Close Menu
এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    What's Hot

    রবিনসন ক্রুসো – ড্যানিয়েল ডিফো

    August 19, 2025

    দ্য দা ভিঞ্চি কোড – ড্যান ব্রাউন

    August 19, 2025

    এঞ্জেলস এন্ড ডেমনস – ড্যান ব্রাউন

    August 19, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    • 📙
    • লেখক
    • শ্রেণী
      • ছোটগল্প
      • ভৌতিক গল্প
      • প্রবন্ধ
      • উপন্যাস
      • রূপকথা
      • প্রেমকাহিনী
      • রহস্যগল্প
      • হাস্যকৌতুক
      • আত্মজীবনী
      • ঐতিহাসিক
      • নাটক
      • নারী বিষয়ক কাহিনী
      • ভ্রমণকাহিনী
      • শিশু সাহিত্য
      • সামাজিক গল্প
      • স্মৃতিকথা
    • কবিতা
    • 🔖
    • লিখুন
    • চলিতভাষার
    • শীর্ষলেখক
      • শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
      • মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়
      • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
      • বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • সত্যজিৎ রায়
      • সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
      • জীবনানন্দ দাশ
      • আশাপূর্ণা দেবী
      • কাজী নজরুল ইসলাম
      • জসীম উদ্দীন
      • তসলিমা নাসরিন
      • তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
      • মহাশ্বেতা দেবী
      • মাইকেল মধুসূদন দত্ত
      • মৈত্রেয়ী দেবী
      • লীলা মজুমদার
      • শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
      • সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়
      • সমরেশ মজুমদার
      • হুমায়ুন আহমেদ
    Subscribe
    সাইন ইন
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)

    দ্য নেম অব দ্য গেম ইজ অ্যা কিডন্যাপিং – কেইগো হিগাশিনো

    কেইগো হিগাশিনো এক পাতা গল্প310 Mins Read0

    অ্যা কিডন্যাপিং – ১৭

    সতেরো

    মুক্তিপণের টাকা হাতে পাওয়ার পর দশদিন পেরিয়ে গেছে। খেলা শুরুর আগে আমার জীবন যেরকম ছিল, সেরকম অবস্থায় ফিরে গেছে। ঘুম থেকে ওঠা, নিত্যদিনের ব্যয়াম, ব্রেকফাস্ট সারা, ঘর থেকে বের হওয়া। কোম্পানিতে বিরক্তিকর কাজ করা ও কাজ শেষে জিমে যাওয়া। সিদ্ধান্ত নিলাম, ছুটির দিন কারো সাথে ডেটে যাবো। এবার একেবারে ডেটের শেষ পর্যন্ত যাবোই যাবো। তাহলে বোধহয় আগে থেকে হোটেলে রিজার্ভেশন নিয়ে রাখতে হবে।

    দিনগুলো শান্তভাবে কেটে যাচ্ছিল, কিন্তু মন আগের মতোই অশান্ত রয়ে গেছে। জুরির জন্য খুব চিন্তা হচ্ছে। কেউ এখন পর্যন্ত ওর ব্যাপারে কোনো রিপোর্ট করেনি কেন? আমার তো মনে হয় না পুলিশ প্রেসের কাছ থেকে কোনোকিছু ধামাচাপা দিয়ে রাখতে চাইবে। সিপিটি মালিকদের ওয়েবসাইটটার পোস্টটা নিয়েও আমার চিন্তা হচ্ছিল। শেষ পোস্ট অনুযায়ী জুরি এখনো বাড়িতে পৌঁছায়নি। এরপর কিছু হয়েছে? কিন্তু আর কোনো পোস্ট চোখে পড়েনি।

    জুরি যদি বাড়ি ফিরে থাকে, তবে সবই ঠিক আছে। কাতসুতোশি কাতসুরাগি হয়তো ক্ষমতা খাটিয়ে প্রেসের মুখ বন্ধ রেখেছে। এরকম বয়সি কোনো মেয়ে কিডন্যাপ হলে সবাই স্বাভাবিকভাবেই ধরে নেয় যে, মেয়েটার সাথে কিছু একটা করা হয়েছে।

