Close Menu
এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    What's Hot

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১২

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১৩

    December 12, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    • 📙
    • লেখক
    • শ্রেণী
      • ছোটগল্প
      • ভৌতিক গল্প
      • প্রবন্ধ
      • উপন্যাস
      • রূপকথা
      • প্রেমকাহিনী
      • রহস্যগল্প
      • হাস্যকৌতুক
      • আত্মজীবনী
      • ঐতিহাসিক
      • নাটক
      • নারী বিষয়ক কাহিনী
      • ভ্রমণকাহিনী
      • শিশু সাহিত্য
      • সামাজিক গল্প
      • স্মৃতিকথা
    • কবিতা
    • লিখুন
    • চলিতভাষার
    • শীর্ষলেখক
      • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
      • বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
      • শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়
      • বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • সত্যজিৎ রায়
      • সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
      • বুদ্ধদেব গুহ
      • জীবনানন্দ দাশ
      • আশাপূর্ণা দেবী
      • কাজী নজরুল ইসলাম
      • জসীম উদ্দীন
      • তসলিমা নাসরিন
      • মহাশ্বেতা দেবী
      • মাইকেল মধুসূদন দত্ত
      • মৈত্রেয়ী দেবী
      • লীলা মজুমদার
      • শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
      • সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়
      • সমরেশ মজুমদার
      • হুমায়ুন আহমেদ
    • English Books
      • Jules Verne
    • 🔖
    • ➜]
    Subscribe
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)

    মাসুদ রানা ৪৪৮ – মৃত্যুঘণ্টা

    লেখক এক পাতা গল্প361 Mins Read0
    ⤶ ⤷

    মৃত্যুঘণ্টা – ২৩

    তেইশ

    নরক গুলজার করছে আর্তচিৎকার, গুলি ও ফায়ার অ্যালার্ম। জ্যানিটরের খুপরির ভেতর কাউকে দেখল না রানা। বিশ্বাস করছে না নিজের চোখ। দপদপ করা লাল আলোয় আবারও দেখল ফাঁকা জায়গাটা। প্রচণ্ড আওয়াজের ওপর দিয়ে চিৎকার করল ও, ‘মোনা!’

    জবাব দিল শুধু হুঁই-হুঁই শব্দে ফায়ার অ্যালার্ম।

    হয়তো লুকাবার ভাল কোনও জায়গা পেয়েছে মোনা, তা নইলে…

    যা বোঝার বুঝে গেল রানা, পুবের করিডোর লক্ষ্য করে ছুটল রাইফেল হাতে। ভাল করেই জানে, সিকিউরিটি দলের কেউ এই তলায় উঠে এলে, দেরি না করে গুলি করবে ওকে।

    এক দৌড়ে স্টেয়ারওয়েলে পৌঁছল। ভিড় করে সিঁড়ি বেয়ে নামতে চাইছে অনেকে। মোটা এক লোক পড়ল রানার সামনে। ধাক্কা দিয়ে তাকে সরিয়ে দিল ও। সিঁড়ি বেয়ে উঠবে। ভিড় ঠেলে রেলিং টপকে সিঁড়ির ওপরের ধাপে উঠল, ছুটল হেলিপোর্ট লক্ষ্য করে।

    মাত্র কয়েক সেকেণ্ডে বেরিয়ে এল রাতের আকাশে। ছাতের ক্যাটওয়াক গেছে হেলিপ্যাডে। চারপাশে তুমুল বাতাস ছড়িয়ে দিচ্ছে ফ্রেঞ্চ ডফিন হেলিকপ্টার, যে-কোনও সময়ে ভেসে উঠবে আকাশে। যান্ত্রিক ফড়িঙের দিকে মোনাকে টেনে নিচ্ছে সশস্ত্র দু’জন লোক।

    বাম হাঁটুর ওপর ভর করে কাঁধে রাইফেল তুলল রানা। ওর প্রথম গুলি লাগল ডানের লোকটার মেরুদণ্ডে। বামের লোকটা মোনাকে নিয়ে হুমড়ি খেয়ে পড়ল ক্যাটওয়াকে। উঠে বসেই আন্দাজে গুলি করল। কিন্তু মস্ত ছাতে যে-কোথাও থাকতে পারে তার শত্রু।

