Close Menu
এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    What's Hot

    রবিনসন ক্রুসো – ড্যানিয়েল ডিফো

    August 19, 2025

    দ্য দা ভিঞ্চি কোড – ড্যান ব্রাউন

    August 19, 2025

    এঞ্জেলস এন্ড ডেমনস – ড্যান ব্রাউন

    August 19, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    • 📙
    • লেখক
    • শ্রেণী
      • ছোটগল্প
      • ভৌতিক গল্প
      • প্রবন্ধ
      • উপন্যাস
      • রূপকথা
      • প্রেমকাহিনী
      • রহস্যগল্প
      • হাস্যকৌতুক
      • আত্মজীবনী
      • ঐতিহাসিক
      • নাটক
      • নারী বিষয়ক কাহিনী
      • ভ্রমণকাহিনী
      • শিশু সাহিত্য
      • সামাজিক গল্প
      • স্মৃতিকথা
    • কবিতা
    • 🔖
    • লিখুন
    • চলিতভাষার
    • শীর্ষলেখক
      • শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
      • মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়
      • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
      • বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • সত্যজিৎ রায়
      • সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
      • জীবনানন্দ দাশ
      • আশাপূর্ণা দেবী
      • কাজী নজরুল ইসলাম
      • জসীম উদ্দীন
      • তসলিমা নাসরিন
      • তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
      • মহাশ্বেতা দেবী
      • মাইকেল মধুসূদন দত্ত
      • মৈত্রেয়ী দেবী
      • লীলা মজুমদার
      • শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
      • সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়
      • সমরেশ মজুমদার
      • হুমায়ুন আহমেদ
    Subscribe
    সাইন ইন
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)

    দ্য নেম অব দ্য গেম ইজ অ্যা কিডন্যাপিং – কেইগো হিগাশিনো

    কেইগো হিগাশিনো এক পাতা গল্প310 Mins Read0

    অ্যা কিডন্যাপিং – ২০

    বিশ

    সারারাত ধরে কাতসুরাগিদের এস্টেট থেকে গাড়িতে করে পনেরো মিনিট দূরের একটা বৌদ্ধমন্দিরে জুরি কাতসুরাগির জন্য শ্রদ্ধানুষ্ঠান উদযাপন করা হলো। সাইবারপ্ল্যান থেকে আমার মতো অনেকেই তাদের সাহায্য করার জন্য ও শ্রদ্ধা নিবেদন করে ধূপকাঠি জ্বালানোর জন্য এসেছিল। স্বাভাবিকভাবেই নিসেই অটোর লোকজন সেখানে আসা মানুষজনের সাথে অভিবাদন, ভিআইপিদের সাথে বাক্যবিনিময় ইত্যাদি গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলোর দায়িত্বে ছিল। আমরা কেবল রাস্তার গাইডপোস্টের মতো কাজ করছিলাম।

    নিসেই অটোর ইভিপির কন্যার শ্রদ্ধানুষ্ঠানের কারণে গোটা মন্দিরে অতিথিদের ভিড় লেগে গিয়েছিল। ইতোমধ্যে ধূপকাঠি জ্বালানোর পাঁচটা লাইন বানানো হয়েছে। তা সত্ত্বেও রাস্তায় অসংখ্য মানুষ ভিড় করছিল। আমরা যারা সাহায্য করতে এসেছিলাম তাদের অনেকেই ফিসফিস করতে লাগল, আজই যদি এমন হয় তবে পরের দিন অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার সময় কী হবে কে জানে।

    অবশেষে বিরতি জন্য হাঁফ ফেলার সুযোগ মিলল। আমরা পেছনের দিকে একটা রুমে বিশ্রাম নিতে গেলাম। সেখানে অঢেল পরিমাণে সুশি আর বিয়ার রাখা ছিল। কিন্তু চাইলেও সেসব গপাগপ করে খেতে পারবো না। কোজুকা আমাদের, মানে সাইবারপ্ল্যানের কর্মচারীদের কেবল একগ্লাস বিয়ার নিয়েই সন্তুষ্ট থাকার নির্দেশনা দিলেন।

    “মিস্টার কাতসুরাগি বেশ বিমর্ষ হয়ে আছেন। অবশ্য সেটাই স্বাভাবিক, সুগিমোতো ফিসফিস করে বলল। “ধূপকাঠি জ্বালানোর সময় আমি তার দিকে আড়চোখে তাকিয়েছিলাম। এই প্রথম তাকে এতটা বিষণ্ন হতে দেখেছি। সবসময় তিনি আত্মবিশ্বাসের সাথে মাথা উঁচু করে চলাফেরা করেন তো, তাই মানতে কষ্ট হচ্ছিল।”

    “তাকে দোষ দেওয়া যায় না। তার মেয়ে মারা গেছে,” আরেক স্টাফ উত্তর দিলো। “তারওপর সেটা সাধারণ মৃত্যুও ছিল না।”

    “আমার মনে হয় তিনি এরকম কিছু ঘটার জন্যই অপেক্ষা করছিলেন। কিন্তু বাস্তবে এরকম ঘটতে দেখলে প্রচণ্ড শক পাওয়াই স্বাভাবিক।”

    “অবশ্যই স্বাভাবিক। সত্যি বলতে কী, আমিও ধরে নিয়েছিলাম যে সে খুন হয়েছে। কিন্তু নিউজ দেখার পর আমিও স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিলাম।”

    “খুব জানতে ইচ্ছা করছে কালপ্রিট কোন ধরনের মানুষ ছিল।”

    “আমারও। তারা কি জানতো যে তারা নিসেই অটোর ইভিপির মেয়েকে হত্যা করছে?”