    কিন্তু কেন জানি মন বলতে লাগল, এত আশাবাদী হলে চলবে না।

    দুশ্চিন্তার প্রথম কারণ হলো ঐ ইয়োকোসুকার বিল্ডিংটা। জুরির তথ্য অনুযায়ী সেখানে কেবল মেয়েরাই বাসা ভাড়া নিয়ে থাকে। কিন্তু খোঁজখবর নিয়ে দেখেছিলাম, সেখানে অনেক পুরুষরাও থাকে। আর বিল্ডিংটার অর্ধেক অংশ একটা স্টিল কোম্পানি অফিস হিসেবে ব্যবহারের জন্য কিনে নিয়েছে। জুরি আমাকে আরো বলেছিল যে, ইউকি একটা স্টুডিয়ো অ্যাপার্টমেন্টে থাকে। কিন্তু পরে একদিন ওখানে গিয়ে যখন সেই বিল্ডিংয়ের সুপারকে সে ব্যাপারে জিজ্ঞেস করলাম, সে কথাটা পুরোপুরি নাকচ করে দিল। সে জানালো, ঐ বিল্ডিংয়ে কখনোই আলাদা করে স্টুডিয়ো অ্যাপার্টমেন্টের ইউনিট বানানো হয়নি।

    তাহলে জুরি এত বড়ো মিথ্যা কেন বলল?

    স্মৃতি হাতড়াতে লাগলাম। সে আমাকে যা বলেছিল তা হলো এই—

    তুমি না আসলেই বরং ভালো হবে। ঐ বিল্ডিংয়ে কেবল মেয়েরাই থাকে। এরচেয়ে ইয়োকোসুকা হারবারে গিয়ে জাহাজ দেখে সময় কাটালে বরং ভালো লাগবে।

    সহজ ভাষায়, সে আমাকে তার সাথে নিতে চাইছিল না। তাই ওখানে দাঁড়িয়েই সে মিথ্যা কথাটা বলে আমাকে থামিয়ে দিয়েছিল। কেন?

    শেষ দিন ইয়োকোসুকায় আসার সময় কী কী ঘটেছিল তা মনে করতে লাগলাম। ঐদিন আমিও তার সাথে যেতে চেয়েছিলাম। সেজন্য হঠাৎ করে সে পথ ভোলার ভান করেছিল। ওখানে যেতে যেতে আরেকটু হলে পথ হারিয়ে বসেছিলাম। এরকম কেন হয়েছিল?

    আমার তত্ত্ব হলো, সে একটা সম্পূর্ণ র‍্যান্ডম বিল্ডিং খুঁজে বেড়াচ্ছিল। সে হয়তো চায়নি আমি ইউকির বাসাটা চিনে ফেলি। তাই আমাকে ভিন্ন একটা বিল্ডিংয়ের সামনে দাঁড় করিয়ে রেখেছিল। তাহলে ‘মেয়েদের জন্য বাসা’ আর ‘অ্যাপার্টমেন্ট স্টুডিয়ো’- এর ব্যাখ্যা পাওয়া যায়। কিন্তু সেই সাথে মনে আরো অনেক প্রশ্নের উদয় হয়। আমাকে সেখানে যাওয়া থেকে বিরত রাখার জন্য সে কেন এতটা পরিশ্রম করেছিল? আর দুইশ সত্তর মিলিয়ন ইয়েন সে কোথায় লুকিয়ে রেখে এসেছিল?

    ইউকির বাসার মধ্যে এমন কিছু কি আছে, যা সে আমাকে জানাতে চায়নি? থাকলেও আমাকে দূরে রাখার জন্য সে এত পরিশ্রম করতে গেল কেন?

    এই পর্যায়ে এসে আমি নিজেকে একেবারে প্রাথমিক পর্যায়ের প্রশ্ন করা শুরু করেছিলাম। আসলেই কি ইউকির বাসার কোনো অস্তিত্ব আছে? না, আসলে ‘ইউকি নামে আদৌ কোনো মেয়ের অস্তিত্ব আছে?