    ক্যাটওয়াকের শুরুতে কুঁজো হয়ে বসে আছে রানা।

    উঠে মোনাকে বর্মের মত ধরে পিছিয়ে যেতে লাগল সন্ত্রাসী।

    সুবিধা হবে না তার। মাত্র এক সেকেণ্ডের জন্যে মোনার কাছ থেকে সে সরলেই…

    হেলিকপ্টারে মোনাকে ঠেলে তুলল লোকটা। ওই একই মুহূর্তে রানার গুলি ফুটো করল তার মগজ। ছিটকে ক্যাটওয়াকে পড়ল লাশ।

    তখনই হেলিকপ্টার থেকে এল রানার দিকে গুলি। বাধ্য হয়ে পিছিয়ে কাভার নিল ও। মাথা তোলার সুযোগ নেই, চারপাশের ক্যাটওয়াকে লেগে পিছলে যাচ্ছে এক ঝাঁক গুলি।

    এদিকে কানফাটা শব্দ তুলছে হেলিকপ্টারের ইঞ্জিন। আরও বাড়ল বাতাসের দাপট। রানা বুঝল, পিচ বাড়িয়ে দিয়েছে পাইলট। এবার যে-কোনও সময়ে টেক অফ করবে।

    ওদিকে গুলি পাঠাল রানা, পরক্ষণে ঝেড়ে দৌড় দিল হেলিকপ্টার লক্ষ্য করে। মৃত্যু-খেলায় হারবে না, জেদ ধরেছে। যান্ত্রিক ফড়িং আকাশে উঠছে বলে ল্যাণ্ডিং গিয়ারের ওপর থেকে কমল চাপ। ছোট সব স্ফুলিঙ্গ ও খুদে সব ধাতুর টুকরোর ঝড় চারপাশে, ওর দিকে আসছে একগাদা গুলি। অথচ আগ্নেয়াস্ত্রের আওয়াজ শুনল না। একপাশে ঝাঁপিয়ে পড়েই পাল্টা গুলি পাঠাল রানা।

    হেলিকপ্টারের সামনের বুদ্বুদের মত প্লেক্সিগ্লাসে তৈরি হলো সাদা গোল গর্ত। পাল্টে গেল রোটরের গর্জন। সিটে হুমড়ি খেয়ে পড়েছে পাইলট। কাঁপতে কাঁপতে কিছুটা উঠল হেলিকপ্টার। পরক্ষণে কাত হয়ে ধুম করে নামল হেলিপ্যাডে। হাজার টুকরো হয়ে চারদিকে ছিটকে গেল রোটরের ভাঙা কার্বন কমপোজিট।

    উপুড় হয়ে শুয়ে আছে রানা। দরদর করে রক্ত বেরোচ্ছে বাহু ও কাঁধ কেটে। আরেকটু হলে উড়ন্ত অজস্র ছোরা খতম করত ওকে। খুন হয়নি বলে খুশি, তার চেয়েও খুশি, হেলিকপ্টার নিয়ে পালাতে পারেনি সন্ত্রাসীরা। মুখ তুলে তাকাল, আর তখনই ভীষণ ভয়ে আত্মা কেঁপে গেল ওর।

    কাত হয়ে পড়েছে হেলিকপ্টার, অর্ধেক দেহ ছাতের বাইরে। এতক্ষণে অনেক নিচের রাস্তা লক্ষ্য করে নেমে যেত যান্ত্রিক ফড়িং। হেলিপ্যাড ঘিরে রাখা তিনটে কেবলের গার্ডরেইল আটকে রেখেছে ল্যাণ্ডিং গিয়ারের এক অংশ।

    চাপের মুখে টানটান হয়ে উঠেছে তিন কেবল। বেঁকে যাচ্ছে ওগুলোকে ধরে রাখা লোহার খুঁটি। খুব ধীরে আরও কাত হচ্ছে হেলিকপ্টার। অনেক নিচে রাস্তা।

    লাফিয়ে উঠে হেলিকপ্টারের দিকে ছুট দিল রানা, দেখতে না দেখতে হাঁচড়েপাঁচড়ে উঠল বিধ্বস্ত আকাশযানের গায়ে।

    রাইফেল তাক করল রানা। ঝাঁকি লেগে খুলে গেছে কপ্টারের দু’দিকের দরজা। নিচ থেকে রানার দিকে চেয়ে আছে মোনা। এখনও আটকে আছে সিটবেল্টের কারণে। ভীষণ ভয়ে থরথর করে কাঁপছে মেয়েটা। দু’হাতে শক্ত করে ধরতে চাইছে সিট। পিছন থেকে ওর কোমর জড়িয়ে ধরেছে সোনালি পনিটেইলওয়ালা এক লোক।

