব যে তোমার হাতের বাঁধন খুলে দেওয়া হয়েছিল। তবে সে সময়ে মহিলাটা তোমার পা বেঁধে দিয়েছিল।”

    “যখন আমি খাবো, তখন আমার হাত খোলা থাকবে, কিন্তু পা বাঁধা থাকবে…” জুরি দৃশ্যগুলো কল্পনা করার চেষ্টা করলো।

    “মাকিকো এসুমির আরেকটা কাজ রয়েছে কিন্তু। তার সাথে কথা বলেই তুমি সময় পার করেছো। সে তোমার আড্ডার সঙ্গী ছিল। আমরা ধরে নেবো যে তোমরা কেস থেকে ভিন্ন টপিকে কথাবার্তা বলেছ—যেমন অভিনেতা, ফ্যাশন, খেলাধূলা ওসব নিয়ে আরকী।”

    “বয়ফ্রেন্ড?”

    “সেটা…” মাথা ঝাঁকালাম। “আমরা বলবো যে, ও প্রসঙ্গে কথা ওঠাতেই গেলেই সে কথা বলা কমিয়ে দিত। মহিলা যে একা কাজ করছিল না, সেদিকে আমরা আগেই ইঙ্গিত করেছি। তাই পুলিশ আগেই ধরে নিয়েছে যে মহিলার অপকর্মের সঙ্গী হচ্ছে তার স্বামী বা বয়ফ্রেন্ড। তাই এসব প্রেম-ভালোবাসা নিয়ে কথা না বলাই ভালো হবে। পুলিশ হয়তো সে ব্যাপারে জানার জন্য তোমাকে অনেক খোঁচাবে। ফলে তোমার ওপর বিশাল চাপ পড়ে যাবে।”

    “বুঝতে পেরেছি।” জুরি আমার কথার সাথে একমত হলো। “একটা প্রশ্ন করতে পারি?”

    “কী?”

    “টয়লেটে যাবার সময় কি আমার চোখ বাঁধা ছিল? যদি বাঁধা থাকে, তবে কীভাবে আমি টয়লেট ব্যবহার করবো? মাকিকো কি আমাকে সেসময় সাহায্য করেছিল? ব্যাপারটা কিন্তু আমার কাছে ভালো লাগছে না।”

    তার দিকে একটু কাষ্ঠ হাসি দিলাম। তার কথায় যুক্তি আছে। একটু ভেবেচিন্তে এর উত্তর তৈরি করতে হবে। “তাহলে এটা হলে কেমন হয়? প্রত্যেকবার টয়লেটে যাবার সময় তিনি তোমার হাত ধরে সেখানে নিয়ে যেতেন। টয়লেটে ঢোকার পরেই তুমি কেবল চোখের বাঁধন খুলতে পারতে।”

    “তারমানে দুজনকে একসাথে টয়লেটে ঢুকতে হতো।”

    “ঠাসাঠাসি হয়ে যাবে, বুঝতে পারছি। কিন্তু কিই বা করার আছে? কিডন্যাপাররা তোমার কাছে কোনো প্রকারের তথ্য ফাঁস করতে চায় না। চোখের বাঁধন খোলার পর মহিলা চলে যেতেন। তারপরই কেবল মাত্র তোমার নিজের জন্য সময় মিলত। এ সময়টাতে তুমি প্রশ্রাবও করতে পারো, অন্য কিছুও করতে পারো।”

    “বাহ, বেড়ে বলেছ তো। বুড়োদের মতো বিকৃত চিন্তা করতে ভালোই পারো দেখছি।”

    “স্বাভাবিকভাবে টয়লেটের ইনটেরিয়র সম্পর্কে সবকিছু তোমার ভালোমতো মনে আছে। এভাবে বলবে-দেওয়ালগুলো ছিল কংক্রিটের। একটা ছোট্ট ভেন্টিলেশন ফ্যান ছিল, কোনো জানালা ছিল না। বাতিটার আলোও কেমন জানি ম্রিয়মান ছিল। একগাদা টয়লেট পেপার, এমনকি স্যানিটারি ন্যাপকিনও তারা জোগাড় করে রেখেছিল। টয়লেটটা ছিল ওয়েস্টার্ন ধাঁচের। একটা পানির স্প্রেও ছিল সেখানে।