    খেলার একদম শুরুর দিকে সে আমাকে নামটা জানিয়েছিল। সে আমার কাছে স্বীকার করেছিল যে, সে তার বন্ধুকে ফোন করে তার আন্সারিং মেশিনে মেসেজ রেখেছে। আমি যখন গোটা পরিকল্পনাটাই বন্ধ করে দিতে চেয়েছিলাম, জুরিই কিন্তু আমাকে তার বাসায় গিয়ে মেসেজটা মুছে দিয়ে আসার আইডিয়া দিয়েছিল। সেজন্যই আমরা ইয়োকোসুকাতে গিয়েছিলাম।

    যদি ইউকি বলে কেউ না থাকে, তারমানে আমাকে ধরে নিতে হবে আন্সারিং মেশিনের গল্পটাও সম্পূর্ণ মিথ্যা। কেন তাকে এত নির্দিষ্ট করে মিথ্যা বলতে হলো?

    আমার কেবল আর একটা কথা মনে হচ্ছে। সে আমাকে শুধু ইয়োকোসুকাতে নিয়ে যেতে চেয়েছিল। কিন্তু এর পেছনের কারণ? ওখানে গেলে পুলিশদের ধাপ্পা দেওয়া যাবে—কিন্তু এই আইডিয়াটা তো আমার ছিল, ওর নয়। যদি খুব গভীরভাবে ভাবার চেষ্টা করি, গোটা সময়ে সে কেবল একবারই নিজের ইচ্ছা প্রকাশ করেছিল। আর সেটা হলো ঐ পেনিনসুলার অগ্রভাগে গিয়ে তারকারাজি উপভোগ করা। ওটার পেছনে কী কারণ ছিল? ওটার ফলে কী হয়েছিল?

    অনেক ভাবার পরেও ইউকির প্রসঙ্গটা আমার কাছে বানোয়াট বলে মনে হলো না। তাহলে তার বাসা নিয়ে জুরি এত বড়ো গল্প ফেঁদে বসলো কেন? এই পর্যায়ে এসে আমার চিন্তাগুলো সব চরকির মতো ঘুরতে লাগল। মনে হতে লাগলো আমি যেন একটা গোলকধাঁধায় ঘুরতে ঘুরতে উদ্দেশ্য থেকে দূরে সরে যাচ্ছি।

    আমার দুশ্চিন্তার পেছনে আরো একটা কারণ ছিল। সেটা হলো কাতসুতোশি কাতসুরাগি।

    নিসেই অটোমোবাইল-এর সাথে জড়িত স্টাফদের কাছে শুনেছি, তিনি নাকি সর্বশেষ উইকেন্ড থেকে আর মিটিংয়ে অংশ নিচ্ছেন না। তিনি নাকি অফিসেও আসছেন না—এমন গুজবও শোনা যাচ্ছে। যে মানুষটা কিডন্যাপিংয়ের খেলার সময়েও নিজের ঠাট বজিয়ে রেখেছে, খেলা শেষ হবার পরে কেন সেই মানুষটা অফিস থেকে ছুটি নিয়েছে?

    বাবা আর মেয়ের জোড়া, মানে কাতসুতোশি আর জুরি কাতসুরাগির কথা আমার মনের ভেতরে ভেসে বেড়াতে লাগল। এই দুটো মানুষ কী ভাবছে তা ভেবেই পেলাম না। আর তারা এখন কোথায় আর কী করার চিন্তাভবনা করছে, সেটা কল্পনাতেও আনতে পারলাম না। কেবল এই কথাটাই আমার মনকে খোঁচাতে লাগল।

    .