    রানাকে দেখে দাঁত খিঁচাল সে।

    শত শত ফুট নিচে রাস্তার বাতি ও গাড়ি দেখল রানা। ইমার্জেন্সি সব ভেহিকেল থামছে হোটেলের সামনে।

    হাত বাড়িয়ে খপ করে মোনার বাহু ধরল রানা, কিন্তু ওর নিজের ওজনে আরও কাত হলো হেলিকপ্টার। ধাতব আওয়াজ এল রেইলগার্ড থেকে।

    পড়ে যাচ্ছি! আমার হাত শক্ত করে ধরো, রানা!’ বেসুরো কণ্ঠে চিৎকার করল মোনা।

    ‘ধরেছি!’ পাল্টা চেঁচাল রানা।

    রাতের নীরবতায় গুলির রিকোশের মত ‘বিঙ্‌’ আওয়াজ তুলে একফুট নেমে গেল হেলিকপ্টার। ছিঁড়ে গেছে তিনটে কেবলের একটা!

    ঝাঁকি খেয়ে মোনার বাহু পিছলে গেল খানিকটা। রানার ধরা বাহুতে বেকায়দা টান লাগতেই তীক্ষ্ণ আর্তনাদ করে উঠল সে।

    শক্ত হাতে কিছু ধরে টেনে তুলতে হবে মোনাকে, ভাবল রানা। কিন্তু মেয়েটার কোমর জড়িয়ে ধরেছে সোনালি চুলের সন্ত্রাসী। এক সঙ্গে দু’জনকে তোলার সাধ্য ওর নেই। আরও শক্ত করে মোনার বাহু ধরল ও, অন্য হাতে হাতড়াতে শুরু করেছে। পেয়ে গেল রাইফেল। ওটা ঘুরিয়েই তাক করল সন্ত্রাসীর দিকে।

    ‘না!’ ভীষণ ভয়ে চিৎকার করে উঠল লোকটা।

    তার সঙ্গে সুর মিলিয়ে চেঁচিয়ে উঠল মোনাও। কিন্তু দু’জনের গলা চাপা পড়ল রাইফেলের গর্জনে।

    নিচের অন্ধকারে হারিয়ে গেল সোনালি পনিটেইল।

    রাইফেল ফেলে দু’হাতে মোনাকে ধরল রানা, ধমকের সুরে বলল, ‘উঠে এসো!’

    ‘পারছি না!’ কেঁদে ফেলল মেয়েটা। ‘হাতে খুব ব্যথা!’

    ‘সিটবেল্ট খুলে উঠে এসো!’ চিৎকার করল রানা। পিছিয়ে যেতে শুরু করেছে। কপ্টার থেকে টেনে বের করবে মোনাকে।

    কয়েক ইঞ্চি উঠে এল মেয়েটা, এক পা তুলল ফিউযেলাজে।

    আবারও পিছলে গেল হেলিকপ্টার। বিকট খটাং আওয়াজে ছিঁড়ল দ্বিতীয় কেবল। শেষের কেবল বেশিক্ষণ ওজন নেবে না।

    ‘এসো!’ পাগলের মত চিৎকার করল রানা। গায়ের সব শক্তি দিয়ে তুলে আনতে চাইছে মোনাকে।

    ব্যথায় আর্তচিৎকার করছে মেয়েটা। এক পায়ে ভর করে উঠে আসতে চাইল। বাটন টিপে খুলে দিল সিটবেল্ট।

    পিছিয়ে যাচ্ছে রানা, নিজের দিকে তুলে আনবে মোনাকে। কপ্টারের কোমরে পা রেখে প্রাণপণে লাথি মেরে পিছিয়ে যেতে চাইল। তৃতীয়বার পায়ের চাপে পেছাতে যেতেই বুলেটের মত শব্দে ছিঁড়ে গেল তৃতীয় কেবল।

    ছিটকে পেছনের হেলিপ্যাডে পড়ল রানা, ওর বুকের ওপর মোনা। অনেক নিচের রাস্তা লক্ষ্য করে রওনা হয়ে গেছে বিধ্বস্ত হেলিকপ্টার।

