Close Menu
এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    What's Hot

    রবিনসন ক্রুসো – ড্যানিয়েল ডিফো

    August 19, 2025

    দ্য দা ভিঞ্চি কোড – ড্যান ব্রাউন

    August 19, 2025

    এঞ্জেলস এন্ড ডেমনস – ড্যান ব্রাউন

    August 19, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    • 📙
    • লেখক
    • শ্রেণী
      • ছোটগল্প
      • ভৌতিক গল্প
      • প্রবন্ধ
      • উপন্যাস
      • রূপকথা
      • প্রেমকাহিনী
      • রহস্যগল্প
      • হাস্যকৌতুক
      • আত্মজীবনী
      • ঐতিহাসিক
      • নাটক
      • নারী বিষয়ক কাহিনী
      • ভ্রমণকাহিনী
      • শিশু সাহিত্য
      • সামাজিক গল্প
      • স্মৃতিকথা
    • কবিতা
    • 🔖
    • লিখুন
    • চলিতভাষার
    • শীর্ষলেখক
      • শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
      • মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়
      • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
      • বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • সত্যজিৎ রায়
      • সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
      • জীবনানন্দ দাশ
      • আশাপূর্ণা দেবী
      • কাজী নজরুল ইসলাম
      • জসীম উদ্দীন
      • তসলিমা নাসরিন
      • তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
      • মহাশ্বেতা দেবী
      • মাইকেল মধুসূদন দত্ত
      • মৈত্রেয়ী দেবী
      • লীলা মজুমদার
      • শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
      • সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়
      • সমরেশ মজুমদার
      • হুমায়ুন আহমেদ
    Subscribe
    সাইন ইন
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)

    দ্য নেম অব দ্য গেম ইজ অ্যা কিডন্যাপিং – কেইগো হিগাশিনো

    কেইগো হিগাশিনো এক পাতা গল্প310 Mins Read0

    অ্যা কিডন্যাপিং – ৩

    তিন

    কায়াবাচো পোলার হোটেলে চেক-ইন করতে করতে রাত বারোটার বেশি বেজে গেল। আগেরগুলোর মতো এটাও ব্যবসায়ীদের সুযোগ-সুবিধার কথা চিন্তা করেই বানানো হয়েছে। আমার পরিচিত কয়েকজন টোকিওতে এলেই এই হোটেলটাতে উঠতেন। তাই হোটেলের লোকজন আমার পরিচিত। ফ্রন্ট ডেস্কে আমার চেহারা দেখালেই একটা রুম পেয়ে যাবো। তবে আজকে রাতে জুরিকে সিঁড়ির একপাশে বসিয়ে নিজে থেকেই সব আনুষ্ঠানিকতা সেরে নিলাম।

    “বাড়ি থেকে পালিয়ে ইতোমধ্যে একটা অন্যায় করে ফেলেছ। তোমার এ অন্যায় কাজের ভাগীদার হওয়া উচিত নয় আমার। তবে আমাকে বিশ্বাস করে সবকিছু খুলে বলেছ, তাই এটা আমার পক্ষ থেকে তোমাকে উপহার দিলাম।”

    ঘরে ঢোকার পর ভেতরের ছোট্ট ডেস্কটার ওপর চাবিটা রেখে দিলাম। রুমে কেবল একটা ছোটো সাইজের খাট, একটা ডেস্ক আর একটা ফ্রিজ রয়েছে।

    “আপাতত ঘরটা দুদিনের জন্য ভাড়া করেছি। পরশুদিন দুপুরবেলা চেক-আউট করতে হবে।” বলে ঘড়ির দিকে তাকালাম। “মধ্যরাত পেরিয়ে গেছে। তারমানে পরশু না বলে আগামীকাল বলা উচিত আমার।” নিজের কথাটা সংশোধন করে নিলাম।

    “কেবল দুরাতের জন্য কেন?”

    “সাবধানতার জন্য। আজকের রাতটা ভালো করে ঘুমাও। তারপর ঘুম থেকে উঠে তোমার যদি বাড়ি ফিরে যেতে মন চায়, চলে যেও। তবে সেক্ষেত্রে চলে যাওয়ার আগে আমাকে একটা কল দিও।”

    “আপনার কথার মানে হলো এই যে, যদি বাড়ি না ফিরে যাই, তবে এখানেই যেন আমি চুপটি মেরে বসে থাকি।”

    “রাত হয়ে গেছে, তাই এসব না ভেবে ঘুমিয়ে পড়ো। আগামীকাল কথা হবে।” দরজার দিকে পা বাড়ালাম। কিন্তু মাঝপথে থেমে মাথা ঘুরিয়ে তার দিকে তাকালাম। “তোমার কাছে টাকা আছে তো?”

    সে মুখ ঘুরিয়ে নিল। তার চোখমুখ দেখে সত্যিটা টের পেলাম।

    “কোনো টাকাপয়সা ছাড়াই হোটেলে থাকতে এসেছ?”

    “আমার একটা কার্ড আছে।”

    “হাহ, তোমার ‘ফ্যামিলি কার্ড’।” মানিব্যাগ থেকে দুটো দশ হাজার ইয়েনের নোট বের করে নিলাম। “যাকগে, এটা রেখে যাচ্ছি। বিপদে-আপদে কাজে লাগতে পারে।”

    “আমার ওসব লাগবে না।”

    “তাহলে এখানেই রেখে যেও।” টিভির ওপর নোট দুটো রেখে ওটার ওপর পেপারওয়েটের মতো করে রিমোটটা রেখে দিলাম। “আগামীকাল দেখা হবে আবার। আশা করি, ততক্ষণে তোমার শুভ চিন্তার উদয় হবে। মনে রেখো, যখন তোমার ফ্যামিলি কার্ডটাকে রিপোর্ট করা হবে, তখন থেকে তুমি ওটা ব্যবহার করতে পারবে না। টাকা ছাড়া কীভাবে এতদূর আসার কথা চিন্তা করতে পারলে?”

    জুরির উত্তরের আশা না করে দরজার দিকে পা বাড়ালাম। বের হবার জন্য দরজার নবটা ঘোরাতেই সে পেছন থেকে বলে উঠল, “আমার উচিত ছিল পকেটে নিজের জন্য কিছু নিয়ে বের হওয়া।”

    একবাক্যের উত্তরটা শুনে আবার পেছনে ফিরে তাকালাম। “কী বললে?”

    “বললাম, আমার উচিত ছিল বের হবার আগে পকেটে কিছু টাকাপয়সা নিয়ে আসা। টাকা না পেলে মূল্যবান কিছু পকেটে গুঁজে নিলেও হতো। হীরা বা ওরকম কিছু। তাহলে কয়েকদিনের জন্য টাকাপয়সা নিয়ে ভাবতে হতো না।”

    “এর মাধ্যমে তুমি যে কতটা আবেগপ্রবণ, তা বুঝতে পারছো নিশ্চয়ই। আমার ধারণা, আগামীকালই তোমার মন পালটে যাবে। যাই হোক, আমি মিস্টার কাতসুরাগির সাথে কোনোপ্রকার যোগাযোগ করবো না। জানিয়ে দিলাম।”

    “আমি আর কখনোই বাড়ি ফিরে যাবো না।”

    “যেটাই করো সমস্যা নেই। আশা করি, এবার চিন্তাভাবনা করে তোমার সিদ্ধান্তটা নেবে।”

    “ঐ বাড়ির ওপর আমার একটা অধিকার আছে তো, তাই না? মানে কাতসুরাগির পরিবারের কিছু অংশ তো আমার উত্তরাধিকারসূত্রে পাওয়ার কথা?”