    “মাফ করবেন, আপনি কি আপনার বামহাতটা একটু ওপরে ওঠাতে পারবেন? আহ, হ্যাঁ, এই তো, একদম নিখুঁত হয়েছে।” দাড়িওয়ালা ক্যামেরাম্যান সফলভাবে শাটারে ক্লিক করলেন।

    যে মানুষটার ছবি তোলা হচ্ছিল সে একজন জনপ্রিয় প্রো গলফার। তিনি আজকাল জাপানের বাইরেও পরিচিত মুখ হওয়া শুরু করেছেন। হাতে পাটার (গলফ খেলায় ব্যবহৃত সরঞ্জাম) ধরে তিনি এমন পোজ দিলেন যেন এই মাত্র বলটা গর্তে ফেলে দিতে সক্ষম হয়েছেন। তাকে দেখে মনে হলো, ছবি তোলাতে বেশ অভ্যস্ত হয়ে পড়েছেন। তাই তার মধ্যে আড়ষ্টতা অনেক কম ছিল। যাক, তাহলে ছবি তোলা শেষ করতে বেশি সময় লাগবে না—কথাটা ভেবেই শান্তি লাগছে।

    একটা ম্যাগাজিনের জন্য ছবি তোলা হচ্ছে। একটা জার্মান কোম্পানির বানানো হাতঘড়ির প্রোমো করার জন্য ম্যাগাজিনটাতে ছবিগুলো ব্যবহৃত হবে। জার্মান কোম্পানি তাদের ঘড়ির কম্পন-সহনশীলতা আর ঘাতসহতা হাইলাইট করতে চেয়েছিল। তাই আমরা একজন গলফারকে দিয়ে সেটাকে প্রোমোট করছিলাম। আমরা দেখাতে চেয়েছিলাম যে, গলফারের প্রতিটা শক্তিশালী সুইংও ঘড়িটার দুর্ভেদ্য কাঠামোর কাছে কিছুই না।

    ছবি তোলার পর ইন্টারভিউ পর্বের পালা। আগে থেকেই প্রো গলফারকে ঘড়িটি পরিয়ে তাকে দিয়ে কয়েকটা বল পিটিয়ে নিয়েছি। আমরা তার কাছে সে অনুভূতির কথা, আর ঘড়িটা সম্পর্কে তার মতামত জানতে চাইবো। অবশ্য আমি তাকে কোনো প্রশ্ন করবো না; আগে থেকেই একজন লেখককে ইন্টারভিউ করার জন্য বেছে নেওয়া হয়েছে। যখন স্টুডিয়োতে ইন্টারভিউ চলছিল, আমি তখন শুধুমাত্র ঘড়ির শুটিংয়ে যোগ দিলাম। ইয়ামামোতো নামের একজন জুনিয়র সহকর্মী সেই ইন্টারভিউতে উপস্থিত থাকবে।

    ছবি তোলার পালা শেষ হতে হতে ইন্টারভিউ পর্বও শেষ হয়ে গেল। প্রো গলফারকে দরজা পর্যন্ত এগিয়ে দিয়ে আসার পর ইন্টারভিউ নেওয়া লেখকের সাথে দেখা করতে চলে গেলাম। সে খুবই অল্পবয়স্ক লম্বাচুলো একজন মানুষ ছিল। টুকটাক কথাবার্তা বলার পর মনে হলো সে মূল প্রসঙ্গ থেকে সরে যাচ্ছে, তাই তাকে মূল প্রসঙ্গ সম্পর্কে নির্দেশনা দিলাম। তাকে আমার কথাবার্তা শুনে অসন্তুষ্ট মনে হলো। কিন্তু সে যদি আর্টিকেল লিখতে গিয়ে নিজের প্রতিভা দেখাতেই ব্যস্ত থাকে, তবে সেটা আবর্জনা হবে।

    “মিস্টার সাকুমা, আপনি এখনো আগের মতোই রয়ে গেছেন। লেখক একজন প্রো গলফারের মনের গহীনে ঢুকতে চেয়েছিল, আর তাই তার প্রশ্নগুলোও সেরকম ছিল।” ইয়ামামোতো গাড়ি চালাতে চালাতে বিহ্বল গলায় তার মনের কথা ফাঁস করলো।

