Close Menu
এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    What's Hot

    রবিনসন ক্রুসো – ড্যানিয়েল ডিফো

    August 19, 2025

    দ্য দা ভিঞ্চি কোড – ড্যান ব্রাউন

    August 19, 2025

    এঞ্জেলস এন্ড ডেমনস – ড্যান ব্রাউন

    August 19, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    • 📙
    • লেখক
    • শ্রেণী
      • ছোটগল্প
      • ভৌতিক গল্প
      • প্রবন্ধ
      • উপন্যাস
      • রূপকথা
      • প্রেমকাহিনী
      • রহস্যগল্প
      • হাস্যকৌতুক
      • আত্মজীবনী
      • ঐতিহাসিক
      • নাটক
      • নারী বিষয়ক কাহিনী
      • ভ্রমণকাহিনী
      • শিশু সাহিত্য
      • সামাজিক গল্প
      • স্মৃতিকথা
    • কবিতা
    • 🔖
    • লিখুন
    • চলিতভাষার
    • শীর্ষলেখক
      • শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
      • মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়
      • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
      • বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • সত্যজিৎ রায়
      • সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
      • জীবনানন্দ দাশ
      • আশাপূর্ণা দেবী
      • কাজী নজরুল ইসলাম
      • জসীম উদ্দীন
      • তসলিমা নাসরিন
      • তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
      • মহাশ্বেতা দেবী
      • মাইকেল মধুসূদন দত্ত
      • মৈত্রেয়ী দেবী
      • লীলা মজুমদার
      • শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
      • সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়
      • সমরেশ মজুমদার
      • হুমায়ুন আহমেদ
    Subscribe
    সাইন ইন
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)

    দ্য নেম অব দ্য গেম ইজ অ্যা কিডন্যাপিং – কেইগো হিগাশিনো

    কেইগো হিগাশিনো এক পাতা গল্প310 Mins Read0

    অ্যা কিডন্যাপিং – ১৯

    উনিশ

    সেদিন বিকেলে আকাসাকাতে গিয়ে সোতোবোরি স্ট্রিটের দিকে মুখ করা একটা ক্যাফেতে গিয়ে বসলাম। দুইটা দশ বাজতেই দাইসুকে ইউগুচিকে হতদন্ত হয়ে তাঁর থলথলে শরীর নিয়ে কাচের দরজা দিয়ে ভেতরে প্রবেশ করতে দেখলাম। ভেতরে ঢুকেই সে আমাকে দেখতে পেল। হাত নেড়ে আমার কাছে এসে বসে পড়লো।

    “এতক্ষণ অপেক্ষা করানোর জন্য দুঃখিত।”

    “সমস্যা নেই। বরং এত দ্রুত যোগাযোগ করার জন্য তোমাকে ধন্যবাদ।” ইউগুচি কাছেই একটা টিভি স্টেশনে কাজ করে। সে আমার কলেজ থেকেই পাশ করেছে, তবে আমার একবছর পরে। এর আগে আমরা একসাথে একবার কাজও করেছি।

    সে কফি অর্ডার দিল, তাই আমিও রিফিল দেওয়ার জন্য অর্ডার দিলাম।

    টুকটাক খুচরা আলাপের পর সোজা কাজের কথায় চলে গেলাম। “তো, ফোনে যে ব্যাপারে তোমার সাহায্য চেয়েছিলাম, সে ব্যাপারে কিছু জানতে পারলে?”

    বলার সাথে সাথে ইউগুচির কপালটা কুঁচকে গেল। “আমার স্টেশন সে বিষয়ে জানার জন্য অনেক খাটাখাটুনি করে যাচ্ছে। কিন্তু কাতসুরাগি আর পুলিশ দুইপক্ষই তাদের মুখ একদম বন্ধ করে রেখেছে। তাই একদম সঠিক কোনো খবর আমরা এখনো বের করতে পারিনি।

    “কিন্তু সব তথ্য তো তোমরা ব্রডকাস্ট করো না। এমন কোনো তথ্য আছে যা এখনো রিপোর্ট করোনি?”

    জুরি কাতসুরাগির কেসের ব্যাপারে যদি কিছু জেনে থাকো, তবে আমাকে সেটা বলো, তাকে সেটাই যেন পরোক্ষভাবে বলছিলাম। ইউগুচি অবশ্য আমাকে একবিন্দু সন্দেহ করেনি। আমি তাকে আগেই জানিয়ে দিয়েছি যে, আমি আমাদের সবচেয়ে বড়ো ‘ক্লায়েন্ট’ নিসেই অটোমোবাইল-এর ব্যাপারে যতটুকু সম্ভব জানতে চাই।

    “ডিপার্টমেন্টের প্রধানরা হয়তো কিছু শুনে থাকবেন, কিন্তু তার ছিটেফোঁটাও আমাদের মতো নিচু পদের কানে আসেনি। উম, আপনি তো গোটা ব্যাপারটা কিছুটা হলেও জানেন, তাই না মিস্টার সাকুমা?” একটা নোট হাতে নিয়ে সে আমাকে জিজ্ঞেস করলো।

    “মোটামুটি। কিন্তু তারপরেও আমাকে এখন পর্যন্ত যা যা হয়েছে সব খুলে বললে ভালো হয়।”

    “ঠিক আছে। উম, সবার আগে, জুরি নিখোঁজ হয়েছিল যখন…”

    ইউগুচি জোরে জোরে নোট থেকে পড়া আরম্ভ করলো। নতুন কিছু‍ই জানা গেল না, কিন্তু জোর করে মুখে কৌতূহলী ভাবটা ধরে রাখলাম। “এটা কি কিডন্যাপিং কেস হতে পারে?”