    মোনাকে বুকে নিয়ে চুপ করে শুয়ে আছে রানা। কয়েক সেকেণ্ড কিছুই শুনল না, তারপর দূর থেকে এল জোরালো অসুস্থকর কুড়মুড়ে আওয়াজ। পরক্ষণে বিস্ফোরিত হলো কী যেন। পোড়া হাই-অকটেনের ঝাঁঝাল গন্ধের পর হেলিপ্যাডের আকাশে উঠল ঘন কালো ধোঁয়া।

    দীর্ঘশ্বাস ফেলল রানা। আপাতত বিপদ নেই। তবে মোনাকে নিয়ে ঝামেলায় জড়িয়ে যাওয়ার আগেই বেরিয়ে যেতে হবে এই হোটেল ছেড়ে। বুকের ওপর থেকে মোনাকে নামিয়ে দিল রানা। উঠে দাঁড়াতে সাহায্য করল।

    ভয়ে চুনের মত ফর্সা হয়ে গেছে মেয়েটার মুখ। চোখে অশ্রু নেই, কথাও বন্ধ। আছে শকের ভেতর।

    ‘এসো,’ নরম সুরে বলল রানা। মোনার হাত ধরে ফিরে চলল সিঁড়ির দিকে।

    একদল লোক জড় হয়ে হেলিকপ্টার পড়ে যাওয়া দেখেছে। তাদের একজন খুলে দিল সিঁড়ির দরজা। হাততালি দিল আরেকজন।

    ভিড় থেকে বেরিয়ে এল জন এফ. হার্বার্ট। এখন মুখে রা নেই। অন্তর কেঁপে গেছে তার। দ্বিধা নিয়ে জানতে চাইল, ‘তুমি সিকিউরিটির লোক নও, না?’

    ‘না।’ লোকটাকে ঠেলে মোনাকে নিয়ে সিঁড়ি বেয়ে নামতে লাগল রানা।

    একাশিতম তলায় পৌঁছে দেখল, আগের চেয়ে কমেছে হৈ- চৈ। গোলাগুলির সময় আহত হয়েছে বাইশজন লোক। খুন হয়েছে সন্ত্রাসী সহ বারোজন। একদল সিকিউরিটির লোক শান্ত করছে সাধারণ মানুষকে। পৌঁছে গেছে ডাক্তার ও নার্স। মার্ভেল ড্রাগ্‌স্‌ কর্পোরেশনের কর্মকর্তাদের অনেকে নিজেরাই ডাক্তার। দেরি করেননি ট্রেনিং অনুযায়ী কাজ করতে। সুস্থ পুরুষ ও মহিলারা সাহায্য করছে আহতদেরকে। সরিয়ে নেয়া হচ্ছে তাদের। কোত্থেকে হাজির হয়েছেন এক যাজক। মৃতদের জন্যে প্রার্থনা করছেন।

    এক হাতে আহত বাহু ধরে চারপাশ দেখছে মোনা। যেন নেশার ভেতর আছে। বাংলায় বিড়বিড় করে বলল, ‘মিনতি।’

    ‘কী বললে?’ জানতে চাইল রানা।

    মুখ তুলে ওকে দেখল মোনা, হঠাৎ করেই হয়ে উঠেছে সতর্ক। নিচু স্বরে বলল, ‘এরা এসেছিল আমাকে তুলে নেয়ার জন্যে। তার মানে মিনা ফুফু আর মিনতি আছে ভয়ঙ্কর বিপদের ভেতর।’

    ‘মিনা ফুফু আর মিনতি?’ আগে এসব নাম মোনা বা ডক্টর মোবারকের মুখে শোনেনি রানা।

    ‘ওদেরকে সরিয়ে নিতে হবে,’ গালে রং ফিরে এসেছে  মোনার। ‘এসো, দেরি করা ঠিক হবে না।’

    লবিতে নেমে ওরা দেখল, পুরো হোটেল ঘিরে ফেলেছে পুলিশ ও ফায়ার ব্রিগেডের লোক। আহত ও সন্ত্রস্ত রোগীদেরকে নিয়ে ছোটাছুটি করছে প্যারামেডিকরা।

    রক্তমাখা পোশাকে মোনাকে দেখে এগিয়ে এল হোটেলের ম্যানেজার। ‘আল্লাকে ধন্যবাদ, তিনি আপনাকে রক্ষা করেছেন। খুব গুরুতরভাবে আহত হননি তো?’