    “তার মতো মানুষকে আমরা আমাদের গুরুত্বপূর্ণ বিজ্ঞাপনটাকে নষ্ট করতে দেবো না। আমি বাজি ধরে বলতে পারি, সে একজন ননফিকশন লেখক হিসেবে নাম কামাতে চায়। কিন্তু সে যদি তার ওপর চাপানো অ্যাসাইনমেন্টের গূঢ় অর্থ এখনো বুঝতে না পারে, তবে সেই স্বপ্নপূরণে বহু দেরি আছে।”

    “হাহা, হুম, কথাটা ভুল বলেননি।” ইয়ামামোতো এমনভাবে হাসতে লাগল যেন এরকম হাসির কথা সে আগে শোনেনি। নিজেকে সামলে নিয়ে সে একটু গলা নামিয়ে বলল, “যাই হোক মিস্টার সাকুমা, মিস্টার কাতসুরাগির ব্যাপারে কোনো কথা আপনার কানে এসেছে?”

    “মিস্টার কাতসুরাগি? এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট?” উত্তর দিলাম।

    “হ্যাঁ। যা শুনছি, মনে হচ্ছে তার মেয়ের কিছু একটা হয়েছে।

    এবার আমার হৃৎপিণ্ডটা লাফিয়ে উঠলো। “কী হয়েছে?”

    “সেটা তো ঠিক বলতে পারছি না, তবে মনে হচ্ছে সে হারিয়ে গেছে।”

    আমি ইয়ামামোতোর দিকে তাকালাম। সে যদি আমার দিকে তাকাতো, তবে আমি যে তার কথায় ফ্যাকাশে হয়ে গেছি তা সে টের পেয়ে যেত। ভাগ্যিস রাস্তার দিকে তাকিয়ে ছিল।

    “হারিয়ে গেছে?” আমার গলার আওয়াজ নিজের কাছে স্বাভাবিকের তুলনায়একটু বেশি মনে হলো।

    “খুঁটিনাটি জানা নেই। আমি আরেকজনের কাছ থেকে শুনেছি, আর সে নাকি এই গুজবটা নিসেই অটোমোবাইল থেকে শুনে এসেছে। কিন্তু গুজবটা সত্যি বলেই মনে হচ্ছে। এজন্যই নাকি তিনি আজকাল কাজে আসছেন না। তিনি মিসিং পার্সনে রিপোর্ট করেছেন কিনা তাও নিশ্চিত না…ইত্যাদি।”

    “এরকম জিনিস গুজব হয়ে ছড়ালো কীভাবে? মিস্টার কাতসুরাগি কি কাউকে নিজে থেকে কথাগুলো বলেছেন?”

    “বোধহয় বলেছেন। যদি গুজবগুলো সত্যি হয়ে থাকে, তবে আমি নিশ্চিত তিনিই বলেছেন।”

    “তুমি কখন এসব শুনলে?”

    “আজ সকালেই। কাজে যোগ দেবার একটু আগেই শুনেছি। আপনি আগেই এসব কথা শুনেছেন কিনা তা দেখতে চেয়েছিলাম, কিন্তু সে সুযোগ মেলেনি। তবে আপনার হাবভাব দেখে বুঝতে পারলাম, আপনি এসব কিছুই শোনেননি।”

    “আসলেই এসব কিছু জানতাম না।”

    “হুম, বুঝতে পেরেছি। তবে এটা গুজব বলেই মনে হচ্ছে।” ইয়ামামোতো টের পেল না, সে কত গুরুত্বপূর্ণ একটা কথা আমাকে এইমাত্র জানিয়েছে। সে নিজের মতো করে গাড়ি চালাতে লাগল।

    ভাগ্যিস সে এই কথাগুলো ছবি তোলার আগে জানায়নি। তাহলে আমি কাজ করার আগ্রহ সম্পূর্ণরূপে হারিয়ে ফেলতাম। সেই লেখককে সঠিক নির্দেশনা দেওয়ার মতো ক্ষমতাও আমার থাকত না।

    ইয়ামামোতো এখন অন্য কিছু নিয়ে বকবক করছে। তার কথায় অংশ নেওয়া জরুরি।

    জুরির কথা ভাবলাম। তাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না? তারমানে সে সত্যি সত্যি‍ই বাসায় ফেরেনি। তাহলে সে এখন কোথায়?