    প্রসঙ্গটা পালটে যাওয়ায় কিছুক্ষণের জন্য নির্বাক হয়ে রইলাম। তারপর ঘাড় বাঁকিয়ে উত্তর দিলাম, “হয়তো পাবে। কিন্তু তাদের কন্যা সেজে থাকতে হবে তোমাকে।”

    “তার মানে আমি ফিরে না গেলে এক কানাকড়িও পাবো না?”

    “কে জানে? তবে এখন সেসব নিয়ে চিন্তা করা অর্থহীন। মিস্টার কাতসুরাগির মৃত্যু না হওয়া পর্যন্ত তুমি কিছুই পাবে না। আর সেটা হতে আরো কয়েক যুগ তোমাকে অপেক্ষা করতে হবে।”

    “আমি শুনেছিলাম, সেটা নাকি আগেও পাওয়া সম্ভব?”

    “অগ্রিম নেওয়ার মতো? অসম্ভব নয়, তবে সেটার ভার মিস্টার কাতসুরাগির ওপর। তুমি চাইলেই তা পেয়ে যাবে না। যে পথই বেছে নাও না কেন, তোমাকে আগে বাড়িতে ফিরে যেতেই হবে।”

    অবশেষে বুঝতে পারলো, বাড়ি থেকে পালিয়ে সে এখন পথের ভিখারিতে পরিণত হয়েছে। কতকিছু যে তাকে ত্যাগ করতে হচ্ছে, সেটার বিশালত্বটা আস্তে আস্তে আঁচ করতে পারলো। আর হ্যাঁ, ঘর থেকে পালিয়ে যাওয়ার পরও ‘উত্তরাধিকার হিসেবে সে টাকা পাবে কিনা’ চিন্তাটা তার মাথায় এসেছে। এ থেকেই প্রমাণিত হয় যে, এখনো তার শরীরে কাতসুরাগিদের রক্ত প্রবাহিত হচ্ছে।

    দরজার নব ঘোরালাম। “যাই হোক, শুভরাত্রি।

    “এক সেকেন্ড দাঁড়ান।”

    দরজাটা আলতো খোলা রেখে আবার পেছনে ফিরে তাকালাম। “আবার কী হলো?”

    “আপনার কাছে একটা আবদার জানাতে পারি?” চিবুক খানিকটা নামিয়ে প্রশ্নটা করলো। সে যে এরকম মুখও করতে পারে, তা জানা ছিল না।

    “আবদারটা কী তার ওপর নির্ভর করছে।”

    “তেমন কঠিন কিছুই না। প্রথমত, আপনি বাসায় ফোন করে জানিয়ে দেবেন যে আমি আপনার সাথে আছি।”

    “কেবল এটুকুই?”

    “এর পরে আপনি তাদের কাছে গিয়ে টাকা নিয়ে আসবেন। তাদেরকে বলবেন যে, আমি আর বাড়ি ফিরে যাচ্ছি না। তাই বাইরে জীবন চালানোর জন্য আমার যে পরিমাণ টাকা দরকার, তা যেন আপনার সাথে করে পাঠিয়ে দেয়।”

    দরজাটা বন্ধ করে দিলাম। যদি এসব কথা কারো কানে যায়, তবে বিপদ হতে পারে। জুরির মুখভঙ্গি দেখে বুঝতে পারলাম, মজা করছে না। সত্যি সত্যিই সে এগুলো করতে চায়। হাত দুটো দুদিকে ছুঁড়ে দিয়ে প্রশ্ন করলাম, “তুমি পাগল হয়ে গেছ? নাকি আমার সাথে ঠাট্টা করছো?”

    “আমি ফোন করলে তারা তখনোই বাসায় ফিরে আসতে বলবে।”

    “আমি ফোন করলেও তো একই কথাই বলবে। তারা বরং আমাকে বলবে, ফোন করার জন্য এত সময় ব্যয় না করে ঝটপট তোমাকে বাড়ি ফিরিয়ে আনলেই তো পারি। তোমাকে আগেও বলেছি, মিস্টার কাতসুরাগি আমাদের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একজন ক্লায়েন্ট। এভাবে তোমার জন্য হোটেলে রুমের ব্যবস্থা করে দেওয়াটাও তার কাছে বিশ্বাসঘাতকতা বলে মনে হবে।”

    “আপনি বলে দেবেন যে, আমি বাড়ি ফিরে যেতে চাই না।”

    “ওসব কথায় চিড়ে ভিজবে না। আর যদি ঘটনা খারাপ দিকে মোড় নেয়, তবে দেখা যাবে তোমাকে কিডন্যাপ করেছি বলে আমাকে ফাঁসিয়ে দেওয়া হবে।”

    “তাহলে আপনি বলেই দিন যে, আমাকে কিডন্যাপ করেছেন?”

    “কী?”

    “কোনোপ্রকার পরিচয় না দিয়েই শুধু বলুন : আপনাদের মেয়েকে জীবিত ফিরে পেতে চাইলে এক্ষুনি নগদ দশ মিলিয়ন ইয়েনের ব্যবস্থা করুন।”

    প্রায় লাফ দিয়ে উঠলাম। “মাথা নষ্ট হয়ে গেছে নাকি তোমার?”

    “আমি ঠিক করে ফেলেছি, ঐ বাড়িতে আর ফিরে যাবো না। সেজন্য আমার টাকার প্রয়োজন। তাই আমি যে-কোনো কিছু করতে রাজি আছি।”

    “বুঝেছি বুঝেছি।” হাত দুটো ভাঁজ করে বুকের ওপর রাখলাম। মাথা নাড়তে নাড়তে বললাম, “মনে হচ্ছে তোমার এক্ষুনি একটা ঠান্ডা শাওয়ার নেওয়া উচিত। এতকিছু ঘটতে দেখে তোমার মাথা গরম হয়ে গেছে। শাওয়ার নিলেই মাথাটা ঠান্ডা হয়ে যাবে।”

    জুরি বোধহয় আরো কিছু বলতে চেয়েছিল, কিন্তু তাকে সেই সুযোগটা দিলাম না। হনহন করে দরজা খুলে ঘর থেকে বেরিয়ে গেলাম।

    হোটেল থেকে দশ মিনিট হাঁটলেই আমার বাসা। মধ্যরাতের রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাওয়ার সময় জুরির বলা শেষ কথাগুলো মাথায় ঘুরতে থাকলো। সন্ধ্যাবেলায় বেশ খানিকটা মদ গেলার পর মাতাল মাতাল বোধ করেছিলাম। এখন সেটার বিন্দুমাত্র ছাপ নেই। জুরির সাথে কথা বলার সময় এতটাই উত্তেজিত ছিলাম যে, মাতলামি কখন যে দূর হয়েছে টেরই পাইনি।

    কাতসুরাগিদের পরিবার যে আসলে এরকম সমস্যায় জর্জরিত, তা শুনে বেশ অবাকই লেগেছিল। জিনিসটা কীভাবে কাজে লাগানো যায় তা ভাবছিলাম। অবশ্য এরকম তথ্য জেনে রাখা ভালো। পরে যে-কোনো সময় সেটা কাজে লাগতেই পারে। হয়তো সামনে এমন মুহূর্তও আসতে পারে যখন এই তথ্যটাকে ট্রাম্প কার্ড হিসেবে ব্যবহার করা যাবে। কয়েক ঘণ্টা আগে আমার মাথায় প্রায় আকাশ ভেঙে পড়েছিল, এতক্ষণ তা সম্পূর্ণ ভুলে গেছিলাম।