    জুরি হাঁফ ছেড়ে বাঁচল। বোধহয় স্প্রে ছাড়া টয়লেটের কথা চিন্তা করাটাই তার জন্য কষ্টকর ছিল। যতই সময় যাবে, ওর মতো মানুষের সংখ্যা বাড়তে থাকবে।

    “দরজাটা ছিল কাঠের তৈরি। শুরুর দিকে সেটাতে কেবল ভেতর থেকে বন্ধ করার ব্যবস্থা ছিল। কিন্তু তুমি যাতে সেটার সুযোগ নিয়ে নিজেকে সেখানে আটকে না রাখতে পারো, সেজন্য লকটা খুলে ফেলা হয়েছে।”

    “এতকিছু কি মনে রাখতে পারবো?” জুরি কপাল নিচে নামিয়ে দুহাত মুঠি করে মাথাটা শক্ত করে ধরে বসে থাকলো। “মনে হচ্ছে একটা নকলের শিট থাকলে মন্দ হতো না।”

    “পুলিশ তোমাকে এরপর জিজ্ঞেস করবে, বাথরুমে ঢোকা এবং বের হবার মধ্যবর্তী সময় আর যাওয়া আসা করতে গিয়ে তুমি কোনো কিছু শুনতে পেয়েছ কিনা।”

    “যদি বলি যে, কিছুই শুনিনি—হবে না?”

    মাথা নাড়লাম। “চোখ বেঁধে রাখলে মানুষের শ্রবণক্ষতা আপনাআপনি বেড়ে যায়। যদি তাদের বলো যে, কিছুই শোনোনি তবে তারা সন্দেহ করে বসতে পারে। এর থেকে কিছু একটা শুনেছ বলাটাই যৌক্তিক।”

    জুরি তুড়ি মেরে বসলো। “জাহাজের শব্দ।”

    “বাহ, চমৎকার।” সায় দিয়ে মাথা নাড়লাম। মেয়েটার মাথাটা বেশ পরিষ্কার। “আমরা যখন প্রথমবার ফোন দিয়েছিলাম,” জুরি বলল, “ইয়োকোসুকাতে গিয়ে তাদেরকে হুইসলের শব্দটা শুনিয়েছিলাম। তাদেরকে এটা বোঝাতে চেয়েছিলাম যে, আমাদের আস্তানা পোতাশ্রয়ের কাছাকাছি এলাকায়। এবারও সেটা কাজে লাগালে ভালো হবে না?”

    “ঠিক ধরেছ। কিন্তু সবসময় সেটা শুনেছ বললে সেটা একটু বেশি বেশি হয়ে যাবে। কিডন্যাপাররাও তো মূর্খ নয়, জাহাজের হুইসলের শব্দের ব্যাপারে তারাও কিন্তু অবগত। তুমি বলবে, এক-দুবার হুইসলের শব্দ তোমার কানে এসেছে, কিন্তু শব্দটা দূর থেকে এসেছে বলে তোমার মনে হয়েছে।”

    “হুম। আর অন্যান্য শব্দের ব্যাপারে?”

    “হ্যাঁ, শুধু জাহাজের হুইসলের শব্দ শুনেছ বললে সেটা উদ্ভট দেখাবে। তাই গাড়ি চলাফেরার শব্দের কথাও সাথে যোগ করে দেবে। কারণ, গাড়ি চলাফেরার শব্দ শোনা যায় না, এরকম জায়গা খুব কমই রয়েছে।”

    “জাহাজ আর গাড়ি।” জুরির মুখ দেখে মনে হলো, সে খেলার মাঠে নামার জন্য প্রস্তুত।

    “শোনো, কেবল ঐ ‘জোস মহিলা’ই তোমার দেখা একমাত্র মানুষ নন। স্টেজে সবার সাথে পরিচয় করিয়ে দেবার জন্য আরো একজনকে লাগবে। তাকে পুরুষ হতে হবে।”

    “কার কথা বলেছ বুঝতে পেরেছি। নাটের গুরুর কথা বলছো।”