    “কে জানে? কেউ তো আমাদের সাথে কিছুই শেয়ার করছে না,” সুগিমোতো জবাব দিলো। আশেপাশে সতর্কের দৃষ্টিতে তাকিয়ে মুখের সামনে হাত রেখে সে বলল, “শুনেছি যে মেয়েটা মারা গেছে, মানে জুরি কাতসুরাগি, সে নাকি তার বর্তমান স্ত্রীর আপন মেয়ে নয়।’

    “হ্যাঁ, হ্যাঁ, আমিও তাই শুনেছি।”

    “আরেকটা কথা শুনেছেন? সে নাকি প্রথম স্ত্রীর মেয়েও না।”

    “বলেন কী? তাহলে সে কার মেয়ে?”

    “তার উপপত্নীর। তিনি নাকি তাকে পেলেপুষে বড়ো করেছেন।”

    “বাহ! মিস্টার কাতসুরাগির মতো মানুষও এরকম করতে পারে!”

    “সেটা নাহয় বুঝলাম। তবে তার স্ত্রীকে দেখে কিন্তু ততটা বিমর্ষ মনে হচ্ছে না। তার স্বামীর পাপের চিহ্নটা মুছে গেল, তাই সে বোধহয় মনে মনে খুশিই হয়েছে।”

    সুগিমোতোর কথায় আমার আশেপাশের সবাই চাপা স্বরে হেসে ফেলল। ব্যাপারটা কোজুকার চোখ এড়ালো না।

    “এসব ফালতু কথা বলা চলবে না। এখানে কিন্তু আরো লোকজন রয়েছে।”

    ঝাড়ি খেয়ে সুগিমোতো আর অন্যান্য স্টাফরা মাথা নামিয়ে ফেলল।

    আমি কিন্তু তাদের কথাবার্তা শুনে বেশ অবাকই হয়েছিলাম। এতবড়ো গোপন কথাটা সম্পর্কে তারা জেনে ফেলেছে! আমি মনে করেছিলাম, ব্যাপারটা কাতসুরাগি পরিবারের সবচেয়ে গোপনীয় বিষয় ছিল। আপাতত স্পন্সর হারানোর ভয়ে কেউ প্রকাশ্যে বিষয়টা বলাবলি করছে না। তবে সুগিমোতোর মতো মানুষ যখন এ ব্যাপারে জানতে পেরেছে, তারমানে কথাটা কোনো এক জায়গা থেকে ফাঁস তো হয়েছেই। এখন কাতসুরাগি হাজার চেষ্টা করলেও কথাগুলো ধামাচাপা দিতে পারবে না।

    তবে সেটা নাহয় বাদ দিলাম। সুগিমোতোর শেষ কথাটাতে আমি আটকে গিয়েছিলাম। কথাটা কিন্তু সে ঠিকই বলেছে। আসলেই বাইরের যে কেউ কাতসুরাগিদের দেখলে মনে করবে, জুরি মারা যাওয়ার সাথে সাথে তাদের জটিল সমস্যার সমাধান হয়ে গেছে। অবশ্য কাতসুরাগিরা ব্যাপারটা নিয়ে কী ভাবছে তা বলা মুশকিল।

    চিহারু, মানে নকল জুরি, অনুষ্ঠানে অংশ নেয়নি। কেন, তার কোনো ব্যাখ্যা পাওয়া যায়নি। কিন্তু তারা হয়তো আত্মীয়স্বজন আর কাছের বন্ধুবান্ধবদের বলেছে যে, সে এখনো শক কাটিয়ে উঠতে পারেনি। অবশ্য সে স্কুলও ফাঁকি দিচ্ছে। তাই তাকে কোনো ব্যাখ্যা দিতে হচ্ছে না।

    তবে আমার কিন্তু তা মনে হয় না। আমার ধারণা মতে, সে ভিন্ন কোনো কারণে অনুষ্ঠানে অংশ নেয়নি। সোজা কথায়, সে আমার মুখোমুখি হতে চায়নি। আমার কথাবার্তায় সে ভড়কে যেতে পারে ভেবেই সে অনুষ্ঠানে আসেনি।

    কাতসুতোশি কাতসুরাগি, না, গোটা কাতসুরাগি পরিবারই কিছু একটা লুকাচ্ছে। আর গোপনে কোনো ফন্দি আঁটছে। সে বিষয়ে আমার কোনো সন্দেহ নেই।

    জুরি কাতসুরাগির দেহাবশেষ মিউরা পেনিনসুলার এক টিলার ওপর পাওয়া গেছে। একজন স্থানীয় নাকি তার লাশ সেখানে মাটিচাপা অবস্থায় খুঁজে পেয়েছেন। লাশটা অনেকখানি পঁচে যাওয়ার পরেও সেটার আংশিক আঙুলের ছাপ, ডেন্টাল রেকর্ড আরও কয়েকটা জিনিস পরীক্ষা করে নিশ্চিত হওয়া গেছে যে, সেই হচ্ছে নিখোঁজ জুরি।