    পরদিন সকালবেলা অফিসে ঢুকতেই কোজুকা আমাকে ডেকে পাঠালেন। তার অফিসে ঢুকে দেখলাম, তিনি তোমোয়া সুগিমোতোর সাথে আলাপ করছেন। সুগিমোতো সাধারণত কনসার্ট বা মিউজিক ইন্ডাস্ট্রির সাথে সম্পর্কিত কাজগুলো করত। আমার থেকে এক বছরের ছোটো, কিন্তু নিজের কাজে সে ভালোমতোই প্রতিষ্ঠিত। মনে পড়ে গেল, নিসেই অটোমোবাইল কোম্পানির কাজটাতে আমার আসনটা তাকেই দেওয়া হচ্ছে।

    “সুগিমোতোকে গতকালকের সবকিছু খুলে বললাম।” কোজুকা আমার দিকে তাকিয়ে বলল।

    সুগিমোতো কথাটা শোনার পর বোধহয় লজ্জা পাচ্ছিল, তাই সে আমার থেকে চোখ সরিয়ে প্রেসিডেন্টের ডেস্কের দিকে একদৃষ্টিতে তাকিয়ে রইল।

    “আমার কি তাকে কাজের খুঁটিনাটিগুলো দেখিয়ে দিতে হবে?”

    “না, তার দরকার নেই। আমরা এমনিতেই একেবারে প্রথম থেকে সবকিছু শুরু করছি। যদি তা না করি, তবে তারা মেনে নেবে না।” কোজুকা বোঝাতে চাইল যে, আসলে ‘কাতসুরাগি’ মেনে নেবে না। “তুমি কি তোমার টিমকে সবকিছু জানিয়ে দিয়েছ?”

    “নাহ, আজই তাদের বলব।”

    “আচ্ছা।” কোজুকা চুপ হয়ে গেল। তাকে দেখে মনে হলো, সে এখন গভীর চিন্তায় ডুবে গেছে।

    “আর কিছু?”

    “হ্যাঁ। আসলে গতকাল থেকেই অনেক ভাবনা-চিন্তা করছি বিষয়টা নিয়ে। কিন্তু সবদিক বিবেচনা করে বুঝতে পেরেছি, এই মুহূর্তে একবারে শূন্য থেকে টিম বানানো সম্ভব নয়। কিছু অংশ হয়তো পাল্টানো যাবে, কিন্তু আমূল পালটে দেওয়াটা একেবারে অসম্ভব। তাই না?”

    অবশেষে তার কথাটা ধরতে পারলাম। “বলতে চাইছেন যে টিমটা আপনি আগের মতোই রাখতে চান। কেবল টিমের প্রধানকে পালটে নিলেই চলবে।”

    “হ্যাঁ, হ্যাঁ, সেটাই। যাই হোক, আমাদের হাতে তেমন সময় নেই। নিসেই আমাদের এ সিদ্ধান্তে রাজি হয়েছে।”

    চমৎকার। কথাটা বহুকষ্টে গিলে ফেলে মাথা নাড়লাম।

    “ওহ হ্যাঁ, আজকে বিকেলে নিসেই-এর সাথে আমার একটা মিটিং আছে। তোমাকেও যেতে হবে।”

    “আমাকে? কেন?” জোর করে মুখে হাসি ধরে রাখলাম। “যতদূর মনে পড়ে, আমি তাদের চোখে অপদার্থ একজন কর্মচারী।

    “ঘ্যানঘ্যান কোরো না। তারা তাদের দিক থেকে সবধরনের ঝামেলা দূর করে ফেলতে চায়। তাই আজকের মিটিংয়ে তারা আচমকা সিদ্ধান্ত পালটে ফেলার ব্যাখ্যা দেবে। সুগিমোতোর বক্তৃতা শুরু হওয়ার পরে তুমি চলে যেতে চাইলে চলে যেও।”

    তারা আসলে চায় যে, নতুন সুপারভাইজার ঘোষণা করার সময় পুরোনো সুপারভাইজারও যেন সেখানে উপস্থিত থাকে। এরকম অপমান বোধহয় আমাকে কেউ কখনো করেনি।

    জুরির মুখটা আমার মনে ভেসে উঠলো। তখন একটা চিন্তা মাথায় খেলে গেল।

    “মিস্টার কাতসুরাগি বোধহয় মিটিংয়ে আসবেন না, তাই না?”

    “না। তিনিও আসবেন। তোমার সাথে তার দেখা হয়েও যেতে পারে।”

    “আপনি কি একদম নিশ্চিত?” জিজ্ঞেস করলাম, “আমার মনে হয় না তিনি মিটিংয়ে যোগ দিতে পারবেন।”

    “এসব বলার মানে কী? আমি একদম নিশ্চিত তিনি আসবেন। আমাকে একটু আগেই জানানো হয়েছে। আমার স্পষ্ট মনে আছে কথাটা—’এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট কাতসুরাগি মিটিংয়ে উপস্থিত থাকবেন।

    “একটু আগেই?”

    “হ্যাঁ। কেন, কোনো সমস্যা?”

    “না…”

    তার মেয়ে ঘর থেকে পালিয়ে গেছে, এরকম অবস্থাতেও তিনি মিটিংয়ে যোগ দিতে রাজি হয়েছেন? নাকি কাতসুতোশি কাতসুরাগির জানা নেই যে, তার মেয়েকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না? কথাটা বিশ্বাস করতে কষ্ট হলো। কেউ টের পেলেই তো তাকে জানিয়ে দেবার কথা।

    “আচ্ছা, আমি মিটিংয়ে যোগ দেবো। কাতসুরাগির মুখটা খুব ভালোভাবে, খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখবো।”

    “ওখানে গিয়ে খবরদার কোনোরকমের গণ্ডগোল করবে না। মিটিং শেষ না হওয়া পর্যন্ত মুখ বন্ধ করে বসে থাকবে।”

    .

    নিসেই অটোমোবাইলস-এর টোকিও হেডকোয়ার্টার শিনজুকুতে অবস্থিত। কয়েকটা অতিরিক্ত আনুষ্ঠানিকতা পার করার পর আমাদেরকে কনফারেন্স রুমে ঢুকতে দেওয়া হলো। তারা ইতোমধ্যে সেখানে আমাদের জন্য অপেক্ষা করছিলেন।

    তাদের ভোঁটকা প্রোমোশন ম্যানেজার আমাদেরকে সংক্ষেপে জানালো যে, তারা পুরো পরিকল্পনাটা পালটে একদম শূন্য থেকে শুরু করছে। অবশ্য কোজুকা যেভাবে ধারালোভাবে আমাকে কথাগুলো বলেছিল, তার তুলনায় ম্যানেজারের কথাগুলো অনেক শান্ত শোনালো। কিন্তু দুজনের কথার বিষয়বস্তু ছিল একই : তারা আমার পরিকল্পনাগুলো ছুঁড়ে ডাস্টবিনে ফেলে দিয়েছে।