    “নাটের গুরু? ভালোই বলেছ। আসলেই সে কিন্তু নাটের গুরু। তুমি তাকে অন্তত তিনবার সহযোগিতা করতে বাধ্য হয়েছ। প্রথমবার যখন তুমি ফোন করলে। পুলিশ হয়তো সে ব্যাপারে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে জানতে চাইবে।”

    “বিরক্ত হয়ে যাচ্ছি কিন্তু। বারবার সেই একই কথা।” জুরি বিমর্ষ মুখে মাথা চুলকালো।

    “পুলিশ কিন্তু প্রচণ্ড মরিয়া হয়ে গেছে। তাদের নাকের ডগা থেকে মুক্তিপণের টাকা তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। সেজন্য তারা যদি এভাবে তোমাকে জেরা করে, তাদের ক্ষমা করে দিও।”

    “আচ্ছা। এখন বলো কীভাবে সেটার ব্যাখ্যা দেবো?”

    “তুমি বলবে যে, তোমাকে ফোন করতে বলা হয়েছিল। তখন তুমি চোখ বাঁধা অবস্থাতেই ছিলে। কানে এসেছিল পুরুষটার গলা। তখন পুলিশ হয়তো তার গলার স্বরের ব্যাপারেও জানতে চাইবে।”

    “এবার কার মতো কল্পনা করে নেবো? মাসাহারু ফুকুইয়ামা (বিখ্যাত অভিনেতা) এর মতোন কাউকে বেছে নেবো?” তার চোখ চকমক করে উঠল। সে বোধহয় মাসাহারুর ফ্যান।

    “আমি কিন্তু মনে মনে চল্লিশ বছর বয়স্কের কাউকে ধরে রেখেছি। এরকম কাউকে মনে পড়ে?”

    জুরি চোখের মণি বনবন করে ঘোরাতে ঘোরাতে একসময় হাঁটুতে চাটি মেরে বসলো। “হাইস্কুলে পড়াকালীন সময়ে সিনিয়র ইয়ারে আমাদের একজন এরকম হোমরুম শিক্ষক ছিল। তাকে তো বিখ্যাত হবার প্রয়োজন নেই, তাই না?”

    “হ্যাঁ, ওতেই চলবে। যাক, প্রথম ফোনের ব্যাপারটার সমাপ্তি ঘটলো। এরপরের অংশটা একটু জটিল। এবার হাকোজাকি জংশনের সময়ের ফোন নিয়ে ভাবতে হবে। তোমার পক্ষে ওদের আস্তানা থেকে বের হবার কোনো প্রশ্নই আসে না। তাই পুলিশ একটু বেশি নাছোড়বান্দা টাইপ প্রশ্ন করবে।”

    “তাহলে ‘আমি কিছুই জানি না’ বলে পার পাওয়া যাবে না ধরে নিচ্ছি?”

    “কিন্তু তোমার চোখ বেঁধে রাখা হয়েছিল, ভুলে যেও না। সেই সাথে ওরা তোমার কানে হেডফোন পরিয়ে দিয়েছিল। হেডফোনে প্রচণ্ড শব্দের গান বাজছিল। এটা ওরা করেছিল যাতে তুমি অন্যকিছু শুনে না ফেলো। এভাবেই তারা তোমাকে একটা গাড়িতে বসিয়ে কোনো একজায়গায় নিয়ে গিয়েছিল। জায়গাটা কোথায় সেটা তোমার জানা নেই। অবশ্য তোমার চোখ বাঁধা ছিল, তাই তোমাকে দোষ দেওয়া যায় না। সেখানে পৌঁছানোর পর অবশেষে তারা হেডোফোন খুলে নেয়, কিন্তু চোখ আগের মতোই বাঁধা থাকে। একসময় পুরুষটা তোমাকে খুঁটিনাটি নির্দেশনা দেওয়া শুরু করে। মানে আমি যেভাবে তখন দিয়েছিলাম। পুরুষটার নির্দেশনা অনুযায়ী কাতসুতোশি কাতসুরাগির সাথে তুমি ফোনে কথা বললে।”