    ‘না,’ বলল মোনা। ‘আমার একটা গাড়ি দরকার।’

    মাথা নাড়ল ম্যানেজার। ‘এই গণ্ডগোলের ভেতর গাড়ি নিয়ে কোথাও যেতে পারবেন না।’

    পুরো রাস্তা জুড়ে পড়ে আছে বিধ্বস্ত হেলিকপ্টার। এখনও জ্বলছে ওটার তেল।

    ‘আমাকে যেতেই হবে, প্লিয,’ কাতর সুরে বলল মোনা।

    ওকে এবং রানাকে কয়েক সেকেণ্ড দেখল ম্যানেজার, তারপর দ্বিধা কাটিয়ে বলল, ‘আমাদের হোটেলের বোট আছে টুরিস্টদের জন্যে।

    ‘খুব উপকৃত হব ওটা দিলে,’ বলল মোনা।

    পাঁচ মিনিট পর বোটে চেপে রওনা হলো রানা ও মোনা। এই নৌযান ব্যবহার করা হয় দুবাইয়ের তীর থেকে হোটেলে টুরিস্ট আনার কাজে। বোট ওদেরকে পৌঁছে দিল তীরে। ওখানে অপেক্ষা করছে গাড়ি। তিরিশ মিনিট পর দুবাইয়ের শহরতলীতে পৌঁছল ওরা। গাড়ি থামল বিলাসবহুল এক অ্যাপার্টমেন্ট কমপ্লেক্সের গ্যারাজে।

    চতুর্থতলায় উঠে সামনের দরজায় জোরে জোরে টোকা দিল মোনা। চিৎকার করে ডাকল: ‘মিনা ফুফু! মিনা ফুফু!’

    কয়েক সেকেণ্ড পর দরজা খুলে দিলেন কাঁচা-পাকা চুলের এক মধ্যবয়স্কা মহিলা। কাঁধে শাল। চেহারা দেখে ভীতা মনে হলো। অবশ্য জড়িয়ে ধরলেন মোনাকে। ‘একটু আগে নিউযে দেখলাম কী হয়েছে! খুব চিন্তায় পড়ে গিয়েছিলাম।’ মোনার পোশাকে রক্ত দেখছেন।

    ‘রক্ত আমার না,’ বলল মোনা।

    সোনালি পনিটেইলের, ভাবল রানা।

    ‘আর ইনি?’ সন্দেহ নিয়ে রানাকে দেখলেন মহিলা।

    ‘আমার বন্ধু,’ বলল মোনা। ‘অনেক দিন পর দেখা। ওঁর নাম মাসুদ রানা।’

    পিছিয়ে গেলেন মিনা। চোখ থেকে বিদায় নিয়েছে সন্দেহ। সেখানে বিস্ময় ও উষ্ণতা। ‘ও, তা হলে আপনিই তিনি।’

    ভুরু উঁচু করল রানা। ‘বুঝলাম না।’

    ‘আপনিই ওদেরকে বের করে এনেছিলেন কঙ্গো থেকে, ‘ বললেন মিনা। ‘মোবারক ভাইয়া বলেছিল আমাদেরকে সাহায্য করবে। কিন্তু বুঝতে পারছিল না ঠিক সময়ে আপনাকে খুঁজে পাবে কি না।’

    ‘পাননি,’ নিচু স্বরে বলল রানা, ‘ওঁর কাছে ঠিক সময় যেতে পারিনি।’

    চোখ সরিয়ে নিলেন মোনার ফুফু। অবশ্য ভাস্তির মত মস্ত ঝাঁকি লাগেনি। শুকনো গলায় বললেন, ‘খুব অবাক হইনি।’

    ‘আপনাদের সঙ্গে আলাপ করব,’ বলল রানা, ‘কিন্তু আজ যা হলো, এরপর আপাতত এ বাড়ি আপনাদের জন্যে নিরাপদ নয়।’ ফ্ল্যাটের ভেতর চোখ বোলাল ও। প্রতিটি জিনিস খুব যত্ন করে গুছিয়ে রাখা। কিন্তু মেঝেতে কয়েকটা ব্যাগ ও একটা সুটকেস। ‘আপনারা বোধহয় কোথাও যাচ্ছিলেন?’

    ‘পাঁচ মিনিটের ভেতর যেন বেরিয়ে যেতে পারি, সেভাবে গুছিয়ে রেখেছি মালপত্র,’ বললেন মিনা, ‘মোনা, তোর বোনকে ঘুম থেকে তোল।

    এটা নতুন সংবাদ রানার জন্যে। জানত না মোনার কোনও বোন আছে।

    অন্ধকার করিডোর থেকে দুর্বল কণ্ঠে বলল কেউ, ‘আমি উঠে গেছি!’