    কাতসুতোশি কাতসুরাগি সেখানে উপস্থিত ছিলেন না। তার আসতে একটু দেরি হবে বলে আমাদের জানানো হলো। কিন্তু আমি নিশ্চিত যে, তিনি আসতে পারবেন না। কোনোভাবেই এখানে এসে উপস্থিত হওয়া তার পক্ষে সম্ভব নয়। হয়তো এই মুহূর্তেই তিনি পুলিশের সাথে বসে মিসিং পার্সনসে রিপোর্ট করার জন্য ফর্ম পূরণ করছেন।

    এবার তারা কী পথ ধরে এগোবে, তা নিয়ে প্রোমোশন ম্যানেজার বকবক শুরু করলেন। ‘কনসেপ্ট’, ‘আইটি সেক্টর’, ‘চাহিদা’– ইত্যাদি শব্দ জুড়ে দিয়ে তার প্রেজেন্টেশন একদম বিরক্তিকর করে ফেললেন। কোনো ‘যোগ্য’ বিজ্ঞাপনী সংস্থায় কাজ করা মানুষ স্বাভাবিক অবস্থায় প্রেজেন্টেশনে এসব ভারি ভারি শব্দ ব্যবহার করে না। সুগিমোতোর উদ্বোধনী বক্তৃতা শেষ। তাই ঠিক করলাম, সময় বুঝে এখান থেকে বের হয়ে যাবো।

    বিরক্ত হয়ে কয়েকবার হাই তোলার পর ঘটনাটা ঘটলো। কোনোধরনের নক ছাড়াই দরজাটা হঠাৎ খুলে গেল। একজন চওড়া কাঁধওয়ালা কালো স্যুট পরা ভদ্রলোক ভেতরে প্রবেশ করলেন। প্রোমোশন ম্যানেজার তাকে দেখে থেমে গেলেন।

    “কী ব্যাপার, থামলেন কেন?” তিনি ম্যানেজারের দিকে একটা অসন্তুষ্ট দৃষ্টি নিক্ষেপ করলেন।

    ম্যানেজার তাড়াহুড়ো করে আবার তার প্রেজেন্টেশনে ফিরে যেতে চাইলো। কিন্তু ততক্ষণে তিনি কী নিয়ে কথা বলছিলেন, তা ভুলে গেছেন। তার মুখচোখ দেখে বুঝতে পারলাম, কালো স্যুট পরা ভদ্রলোককে দেখে বেশ ভয় পেয়েছেন তিনি।

    “উনিই কি মিস্টার কাতসুরাগি?” কোজুকাকে ফিসফিস করে জিজ্ঞেস করলাম। কোজুকা আমার পাশেই বসে ছিলেন। তিনি আলতোভাবে মাথা নাড়লেন।

    প্রোমোশন ম্যানেজার অবশেষে তার বক্তব্যে ফিরে গেল। তবে তার কথায় মনোযোগ না দিয়ে আড়চোখে আমাদের মিটিংয়ের মহা ভিআইপি মানুষটাকে পর্যবেক্ষণ করতে থাকলাম। এই মানুষটাই আমার কাজ, আমার পরিশ্রমকে সোজা নালায় ফেলে দিয়েছেন। কাতসুরাগিকেও দেখলাম ম্যানেজারের কথায় মনোযোগ দিচ্ছেন না। ম্যানেজারের কথা শুনতে বিরক্ত লাগছে সেজন্য শুনছেন না, নাকি অন্য কোনো কারণ লুকিয়ে আছে? উদাহরণস্বরূপ— ‘তার মেয়ে হারিয়ে গেছে’, সেজন্য?

    অবশেষে ম্যানেজারের কথা শেষ হলো। এবার নিসেই অটোমোবাইলসের পক্ষ থেকে আরেকজন কিছু বলার জন্য উঠে দাঁড়াতেই কাতসুরাগি হাত উঁচিয়ে তাকে থামিয়ে দিলেন। সবাই দেখলেন, তিনি বসে থেকেই কথা বলতে শুরু করেছেন।

    “আমরা জানি যে এভাবে হঠাৎ করে পরিকল্পনা পালটে আপনাদের অনেক ঝামেলার সৃষ্টি করেছি। কিন্তু এটা মনে রাখার চেষ্টা করবেন যে, আমরা এখানে কোনো উৎসব হোস্ট করতে আসিনি। হ্যাঁ, আমাদের সৃষ্টিশীল কিছু পরিকল্পনা দরকার। তারমানে এই না যে আমরা ভাগ্য নিয়ে জুয়া খেলতে এসেছি। আমরা যে খেলাটা খেলতে চাই, তা হচ্ছে ব্যাবসা। ব্যাবসা করতে হলে প্রচুর পরিকল্পনা করতে হয়, অনেক ঝুঁকি নিতে হয়। আর যেহেতু এটা একধরনের খেলা, আমরা সে খেলায় জেতার জন্যই মাঠে নেমেছি। তবে খেলা বলে এটাকে কোনোভাবেই হাসিঠাট্টার চোখে দেখা যাবে না। এ পৃথিবীতে তারার মতো অগণিত সংখ্যক খেলা রয়েছে, যেটা নিজের জীবন বাজি রেখে খেলতে হয়। প্লিজ, এটাকেও ঐ একই ধরনের খেলাই ভাববেন। আর আমি খেলাধুলার বিষয়গুলোতে বেশ দক্ষ। এ দক্ষতার ওপর আমার প্রচুর বিশ্বাস আছে বললেও ভুল হবে না। তাই আত্মবিশ্বাসের সাথেই কথাগুলো বলছি, আমাদের গেম প্ল্যান সম্পূর্ণ পালটে ফেলতে হবে। হ্যাঁ, আপাতত খেলার মাঠে এটাই আমাদের অবস্থা।”

    সে মাত্রই বলল যে, তার এ খেলায় আমরা দাবা খেলার সৈন্য গুটির মতো। তিনি যেভাবে ইচ্ছা সেভাবে আমাদেরকে ব্যবহার করতে পারেন। তার কথাবার্তাতে সেটাই প্রকাশ পেয়েছে। তার কথাবার্তাগুলো খুবই শান্ত আর স্নিগ্ধ হওয়া সত্ত্বেও সেগুলো এক অদৃশ্য শক্তির বলে গোটা ঘরেই প্রতিটা কোণায় ছড়িয়ে গিয়েছিল। এখন আশেপাশের সবাইকে কয়েক মিনিট আগের তুলনায় বেশ তটস্থ হয়ে যেতে দেখলাম।

    শেষমেষ মিটিংয়ের শেষ পর্যন্ত থেকে গেলাম। ঐ সময়টুকুতে গোপনে পর্যবেক্ষণ করতে থাকলাম কাতসুরাগিকে। কিন্তু তার আচার-আচরণের মধ্যে কোনো প্রকার দুশ্চিন্তা খেলা করতে দেখলাম না। যখন তার কোম্পানির লোকজন কিংবা কোজুকা কথাবার্তা বলছিল, তাকে প্রথম দেখায় উদাসীন লাগছিল। কিন্তু চোখ দুটো একদম জ্বলজ্বল করছিল। এটুকু তো স্বীকার করে নিতেই হবে যে, তিনি সামান্য কেউ নন। কথাটা মেনে নিতে বাধ্য হলাম।