    “সেবার কিন্তু তুমি আমাকে সবকিছু কাগজে লিখে দিয়েছিলে। তাই চোখ বাঁধা থাকলে সেটা করা সম্ভব হবে না।”

    “তুমি তোতাপাখির মতো পুরুষটা যা বলে দিচ্ছিল, তাই বলতে বাধ্য হয়েছিলে।” যেভাবেই হোক পুলিশ হাকোজাকি জংশনের ঘটনাটা তদন্ত করতে গিয়ে হোটেলটায় যাবে। কারণ, আর কোথাও বসে গোটা হাকোজাকি জংশনকে মনিটর করা সম্ভব নয়। তাছাড়া আন্ডারগ্রাউন্ড পার্কিং লট থেকে এক্সপ্রেস এলিভেটর ব্যবহার করে খুব সহজেই অতিথিদের ফ্লোরে যাওয়া সম্ভব। তাই কোনো মেয়ের চোখবাঁধা ও কানে হেডফোন লাগানো থাকলেও সবার চোখ এড়িয়ে ভেতরে ঢোকা সম্ভব।

    পুলিশ হয়তো হোটেলের সবাইকে জিজ্ঞাসাবাদ করবে। কিন্তু পুলিশ কাদের ব্যাপারে জানতে চাইছে তা স্টাফরা হাজার চেষ্টা করলেও বুঝতে পারবে না। আমরা তাদের মনে ছাপ ফেলার মতো কিছুই করিনি, একটা চিহ্নমাত্রও রেখে আসিনি।

    “আর কেবল মুক্তিপণের টাকা তোলার সময়ে যে ফোন দিয়েছিলে, সেটাই বাকি রইল।”

    “আগের বারের মতোই আমার চোখ বেঁধে আর কানে হেডফোন লাগিয়ে গাড়িতে বসিয়ে রাখা হয়েছিল।

    হুম। তবে এবার তুমি বলবে যে, তুমি ওখান থেকে অন্য কোথাও যাওনি। আগের বারের মতোই তোমাকে ফোনে কথা বলতে বাধ্য করা হয়েছিল।”

    “কোথাও না যেয়েই?”

    “তুমি বলবে, সারাক্ষণ তোমার মনে হয়েছে যে গাড়িটা চলন্ত অবস্থায় রয়েছে। মাঝেমধ্যে থেমে থাকলেও সেটা কেবল অল্প সময়ের জন্য। পুলিশ ধরে নেবে তুমি কিডন্যাপারদের সাথে গাড়িতে করে গোটা এক্সপ্রেসওয়ে ঘুরে এসেছ। সেই সময়ে ওরা মুক্তিপণের টাকাটা নেওয়ার জন্য নানান নির্দেশনা দিতে ব্যস্ত ছিল। তাহলে কিডন্যাপাররা কোথা থেকে কোমাগাতা পার্কিং এরিয়া কিংবা গোটা এক্সপ্রেসওয়ের ওপর নজর রাখছিল, সেটা বের করা ওদের পক্ষে সম্ভব হবে না।”

    ঐ মুহূর্তে একটা হাই তুললাম।

    “এটুকু সময়ের জন্যই তুমি কালপ্রিটদের সাহায্য করেছিলে।”

    “কিন্তু আরো একবার তো সাহায্য করেছি। খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটা কাজ করেছি— মুক্তিপণের টাকাটা আমি নিজের হাতে গ্রহণ করেছি।”

    “তুমি তোমার চেহারা নিয়ে তো ওদের সামনে যাওনি, ঠিক না?”

    “তুমি যেভাবে বলেছ, ঠিক সেভাবেই গিয়েছি। একদম সাধারণ জামাকাপড় পরে তার সামনে উপস্থিত হয়েছি। আর মেকআপ যে কী করেছি তা তো নিজের চোখেই দেখেছ।”

    আমি সন্তুষ্ট স্বরে বললাম, “সমস্যা নেই। ওটা তুমি ছিলে না। ওটা ছিল মাতসুমোতো নামের সম্পূর্ণ ভিন্ন একজন মহিলা। নিসেই অটোমোবাইল-এর মুকোজিমা শাখার নাকামুরা তার হাতে টাকাটা তুলে দিয়েছিল, তোমার হাতে নয়। তার চুল ছিল লম্বা, আর চোখে ছিল সানগ্লাস।”

