Close Menu
এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    What's Hot

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১২

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১৩

    December 12, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    • 📙
    • লেখক
    • শ্রেণী
      • ছোটগল্প
      • ভৌতিক গল্প
      • প্রবন্ধ
      • উপন্যাস
      • রূপকথা
      • প্রেমকাহিনী
      • রহস্যগল্প
      • হাস্যকৌতুক
      • আত্মজীবনী
      • ঐতিহাসিক
      • নাটক
      • নারী বিষয়ক কাহিনী
      • ভ্রমণকাহিনী
      • শিশু সাহিত্য
      • সামাজিক গল্প
      • স্মৃতিকথা
    • কবিতা
    • লিখুন
    • চলিতভাষার
    • শীর্ষলেখক
      • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
      • বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
      • শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়
      • বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • সত্যজিৎ রায়
      • সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
      • বুদ্ধদেব গুহ
      • জীবনানন্দ দাশ
      • আশাপূর্ণা দেবী
      • কাজী নজরুল ইসলাম
      • জসীম উদ্দীন
      • তসলিমা নাসরিন
      • মহাশ্বেতা দেবী
      • মাইকেল মধুসূদন দত্ত
      • মৈত্রেয়ী দেবী
      • লীলা মজুমদার
      • শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
      • সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়
      • সমরেশ মজুমদার
      • হুমায়ুন আহমেদ
    • English Books
      • Jules Verne
    • 🔖
    • ➜]
    Subscribe
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)

    আলেকজান্ডার দ্য গ্রেট – আহমেদ রিয়াজ

    আহমেদ রিয়াজ লেখক এক পাতা গল্প114 Mins Read0
    ⤶ ⤷

    একিলিসের জন্য কান্না

    আলেকজান্ডার বুনো স্ট্যালিয়ন নিয়ে বেরিয়ে পড়েছেন। আর এদিকে রাজা ফিলিপ খুশি করে দিলেন ঘোড়া বিক্রি করতে আনা থেসিলিয়ানকে। থেসিলিয়ান তো মহাখুশি। ও ভাবেনি এমন একটা বুনো ঘোড়া বিক্রি করতে পারবে। বিশেষ করে রাজার কোনো সহিসই যখন এটাকে বশ মানাতে পারেনি, তখন তো এটা কেনার কথাই নয়। কিন্তু তাকে বাঁচিয়ে দিয়েছে রাজপুত্র আলেকজান্ডার। কত কষ্ট করে ঘোড়াটা ধরে এনেছে সে। আরেকটু হলে তার কষ্ট বৃথা যেত।

    মনের মতো ঘোড়া পেয়ে বেশ কিছুক্ষণ ছুটে বেড়িয়েছেন আলেকজান্ডার। ফিরে এসে দেখলেন রাজা ফিলিপ আর সভাসদরা তাকিয়ে আছেন তার দিকে। ঘোড়া থেকে নামতে না নামতেই রাজা ফিলিপ এগিয়ে গেলেন রাজপুত্রের দিকে। তারপর বুকে জড়িয়ে ধরলেন আলেকজান্ডারকে। অজানা এক গর্ব আজ তার হৃদয় জুড়ে। তার দুচোখ ছল ছল করে উঠল খুশিতে। দশ বছরের কিশোরের এমন সাহস আর বুদ্ধিমত্তায় কোনো বাবা খুশি না হয়ে পারেন না। রাজা ফিলিপ ছেলেকে জড়িয়ে ধরে চুমু খেলেন তার কপালে। তারপর বললেন, মাই সান। আমি তোমার জন্য গর্ব করি। কিন্তু তোমার স্থান কেবল এই মেসিডোনের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, তুমি নিজেকে ছড়িয়ে দাও। বিস্তৃত করো মেসিডোনোর সীমানা। বেরিয়ে পড়ো রাজ্য জয়ে।

    এটা বলার পরপরই হঠাৎ কেমন এক বিষণ্ণতা গ্রাস করল রাজা ফিলিপকে। তিনি মন খারাপ করে রইলেন। কী যেন ভাবলেন। স্বাভাবিক হওয়ার চেষ্টা করলেন। কিন্তু সেই বিষন্নতা তার পিছু ছাড়ল না। রাজপুত্রকে যতই দেখেন, ততই খুশি হন। আবার ততই দুঃখ পান রাজা। বাবা ফিলিপের বিষন্নতা বালক আলেকজান্ডারকেও ছুঁয়ে যায়। অবাক হয়ে আলেকজান্ডার জানতে চাইলেন, বাবা তুমি কি কিছু ভাবছ?