    “বলা মুশকিল। কিন্তু আমার তা মনে হয় না।” ইউগুচি বেশ আত্মবিশ্বাসের সাথে উত্তর দিলো।

    “মানে?”

    “কথাটা আমাদের মধ্যে রাখবেন।” আশেপাশে তাকিয়ে আমার দিকে মাথাটা এগিয়ে দিয়ে বলল, “প্রেসক্লাবের লোকজনদের কথা অনুযায়ী, মেট্রোপলিটন পুলিশ ডিপার্টমেন্টের ‘অ্যাবডাকশন ইউনিট’ এখনো মাঠে নামেনি। যদি সেটা কিডন্যাপিং হতো, তবে দশদিন আগেই তারা কাজে নেমে পড়তো। আর তখন তাদের পক্ষে প্রেসের চোখে ধূলা দেওয়া সম্ভব হতো না। পুলিশ ডিপার্টমেন্ট অবশ্য এখন জোরেসোরে কাজ করা শুরু করেছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনো ডিটেকটিভকে কাতসুরাগিদের বাসায় নজরদারি রাখার দায়িত্ব দেওয়া হয়নি।”

    “পুলিশ ডিপার্টমেন্টের অ্যাবডাকশন ইউনিট সে নিখোঁজ হবার সাথে সাথে কাজে নেমে পড়েনি?”

    “হ্যাঁ, প্রেসক্লাবের লোকগুলো তো তাই জানালো।”

    মনে হচ্ছে আমার মাথার ওপর কিছু একটা গুড়োগুড়ো হয়ে ভেঙে পড়লো। পুলিশ কিছুই করেনি? অসম্ভব। কাতসুরাগি পরিবারের একজন কন্যাকে কিডন্যাপ করা হয়েছে, অথচ পুলিশ দেশজুড়ে বিশাল আকারের কোনো তদন্ত শুরু করেনি— ব্যাপারটা ভাবাই যায় না। আর ওরকম পর্যায়ের তদন্ত শুরু করলে পুলিশ স্টেশনের বাইরে অবস্থিত সাংবাদিকদের সেটা একসময়ে নজরে পড়তই।

    যদি ইউগুচির কথা সত্য বলে ধরে নিই, তাহলে কেবল একটা জিনিসই ঘটতে পারে বলে আমার মনে হচ্ছে। আর সেটা হলো, কাতসুতোশি কাতসুরাগি আমাদের কথাটা রেখেছিলেন; তিনি কোনো পুলিশের সাথে যোগাযোগ করেননি। মুক্তিপণের টাকা দেওয়া পর্যন্ত তিনি আমাদের কথা অক্ষরে অক্ষরে মেনে চলেছেন। তারপরেও জুরি ঘরে ফেরেনি। তাই তিনি আর সহ্য করতে না পেরে অবশেষে পুলিশের সাহায্য নিয়েছিলেন। সবকিছু শোনার পর এখন এটাই সত্য বলে মনে হচ্ছে।

    তিনি পুলিশের সাথে যোগাযোগ করেননি কেন? পুলিশের সাথে যোগাযোগ করলে যদি সেটা কিডন্যাপাররা জেনে যায়, এই ভয়ে?

    “গোটা ব্যাপারটাই আমার কাছে রহস্যময় লাগছে,” ইউগুচি বলতে লাগল। “আমাদের লোকজনের দেওয়া তথ্যানুযায়ী, মিস্টার কাতসুরাগি কদিন আগেই কেবল পুলিশকে ইনফর্ম করেছেন। নিখোঁজ হবার সাথে সাথে তিনি কেন পুলিশের সাথে যোগাযোগ করেননি, সবার মনে এই প্রশ্নটা ঘোরাফেরা করছে।”

    “আর মিস্টার কাতসুরাগি সে ব্যাপারে কোনো ব্যাখ্যা দেননি।”

    ইউগুচি নিচের ঠোঁটটা সামনে ঠেলে দিয়ে মাথা ঝাঁকাতে ঝাঁকাতে বলল, “কোনো ব্যাখ্যা দেননি। এমনকি ইন্টারভিউ দিতেও রাজি হননি, সবাইকে মানা করে দিয়েছেন। অফিসিয়াল স্টেটমেন্ট হচ্ছে, যা রিপোর্ট করা হয়েছে তার বাইরের কোনো বিষয় নিয়ে ঘাঁটাঘাঁটি করার কোনো দরকার নেই।”

    হাত ভাঁজ করলাম। কাতসুতোশি কাতসুরাগি কেন কিডন্যাপিংয়ের সময়ে পুলিশের কাছ থেকে কোনো সাহায্য চাননি? তিনি কি ভেবেছিলেন যে, টাকাটা মিটিয়ে দিলেই তিনি তার কন্যাকে পেয়ে যাবেন? তিনি কি ভেবেছিলেন যে, সবকিছু ভালোয় ভালোয় শেষ হবার পর পুলিশকে জানালেই হবে?

    আমি মাথার ভেতরেই কথাটাকে নাকচ করে দিলাম। কোনোমতেই সম্ভব না। কাতসুতোশি কাতসুরাগির মতো কেউ হুমকির ভয়ে ভীত হওয়ার মতো মানুষ নন। খেলার ব্যাপারে তিনি বেশ আত্মবিশ্বাসী একজন মানুষ। কালপ্রিটের সাথে বুদ্ধির খেলায় বাইরে থেকে টাওয়েল ছুঁড়ে আত্মসমর্পণ জানানোর মতো কাজ তিনি কখনো করবেন না।

    কিছু একটা তো রয়েছে। আর সেটার মধ্যেই জুরির ‘নকল’ হবার কারণটা বের হয়ে আসবে।

    “কাতসুরাগি পরিবারের ব্যাপারে কোনো তথ্য পেলে?”