    জুরি তার পাশ থেকে একটা পরচুলা আর কালো রঙের একটা সানগ্লাস তুলে নিয়ে সেটা পরে দেখালো। “এই যে, এরকম একজন মহিলা।

    “মহিলার সাথে মাকিকো এসুমির বিন্দুমাত্র মিল নেই।” ব্যঙ্গ করে বললাম। তার হাত থেকে ও দুটো জিনিস নিয়ে বললাম, “এগুলোও নষ্ট করে ফেলতে হবে। আর হ্যাঁ, বার্নারটার কথা ভুললে চলবে না। আর কী নষ্ট করে ফেলতে হবে…?”

    “বোধহয় আমাদের মধ্যকার সম্পর্কটা।” জুরি আমার চোখের দিকে সোজাসুজি তাকিয়ে বলল।

    1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11 12 13 14 15 16 17 18 19 20 21
    Share. Facebook Twitter Pinterest LinkedIn Tumblr Email Reddit VKontakte Telegram WhatsApp Copy Link
    Previous Articleভবিষ্য পুরাণ – অনুবাদ : স্বামী পরমাত্মানন্দনাথ ভৈরব (গিরি)
    Next Article ম্যালিস – কিয়েগো হিগাশিনো

    Related Articles

    কেইগো হিগাশিনো

    স্যালভেশন অফ আ সেইন্ট – কিয়েগো হিগাশিনো

    August 1, 2025
    কেইগো হিগাশিনো

    দ্য ডিভোশন অব সাসপেক্ট এক্স – কিয়েগো হিগাশিনো

    August 1, 2025
    কেইগো হিগাশিনো

    দ্য রেড ফিঙ্গার – কেইগো হিগাশিনো

    August 1, 2025
    কেইগো হিগাশিনো

    দ্য মিরাকলস অব দ্য নামিয়া জেনারেল স্টোর – কেইগো হিগাশিনো

    August 1, 2025
    কেইগো হিগাশিনো

    নিউকামার – কেইগো হিগাশিনো

    August 1, 2025
    কেইগো হিগাশিনো

    ম্যালিস – কিয়েগো হিগাশিনো

    August 1, 2025
    Add A Comment
    Leave A Reply Cancel Reply

    Demo
    Most Popular

    রবিনসন ক্রুসো – ড্যানিয়েল ডিফো

    August 19, 2025

    অনুরাধা

    January 4, 2025

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025
    Demo
    Latest Reviews

    বাংলা গল্প শুনতে ভালোবাসেন? এক পাতার বাংলা গল্পের সাথে হারিয়ে যান গল্পের যাদুতে।  আপনার জন্য নিয়ে এসেছে সেরা কাহিনিগুলি, যা আপনার মন ছুঁয়ে যাবে। সহজ ভাষায় এবং চিত্তাকর্ষক উপস্থাপনায়, এই গল্পগুলি আপনাকে এক নতুন অভিজ্ঞতা দেবে। এখানে পাবেন নিত্যনতুন কাহিনির সম্ভার, যা আপনাকে বিনোদিত করবে এবং অনুপ্রাণিত করবে।  শেয়ার করুন এবং বন্ধুদের জানাতে ভুলবেন না।

    Top Posts

    রবিনসন ক্রুসো – ড্যানিয়েল ডিফো

    August 19, 2025

    অনুরাধা

    January 4, 2025

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025
    Our Picks

    রবিনসন ক্রুসো – ড্যানিয়েল ডিফো

    August 19, 2025

    দ্য দা ভিঞ্চি কোড – ড্যান ব্রাউন

    August 19, 2025

    এঞ্জেলস এন্ড ডেমনস – ড্যান ব্রাউন

    August 19, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram Pinterest
    • Home
    • Disclaimer
    • Privacy Policy
    • DMCA
    • Contact us
    © 2025 Ek Pata Golpo. Designed by Webliance Pvt Ltd.

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.

    Sign In or Register

    Welcome Back!

    Login below or Register Now.

    Lost password?

    Register Now!

    Already registered? Login.

    A password will be e-mailed to you.