    তার হৃদপিণ্ডে ধারালো কোনো বস্তু দিয়ে আঘাত করার নিদর্শন পাওয়া গেছে। আঘাতের ফলে প্রচুর রক্তক্ষরণে মৃত্যু হয়েছে। তার গায়ের জামার অনেকখানি খুলে ফেলা হয়েছিল। আর তার ব্যবহার্য কোনো জিনিস তারা খুঁজে পায়নি।

    যেখানে তারা ওর লাশটা খুঁজে পেয়েছিল, সে জায়গাটার কথা মাথা থেকে সরাতে পারলাম না। ওটা কি সেই জায়গাটাই ছিল, যেখানে নিয়ে যাওয়ার জন্য জুরি, না, চিহারু আমাকে অনুরোধ করেছিল? সেই উঁচু টিলাটা, যেখানে অপূর্ব তারকারাজি উপভোগ করা যায়? খবরে জায়গাটা কোথায় তা নির্দিষ্ট করে বলেনি, তবে আমার মনে হচ্ছে সেটা ঐ জায়গা না হয়ে পারে না।

    আচ্ছা, যদি তাই-ই হয়, তবে জুরির লাশকে কেন ওখানে মাটিচাপা দেওয়া হয়েছিল? আর চিহারু কেনই বা আমাকে ওখানে নিয়ে গিয়েছিল?

    হাতের বিয়ারটা শেষ হতেই টের পেলাম, কে জানি আমার দিকে তাকিয়ে আছে। পাশে তাকিয়ে দেখি দরজার সামনে কাতসুতশি কাতসুরাগি দাঁড়িয়ে আছে। তিনি একদৃষ্টিতে আমার দিকে তাকিয়ে আছেন।

    আমি তার দিকে তাকাতেই তিনি চোখ সরিয়ে ফেললেন। তারপর এলেন ঘরের ভেতরে। সবাই তাকে দেখতে পেয়ে উঠে দাঁড়ালো।

    “বসুন বসুন। এটাকে নিজের বাসার মতোই মনে করুন। প্লিজ।” তারপর সংযতভাবে গোটা রুমের সবার দিকে একবার তাকালেন। তারপর মাথা নুইয়ে বললেন, “আমার মেয়ের জন্য এতকিছু করার জন্য আপনাদের সবাইকে ধন্যবাদ। এরকম ব্যস্ততার মধ্যেও আপনাদের বিরক্ত করার জন্য আমি অত্যন্ত দুঃখিত। পুলিশ আমাকে আশ্বাস দিয়েছে তারা যেভাবেই হোক কালপ্রিটকে খুঁজে বের করবে। আশা করি, কালপ্রিটকে ধরতে খুব বেশিদিন লাগবে না। তবে একটা কথা জানিয়ে রাখছি। আমার মেয়ের ব্যাপারটা সম্পূর্ণই কাতসুরাগি পরিবারের একান্ত ব্যক্তিগত ব্যাপার। এর কারণে নিসেই অটোর কাজ বন্ধ হোক আমি চাই না। তাই আমি আশা করি, আপনারা সবাই এ কথাটা মাথায় রেখে পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ চালাতে থাকবেন। আমি অতি শীঘ্রই আপনাদের সাথে কাজে যোগ দেবো। আজকের জন্য আপনাদের সবাইকে ধন্যবাদ।”

    কাতসুতোশি কাতসুরাগি আরেকবার মাথা নুইয়ে সবাইকে সম্মান জানালেন।

    সবার মতো আমিও মাথা নোয়াতে নোয়াতে কাতসুতোশির পূর্বের সেই একদৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকার কথা ভাবলাম। তিনি আমার দিক বরাবর তাকিয়ে ছিলেন। না, একদম গ্যারান্টি দিয়ে বলতে পারি, তিনি আমার দিকেই তাকিয়ে ছিলেন।

    .

    সে রাতে ইন্টারনেটে ঘোরাফেরা করতে করতে একটা খবরের শিরোনাম দেখে আরেকটু হলেই বিষম খাচ্ছিলাম।

    “জুরি কাতসুরাগিকে কিডন্যাপ করা হয়েছিল,” শিরোনামটা ছিল এই। আমি কাঁপাকাঁপা হাতে সেটাতে দুইবার ক্লিক করলাম।

    .

    পুলিশের মুখপাত্রের দেওয়া তথ্যানুযায়ী, নিসেই অটোমোবাইল-এর এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট, কাতসুতোশি কাতসুরাগির বড়ো মেয়ে জুরি কাতসুরাগিকে, যাকে কদিন আগেই মৃত অবস্থায় পাওয়া গেছে, তাকে নাকি কিডন্যাপ করা হয়েছিল। সে নিখোঁজ হবার অল্প সময়ের মধ্যেই কালপ্রিট তার পরিবারের সাথে যোগাযোগ করেছিলো। মিস্টার কাতসুরাগি তার মেয়ের ভালোর কথা চিন্তা করে তখন পুলিশের সাথে যোগাযোগ করেননি। মুক্তিপণ মেটানোর সাথে সাথে জোরেসোরে পুলিশি তদন্ত শুরু হয়েছিল, তারপরেও কেবলমাত্র জুরির ভালোর জন্যই সেসব তথ্য জনগণের সামনে আনা হয়নি…

    .