    “ওহ, সেটা বের করা খুব একটা কঠিন ছিল না। ওগুলো আগেই বের করা হয়ে গেছে।” ইউগুচি আরেকটা নোট বের করে আমার সামনে রাখলো।

    কাগজটাতে কয়েকটা নাম ছিল : কাতসুতোশি কাতসুরাগি, স্ত্রী ফুমিকো, বড়ো মেয়ে জুরি, ছোটো মেয়ে চিহারু।

    “তার আরেকটা মেয়ে রয়েছে?” আড়চোখে নোটটার দিকে তাকিয়ে নিষ্পাপের মতো গলায় জিজ্ঞেস করলাম।

    “তাই তো দেখলাম। সে একটা প্রাইভেট হাইস্কুলে পড়াশোনা করে। শুনেছি সে নাকি সিনিয়র, মানে শেষ বর্ষে পড়ছে।”

    “সিনিয়র…কোন স্কুলে কে জানে।”

    “হুম, ওটা মনে হয়…” ইউগুচি স্কুলটার নাম বলল। একটা বিখ্যাত মেয়েদের কলেজের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান ছিল হাইস্কুলটা।

    শুধু চিহারু কাতসুরাগির ব্যাপারে প্রশ্ন করলে অদ্ভুত শোনাবে, তাই জুরি ও কাতসুরাগির স্ত্রীর ব্যাপারেও জানতে চাইলাম। কিন্তু ইউগুচি তেমন একটা সাহায্য করতে পারলো না। আমিই বরং ওর থেকে বেশি জানি।

    “স্ত্রী আর ছোটো মেয়েটা বোধহয় জুরির চিন্তায় অস্থির হয়ে গেছে, “ আমি বললাম।

    “শুনেছি ছোটোবোনটা নাকি ঘটনাটাতে প্রচণ্ড শক পেয়েছে। বোন নিখোঁজ হবার পর থেকেই সে শয্যাশায়ী।”

    “শয্যাশায়ী? চিহারু?”

    “হুম। কয়েকজন সাংবাদিক নাকি তার সাথে কথা বলার জন্য তার হাইস্কুলে ঢুকে পড়েছিল। কিন্তু চিহারু অসুস্থতার কারণে সেদিন স্কুলে ছিল না। দশদিন ধরেই সে নাকি স্কুলে যাচ্ছে না। তাই বোধহয় প্রেস থেকে দূরে থাকতে নয়, বরং অসুস্থতার জন্যই সে শয্যাশায়ী।”

    ইউগুচি সামনে থাকায় নিজেকে স্থির রাখতে বাধ্য হলাম। হঠাৎ করে অনেক পিপাসা লাগছে, তাই ঢকঢক করে আমার গ্লাসের পানি খেয়ে ফেললাম।

    “এটা আমি নিতে পারি?” নোটের দিকে হাত বাড়ালাম।

    “নিন। কিন্তু এসব ঘটনার কারণে আপনাকে নিশ্চয়ই অনেক ঝামেলা পোহাতে হচ্ছে মিস্টার সাকুমা, তাই না? নিসেই অটোমোবাইল-এর নতুন গাড়ির ক্যাম্পেইনের ঠিক আগে এরকম কেস ঘটে গেল।”

    “আসলেই, ভাগ্যটা খারাপ।” তাকে বললাম না যে, আমাকে ঐ প্রজেক্ট থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে। বলার কোনো কারণ দেখছি না।

    এত ব্যস্ততার মধ্যেও আমাকে সময় দেবার জন্য তাকে ধন্যবাদ জানিয়ে বিল মিটিয়ে বেরিয়ে পড়লাম।

    ক্যাফে থেকে বের হয়ে ট্যাক্সি নিলাম। ড্রাইভারকে আমার কোম্পানির ঠিকানায় যেতে বললাম। গাড়ি চলতে শুরু করলো। ইউগুচির দেওয়া কাগজটা বের করে নিলাম। একবার চোখ বোলানোর পর সিদ্ধান্ত পালটে ফেললাম।

    “মাফ করবেন, ড্রাইভার সাহেব। গন্তব্যটা পাল্টাতে বাধ্য হচ্ছি। আমাকে বরং মেগুরোতে নিয়ে চলুন।”

    “মেগুরো? মেগুরোর কোথায়?”

    আমি তাকে একটা মেয়েদের হাইস্কুলের নাম বললাম। দেখা গেল, ড্রাইভার জায়গাটাকে চেনে।

    স্বাভাবিকভাবেই, আমি তাকে চিহারু কাতসুরাগির হাইস্কুলে নিয়ে যেতে বলেছিলাম। স্কুলের একশ ফিট আগেই ট্যাক্সি থেকে নেমে গেলাম। বুঝতে পারলাম, ছুটির ঘণ্টা বেজে গেছে। অজস্র ছাত্রী বাড়ি ফেরার পথ ধরেছে।