    রাজা বললেন, কেন?

    আলেকজান্ডার বললেন, তোমার মনটা হঠাৎ খারাপ হয়ে গেল মনে হচ্ছে।

    রাজা ফিলিপ বললেন, একদিন তুমি সব বুঝতে পারবে। কেন আমি তোমাকে দেখি আর মুগ্ধ হই, কিন্তু পরক্ষণেই আবার কেন মন খারাপ হয় আমার— একদিন সবই জানতে পারবে তুমি।

    জন্মের পর থেকেই নার্স লেনিকার কোলে পিঠে মানুষ হয়েছেন আলেকজান্ডার। একটু যখন বড় হলেন তখন তাকে লেখাপড়া শেখানোর দায়িত্ব পেলেন লিয়নিডাস।

    আলেকজান্ডার ছোটবেলা থেকেই ছিলেন বেশ একরোখা আর উদ্ধত স্বভাবের। এমন হওয়াটাই কিন্তু স্বাভাবিক। আলেকজান্ডারের মা অলিম্পিয়াস হচ্ছেন এপিরাসের রাজা নিউটলেমাসের মেয়ে। বদমেজাজি রানী হিসেবে তার কুখ্যাতিও ছিল। যখন তখন মাথা গরম করতেন অলিম্পিয়াস। রাজ দরবারের সবাই তার মেজাজের সাথে পরিচিত ছিলেন। তাকে খুব একটা ঘাটাতেন না কেউ। এমনকি রাজা ফিলিপও সমঝে চলতেন তাকে। রানী অলিম্পিয়াসের সাথে আলোচনা করেই আলেকজান্ডারের জন্য নিয়োগ করলেন লিয়নিডাসকে। এই লিয়নিডাস আবার রানীর দূর সম্পর্কের আত্মীয়া। আলেকজান্ডারের জন্মের পরের বছরই এক বোনের জন্ম হলো। বোনের নাম রাখা হলো ক্লিওপেট্রা। রাজা ফিলিপের সন্তান এই দুজনই। রাজধানী পেল্লার জৌলুসের মধ্যে বড় হতে থাকলেন আলেকজান্ডার। শিখতে শুরু করলেন পাটীগণিত, ঘোড়ায় চড়া আর তরবারি বিদ্যা। এছাড়া মা অলিম্পয়াসও আলেকজান্ডারকে শেখাতে লাগলেন নিজে যা জানেন— সব। মা সবসময় গল্প করতেন গ্রিক বীর একিলিসের। সুযোগ পেলেই মা কাছে ডেকে নেন আলেকজান্ডারকে। তারপর মাথায় হাত বুলিয়ে বলতে শুরু করেন, আয়োলকাসের রাজা পেলেউস ছিলেন তার বাবা। কার বাবা জানো তো?

    আলেকজান্ডারের কিন্তু ততদিনে মুখস্ত হয়ে গিয়েছে একিলিসের জীবন কাহিনী। তবু যতবার শশানেন, আরো শুনতে চান। একিলিসের কাহিনী শুনতে একটুও খারাপ লাগে না তার। মায়ের কথার জবাব দেন আলেকজান্ডার, একিলিসের বাবা।

    মা অলিম্পিয়াস খুশি হন ছেলের কথা শুনে। তারপর বলেন, একিলিসের মা কে ছিলেন জানো তো?

    আলেকজান্ডার জবাব দেন, সাগরপরী থেটিস। মা তুমিও তো পরীদের মতো সুন্দর। কিন্তু তুমি পরী নও কেন?

    মা অলিম্পিয়াস ভীষণ খুশি হন। বলেন, কে বলেছে আমি পরী নই। আমিও তো পরী।

    আলেকজান্ডার জানতে চান, তাহলে তোমার ডানা নেই কেন?