    অনেকক্ষণ ধরে হতবুদ্ধি অবস্থায় কম্পিউটারের পর্দার দিকে তাকিয়ে রইলাম। কাতসুতোশি কাতসুরাগি আসলেই পুলিশের সাথে যোগাযোগ করেনি। তারমানে আমার প্রতিপক্ষ হিসেবে পুলিশকে ধরে নিয়ে এত লুকোচুরি খেললাম, টাকা অদলবদল করলাম—সবকিছুই অর্থহীন ছিল।

    কাতসুরাগি কেন পুলিশের সাথে যোগাযোগ করেনি? তার মেয়ের ভালোর জন্য করেননি, নাহ, সেটা মানতে পারছি না। জুরি ও চিহারুর জায়গা অদলবদল, জুরি খুন হয়ে যাওয়া—সবই এক সুতোয় গাঁথা।

    আমার মনের ভেতর এখনো কাতসুরাগির সেই তীক্ষ্ণদৃষ্টি খোদাই হয়ে আছে। সেটা বোধহয় দূর হবে না।

    ঐ মানুষটা জানে যে, আমিই সেই কিডন্যাপার। অবশ্যই, সে চিহারুর কাছ থেকে সব শুনে নিয়েছে। এখন তার লক্ষ্য কী?

    পরের দিন আসতেই হাজার হাজার রিপোর্টে মিডিয়া ভেসে গেল। সিপিটি মালিকদের ক্লাব ওয়েবসাইটের বুলেটিন বোর্ড, মেট্রোপলিটন এক্সপ্রেসওয়ের টাকা অদলবদল—মোটামুটি আমি যা যা করেছি, সবই আলোর মুখ দেখলো। নিসেই মুকোজিমা শাখার ম্যানেজারকে প্রায় প্রত্যেকটা চ্যানেলেই ইন্টারভিউ দিয়ে বেড়াতে দেখা গেল। জুরি কাতসুরাগি কিডন্যাপিং আর খুনের কেসটা হয়ে গেল খুবই জনপ্রিয় টপিক।

    “অসাধারণ মানুষ।” আমার এক সহকর্মী তার আঙুলের গাঁট দিয়ে তার হাতের স্পোর্টস ডেইলিটাতে টোকা দিল। “তিনশ মিলিয়ন ইয়েন। এই যুগেও টাকাটা কিন্তু কম নয়। খালি কয়েকটা ফোন করেই সে বুদ্ধিমানের মতো টাকাটা বাগিয়ে নিল। এই কালপ্রিটের মাথাটা বেশ পরিষ্কার।”

    “নাহ, ব্যাটা সৌভাগ্যবান ছিল,” আমার পাশে বসে থাকা সহকর্মী বলল। “যদি পুলিশ শুরু থেকেই কেসটায় জড়িত থাকত, তবে এত সহজে সে পার পেয়ে যেত না। তারা দাবি করছে, তাদের যদি আগে থেকে সবকিছু জানানো হতো তবে ঘটনাটার ভিন্নভাবে সমাপ্তি ঘটত।”

    “তারা তো ওসব মুখস্থ বুলি ছাড়বেই। ওরা তো আর জনগণের সামনে বলতে পারবে না, ‘আমরা থাকলেও টাকাটা কালপ্রিটের হাতেই চলে যেত’। বাজি ধরে বলতে পারি, ওদের আগে থেকে জানানো হয়নি বলে ওরা এখন খানিকটা নিশ্চিন্ত বোধ

    করছে। কল্পনা করে দেখুন, ওদের আগে থেকে জানানো হলো, আর ওদের নাকের ডগা দিয়ে টাকাটা কেউ নিয়ে গেল। তখন? তাদের কি অবস্থা হবে ভেবে দেখেছেন? বরং কালপ্রিট যতই বুদ্ধির খেলা দেখাক, এখন পুলিশকে সেটার জন্য আর লজ্জা পেতে হচ্ছে না। তাছাড়া জিম্মিতে থাকা মেয়েটা মারাই গেছে, তাই ওসব নিয়ে ভাবার মতো সময় তাদের হাতে নেই।”

    “একটু বেশি জোরে বলে ফেলছেন।”

    দুজনে একে অপরের দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসলো।

    ফোনের রিসিভারটা হাতে নিলাম। আমার মোবাইলে সেভ করা একটা নম্বর দেখে একটা ফোন করলাম। কর্মক্ষেত্রের নম্বর হওয়ায় সাথে সাথে অপর পাশ ফোন ধরলো।

    “স্থানীয় খবর সেকশন থেকে বলছি,” একটা পরিচিত গলা বলে উঠল।

    “হ্যালো, আমি সাকুমা বলছি।”

    “আহ, মিস্টার সাকুমা। আমি ইউগুচি। সেদিন বিল মিটিয়ে দেবার জন্য ধন্যবাদ।”

    “কেসটার ব্যাপারে নতুন কিছু জানতে পারলে?”

    “জুরি কাতসুরাগির ব্যাপারে জানতে চাইছেন,” ইউগুচির গলার উৎফুল্লতা খানিকটা কমে গেল। “পরিস্থিতি অনেক খারাপ দিকে মোড় নিয়েছে, দেখেছেন নিশ্চয়ই? আমাদের সাক্ষাৎ হবার কিছুক্ষণ পরেই মেয়েটার মৃতদেহটা আবিষ্কার হয়েছে বলে আমার মনে হয়। অবশ্য আমি আগেই ধরে নিয়েছিলাম যে, মেয়েটা মারা গেছে। আজকাল আমার অফিসের লোকজন রাতের পর রাত নির্ঘুম থেকে কেসটার ব্যাপারে জানার জন্য কাজ করেই যাচ্ছে।”

    “কাজের ফলাফল?”