    সামনে একটা বইয়ের দোকান ছিল। সেখানে একটা ম্যাগাজিন কেনার ভান করে আড়চোখে কথা বলার মতো হাইস্কুলের মেয়ে খুঁজতে লাগলাম। সবাই তাদের স্কুলটাকে বড়োলোকের মেয়েদের স্কুল হিসেবে দেখে। কিন্তু অনেককেই দেখলাম জনপ্রিয় শিল্পীদের মতো চুল ডাই করিয়েছে। ঐ বয়সি মেয়েদের সাথে তাদের খুব একটা পার্থক্য দেখলাম না। স্কুলে বোধহয় বাধ্যবাধকতা শিথিল করেছে।

    শিক্ষার্থীদের স্রোত কিছুটা হালকা হবার পর একজোড়া মেয়ে দোকানে ঢুকলো। দুজনের চুলের রং ছিল বাদামি। তারা দেখতে শুনতে মন্দ ছিল না। দুজনের চেহারাতে কেমন জানি একটা অরক্ষিত ভাব ছিল; মানে তারা যদি কোনো এন্টারটেইনমেন্ট ডিস্ট্রিক্টে যায়, তবে প্রতিঘণ্টায় ছেলেরা তাদের ওপর একবার না একবার হুমড়ি খেয়ে পড়বেই। তাদের রূপের ব্যাপারে তারাও বেশ সচেতন ছিল। সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেললাম। সোজা হেঁটে তাদের সামনে গিয়ে দাঁড়ালাম।

    “হ্যালো,” তাদের দিকে হাসিমুখে তাকালাম।

    দুজনেই থেমে গেল। আমার দিকে সন্দেহজনক দৃষ্টিতে তাকালো।

    “না না, আমার ব্যাপারে ভুল বুঝবে না। আসলে আমি এই টাইপের কাজ করি।”

    বলে তাদের দিকে ইউগুচির প্রতিদ্বন্দ্বী স্টেশনের একটা কার্ড বাড়িয়ে দিলাম। হাইস্কুলের মেয়েদের সাথে ভাব জমানোর জন্য জনপ্রিয় শো ‘এক্সএক্স (XX) টিভিতে কাজ করার কোনো বিকল্প নেই।

    যা ভেবেছিলাম। তাদের চোখ থেকে সন্দেহটা দূর হয়ে গিয়ে সেখানে কৌতূহল জায়গা করে নিল।

    “তোমরা কোন বর্ষে পড়াশোনা করছো?”

    তারা দুজন একে অপরের দিকে তাকালো। তারপর বামপাশের মেয়েটা মুখ খুললো, “আমরা সিনিয়র।”

    ঠিকই ধরেছিলাম, মনে মনে হাসলাম। “তোমাদের হাতে অল্প একটু সময় রয়েছে? তোমাদের দুজনের কাছে কয়েকটা প্রশ্ন ছিল।”

    “উম, কী নিয়ে প্রশ্ন?” বাম পাশের মেয়েটাই প্রশ্ন করলো।

    “তোমাদের স্কুলে চিহারু কাতসুরাগি নামে একটা সিনিয়র রয়েছে, ঠিক না?

    তোমরা কি জানো যে, তার বড়োবোন নিখোঁজ হয়ে গেছে?”

    “ওহ হ্যাঁ, জানি। স্কুলের সবাই এ নিয়ে বলাবলি করছিল।”

    “আমি শুনেছি যে, মিস কাতসুরাগি নাকি স্কুল থেকে ছুটি নিয়েছে—কথাটা কি সত্য?”

    ডানপাশের মেয়েটা ওর কানে ফিসফিস করে কী যেন বলল। তাদের মুখভঙ্গি পালটে গেল। সোজা কথায়, তারা সতর্ক হয়ে গেছে।

    “আমরা অন্য ক্লাসের, তাই…” বামপাশের মেয়েটা আমার বিজনেস কার্ডটা ফিরিয়ে দিয়ে বলল। “তাছাড়া আমাদের মুখ খুলতে মানা করে দেওয়া হয়েছে।”

    “তাহলে… সে কোন ক্লাসে পড়ত সেটা বললেই হবে।”

    কিন্তু তারা দুজন হাত নেড়ে সেখান থেকে দ্রুত কেটে পড়লো।

    এরপর আরো তিনজন মেয়ের সাথে আলাপ করার চেষ্টা করলাম, কিন্তু ফলাফল একই হলো। তবে একটা জিনিস বের করতে পারলাম যে, চিহারু দুই নম্বর ক্লাসে পড়তো। আর কোনো তথ্য তাদের মুখ থেকে বের করতে পারলাম না। দেখা যাচ্ছে, স্কুল থেকে তাদের ইতোমধ্যে এ ব্যাপারে কথা না বলার জন্য সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে।

    যদি স্কুল কর্তৃপক্ষ জানতে পারে যে, আমি তাদের নিকটবর্তী এলাকায় এরকম সন্দেহজনক প্রশ্ন করে বেড়াচ্ছি তবে বিপদে পড়ে যেতে পারি। কিন্তু আমাকে একটা ব্যাপার যেভাবেই হোক জানতে হবে।

    আমি সিদ্ধান্ত নিলাম, মেগুরো স্টেশনে গিয়ে দাঁড়াবো। প্রাইভেট স্কুল বিধায় অধিকাংশ ছাত্রীরই ট্রেন ব্যবহার করার কথা। তাছাড়া তাদের ইউনিফর্ম দেখে সহজেই তারা কোন স্কুলে পড়ে তা বের করা সম্ভব।

    ডিপার্টমেন্ট স্টোরের ভেতর একটা মেয়েকে দেখতে পেলাম। লম্বা, দীর্ঘচুলের অধিকারিণী মেয়েটা দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ম্যাগাজিন পড়ছিল। আমি তার পাশে গিয়ে দাঁড়িয়ে বললাম, “হ্যালো।”