    আমার ভেতরে তখন অপমান আর সেই অপমান থেকে উদ্ভূত হিংস্রতা ঘূর্ণির মতো ঘুরছে। খেলা? আচ্ছা, খেলাই সই। তুমি নিজেকে ভালো খেলোয়াড় দাবি করছো? তবে আমিও কম খেলোয়াড় নই। আমাদের মধ্যে কে সবচেয়ে বড়ো খেলোয়াড়, তা খুব সহজেই বের করতে পারি। কিন্তু সে আমাকে সেটার সুযোগ না দিয়ে সোজা বাড়ি পাঠিয়ে দিচ্ছে। খেলতে চাস না আমার সাথে? আয়, আমাদের মধ্যে একটা খেলা হয়ে যাক। তাকে আকার ইঙ্গিতে বোঝাতে চাইলাম। কিন্তু সে মনে হয় কিছুই টের পায়নি।

    মিটিং শেষে কাতসুরাগির পাশে কোজুকা ছুটে গেলেন। তাকে অভিবাদন জানিয়ে আমার সাথে পরিচয় করিয়ে দিলেন। কিন্তু আমার দিকে না তাকিয়েই তিনি হাত নেড়ে আমাকে চলে যেতে ইঙ্গিত করলেন।

    “ওসব আনুষ্ঠানিকতার দরকার নেই। একজন ‘বাইরের লোকের’ সাথে পরিচিত হয়ে আমার লাভ নেই।”

    কথাগুলো বলে সে আমাদের কাছ থেকে সরে গেল।

    মুখের ভাষা হারিয়ে ফেললাম। টের পেলাম, আশেপাশের সবাই আমার দিকে করুণার দৃষ্টিতে তাকাচ্ছে।

    দাঁত কিড়মিড় করে নিজের অপমানটা গিলে ফেলার চেষ্টা করলাম। কোজুকা দুবার সান্ত্বনাস্বরুপ আমার পিঠটা চাপড়ে দিলেন।

    সে সন্ধ্যাতেই মাকি নামধারী একজন ভদ্রমহিলার সাথে আকাসাকা এলাকার একটা জনপ্রিয় ইতালিয়ান রেঁস্তোরায় বসে ডিনার সারছিলাম। মাকি একজন উঠতি মডেল। সত্যিকারের মডেলিংয়ের কাজ সে খুব কমই হাতে পেয়েছে। অধিকাংশ সময়েই তাকে ক্যাম্পেইন গার্ল কিংবা ইভেন্ট কম্পেনিয়ন হওয়ার জন্য ডাকা হতো। সে যে সপ্তাহের কয়েকটা দিন টাকার জন্য হোস্টেস ক্লাবেও কাজ করত, তা আমার অজানা ছিল না। এতদিন পর্যন্ত আমি কখনোই নিজ থেকে তাকে ডাকিনি। প্রত্যেকবার সেই আমাকে ফোন করে ডেকেছে। না, আমি এতটা গবেট নই যে ভেবে নেব, সে আমার প্রেমে পড়েছে। বরং আমি তার অন্যজায়গায় পৌঁছানোর সিঁড়ি হিসেবে কাজ করছিলাম বলেই আমার ধারণা।

    কিন্তু আজ রাতে আমিই ওকে ফোন করে ডেকেছি। ভেতরের চাপা ক্ষোভটা দূর না করে বাড়ি ফিরছি না। ডিনার শেষে হয়তো দুজনে মিলে কোথাও ড্রিংক করতে যাবো। আর যদি সবকিছু পরিকল্পনামতো চলে, তবে তার সাথে আজ রাতে শুতেও পারি। শারীরিকভাবে মিলিত হলে হয়তো ভবিষ্যতে নানান সমস্যা দেখা দিতে পারে, কিন্তু আজ সেটা নিয়ে ভাবছি না। সারারাত একা নিজের চাপা অনুভূতিগুলোর সাথে সময় কাটানোর থেকে কারো সাথে রাত কাটানোটাই আমার কাছে ভালো বলে মনে হলো।

    মাছের ডিসটা টেবিলে আসতে আসতে হোয়াইট ওয়াইনের একটা বোতল খালি হয়ে গেল। আরেক বোতল নিয়ে আসার অর্ডার দিলাম। যদি এরপর মাংসের কোনো ডিস আসে, তখন রেড ওয়াইন অর্ডার করব ভাবছি।

    “আজকে তো বেশ দ্রুত বোতল খালি করে দিচ্ছ!” মাকি অগোছালোভাবে মুখে খাবার তুলে নিচ্ছিল। সে ডায়েট করছে। তাই প্রত্যেকটা খাবার মুখে নিয়ে অনেকক্ষণ ধরে চিবিয়ে নিচ্ছে। জিনিসটা আমার চোখে বিরক্তিকর লাগল, কিন্তু রোমান্টিক ভাবটা কোনোমতেই নষ্ট করা যাবে না।

    “বোধহয় একটু বেশিই চড়ে গিয়েছি। আর নার্ভাস হয়ে গেলে আমি একটু বেশিই তৃষ্ণার্ত হয়ে যাই।” গ্লাসটা নাড়িয়ে নিলাম।

    “ওরকম কেন লাগছে তোমার?”

    “বোধহয় তুমি আমার সাথে দেখা করতে রাজি হয়েছ, সেজন্য। হঠাৎ করে তোমাকে ডেকেছি, তাই ভেবেছিলাম তুমি নাকরে দেবে।”

    “এভাবে বোলো না। তুমি কথা বলতে পারোও বটে।” সে হেসে প্রসঙ্গটা পালটে ফেলল। কিন্তু তার চোখ দেখে বুঝতে পারলাম, এভাবে ডাকায় বরং খুশিই হয়েছে।

    “আমি যখন এভাবে সাফ সাফ কথা বলি, কেউ আমার কথায় গুরুত্ব দেয় না। জাপানে আসলে মেয়েদের প্রশংসা করাটা খুব কঠিন একটা কাজ। তাই নার্ভাস বোধ হচ্ছে। ব্যাপারটা আমার কাছে বেশ রহস্যময় লাগে জানো?”

    তাই নাকি? সে মাথাটা আলতো কাঁত করে আমার দিকে স্বপ্নালু চোখে তাকালো।

    “প্রথমত, অনেকদিন এভাবে কোনো মেয়ের সাথে সামনাসামনি বসে ডিনার সারিনি। আরেকটা কথা, এতদিন ধরে একবারও আমি তোমার সাথে যোগাযোগ করিনি। বোধহয় সেই নিয়মটা ভাঙতেই আজ তোমাকে ডেকেছি।”

    “কথাটা ঠিকই তো বলেছ। আজকেই কেন? হঠাৎ করে আমার কথা মনে পড়লো? খেয়ালের বশে?”