    “জানি না। কাতসুরাগিরা একদমই মুখ খুলছে না, তাই রিপোর্ট বাদে তাদের কাছ থেকে আর কিছুই বের করা সম্ভব হয়নি। তবে পরে জানার চেষ্টা করবো।”

    “তোমার ওপর ভরসা রাখছি। আর হ্যাঁ, আচমকা অনুরোধ করার জন্য দুঃখিত, কিন্তু আজকে রাতে আমার সাথে দেখা করতে পারবে?”

    “উম, অনুরোধটা আসলেই বেশ আচমকা হয়ে গেল।”

    “আমি খুব শীঘ্রই মিস্টার কাতসুরাগির সাথে দেখা করতে যাচ্ছি। তাই হাতে কিছু তথ্য রাখা ভালো।”

    “বুঝতে পেরেছি। আমি চেষ্টা করে দেখব। আগেরবারের জায়গাটাতে দেখা করলে চলবে? তাহলে সাতটার দিকে ওখানে হাজির হতে পারবো।”

    “ঠিক আছে। সাতটায় দেখা হচ্ছে তাহলে।”

    রিসিভারটা নামিয়ে রাখলাম। ফোনটায় যা যা মাত্র বললাম, তা ভালোমতো মনে করার চেষ্টা করলাম। এর ফলে কি আমার পতন হবে? খুব বেশি বলে ফেললাম নাতো? আমার কথাবার্তা তার কাছে অস্বাভাবিক লাগেনিতো?

    নিঃশব্দে মাথা ঝাঁকিয়ে সেসব চিন্তা মাথা থেকে দূর করার চেষ্টা করলাম। এখন এসব চিন্তা করে লাভ নেই।

    এখন সাতটা বাজা পর্যন্ত কী করে সময় কাটানো যায় তা ভাবতে লাগলাম। এর মধ্যে কোনোমতেই আমি কাজে মনোযোগ দিতে পারবো না।

    .

    ক্যাফেতে ঢুকেই দেখলাম, ইউগুচি জানালার পাশে একটা সিট নিয়ে বসে আছে। আমাকে দেখে সে হাত নাড়লো।

    “এত ব্যস্ততার মধ্যেও তোমাকে বিরক্ত করার জন্য দুঃখিত।”

    “না না, বরং আপনার অবস্থা আমাদের চেয়ে খারাপ যাচ্ছে।”

    একটা আইসড কফি অর্ডার দিয়ে তার দিকে এগিয়ে বসলাম। “এখন, সে ব্যাপারে কিছু জানতে পারলে?”

    “হ্যাঁ। আমরা এখন পর্যন্ত যা কিছু জানতে পেরেছি সবই আপনাকে খুলে বলছি। প্লিজ কাউকে এসব বলবেন না। আমরা নিসেই অটোর বা পুলিশের শিট লিস্টের অন্তর্ভূক্ত হতে চাই না।”

    “অবশ্যই। তোমার কি মনে হয় আমি কখনো তোমাকে বিপদে ফেলব মিস্টার ইউগুচি?”

    “তা তো অবশ্যই না, মিস্টার সাকুমা। আপনাকে বিশ্বাস করা যায়…” ইউগুচি একটা পকেট নোটবুক বের করলো। “সোজা কাজের কথা চলে যাচ্ছি, পুলিশ এখনো সন্দেহ করার মতো কাউকে খুঁজে পায়নি। তারা এখন জুরির রিলেশন নিয়ে ঘাঁটাঘাঁটি করছে, কিন্তু কেসের সাথে জড়ানোর মতো কাউকে এখনো খুঁজে পাওয়া যায়নি।”

    “পুলিশ কি ভাবছে যে, মেয়েটার পরিচিত কেউই তাকে কিডন্যাপ করেছিল?”

    “হুম, আমাদের ভিক্টিম কিন্তু একজন প্রাপ্তবয়স্ক, কোনো অল্পবয়সি বাচ্চা নয়। তারা মনে করছে যে, অচেনা কাউকে তো সে আর অনুসরণ করবে না। হ্যাঁ, তাকে জোর করে তুলে নেওয়া হয়েছিল এই সম্ভাবনাটাও থেকে যাচ্ছে। কিন্তু এ থেকে বোঝা যায় কালপ্রিট আগে থেকেই তাকে টার্গেট করেছিল। তাই পুলিশ ধারণা করছে, কালপ্রিটের সাথে জুরি কিংবা কাতসুরাগি পরিবারের কোনো ধরনের সম্পর্ক রয়েছে।”

    “কিন্তু আমরা তো কাতসুরাগি পরিবারের কথা বলছি। যে-কোনো বড়োলোকের মেয়ে ধরে নিয়ে মুক্তিপণ চাওয়ার উদ্দেশ্যেও তো তারা কিডন্যাপিং করতে পারে?”