    মেয়েটা ভ্রু কুঁচকে আমার দিকে তাকালো। তার চেহারার মধ্যে যে সন্দেহের ছাপটা ফুটে উঠেছিলো, তা সে বিন্দুমাত্র লুকানোর চেষ্টা করলো না। এর পেট থেকে কথা বের করাই যাবে না, মনে মনে ভাবলাম। আগের মতো কৌশল করে প্রশ্ন করা বাদ দিলাম।

    “আমি নিসেই অটোমোবাইল-এর ইভিপির নিখোঁজ কন্যা নিয়ে খবর সংগ্রহের চেষ্টা করছি। তোমার হাতে কি কথা বলার মতো সময় হবে?” পেশাদারী গলায় তাকে প্রশ্ন করলাম।

    লক্ষ করলাম, মেয়েটার মুখের ভাব খানিকটা পালটে গেল। তাকে দেখে মনে হলো, সে কথা বলতে আগ্রহী।

    “আপনি এখন পর্যন্ত কী কী জানতে পেরেছেন?” মেয়েটা আমাকে পাল্টা প্রশ্ন করে বসলো।

    “আসলে, তেমন কিছুই বের করতে পারিনি…পুলিশ সে সুযোগ দিচ্ছেই না।”

    “আচ্ছা।” মেয়েটা মেঝের দিকে তাকালো।

    “উম, তুমি আর চিহারু কি….”

    “আমরা এক ক্লাসেই পড়ি।”

    আমি জোরে জোরে মাথা নাড়লাম। যাক, অবশেষে ভাগ্য আমার পক্ষে এসেছে। আমার লক্ষ্যপূরণ করতে সমর্থ হয়েছি।

    “আমরা কি অন্য কোথাও গিয়ে আলাপ করতে পারি? দশমিনিট হলেই চলবে। আর হ্যাঁ, আমি এখানে কাজ করি।” তাকে আগের সেই কার্ডটা বাড়িয়ে দিলাম।

    “আপনি টিভি স্টেশনে কাজ করেন? আমার তো মনে হয় না আমি আপনাকে খুব একটা সাহায্য করতে পারবো।”

    “তাতে কোনো সমস্যা নেই। চিহারুর ব্যাপারে বলতে পারলেই হবে।”

    সে তার মোবাইলের দিকে আড়চোখে তাকালো। কয়টা বাজে, দেখে নেওয়ার পর সে তার ফ্লিপ ফোনটা খট করে বন্ধ করে মাথা নাড়লো। “আপনাকে আধাঘণ্টা সময় দিতে পারবো।”

    তাকে ধন্যবাদ জানালাম।

    ডিপার্টমেন্ট স্টোরটার পাশেই একটা ফাস্টফুডের দোকান ছিল, তাই আমরা সেখানেই ঢুকলাম। দোকানের দোতলায় জানালার পাশে গিয়ে বসলাম। লম্বাচুলো মেয়েটা একটা ঠান্ডা দই নিল। আমি আবার কফি নিলাম।

    তার দেওয়া তথ্যানুযায়ী, চিহারু নাকি সত্যিই জুরি পালিয়ে যাওয়ার সময় থেকেই স্কুলে আসা বন্ধ করে দিয়েছিল। স্কুল থেকে বলা হয়েছিল সে নাকি অসুস্থ; কিন্তু কী অসুখ, সে ব্যাপারে কোনো ব্যাখ্যা দেওয়া হয়নি।

    “আমাদের হোমরুমের শিক্ষক জানিয়েছেন যে, তার নাকি শরীর ভালো না, তাই সে ছুটি নিয়েছে। আমার মনে হয় উনিও অসুস্থতাটা আসলে কী, তা জানেন না। এমনকি ক্লাসের পরে স্টাফরুমে গিয়ে তাকে জিজ্ঞেস করেছিলাম। তিনি উত্তর দিতে পারেননি। মনে হয় না তিনি আমাকে মিথ্যা বলেছিলেন।”

    “তোমাদের শিক্ষক কি মিস কাতসুরাগির বাসায় যোগাযোগের চেষ্টা করেছেন?”

    “বোধহয় করেছেন, কিন্তু আমি নিশ্চিত, ওখান থেকে কেউ তাকে কিছুই জানায়নি। কারণ, সে যে তার বড়োবোনের নিখোঁজ হবার সংবাদে শয্যাশয়ী হয়েছে, তা বেরিয়ে পড়বে, ঠিক না? তার বাবা-মায়ের পক্ষেও বোধহয় সেটা বলা সম্ভব হয়ে ওঠেনি। মনে হচ্ছে ঐ তথ্যটা তারা সবাই লুকিয়ে রাখতে চেয়েছিলেন যে, তাদের বড়ো মেয়ে নিখোঁজ হয়ে গেছে,” মেয়েটা চামচ দিয়ে ঠান্ডা দই খুঁটিয়ে তারপর সেটা খেতে খেতে জবাব দিলো। তার গোলাপি রঙের জিহ্বাটা একটু পর পর মুখ থেকে বেরিয়ে আসছিল।

    “তুমি কি চিহারুর খুব ঘনিষ্ঠ বান্ধবী?”

    “আমার তো তাই মনে হয়। আমি বেশ কয়েকবার আড্ডা দেওয়ার জন্য তার বাসায় গিয়েছি।”

    “তাহলে এর আগে কখনো জুরির সাথে তোমার দেখা হয়েছে?”