    মা অলিম্পিয়াস যেন এই প্রশ্নের জন্য অপেক্ষা করছিলেন। সাথে সাথে উত্তর দিলেন, তুমি যেদিন একিলিসের মতো বীর যোদ্ধা হয়ে উঠবে, সেদিনই দেখবে আমার ডানা গজিয়ে গেছে। আমি সেদিন পরী হয়ে যাবো।

    আলেকজান্ডার একিলিসের মতো বীর যোদ্ধা হওয়ার স্বপ্ন দ্যাখেন দিন রাত। অলিম্পিয়াসই তার মধ্যে এই স্বপ্নের বীজ বুনে দিয়েছেন।

    কত রাত মায়ের কাছে শুয়ে শুয়ে আলেকজান্ডার একিলিসের গল্প শুনেছেন। মা বলতে থাকেন, রাজা পেলেউস আর সাগরপরী থেটিসের বিয়ে। উৎসবের আমেজ। সব দেবতা আর দেবী নিমন্ত্রিত। কেবল নিমন্ত্রণ দেয়া হয়নি কলহদেবী এরিসকে। এরিস এতে ভীষণ রেগে গেলেন। তিনি উপায় খুঁজতে লাগলেন কীভাবে দেবীদের মধ্যে কলহ তৈরি করিয়ে দেয়া যায়। হঠাৎ একটা বুদ্ধি এল তার মাথায়। তিনি সাগর থেকে তাকালেন অলিম্পাস পর্বতে। ওই পর্বতে দেব—দেবীরা এতক্ষণে ভোজ উৎসবে মেতে উঠেছেন। সবাই আছেন নেই শুধু কলহদেবী। তাকে এই উৎসবের আনন্দ থেকে বঞ্চিত করার মজা এবার টের পাবে সবাই। বলেই একটা সোনার তৈরি আপেল ছুঁড়ে মারলেন খাবার টেবিলে। তারপর মুচকি হেসে সাগরে ডুব দিলেন সাগরদেবী। এই সোনার আপেলটাই হচ্ছে যত গণ্ডগোলের কারণ।

    আলেকজান্ডার অবাক হয়ে জানতে চান, একটা সামান্য সোনার তৈরি আপেল আবার কেমন করে গণ্ডগোল পাকাল মা?

    অলিম্পিয়াস বললেন, সেটাই তো মজার ঘটনা। ওই আপেলে খোদাই করে লেখা ছিল এই আসরের শ্রেষ্ঠ সুন্দরীর জন্য। মানে এই আপেলটা পাবে ওই বিয়ের আসরে যিনি সবচেয়ে সুন্দরী দেবী—তিনি। আপেলের লোভেই হোক, কিংবা নিজেকে শ্রেষ্ঠ সুন্দরীর আসনে বসানোর জন্যই হোক— দেবীদের মধ্যে আপেল নিয়ে শুরু হলো কাড়াকাড়ি। নিজেকে অসুন্দর ভাবতে কে চায়? কাজেই শ্রেষ্ঠ সুন্দরীর লড়াইয়ে নামলেন তিন দেবী। একজন হলেন ক্রনাস ও রিয়ার কন্যা স্বর্গরানী দেবী হেরা। আরেকজন হলেন দেবরাজ জিউসের প্রথম স্ত্রী মেটিস কন্যা দেবী আথিনা। দেবী আথিনা ছিলেন জ্ঞান—বিজ্ঞান, যুদ্ধবিগ্রহ ও চারুশিল্পের দেবী। আর তৃতীয়জন হচ্ছেন প্রেমের দেবী আফ্রোদিতি। দেবরাজ জিউস ও ডাইওন কন্যা আফ্রোদিতি। শুরু হয় তাদের মধ্যে ঝগড়া । এই ঝগড়ার মীমাংসা করেন ট্রয়ের রাজপুত্র প্যারিস। কিন্তু গ্রিক ও ট্রয়ের যুদ্ধ আগেই বিধিলিপিতে ছিল । আর যুদ্ধ যেহেতু লেখা ছিল, কাজেই যুদ্ধের জন্য কিছু বীরের জন্ম নেয়ারও দরকার হলো। গ্রিকবীরদের মধ্যে সেরা ছিলেন একিলিস। একিলিসের জন্মের পর ভাগ্যদেবীরা মা থেটিসকে সাবধান করে দেন এই বলে যে, একিলিস যদি কোনো ঝামেলাবিহীন সাধারন জীবন যাপন করে, তবে কোনো ভয় নেই। কিন্তু যদি যুদ্ধ বিবাদে জড়িয়ে পড়ে তবে ট্রয়ের যুদ্ধেই তার মৃত্যু হবে।