    “হুম, ঐ সম্ভাবনার কথাও বাদ দেওয়া যায় না, তবে ওদের কাছে সেটা খুব একটা বিশ্বাসযোগ্য মনে হচ্ছে না।”

    “কে জানে কেন।”

    “কারণ…” ইউগুচি আশেপাশে তাকিয়ে গলা নামিয়ে বলল, “জিম্মিকে হত্যা করা হয়েছে। কাতসুরাগিদের সাথে কোনো ধরনের সম্পর্ক নেই, এমন মানুষ টাকা হাতে পাওয়ার পর তাদের কাছে জুরিকে ফিরিয়ে দিত। এর ব্যতিক্রম হতো যদি ভুলক্রমে সে জুরিকে তার আসল চেহারা দেখিয়ে থাকে। কিন্তু তা তো ঘটেনি। কালপ্রিটের মনে জুরিকে অক্ষতদেহে ফেরানোর কোনো মতলব ছিল না।”

    তার কথাটা বুঝতে পারলাম। তার ওপর জুরির দেহাবশেষ পরীক্ষা করে দেখা গেছে যে, তাকে অন্তত দুসপ্তাহ আগে হত্যা করে হয়েছে। সোজা ভাষায়, তাকে কিডন্যাপ করার কদিন পরেই খুন করা হয়েছে

    “ঠান্ডামাথায় সবকিছু করা হয়েছে। তাই তদন্তকারীরা ভাবছে এই কিডন্যাপিং টাকার জন্য নয়, বরং কোনো ধরনের শত্রুতা থেকে করা হয়েছে।”

    “শত্ৰুতা…”

    কথাগুলো শোনার পর মাথায় কিছুই কাজ করছিল না। আমি আসলেই কাতসুতোশি কাতসুরাগির ওপর ক্ষিপ্র ছিলাম। এটাও সত্য যে, এই কিডন্যাপিং গেমটাও সেই কারণেই শুরু করেছিলাম। কিন্তু সেটার চিন্তাভাবনা শুরু করেছিলাম যখন চিহারু নামের একটা কার্ড আমার সামনে এসে নিজেকে ধরা দিয়েছিল। কিন্তু আমি তো জুরি কাতসুরাগিকে হত্যা করিনি। সত্যি বলতে, আমি ওকে কখনো চোখেই দেখিনি।

    “এখন পর্যন্ত পুলিশ কোনো ধরনের সূত্র-টুত্র পেয়েছে?”

    “শুনেছি কয়েকটা নাকি পেয়েছে। মুক্তিপণ অদল-বদলের সময় কালপ্রিটের সাথে মিস্টার কাতসুরাগির নাকি কয়েকবার কথাবার্তা হয়েছে। সেগুলোর রেকর্ড নাকি এখন তাদের হাতে রয়েছে।”

    “রেকর্ড? তিনি ওগুলো রেকর্ড করেছিলেন?”

    “তাই তো মনে হচ্ছে। তিনি তখনো পুলিশের সাথে যোগাযোগ করেননি, তবে জুরি অক্ষতদেহে ফিরে আসার সাথে সাথে তিনি তাদের সাথে যোগাযোগ করার কথা ভাবছিলেন। আর তাই তাদের তদন্তে সাহায্য করার জন্য যতটুকু সূত্র জোগাড় করা যায়, তিনি করছিলেন।”

    ঐ মানুষটার পক্ষে এটা করা সম্ভব। বরং শুরু থেকেই কেন সে পুলিশের সাথে যোগাযোগ করলো না, সেটাই এখনো বিস্ময়কর লাগছে।

    “তাদের হাতে আর কী প্রমাণ রয়েছে?”

    “এসব বিষয়ে আসলে পুলিশ মুখ খুলতেই চায় না, বুঝতে পেরেছেন…ওহ, আচ্ছা, ভুলেই গিয়েছিলাম!” ইউগুচি তার নোটবুকের দিকে তাকিয়ে একহাত দিয়ে মুখ চাপা দিল। “জুরি কাতসুরাগিকে নাকি শুধু খুন করেই ছেড়ে দেওয়া হয়নি। অন্য পথটা থেকেও সে নিষ্কৃত পায়নি।”

    “অন্য পথ?”

    “সে মারা গেছে, তাই বোধহয় ওটা নিয়ে আমাদের ভাবা উচিত নয়, কিন্তু তার সতীত্বের কথা বলছিলাম।”

    “আহ…..” স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিলাম।

    “এই নিউজটা তারা মিডিয়াতে ফাঁস হতে দেবে না। কিন্তু কালপ্রিটটা পুলিশের জন্য বেশ গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণ রেখে গেছে। সেখানে নাকি একটা পুরুষের যৌনকেশ পাওয়া গেছে।” ইউগুচি গলার স্বর আরো নামিয়ে সাথে যোগ করলো, “আর তার নিঃসৃত বীর্যও নাকি সে রেখে গেছে। অবশ্য লাশ খুঁজে পেতে পেতে তার অনেকখানি শুকিয়ে গেছে আমি নিশ্চিত।”

    আমার পালস দৌড়াতে শুরু করলো। আতঙ্কটা মুখে প্রকাশ না পেতে দেওয়ার জন্য আমাকে অনেক কষ্ট করতে হলো।

    “আর কোনো সূত্র পেয়েছে?”

    “আরো নাকি পেয়েছে, তবে সেগুলো এখনো প্রকাশ করেনি। যদি জানতে পারি, আপনাকে সাথে সাথে জানাবো।”

    “ধন্যবাদ। প্লিজ জানাবে কিন্তু।” আমি আইসড কফিতে চুমুক দিয়ে নিজেকে শান্ত করার চেষ্টা করলাম। “কিন্তু ইয়োকোসুকাতে কেন?”

    “মানে?”

    “তাকে ইয়োকোসুকাতে পাওয়া গিয়েছিল কেন? কালপ্রিট তাকে ওখানে মাটিচাপা দিয়ে এলো কেন? এ ব্যাপারে পুলিশ কিছু বলেছে? যেমন ধরো, ‘ওদের আস্তানা ওখানে হতে পারে’–এই টাইপ কিছু?”