    শিনাগাওয়া স্টেশনে আমাদের বিদায়কালীন দৃশ্যগুলো মনে করার চেষ্টা করলাম। সে এরপর কোথায় গেছে? কেউ কি ওকে এর মধ্যে কিডন্যাপ করে নিয়ে গেছে? অসম্ভব। সাজানো কিডন্যাপিং শেষে আসল কিডন্যাপারদের খপ্পরে পড়া—এ তো টিভিতে দেখানো নাটকের চেয়েও বেশি নাটকীয় হয়ে যায়।

    তারমানে সে নিজের ইচ্ছায় নিরুদ্দেশ হয়ে গেছে। কোথায়? ঠিক ঐ মুহূর্তে আমার আবার ‘ইউকির বাসা’ শব্দটা মনে এলো।

    এমনও তো হতে পারে যে, জুরি শুরু থেকেই এই পরিকল্পনা করে যাচ্ছে?

    সে আমার কিডন্যাপিং গেমকে সমর্থন দিয়েছিল। কিন্তু নিতান্তই আমার হাতের পুতুল হিসেবে সে থাকতে চায়নি। টাকাটা হাতে পাওয়ার সাথে সাথে বাসায় না ফিরে নিরুদ্দেশ হয়ে যেতে চেয়েছিল। কিন্তু একটা স্থায়ী বাসা খুঁজে পাওয়ার আগপর্যন্ত তার একটা লুকিয়ে থাকার জায়গার দরকার ছিল। এ কাজের জন্য সে তার বান্ধবীর বাসা বেছে নিয়েছিল। সেজন্যই সে আমার কাছ থেকে মূল বাসাটার লোকেশন আড়ালে রেখেছে। সে ভেবেছিল আমি যদি ওর বান্ধবীর বাসাটা কোথায় তা জেনে ফেলি, তবে ওর বাসায় না ফেরার সংবাদে তাকে ওখানে খুঁজতে আসবো। তা সে ভুল ভাবেনি। আমি সত্যিই ইয়োকোসুকায় তাকে খুঁজতে গিয়েছিলাম।

    এই তত্ত্ব যদি সত্যি বলে ধরে নিই, অন্তত কয়েকটা প্রশ্নের উত্তর পেয়ে যাচ্ছি। কিন্তু এতকিছুর পরও একটা প্রশ্নের উত্তর কোনোমতেই খুঁজে পেলাম না।

    যদি থিওরিটা সত্যি হয়ে থাকে, তবে সে আমাকে ইউকির বাসার কথা না বললেও তো পারতো। নাকি আন্সারিং মেশিনে রেখে দেওয়া মেসেজের কথাটা সত্য ছিল? না, সত্য হলেও ওখানে, মানে ইয়োকোসুকায় দৌড়ে যাওয়ার কোনো দরকার ছিল না। সে যদি সত্যিই ওখানে লুকিয়ে থাকার চিন্তাভাবনা করে থাকে, তবে পরে কোনো এক সময়ে সেটা মুছে দিলেই তো হতো।

    আমি বোধহয় মনের অজান্তেই বিড়বিড় অস্ফুট শব্দ করা শুরু করেছিলাম। সেজন্য ইয়ামামোতো তার বকবক থামিয়ে দিল।

    অফিসে ঢুকে আমার ফ্লোরে প্রবেশ করতেই থমকে গেলাম। গোটা ফ্লোরে কেউ নেই।

    “কী হলো?” ইয়ামামোতোও হতবুদ্ধি হয়ে গেছে।

    পরে আমাদের ভুলটা বুঝতে পারলাম। সবাই এক কোণায় দাঁড়িয়ে আছে। সেখানে একটা টিভি রাখা ছিল। কিন্তু স্টাফদের ভিড়ের মধ্যে সেটা একচিলতেও দেখার সুযোগ পেলাম না।

    “কিছু হয়েছে নাকি?” ইয়ামামোতো একজনকে জিজ্ঞেস করলো।

    “হ্যাঁ, খুবই জটিল পরিস্থিতি। ঐ গুজবটা সত্যি ছিল।”

    “ঐ গুজব?”