    “এভাবে ডাকার পর তোমার ওরকম মনে হওয়াটাই স্বাভাবিক। আগেও তোমাকে ফোন দেওয়ার অনেকবার চেষ্টা করেছি, কিন্তু কেন জানি সাহস পাইনি। আজ রাতে সেই সাহসটা খুঁজে পেলাম।”

    আরো মিথ্যা কথা।

    “অফিসে কোনোকিছু ঘটেছে?” মাকি আমার দিকে সোজাসুজি তাকালো।

    “নাহ, বলার মতো তেমন কিছু হয়নি।” গ্লাসটা উঁচু করে ধরলাম। আজকে আমার সাথে যা যা ঘটেছে, সেগুলো তাকে বলার বিন্দুমাত্র ইচ্ছা ছিল না। সেটা তার কাজ নয়।

    মোটামুটি মুখে দেবার যোগ্য খাবার আর ওয়াইন পেটে চালান দিয়ে মাকির মন জয় করার চেষ্টা চালিয়ে যেতে থাকলাম। তাকে নানা ধরনের মজার মজার তথ্য শুনিয়ে সেগুলো নিয়ে তার সাথে হাসিঠাট্টা করছিলাম। আমি জানি, একজন যুবতি মেয়ে তার সঙ্গীর মুখ থেকে কেবল মজার মজার কথা শুনেই খুশি হয়ে যায় না। তাই তাকেও বলার সুযোগ দিয়ে আমি একান্ত মনোযোগী একজন শ্রোতা হয়ে গেলাম। তার কথাবার্তাগুলো ছিল বালখিল্যে ভরা। একটা কথার সাথে আরেকটার কোনো সম্পর্ক ছিল না। তাই নিজেকে জাগিয়ে রাখাটাই আমার জন্য চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়ালো। তা সত্ত্বেও নিজের ঠোঁট কামড়ে ধরে হাইগুলোকে চেপে গেলাম। আমি জীবনেও এরকম অসাধারণ কথাবার্তা কখনো শুনিনি—এরকম ভান করতে লাগলাম। হয়তো এ কারণে সে নিজেকে আজকে রাতের জন্য পৃথিবীর সেরা গপ্পোবাজ বলে মনে করতে লাগলো।

    আসলে দিনশেষে একজন পুরুষ আর মহিলার মধ্যে যেটা চলে, সেটাকেও একধরনের খেলা বলা যায়। কিন্তু প্রতিপক্ষ তেমন ভালো না হলে খেলাটায় কোনো মজা খুঁজে পাওয়া যায় না। সেজন্যই মাকির সাথে থাকার পরেও নিজের তৃষ্ণাটা একদম মিটছিল না। মাকির হাসিহাসি মুখের দিকে তাকিয়ে ভাবতে লাগলাম, তার বদলে অন্য মহিলাটাকে ডাকা উচিত ছিল কিনা। সেই ‘অফিস-লেডি’কে এভাবে আচমকা ডাকলে সে হয়তো সতর্ক হয়ে থাকত। আর তার সাথে খেলায় জিততে হলে আমাকে নানান ধরনের টেকনিক ব্যবহার করে তার মন জয় করতে হতো। টেবিলে মুখোমুখি বসে কী নিয়ে কথা বলা যায়, সেটাও আমার জন্য একটা চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াতো। কিন্তু কোনো মেয়েকে ডেট করতে চাইলে এমন কাউকেই করা উচিত, যার সাথে কথা বলতে হলেও সতর্ক থাকা লাগে।

    সংক্ষেপে বললে, মেয়েদের কাছ থেকে আমি তাদের দেহটা চাইতাম না। চাইতাম টানটান উত্তেজনাময় জটিল একটা খেলা। সবকিছুকেই আমি খেলার চোখে দেখতাম। আর সে খেলায় জয়লাভ করলেই কেবল শান্তি খুঁজে পেতাম। হ্যাঁ, খেলাধুলা তো বটেই, আমি এমনকি পড়াশোনাকেও একটা খেলা হিসেবে নিয়েছিলাম। ভালো কিংবা মন্দ মার্ক আমার চোখে কেবল হারা আর জেতা হিসেবেই ধরা দিত। কলেজের এন্ট্রান্স পরীক্ষা আমার কাছে ঠিক সেরকমই একটা ব্যাপার ছিল। যদি সেখানে ছক্কা পেটাতে পারি, তবে জীবনের খেলায় জিততে পারব। সাফল্য আমার হাতের মুঠোয় চলে আসবে। এই মনোভাব নিয়েই পরীক্ষা দিতে বসেছিলাম এবং খুব সফলতার সাথে আমার প্রিয় কলেজে পড়ার সুযোগ পেয়েছিলাম। চাকরির বাজারেও আমার পক্ষে যা যা করা সম্ভব, তার সবই করেছিলাম। তাই পছন্দের কোম্পানিতে ঢোকাটাও আমার জন্য সহজ হয়ে গিয়েছিল। এভাবে আগে থেকে পরিকল্পনা করার অভ্যাসটার প্রতি আমি অনেকাংশে কৃতজ্ঞ।

    জীবনে এখন পর্যন্ত যতগুলো ম্যাচের সম্মুখীন হয়েছি, মোটামুটি সবকটাতেই জয়ী হয়েছি। কাতসুতোশি কাতসুরাগি কথাটা আমাকে না বললেও পারতেন। কারণ আগে থেকেই আমার কাজটা আমার কাছে এক ধরনের খেলার মতোন। নিসেই অটোমোবাইলস-এর ক্যাম্পেইনটাও এর ব্যতিক্রম ছিল না। আমি এখন নিশ্চিত, আমার পরিকল্পনা মোতাবেক অটোমোবাইল পার্কের ব্যবস্থা করা হলে তাদের নিশ্চিত জয় হতো।

    খেলাধুলার ব্যাপারে সে নিজেকে খুব আত্মবিশ্বাসী মনে করছে?

    তাহলে তো আমাদের একে অপরের বিরুদ্ধে খেলতেই হবে। এর মাধ্যমেই আমাদের মধ্যে কে সবচেয়ে পাকা খেলোয়াড়, তা বের করা সম্ভব হবে।

    কিন্তু আমার পক্ষে এখন কিই বা করা সম্ভব? প্রতিপক্ষ আমার হাত থেকে যুদ্ধে অংশ নেবার সুযোগ ছিনিয়ে নিয়েছে। এখন তাকে চ্যালেঞ্জ দেওয়ার মতো কিছুই খুঁজে পাচ্ছি না।

    “কী হলো?” মাকি আমার দিকে বিভ্রান্তির দৃষ্টিতে তাকালো। গভীর চিন্তায় ডুবে গিয়েছিলাম বলে তার গল্পটা শুনতে পাইনি।

    “না, কিছু না। মনে হচ্ছে খুব বেশি ওয়াইন খেয়ে ফেলেছি।” হেসে আমার সামনে রাখা শারবেট ডেজার্ট একচামচ তুলে নিয়ে মুখে পুরলাম।

    রেঁস্তোরা থেকে বের হয়ে তাকে জিজ্ঞাসা করলাম, সে আমার সাথে কোথাও ড্রিংক করতে যেতে চায় কিনা। একটুও চিন্তা না করে সে সম্মতি জানালো। হাত তুলে একটা ট্যাক্সি থামালাম।

    টাক্সি চলতে শুরু করার পর মাকি বলে উঠল, “যাক, তুমি ঠিক আছো। আমি তোমার জন্য বেশ চিন্তা করছিলাম।”

    “মানে?”

    “মানে আসলে হয়েছে কী…” কিছুক্ষণ চুপ থেকে মনের ভেতর শব্দগুলো সাজিয়ে সে আবার মুখ খুললো। “আমি ভাবছিলাম তুমি হয়তো বিষণ্ণ হয়ে আছো। কিংবা বিষণ্ন না, বরং রেগে আছো…”

    “অদ্ভুত তো! আমি কেন বিষণ্ন হবো? রেগেই বা থাকবো কেন?”

    প্রশ্নটা শুনে সে আমার দিকে জবুথুবু হয়ে তাকালো। “আজকে সকালেই জুনের সাথে ফোনে কথা হয়েছে। চিনো তো ওকে? জুন উয়েনো?”

    “অবশ্যই তাকে চিনি।” জুনকো উয়েনো সাইবারপ্ল্যানের একজন কর্মচারী। তার কারণেই আমি মাকির সাথে পরিচিত হতে পেরেছিলাম। তারা নাকি হাইস্কুল থেকে একে অপরের ঘনিষ্ঠ বান্ধবী। “সে কি তোমাকে কিছু বলেছে?”