    ঘুরে ওদিকে তাকাল রানা।

    কমবয়সী এক মেয়ে দাঁড়িয়ে আছে। দৈর্ঘ্যে বড়জোর তিন ফুট। এগিয়ে এসে মোনার কোমর জড়িয়ে ধরল।

    অবাক চোখে ওকে দেখল রানা।

    মেয়েটার চোখে পুরু প্লাস্টিকের চশমা। কুঁচকে আছে মুখের চামড়া। পাতলা হয়েছে পাকা চুল। গায়ের ত্বক জরজর, সেখানে জায়গায় জায়গায় খয়েরি রং।

    রানার প্রথমে মনে হয়েছিল, আলোর কারণে এমন লাগছে। কিন্তু বাচ্চা মেয়েটা চশমা ঠিক করে ওর দিকে ফিরে হাসতেই চমকে গেল। এই মেয়ের মুখ কী করে যেন হয়ে গেছে আশি বছরের বুড়ি মহিলার মত!

    মিনতিকে জড়িয়ে ধরে বুকে তুলে নিয়ে চাপা স্বরে বলল মোনা, ‘ও আমার বোন। নাম মিনতি। বয়স এগারো বছর।’

    ⤶ ⤷
    1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11 12 13 14 15 16 17 18 19 20 21 22 23 24 25 26 27 28 29 30 31 32 33 34 35 36 37 38 39 40 41 42 43 44 45 46 47 48 49 50
    Share. Facebook Twitter Pinterest LinkedIn Tumblr Email Reddit VKontakte Telegram WhatsApp Copy Link
    Previous Articleমা – আনিসুল হক
    Next Article রাইফেল, রোটি, আওরাত – আনোয়ার পাশা

    Related Articles

    হরিনারায়ণ চট্টোপাধ্যায়

    ভয় সমগ্র – হরিনারায়ণ চট্টোপাধ্যায়

    December 9, 2025
    হরিনারায়ণ চট্টোপাধ্যায়

    কিশোর অ্যাডভেঞ্চার সমগ্র – হরিনারায়ণ চট্টোপাধ্যায়

    December 9, 2025
    সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়

    প্রকাশ্য দিবালোকে – সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়

    November 18, 2025
    সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়

    তারপর কী হল – সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়

    November 17, 2025
    মাইকেল মধুসূদন দত্ত

    শর্ম্মিষ্ঠা নাটক – মাইকেল মধুসূদন দত্ত

    November 11, 2025
    সত্যজিৎ রায়

    মানপত্র সত্যজিৎ রায় | Maanpotro Satyajit Ray

    October 12, 2025
    Add A Comment
    Leave A Reply Cancel Reply

    Generic selectors
    Exact matches only
    Search in title
    Search in content
    Post Type Selectors
    Demo

    Your Bookmarks


    Reading History

    Most Popular

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025

    দোকানির বউ

    January 5, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025
    Demo
    Latest Reviews

    বাংলা গল্প শুনতে ভালোবাসেন? এক পাতার বাংলা গল্পের সাথে হারিয়ে যান গল্পের যাদুতে।  আপনার জন্য নিয়ে এসেছে সেরা কাহিনিগুলি, যা আপনার মন ছুঁয়ে যাবে। সহজ ভাষায় এবং চিত্তাকর্ষক উপস্থাপনায়, এই গল্পগুলি আপনাকে এক নতুন অভিজ্ঞতা দেবে। এখানে পাবেন নিত্যনতুন কাহিনির সম্ভার, যা আপনাকে বিনোদিত করবে এবং অনুপ্রাণিত করবে।  শেয়ার করুন এবং বন্ধুদের জানাতে ভুলবেন না।

    Top Posts

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025

    দোকানির বউ

    January 5, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025
    Our Picks

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১২

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১৩

    December 12, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram Pinterest
    • Home
    • Disclaimer
    • Privacy Policy
    • DMCA
    • Contact us
    © 2025 Ek Pata Golpo. Designed by Webliance Pvt Ltd.

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.

    • Login
    Forgot Password?
    Lost your password? Please enter your username or email address. You will receive a link to create a new password via email.
    body::-webkit-scrollbar { width: 7px; } body::-webkit-scrollbar-track { border-radius: 10px; background: #f0f0f0; } body::-webkit-scrollbar-thumb { border-radius: 50px; background: #dfdbdb }