    “মিস্টার কাতসুরাগির কন্যার ব্যাপারে। টিভিতে দেখাচ্ছে তাকে নাকি দশদিন ধরে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।”

    “কী?”

    ইয়ামামোতো ঠেলাঠেলি করে টিভির সামনে চলে গেল। আমিও তাকে অনুসরণ করলাম। অবশেষে টিভির পর্দাটা দেখতে পেলাম। কিন্তু তখন সংবাদপাঠক আরেকটা খবর পাঠ শুরু করে দিয়েছেন। তার মানে জুরি কাতসুরাগির অংশটা শেষ হয়ে গেছে। টিভির সামনের ভিড় আস্তে আস্তে পাতলা হতে লাগল। সবাই নানান বিষয়ে আলাপ করতে করতে তাদের সিটে ফিরে যাচ্ছে।

    “এমুহূর্তে বোধহয় মিস্টার কাতসুরাগির কাজে আসার কথা মাথাতেও আসছে না।”

    “আমার কাছে উদ্ভট লেগেছিল যে, ঐ মানুষটা মিটিংয়ে কেন যোগ দিচ্ছে না!”

    “তার মানে আবার নিসেই-এর শেয়ারের দরপতন হবে?”

    “মেয়েটা পালিয়ে গেছে নাকি?”“

    “সেটাই আপাতত ধরে নিই। তাকে তো খুন-টুন করা হয়নি, ঠিক না?”

    শেষের ভয়ঙ্কর কথাগুলো সুগিমোতোর মুখ থেকে বেরিয়েছিল। আমি তার কাঁধ শক্ত করে ধরলাম।

    “আমাকে সবকিছু খুলে বলো তো। মিস্টার কাতসুরাগির মেয়ের কী হয়েছে?”

    সুগিমোতো আমার দিকে অবাক দৃষ্টিতে তাকালো। “যা বুঝলাম, সে নাকি বেশ কদিন ধরেই নিরুদ্দেশ রয়েছে। পুলিশও নাকি তদন্ত শুরু করে দিয়েছে।”

    “তদন্ত? কী ধরনের তদন্ত?

    “সেটা তো জানা নেই। বোধহয় সেসব অন্য চ্যানেলে দেখাচ্ছে।” এটুকু বলে সে আমাকে অগ্রাহ্য করে নিজের সিটে গিয়ে বসে পড়লো।

    পেয়েছি, ইয়ামামোতো হাঁফ ছেড়ে বাঁচলো যেন। সে আমার পেছনে দাঁড়িয়ে চ্যানেল পাল্টাচ্ছিল। নতুন একজন সংবাদপাঠিকা খবর পড়ছেন। শিরোনাম দেওয়া :

    নিসেই অটোর ইভিপির কন্যা নিখোঁজ

    খবরপাঠিকা যা যা বললেন, তার সাথে সুগিমোতোর সব কথাই মিলে গেল। আমরা জানতে পেরেছি যে, মিস্টার কাতসুতোশি কাতসুরাগির বড়ো মেয়ে, জুরিকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। মেট্রোপলিটন পুলিশ ডিপার্টমেন্ট আর ‘ওতা পুলিশ ডিপার্টমেন্ট ধারণা করছে, সে একটা কেসের সাথে জড়িত রয়েছে। তাই তারা তদন্ত শুরু করে দিয়েছে…

    কেসের সাথে জড়িত?

    এর মানে কী? শুধু কিডন্যাপিং বললেই কি হতো না? না, সবচেয়ে বড়ো কথা হচ্ছে, জুরিকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। তার কী হলো?