    “হুম, সে বলেছে যে তোমার নাকি মনটা আজকে ভালো না।”

    “মন ভালো না?

    “সে আমাকে বলল যে, তোমাকে নাকি একটা গুরুত্বপূর্ণ প্রজেক্টের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল, কিন্তু এখন সেটা থেকে ছাড়িয়ে নেওয়া হয়েছে…”

    “সে বলেছে এই কথা?”

    “হ্যাঁ।”

    দীর্ঘশ্বাস ফেললাম। তারমানে গোটা কোম্পানির সবার জানা হয়ে গেছে যে, শুনসুকে সাকুমাকে নিসেই অটোমোবাইলস-এর ক্যাম্পেইনের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। সাথে কিছু গুজবও নিশ্চয়ই ছড়িয়ে পড়েছে। যেসব কর্মচারীরা ছড়িয়েছে, তাদের অনেকেই আমাকে দেখতে পারে না। তাদের ধারণা, আমি নিজের স্বার্থের জন্য তাদেরকে ব্যবহার করেছি।

    “জুন আমাকে বলেছে, তোমাকে এভাবে প্রজেক্টটা থেকে ছাড়ানো ঠিক হয়নি। কারণ, তোমার মতো নিখুঁত কর্মচারী একটাও খুঁজে পাওয়া সম্ভব নয়।”

    “সে এ কথাটা বলেছে শুনে গর্ববোধ করছি।” জুনকো উয়েনোর মতো মানুষের মুখে এরকম কথা শুনে আমার বিন্দুমাত্র গর্ববোধ হচ্ছিল না। বরং এভাবে আমাকে করুণার চোখে দেখছে বলে অপমানবোধ হতে লাগলো।

    “সত্যি বলছি। অপরাধকর্ম বাদ দিলে বাকি যে-কোনো ক্ষেত্রে কেউ তোমাকে হারাতে পারবে না।”

    “আচ্ছা…..”

    কথাগুলো আমার মনে একটা পরিবর্তন জাগালো। একটা চিন্তা মাথায় অস্পষ্টভাবে ঘুরে বেড়াচ্ছে। কিছু একটা ভুলে গেলে সেটা মনে করতে গিয়ে যেরকম টানাপোড়েনের স্বীকার হতে হয়, ঠিক সেরকম লাগছে। অবশেষে চিন্তাটা একটা পরিষ্কার রূপ ধারণ করলো।

    “এক্সকিউজ মি, ট্যাক্সিটা এখানেই থামান।” ট্যাক্সি ড্রাইভারকে বললাম। “একজন এখানে নেমে যাবো।”

    পাশে বসে থাকা মাকির চোখ বড়ো বড়ো হয়ে গেল। “কী হলো?”

    “দুঃখিত। জরুরি একটা কাজের কথা হঠাৎ মনে পড়ে গেছে। পরে দেখা হলে সব বুঝিয়ে বলব।”

    মানিব্যাগ থেকে দুটো দশহাজার ইয়েনের নোট বের করে তার হাতে গুঁজে, কোনো কথার উত্তর না দিয়ে ট্যাক্সি থেকে বের হয়ে গেলাম। ট্যাক্সি চলতে শুরু করলো। সে অবস্থাতেই মাকি জানালা দিয়ে আমার দিকে বোকার মতো তাকিয়ে রইল। আমার আচরণে সে পুরো থতমত খেয়ে গেছে।

    ওখানে দাঁড়িয়ে থেকেই আরেকটা ট্যাক্সি ডাকলাম। উঠেই ড্রাইভারকে বললাম, “কায়াবাচো পোলার হোটেলে চলো।”

    কায়াবাচো পোলার হোটেলের সামনে নেমে গেলাম। গেট দিয়ে ভেতরে ঢুকে ফ্রন্ট ডেস্ক পার হয়ে চলে গেলাম সোজা লিফটের দিকে।

    দরজায় নক করলাম। কিন্তু ভেতর থেকে কোনো সাড়া পেলাম না। আবার নক করলাম। আগের মতোই সাড়াহীন। যখন মনে হতে লাগলো যে, সে আমাকে না জানিয়ে হয়তো বাইরে ঘুরতে বেরিয়েছে, ঠিক তখনোই দরজাটা খুলে গেল। দরজার ফাঁক দিয়ে জুরি নিজের মুখটা দেখালো।

    “হাই।” বললাম।

    “আপনি তো একা, তাই না?”

    “হুম।”

    সে মাথা নেড়ে দরজাটা বন্ধ করে দিল। তারপর চেইন লকটা খুলে আবার দরজাটা খুলে দিল।

    ভেতরে ঢুকে দেখলাম, টিভিটা অন করে রাখা। এ সময়ের সবচেয়ে জনপ্রিয় গানগুলো নিয়ে একটা অনুষ্ঠান চলছে। বিছানায় শুয়ে শুয়ে জুরি টিভি দেখছিল। যে স্ন্যাকস খেতে খেতে টিভি দেখছিল, তা বিছানাটাতেই ছড়িয়ে-ছিটিয়ে ছিল। নাইটস্ট্যান্ডের ওপরে একটা অ্যাশট্রে আর এক বোতল জুস দেখতে পেলাম।

    “ভালো কিছু খেয়েছো তো?”

    “সামনের একটা ফ্যামিলি রেঁস্তোরায় গিয়েছিলাম।”

    “মেন্যুতে কী ছিল?”

    “আমাকে নিয়ে এতটা ভাবা লাগবে না।”

    “আমি তোমার স্বাস্থ্য নিয়ে চিন্তিত। এ বয়সে তোমাকে সবসময় পুষ্টিকর খাদ্য খেতে হবে।”

    “আচ্ছা।” সে আমার দিকে তাকিয়ে বিছানায় ধপ করে বসে পড়লো। “তারমানে আপনি যদি আপনার প্রিয় ক্লায়েন্টের মেয়েকে বাড়িতে ফিরিয়ে নিয়ে যান, তবে তাকে সুস্থ দেহেই নিয়ে যেতে হবে? তা না হলে কি আপনাকে বসের ঝাড়ি খেতে হবে?”

    আবারও মেয়েটা বেয়াদবের মতো আচরণ করছে। খুব ইচ্ছা করছে তাকে কিছু শিক্ষা দিই।

    চেয়ারটা টেনে নিয়ে বসে পড়লাম। এবার রিমোটটা হাতে নিয়ে টিভিটা বন্ধ করে দিলাম।

    “এখন বলো, তোমার কি বাড়ি ফিরে যেতে ইচ্ছা করছে?”

    “আপনাকে তো আগেই বলেছি আমি বাড়ি ফিরে যাবো না। বারবার ঐ একই প্রশ্ন করা বন্ধ করুন।

    “আমি একদম নিশ্চিত হতে চাচ্ছি। কারণ, ব্যাপারটা অনেক গুরুত্বপূর্ণ।”

    “গুরুত্বপূর্ণ?” তার ভ্রু কুঁচকে গেল। “কীভাবে?”

    “পরে সব ব্যাখ্যা করব। আমি শুধু আরেকটা ব্যাপারে নিশ্চিত হতে চাই। গতরাতে তুমি আমাকে বলেছিলে যে, আমি যেন তোমার হয়ে ওদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে আসি। ‘যেটুকু আমার প্রাপ্য, সেটুকুই যেন আপনার হাতে দিয়ে দেওয়া হয়’– এ কথাটাও তুমি বলেছিলে। কথাটা কি ঠাট্টা করে বলেছিলে?”