    “না, হয়নি। আসলে চিহারুর যে একটা বড়োবোন রয়েছে সেটাই তো জানতাম না। এর আগে সে কখনো এ বিষয়ে কথা বলেনি। এমনকি ওর অন্য বান্ধবীদেরকেও জিজ্ঞেস করে দেখেছি, তারাও নাকি জানত না। আপনার কাছে ব্যাপারটা অদ্ভুত লাগছে না? তাই আমি যখন তার বড়োবোনের নিখোঁজ হবার সংবাদটা শুনলাম, কী করব ভেবেই পাচ্ছিলাম না। কিন্তু চিহারু এতটাই শক পেয়েছে যে, সে শয্যাশায়ী হয়ে গেছে। বোধহয় সে তার বড়োবোনকে প্রচণ্ড ভালোবাসে।”

    সে ব্যাপারে মন্তব্য করলাম না। আমার মাথায় অন্য একটা যুক্তি ঘোরাফেরা করছিল, কিন্তু তাকে সেটা জানানোর প্রয়োজন বোধ করলাম না। “ছুটি নেবার পর কি চিহারুর সাথে তোমার আর দেখাসাক্ষাৎ হয়েছে?”

    “না। তাকে দেখতে আসার জন্য ফোন দিয়েছিলাম। কিন্তু তার মা মানা করে দিল।”

    “মানা করে দিল? তিনি কী বলেছিলেন?”

    “তিনি বলেছিলেন সে নাকি বাসায় নেই। আরোগ্য লাভের জন্য সে নাকি দূরের একটা ফ্যাসিলিটিতে গেছে। তাই তার বাসায় গেলেও তাকে দেখতে পারবো না।”

    “ফ্যাসিলিটি…সেটা কোথায় তা বলেছিল?”

    মুখে চামচটা পুরেই সে মাথা নাড়লো। “আমি জিজ্ঞেস করিনি। তার গলা শুনেই বুঝতে পারছিলাম তিনি বিরক্ত বোধ করছেন। তাই আমিও প্রশ্ন করার আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছিলাম।”

    সায় দিলাম। মেয়েটার কথাটা বুঝতে পারছি।

    “আচ্ছা, তোমার কাছে কি চিহারুর কোনো ছবি হবে?”

    “চিহারু? এখন নেই, তবে বাসায় আছে বোধহয়।”

    “তোমার বাসা কোথায়? যদি আমি তোমার সাথে আসি, তবে তুমি আমাকে ছবিগুলো দেখতে দেবে?”

    মেয়েটার ভ্রু আবার কুঁচকে গেল। সে সন্দেহের চোখে আমার দিকে তাকিয়ে বলল, “আমার মনে হয় না অনুমতি ব্যতিত আমার সেটা করা উচিত।”

    “শুধু দেখালেই হবে। আমি তোমার কাছ থেকে সেটা ধার নেবো না, শুধু একবার চোখ বোলালেই আমার কাজ শেষ হয়ে যাবে।”

    “তাহলে দেখতে চাচ্ছেন কেন? চিহারুর সাথে তো তার বড়োবোনের নিখোঁজ হবার কোনো সম্পর্ক নেই।”

    তার কথায় যুক্তি ছিল। তাছাড়া আমাকে সে কেনই বা বিশ্বাস করবে। “আসলে আমি ভাবছি চিহারুর সাথে যোগাযোগ করবো। তার আগে আমাকে তো জানতে হবে চিহারু দেখতে কেমন। তার চেহারা-ছবি না জেনে তো আর তাকে খুঁজে বের করতে পারব না।”

    আমার নিজের কাছে যুক্তিটা বিশ্বাসযোগ্য বলে মনে হলো না, কিন্তু লম্বাচুলো মেয়েটা সেটা মেনে নিল। মাথা নেড়ে সে আমাকে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করতে বলে পকেট থেকে মোবাইলটা বের করলো।

    “কী করছো?”

    “এক সেকেন্ড।”

    সে একটা মেসেজ টাইপ করা শুরু করলো। আমি তখন বিস্বাদ কফিতে চুমুক দিলাম। মেসেজ টাইপ করা শেষ হলে সে মাথা তুলে আমাকে জিজ্ঞেস করলো, “আচ্ছা এটা কি সত্যি যে, চিহারুর বড়োবোনকে কিডন্যাপ করা হয়েছে?”

    আরেকটু হলেই বিষম খাচ্ছিলাম। “এ কথা কে বলল?”

    “সবাই নাকি গোপনে বলাবলি করছে যে, তাকে কিডন্যাপ করা হয়েছে।”

    “এই গুজবটা আবার কোথা থেকে শুরু হলো?”

    “তা তো জানি না। কিন্তু গুজবটা ছড়িয়ে গেছে। গুজবটা সত্য নাকি?”

    “পুলিশ তো এখনো এ বিষয়ে মুখ খুলেনি। অন্তত প্রেসকে কিছুই জানায়নি, সে ব্যাপারে নিশ্চিত থাকতে পারো।”

    “এটাকে না কী যেন বলে? কী যেন চুক্তি?”

    “আচ্ছা, তুমি আন্তঃমিডিয়া চুক্তির কথা বলছো? না, সেরকম কিছু হয়নি। তবে উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা এ ব্যাপারে কিছু জানতে পারেন।”

    “কিন্তু এটা যদি কিডন্যাপিং হয়েই থাকে, দশদিন পরেও যদি সে ফিরে না আসে তবে…” এটুকু বলে সে চোখ নামিয়ে ফেলল। “বাদ দেন। ভয়ঙ্কর কিছু বলে ফেলার পর যদি সেটা সত্যি হয়ে যায়, তবে আমি সেটা সহ্য করতে পারবো না।”

    সে কী বলতে চাইছে, আমি তা সাথে সাথে বুঝতে পারলাম। ওরকম কিছু বাস্তব জীবনে ঘটার কথা কেউ ভাবতেও পারে না।

    তার মোবাইল বেজে উঠল।

    “বাহ, খুব দ্রুত পেয়ে গেলাম,” মেয়েটা বলে উঠল।

    “কী?”