    কিন্তু পরে যেটা ঘটলো, তাতে আমি পুরোপুরি স্তব্ধ হয়ে গেলাম। টিভির পর্দায় তখন একটা মেয়ের ছবি দেখানো হচ্ছে।

    ক্যান্ডিড ছবি ছিল ওটা। ছবিটার ক্যাপশনে লেখা ছিল—জুরি কাতসুরাগি

    সংবাদপাঠিকা খবর পড়া চালিয়ে গেলেন। কিন্তু তার একটা কথাও আমার কানে ঢুকছিল না। যদি আশেপাশে কেউ না থাকতো, তবে নিশ্চিত আমি ওখানেই গলা ফাটিয়ে চিৎকার করে বসতাম। নিজেকে সামলিয়ে রাখতে অনেক বেগ পেতে হলো।

    টিভিতে যার ছবি দেখানো হচ্ছে, তার সাথে আমি যে জুরিকে চিনি তার কোনো মিল নেই। টিভিতে আমার সম্পূর্ণ অচেনা ভিন্ন একটা মেয়ের ছবি দেখানো হচ্ছে।

    1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11 12 13 14 15 16 17 18 19 20 21
    Share. Facebook Twitter Pinterest LinkedIn Tumblr Email Reddit VKontakte Telegram WhatsApp Copy Link
    Previous Articleভবিষ্য পুরাণ – অনুবাদ : স্বামী পরমাত্মানন্দনাথ ভৈরব (গিরি)
    Next Article ম্যালিস – কিয়েগো হিগাশিনো

    Related Articles

    কেইগো হিগাশিনো

    স্যালভেশন অফ আ সেইন্ট – কিয়েগো হিগাশিনো

    August 1, 2025
    কেইগো হিগাশিনো

    দ্য ডিভোশন অব সাসপেক্ট এক্স – কিয়েগো হিগাশিনো

    August 1, 2025
    কেইগো হিগাশিনো

    দ্য রেড ফিঙ্গার – কেইগো হিগাশিনো

    August 1, 2025
    কেইগো হিগাশিনো

    দ্য মিরাকলস অব দ্য নামিয়া জেনারেল স্টোর – কেইগো হিগাশিনো

    August 1, 2025
    কেইগো হিগাশিনো

    নিউকামার – কেইগো হিগাশিনো

    August 1, 2025
    কেইগো হিগাশিনো

    ম্যালিস – কিয়েগো হিগাশিনো

    August 1, 2025
    Add A Comment
    Leave A Reply Cancel Reply

    Demo
    Most Popular

    রবিনসন ক্রুসো – ড্যানিয়েল ডিফো

    August 19, 2025

    অনুরাধা

    January 4, 2025

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025
    Demo
    Latest Reviews

    বাংলা গল্প শুনতে ভালোবাসেন? এক পাতার বাংলা গল্পের সাথে হারিয়ে যান গল্পের যাদুতে।  আপনার জন্য নিয়ে এসেছে সেরা কাহিনিগুলি, যা আপনার মন ছুঁয়ে যাবে। সহজ ভাষায় এবং চিত্তাকর্ষক উপস্থাপনায়, এই গল্পগুলি আপনাকে এক নতুন অভিজ্ঞতা দেবে। এখানে পাবেন নিত্যনতুন কাহিনির সম্ভার, যা আপনাকে বিনোদিত করবে এবং অনুপ্রাণিত করবে।  শেয়ার করুন এবং বন্ধুদের জানাতে ভুলবেন না।

    Top Posts

    রবিনসন ক্রুসো – ড্যানিয়েল ডিফো

    August 19, 2025

    অনুরাধা

    January 4, 2025

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025
    Our Picks

    রবিনসন ক্রুসো – ড্যানিয়েল ডিফো

    August 19, 2025

    দ্য দা ভিঞ্চি কোড – ড্যান ব্রাউন

    August 19, 2025

    এঞ্জেলস এন্ড ডেমনস – ড্যান ব্রাউন

    August 19, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram Pinterest
    • Home
    • Disclaimer
    • Privacy Policy
    • DMCA
    • Contact us
    © 2025 Ek Pata Golpo. Designed by Webliance Pvt Ltd.

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.

    Sign In or Register

    Welcome Back!

    Login below or Register Now.

    Lost password?

    Register Now!

    Already registered? Login.

    A password will be e-mailed to you.