    “আস্তানার ব্যাপারে তেমন কিছু শুনিনি, তবে এটুকু আমার কানে এসেছে যে পুলিশ নাকি ওখানে সাক্ষী খোঁজার জন্য ক্যানভাসিং করছে।”

    “ক্যানভাসিং?”

    “ব্যাপারটা খুবই স্বাভাবিক। তারা একহাতে জুরি কাতসুরাগির ছবি দিয়ে আশেপাশের মানুষজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে যে, কেউ এই মেয়েকে দেখেছে কিনা। পুলিশ ইয়োকোসুকাকে লাশ লুকোনো জায়গা হিসেবে দেখছে না, বরং খুন সেখানে হয়েছে ধরে নিয়ে আগাচ্ছে। তাই তারা জানার চেষ্টা করছে ওখানকার কেউ জুরিকে জীবিত অবস্থায় দেখেছিল কিনা।”

    “তারা এরকম কেন ভাবছে?”

    “সেটা ঠিক বলতে পারছি না।” ইউগুচি দুই হাত দুইদিকে প্রসারিত করে মাথা নাড়লো।

    তাকে বিদায় জানিয়ে সোজা বাসায় ফিরে গেলাম। সামান্য কিছু নাস্তা নাকেমুখে গুঁজে কম্পিউটারের সামনে বসলাম। কিন্তু কম্পিউটার চালু হবার পরেও আমি কেন জানি একটুও নড়লাম না।

    আমার মাথার ভেতর যেসব পাজলের টুকরা এলোমেলোভাবে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে ছিল, তা অবশেষে জোড়া লাগতে শুরু করেছে। হ্যাঁ, এখনো অনেকগুলো অসমাপ্ত অংশ রয়ে গেছে, কিন্তু গোটা চিত্রটার কাঠামোটা এখন আমার কাছে পরিষ্কার হয়ে গেছে।

    কপাল বেয়ে ঘাম পড়তে লাগল। আজকে বেশ গরম পড়েছে, তা সত্ত্বেও আমার গোটা শরীর ঠান্ডা হয়ে গেছে। গা কাঁটা দিচ্ছে।

    সম্পূর্ণ পাজলের কথাটা ভাবতেই আতঙ্ক ঘিরে ফেলল আমাকে। এটা অসম্ভব, বলে মনের ভেতরে গোটা পাজলটা ভেঙে চুরমার করে ফেললাম। আবার সেটা জোড়া লাগাতে শুরু করলাম এই আশা নিয়ে যে, হয়তো নতুন করে কোনো উপসংহারে আসা যাবে। কিন্তু যতবারই চেষ্টা করলাম, ঘুরেফিরে সেই আগের মতোই উত্তর পেলাম। যদি আমার কোনো ভুলনা হয়ে থাকে, তাহলে এটাই একমাত্র উত্তর।

    আমি জোরে একটা শ্বাস টেনে নিয়ে ধীরে ধীরে টাইপিং করা শুরু করলাম। আমার নিজেরই ভুল হয়েছে, এটার জন্য মনেপ্রাণে প্রার্থনা করা শুরু করলাম। কিন্তু প্রার্থনা করে কোনো লাভ হচ্ছে না। আমার পক্ষে যা করা সম্ভব তা করি।

    আচমকা একটা জিনিস মনে পড়ে যাওয়ায় উঠে দাঁড়ালাম। বেডরুমে গিয়ে হ্যাংগারের রাখা কোটের দিকে এগিয়ে গেলাম। সেটার ভেতরের পকেটে হাত দিয়ে জিনিসটা বের করে আনলাম। এখন এটাই কেবল আমাকে বাঁচাতে পারে।

    কম্পিউটারের সামনে ফিরে গেলাম। কাজে বসতে হবে এখন।

    আমার সর্বশেষ কাজ ছিল একটা ইমেইল লেখা। অনেক ভেবেচিন্তে আমি নিচের লেখাটা টাইপ করা শুরু করলাম :

    মিস্টার কাতসুতোশি কাতসুরাগি,

    একটা গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার নিয়ে আলাপ করতে চাচ্ছি। আপনার সাথে অতিসত্ত্বর যোগাযোগ করা প্রয়োজন। যে-কোনোভাবে যোগাযোগ করলেই হবে। আমি কে, তা আপনি ইতোমধ্যে জেনে ফেলেছেন। তাই নামটা আর লিখতে চাচ্ছি না। আমাকে সোজাসুজি ফোন করলেও কোনো আপত্তি নেই। তবে সেসব যেন তদন্তকারীদের চোখে না পড়ে, সেদিকে নজর রাখবেন। কারণ, নজরে পড়ে গেলে আমরা দুজনেই ক্ষতিগ্রস্থ হবো। আশা করি এটুকু নিশ্চয়ই বুঝতে পেরেছেন।

    আমি একটা চুক্তির মাধ্যমে এই জটিল অবস্থার সমাধান করতে চাচ্ছি। যদি দুইদিনের মধ্যে আমার সাথে যোগাযোগ না করা হয়, তবে আমিই আপনার কাছে চলে আসবো।