    “চিহারুর ছবি। আমার এক বান্ধবীকে ছবিটা পাঠাতে বলেছিলাম। তার একটা স্ক্যানার না কী যেন আছে। তাই সে স্ক্যান করে ছবিটা পাঠিয়ে দিয়েছে।”

    “আচ্ছা…” সত্যি, আমি অনেক অবাক হয়ে গিয়েছিলাম। হাইস্কুলের মেয়েরা এরকম যন্ত্রের ব্যবহার খুবই দক্ষভাবে করতে পারে। সাধারণ কোনো ব্যবসায়ী এসব ক্ষেত্রে তাদের টিকিটাও ছুঁতে পারবে না।

    “এই যে, নেন।” সে আমার দিকে মোবাইলটা বাড়িয়ে দিল। কয়েক ইঞ্চি লম্বা এলসিডি ডিসপ্লেতে দেখতে পেলাম, একটা মেয়ে আমার দিকে তাকিয়ে হাসছে।

    আগেই থেকেই ব্যাপারটাতে নিশ্চিত ছিলাম, তারপরেও যে ধাক্কাটা খেলাম তা কিন্তু কম ছিল না। মনের ভেতরে আমি বারবার আমার নিজেরই হাইপোথেসিসটাকে মিথ্যা বলে প্রমাণ করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু ডিসপ্লের ছবিটা দেখার পর সব খাপে খাপে মিলে যাওয়া শুরু করলো।

    ডিসপ্লেটাতে জুরিকে দেখা যাচ্ছে। হ্যাঁ, সেই জুরি, যে কিনা আমার খেলার সঙ্গিনী হিসেবে কদিন আগেও আমার পাশে থেকেছে।

    .

    কোম্পানিতে ফিরে যাওয়ার পরেও কাজে মন বসাতে পারলাম না। আমার আর কাজ করার মতো অবস্থা ছিল না। মাথার অগোছালো চিন্তাগুলো গোছাতেই সম্পূর্ণ ব্যস্ত ছিলাম।

    আমার থিওরিটাই ঠিক ছিল। আমার সামনে যে হাজির হয়েছিল সে জুরি কাতসুরাগি নয়, বরং তার ছোটোবোন চিহারু। চিহারু ঘর থেকে পালিয়ে গিয়েছিল।

    এরপর থেকে বাকিটা আমার কাছে ধোঁয়াশা লাগছে। সে নিজেকে কেন জুরি বলে পরিচয় দিয়েছিল? এমনি খেয়ালের বশে? যদি তাই হয়, তবে এত বড়ো বিপজ্জনক কিডন্যাপিং খেলার আগে সত্যটা বলে ফেললেই হতো না?

    কাতসুরাগিদের প্রতিক্রিয়াতেও অনেক অদ্ভুত জিনিস খুঁজে পেয়েছিলাম। তাদের বাবাকে দিয়েই শুরু করি। তারা ফ্যাক্সে প্রথম চিঠিটা পাওয়ার সাথে সাথেই বোধহয় নিশ্চিতভাবে বুঝে ফেলেছিল যে, চিহারুকে কিডন্যাপ করা হয়েছে, জুরিকে নয়। তারা ভুলটা কেন ধরিয়ে দেয়নি? কারণ কালপ্রিটদের হাতে যেই বোনই থাকুক না কেন, দিনশেষে দুজনেই তাদের আদরের কন্যা—এই কারণে? নাকি তারা কিডন্যাপারদের অযথা ক্ষেপিয়ে তুলতে চায়নি?

    তবে একটা জিনিস আমার কাছে পরিষ্কার ছিল। নকল জুরি, মানে চিহারু কাতসুরাগি বাসায় ফিরে গেছে। সে বাসা থেকে হারিয়ে যায়নি। কাতসুরাগিদের পরিবার সবাইকে বলছিল যে, চিহারু আরোগ্য লাভ করার জন্য বাইরের কোথাও রয়েছে। কিন্তু বাস্তবে সে তাদের ছাদের নিচেই রয়েছে।

    কেবল আসল জুরিই নিখোঁজ হয়েছে। আর সেই জুরির সাথে আমার একবারও দেখা হয়নি।

    জুরি কাতসুরাগি হারিয়ে কোথায় চলে গেল?

    পূর্বের লম্বাচুলো মেয়েটার বলা কথাগুলো মনে পড়ে গেল। মাথা ঝাঁকালাম। যাই ঘটুক, সেটা আমার সমস্যা নয়। আমি চিহারুর সাথে ছিলাম।

    .