    “ওসব নিয়ে ঠাট্টা করবো কেন? আমি তো আর বাচ্চা নই যে, ঘর থেকে পালিয়ে আমার প্রতি বাবা-মায়ের ভালোবাসাটা পরখ করছি!”

    “তারমানে তুমি একদম সিরিয়াস।” তীক্ষ্মচোখে তার দিকে তাকালাম।

    “আমি তো বলেছিই। আর কতবার আমার মুখ থেকে কথাটা বের করাবেন?” সে বিরক্তির সুরে জবাব দিলো।

    “চমৎকার।”

    চেয়ারে বসেই হাতের পাশের ফ্রিজটা খুললাম। সেখান থেকে এক ক্যান বাডওয়াইজার বিয়ার বের করে খুলে ফেললাম। ক্যানের ভেতর থেকে অজস্র ফেনা বেরিয়ে হাতটা ভিজিয়ে দিল।

    মুখভর্তি করে বিয়ার নিয়ে ক্যানটা ডেস্কে রেখে দিলাম। এবার অন্য আলোয় জুরিকে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখা শুরু করলাম। আমার এরকম ভাবভঙ্গির পরিবর্তন হতে দেখে তাকে একটু ভীত মনে হলো।

    এ মুহূর্তেই আমাকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। পরিকল্পনাটা শোনার পর সে কীরকম বোধ করবে? যদি সে সাথে সাথে না করে দেয়, তবে খেলা তক্ষুনি শেষ হয়ে যাবে। সে তার বাবার কাছে ফিরে গিয়ে বলে দেবে যে, শুনসুকে সাকুমা একটা বদ্ধ পাগল। আর তার বাবা সবকিছু শোনার পর যে সাথে সাথে কোজুকাকে ফোন দিয়ে আমাকে চাকরিচ্যুত করার দাবি জানাবে, সেটা লিখে দিতে পারি। কোজুকা কখনো কাতসুতোশি কাতসুরাগির বিরুদ্ধে যাবে না। ফলাফল? আমাকে ঘাড়ধাক্কা দিয়ে কোম্পানি থেকে বের করে দেওয়া হবে।

    কিন্তু সাইবারপ্ল্যানের সাথে আষ্ঠেপৃষ্ঠে লেগে থাকলে আমাকে বারবার অপমানিত হতে হবে। তাই আমার একটা রি-ম্যাচ দরকার।

    ছোটোবেলায় যেসব আর্কেড গেম খেলতাম, সেগুলোর কথা মনে পড়ে গেল। ‘স্পেস ইনভেডার’ গেমটার জনপ্রিয়তা কমে যাবার পর আরো অনেক আর্কেড গেম এসে তার জায়গাটা দখল করেছিল। নতুন কোনো গেম এলেই আমি আর্কেডে চলে যেতাম। রঙিন পর্দায় সবসময় সেই যন্ত্রটা আমাকে তার সাথে ডুয়েল করার আহ্বান জানাতো।

    ইনসার্ট কয়েন (Insert coin)। এখনকার পরিস্থিতি আমার কাছে ঠিক সেই আগের মতোই লাগছে।

    অবশেষে মুখ খুললাম। “একটা খেলা খেললে কেমন হয়?”

    “খেলা?” জুরির চোখেমুখে সন্দেহ ফুটে উঠল।

    “এমন একটা খেলা খেলব, যাতে জিততে পারলে তোমার ইচ্ছা পূরণ হবে। কাতসুরাগিদের কাছ থেকে তোমার প্রাপ্যটা তুমি ছিনিয়ে নিতে পারবে। আমিও তার কিছুটা ভাগ পাবো।”

    “আপনি আসলে কী করতে চান?”

    “কেন? যা করতে চাচ্ছি তা তো তোমার জানা। সবার প্রথমে তুমিই তো আইডিয়াটা দিয়েছিলে।” বিয়ারের ক্যানটা আবার হাতে নিয়ে ঢকঢক করে বাকিটুকু গিলে ফেললাম। তারপর তার চোখে সোজাসুজি তাকালাম। “আমি একটা কিডন্যাপিং গেম খেলতে চাই।”

    1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11 12 13 14 15 16 17 18 19 20 21
    Share. Facebook Twitter Pinterest LinkedIn Tumblr Email Reddit VKontakte Telegram WhatsApp Copy Link
    Previous Articleভবিষ্য পুরাণ – অনুবাদ : স্বামী পরমাত্মানন্দনাথ ভৈরব (গিরি)
    Next Article ম্যালিস – কিয়েগো হিগাশিনো

    Related Articles

    কেইগো হিগাশিনো

    স্যালভেশন অফ আ সেইন্ট – কিয়েগো হিগাশিনো

    August 1, 2025
    কেইগো হিগাশিনো

    দ্য ডিভোশন অব সাসপেক্ট এক্স – কিয়েগো হিগাশিনো

    August 1, 2025
    কেইগো হিগাশিনো

    দ্য রেড ফিঙ্গার – কেইগো হিগাশিনো

    August 1, 2025
    কেইগো হিগাশিনো

    দ্য মিরাকলস অব দ্য নামিয়া জেনারেল স্টোর – কেইগো হিগাশিনো

    August 1, 2025
    কেইগো হিগাশিনো

    নিউকামার – কেইগো হিগাশিনো

    August 1, 2025
    কেইগো হিগাশিনো

    ম্যালিস – কিয়েগো হিগাশিনো

    August 1, 2025
    Add A Comment
    Leave A Reply Cancel Reply

    Demo
    Most Popular

    রবিনসন ক্রুসো – ড্যানিয়েল ডিফো

    August 19, 2025

    অনুরাধা

    January 4, 2025

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025
    Demo
    Latest Reviews

    বাংলা গল্প শুনতে ভালোবাসেন? এক পাতার বাংলা গল্পের সাথে হারিয়ে যান গল্পের যাদুতে।  আপনার জন্য নিয়ে এসেছে সেরা কাহিনিগুলি, যা আপনার মন ছুঁয়ে যাবে। সহজ ভাষায় এবং চিত্তাকর্ষক উপস্থাপনায়, এই গল্পগুলি আপনাকে এক নতুন অভিজ্ঞতা দেবে। এখানে পাবেন নিত্যনতুন কাহিনির সম্ভার, যা আপনাকে বিনোদিত করবে এবং অনুপ্রাণিত করবে।  শেয়ার করুন এবং বন্ধুদের জানাতে ভুলবেন না।

    Top Posts

    রবিনসন ক্রুসো – ড্যানিয়েল ডিফো

    August 19, 2025

    অনুরাধা

    January 4, 2025

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025
    Our Picks

    রবিনসন ক্রুসো – ড্যানিয়েল ডিফো

    August 19, 2025

    দ্য দা ভিঞ্চি কোড – ড্যান ব্রাউন

    August 19, 2025

    এঞ্জেলস এন্ড ডেমনস – ড্যান ব্রাউন

    August 19, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram Pinterest
    • Home
    • Disclaimer
    • Privacy Policy
    • DMCA
    • Contact us
    © 2025 Ek Pata Golpo. Designed by Webliance Pvt Ltd.

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.

    Sign In or Register

    Welcome Back!

    Login below or Register Now.

    Lost password?

    Register Now!

    Already registered? Login.

    A password will be e-mailed to you.