    ইতি,

    সেই মানুষটা যার কাছে চিহারু কাতসুরাগি ছিল

    লেখাটা খুব একটা ভালো হয়নি, স্বীকার করছি। কিন্তু এই মুহূর্তে প্রত্যেকটা শব্দ যাচাই বাছাই করার মতো অবস্থায় ছিলাম না। বেশ কয়েকবার পড়ে সেটা আগের ইমেইল অ্যাড্রেসটায় পাঠিয়ে দিলাম। আমার হৃৎপিণ্ড তখনো শান্ত হয়নি।

    পরের দিন সকালবেলাতেও স্থির হতে পারলাম না। সে কখন ফোন করবে তা জানি না, তাই বাথরুমে গেলেও কর্ডলেস ফোনটার হ্যান্ডসেটটা সাথে করে নিয়ে গেলাম। আমার কর্মক্ষেত্রেও ফোন করতে পারে, এই আশঙ্কায় সিট থেকে উঠলামই না। বারবার নিজের ইমেইলটাও চেক করতে লাগলাম। সিপিটি মালিকদের ওয়েবসাইটেও একটু পরপর ঢু মারতে লাগলাম।

    কিন্তু কাতসুতোশি কাতসুরাগির পক্ষ থেকে আমার সাথে কোনো রকমের যোগাযোগ করা হলো না। নাকি আমি কে সেটা জানেন না, এই চিন্তাটাও আমার মাথায় এসেছিল। কিন্তু পরক্ষণেই সেটা ঝেড়ে ফেলে দিলাম। এটা সম্ভবই না।

    অনিশ্চয়তার মধ্যে বাসায় ফিরে গেলাম। ইমেইলটা পাঠানো ভুল হলো কিনা, সেটার জন্য অনুশোচনা হতে শুরু করলো।

    দরজার লক খুলে ভেতরে প্রবেশ করলাম। মনে হলো সোফায় ঝপাৎ করে শুয়ে পড়ি। কিন্তু না, আগে আন্সারিং মেশিনটাতে কোনো মেসেজ এসেছে কিনা দেখতে হবে। নাহ, কোনো মেসেজ নেই।

    দীর্ঘশ্বাস ফেলে সোফায় বসলাম। আমি যখন মাত্র টিভিটা চালু করতে যাবো, ঠিক তখন ব্যাপারটা ঘটলো।

    বেডরুমের দরজা খুলে জুরি সেখান থেকে বেরিয়ে এলো।

    1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11 12 13 14 15 16 17 18 19 20 21
    Share. Facebook Twitter Pinterest LinkedIn Tumblr Email Reddit VKontakte Telegram WhatsApp Copy Link
    Previous Articleভবিষ্য পুরাণ – অনুবাদ : স্বামী পরমাত্মানন্দনাথ ভৈরব (গিরি)
    Next Article ম্যালিস – কিয়েগো হিগাশিনো

    Related Articles

    কেইগো হিগাশিনো

    স্যালভেশন অফ আ সেইন্ট – কিয়েগো হিগাশিনো

    August 1, 2025
    কেইগো হিগাশিনো

    দ্য ডিভোশন অব সাসপেক্ট এক্স – কিয়েগো হিগাশিনো

    August 1, 2025
    কেইগো হিগাশিনো

    দ্য রেড ফিঙ্গার – কেইগো হিগাশিনো

    August 1, 2025
    কেইগো হিগাশিনো

    দ্য মিরাকলস অব দ্য নামিয়া জেনারেল স্টোর – কেইগো হিগাশিনো

    August 1, 2025
    কেইগো হিগাশিনো

    নিউকামার – কেইগো হিগাশিনো

    August 1, 2025
    কেইগো হিগাশিনো

    ম্যালিস – কিয়েগো হিগাশিনো

    August 1, 2025
    Add A Comment
    Leave A Reply Cancel Reply

    Demo
    Most Popular

    রবিনসন ক্রুসো – ড্যানিয়েল ডিফো

    August 19, 2025

    অনুরাধা

    January 4, 2025

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025
    Demo
    Latest Reviews

    বাংলা গল্প শুনতে ভালোবাসেন? এক পাতার বাংলা গল্পের সাথে হারিয়ে যান গল্পের যাদুতে।  আপনার জন্য নিয়ে এসেছে সেরা কাহিনিগুলি, যা আপনার মন ছুঁয়ে যাবে। সহজ ভাষায় এবং চিত্তাকর্ষক উপস্থাপনায়, এই গল্পগুলি আপনাকে এক নতুন অভিজ্ঞতা দেবে। এখানে পাবেন নিত্যনতুন কাহিনির সম্ভার, যা আপনাকে বিনোদিত করবে এবং অনুপ্রাণিত করবে।  শেয়ার করুন এবং বন্ধুদের জানাতে ভুলবেন না।

    Top Posts

    রবিনসন ক্রুসো – ড্যানিয়েল ডিফো

    August 19, 2025

    অনুরাধা

    January 4, 2025

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025
    Our Picks

    রবিনসন ক্রুসো – ড্যানিয়েল ডিফো

    August 19, 2025

    দ্য দা ভিঞ্চি কোড – ড্যান ব্রাউন

    August 19, 2025

    এঞ্জেলস এন্ড ডেমনস – ড্যান ব্রাউন

    August 19, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram Pinterest
    • Home
    • Disclaimer
    • Privacy Policy
    • DMCA
    • Contact us
    © 2025 Ek Pata Golpo. Designed by Webliance Pvt Ltd.

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.

    Sign In or Register

    Welcome Back!

    Login below or Register Now.

    Lost password?

    Register Now!

    Already registered? Login.

    A password will be e-mailed to you.