    আরো দশদিন কেটে গেল। আমার মনের অস্থিরতা তখনো দূর হয়নি। খবরের কাগজ কিংবা রাতের খবরেও জুরি কাতসুরাগির ব্যাপারে নতুন করে কোনো তথ্য পাওয়া সম্ভব হয়নি। সত্যি বলতে কী, মনে মনে আমি তাই চাইছিলাম। যদি পারতাম, তাহলে ঝড়ের বেগে কাতসুরাগিদের বাসায় ঢুকে পড়ে চিহারুকে দেখার জন্য চিৎকার- চেঁচামেচি করতাম। কাতসুতোশি কাতসুরাগির কলার শক্ত করে ধরে ব্যাটা কী ফন্দি আঁটছে, সে ব্যাপারে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করতাম।

    আজকাল ভালো ঘুমও হচ্ছিল না। সকাল হয়ে গেছে, কিন্তু তখনো আমি বিছানার চাদরের ওপর এপাশ-ওপাশ করছিলাম। ঘুম থেকে উঠে পড়তে হবে, কিন্তু মাথাটা প্রচণ্ড ভারি লাগতে লাগল। সিদ্ধান্ত নিলাম, আজকের দিনটা ছুটি নেব।

    কিন্তু ঐ অবস্থার মধ্যেও আমার ফোনটা বাজতে শুরু করলো। নির্দয়ের মতো ফোনটা বেজেই যেতে লাগল। তাই আর থাকতে না পেরে কোনোমতে বিছানা থেকে উঠে রিসিভারটা ধরলাম।

    “হ্যালো।”

    “সাকুমা? আমি কোজুকা বলছি।”

    “হুম। কিছু হয়েছে নাকি?”

    “তোমার ঘুমঘুম স্বর শুনেই বুঝতে পারছি, এখনো সকালের খবর দেখার সৌভাগ্য হয়নি তোমার। টিভিটা চালু করে দেখে নাও। গোটা পরিস্থিতি বোঝার পর আমাকে ফোন দিও।” এটুকু বলে সে ফোন কেটে দিল।

    মাথা চুলকাতে চুলকাতে টিভিটা চালু করলাম। সকালের নিউজ প্রোগ্রাম চলতে শুরু করলো। সংবাদপাঠক কী যেন বলল। জুরি শব্দটা শোনার পরেই আমার ঘুমটা ভেঙে গেল। ভলিউম বাড়িয়ে দিলাম।

    “আজ সকালে ইয়োকোসুকা থেকে একটা যুবতি মেয়ের লাশ উদ্ধার হয়েছে। আঙুলের ছাপ ও অন্যান্য প্রমাণাদি থেকে ধরে নেওয়া হচ্ছে যে সে জুরি কাতসুরাগি, নিসেই অটোর এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট কাতসুতোশি কাতসুরাগির বড়োমেয়ে। তাকে বিশদিন ধরে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না…”

    1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11 12 13 14 15 16 17 18 19 20 21
    Share. Facebook Twitter Pinterest LinkedIn Tumblr Email Reddit VKontakte Telegram WhatsApp Copy Link
    Previous Articleভবিষ্য পুরাণ – অনুবাদ : স্বামী পরমাত্মানন্দনাথ ভৈরব (গিরি)
    Next Article ম্যালিস – কিয়েগো হিগাশিনো

    Related Articles

    কেইগো হিগাশিনো

    স্যালভেশন অফ আ সেইন্ট – কিয়েগো হিগাশিনো

    August 1, 2025
    কেইগো হিগাশিনো

    দ্য ডিভোশন অব সাসপেক্ট এক্স – কিয়েগো হিগাশিনো

    August 1, 2025
    কেইগো হিগাশিনো

    দ্য রেড ফিঙ্গার – কেইগো হিগাশিনো

    August 1, 2025
    কেইগো হিগাশিনো

    দ্য মিরাকলস অব দ্য নামিয়া জেনারেল স্টোর – কেইগো হিগাশিনো

    August 1, 2025
    কেইগো হিগাশিনো

    নিউকামার – কেইগো হিগাশিনো

    August 1, 2025
    কেইগো হিগাশিনো

    ম্যালিস – কিয়েগো হিগাশিনো

    August 1, 2025
    Add A Comment
    Leave A Reply Cancel Reply

    Demo
    Most Popular

    রবিনসন ক্রুসো – ড্যানিয়েল ডিফো

    August 19, 2025

    অনুরাধা

    January 4, 2025

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025
    Demo
    Latest Reviews

    বাংলা গল্প শুনতে ভালোবাসেন? এক পাতার বাংলা গল্পের সাথে হারিয়ে যান গল্পের যাদুতে।  আপনার জন্য নিয়ে এসেছে সেরা কাহিনিগুলি, যা আপনার মন ছুঁয়ে যাবে। সহজ ভাষায় এবং চিত্তাকর্ষক উপস্থাপনায়, এই গল্পগুলি আপনাকে এক নতুন অভিজ্ঞতা দেবে। এখানে পাবেন নিত্যনতুন কাহিনির সম্ভার, যা আপনাকে বিনোদিত করবে এবং অনুপ্রাণিত করবে।  শেয়ার করুন এবং বন্ধুদের জানাতে ভুলবেন না।

    Top Posts

    রবিনসন ক্রুসো – ড্যানিয়েল ডিফো

    August 19, 2025

    অনুরাধা

    January 4, 2025

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025
    Our Picks

    রবিনসন ক্রুসো – ড্যানিয়েল ডিফো

    August 19, 2025

    দ্য দা ভিঞ্চি কোড – ড্যান ব্রাউন

    August 19, 2025

    এঞ্জেলস এন্ড ডেমনস – ড্যান ব্রাউন

    August 19, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram Pinterest
    • Home
    • Disclaimer
    • Privacy Policy
    • DMCA
    • Contact us
    © 2025 Ek Pata Golpo. Designed by Webliance Pvt Ltd.

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.

    Sign In or Register

    Welcome Back!

    Login below or Register Now.

    Lost password?

    Register Now!

    Already registered? Login.

    A password will be e-mailed to you.