    মা হয়ে সন্তানের মৃত্যু কে চায়? দেবী থেটিসও চাইলেন না। আর যেহেতু একিলিস হবেন একজন সেরা বীর যোদ্ধা, কাজেই যুদ্ধ বিগ্রহ থেকে তাকে দূরে সরিয়ে রাখা যাবে না কোনোভাবেই। তাহলে উপায়? উপায় একটা আছে। যদি একিলিসকে স্টিক্স নদীতে চুবিয়ে আনা যায়, তাহলে আর ভয় নেই। তাহলেই একিলিস হবেন চিরঅমর এক বীর। কাজেই আর দেরি করলেন না মা থেটিস। শিশু একিলিসকে নিয়ে গেলেন স্টিক্স নদীতে। আর এই শিশু একিলিসকে ডুবাতে গিয়ে একটা ভুল করে বসলেন থেটিস। তিনি পায়ের গোড়ালি ধরে একিলিসের নদীতে ডোবালেন। একিলিসের পুরো শরীর নদীর পানিতে ভিজলেও, ভেজেনি পায়ের গোড়ালি। আর এই পায়ের গোড়ালিই তার সারা শরীরের একমাত্র স্থান হিসেবে রয়ে যায়, যেখানে আঘাত করলে একিলিসের মৃত্যু হবে।

    আলেকজান্ডার একিলিসের গল্প শোনেন তন্ময় হয়ে। মা অলিম্পিয়াসের তো হোমারের অডিসি বলতে গেলে মুখস্ত । সেখান থেকেই তিনি কখনো আবৃতি করেন, কখনো গল্প বলেন। আজ যেমন তাকেও গল্প বলার নেশায় পেয়ে বসেছে। হঠাৎ গল্পের মাঝখানে জানতে চান আলেকজান্ডার, একিলিস কি পায়ের আঘাতেই মরেছেন মা?

    অলিম্পিয়া বিরক্ত বোধ করেন খানিকটা। গল্পের মাঝখানে কথা বললে বা প্রশ্ন করলে যে কেউ বিরক্ত বোধ করবেন। আর অলিম্পিয়াস তো হলেন রাগী রানী। কাজেই তার রাগ হওয়াটাই স্বাভাবিক। তিনি একটু রেগে বললেন, আগে শুনেই নে। তারপর কথা বলিস।

    তারপর আবার বলতে শুরু করেন অলিম্পিয়াস—

    একিলিস যুদ্ধবিদ্যা শেখেন বিখ্যাত কিরনের কাছ থেকে। ছোটবেলা থেকেই একিলিস ছিলেন অহঙ্কারী আর দাম্ভিক। তার সাহসও ছিল আর সবার চেয়ে বেশি। আর তিনি ছিলেন ভীষণ রাগী।

    এদিকে যখন ট্রয়ের সাথে গ্রিকদের যুদ্ধ শুরু হবো হবো করছিল। বেশ চিন্তায় পড়েন মা থেটিস। যদিও ছেলেকে স্টিক্স নদী থেকে চুবিয়ে এনেছেন, তবু মায়ের মন। সন্তানের জন্য দুঃশ্চিন্তা তার হয়। তিনি একটা বুদ্ধি বের করেন। ছেলে একিলিসকে মেয়ের মতো পোশাক পরিয়ে সাজগোজ করিয়ে পাঠিয়ে দেন স্কাইরসে। এবার কিছুটা নিশ্চিন্ত হন থেটিস। যাক, তার ছেলেকে আর কেউ খুঁজে পাবে না । কিন্তু একিলিসের কপালে যুদ্ধ লেখা ছিল। অডিসিউস আর প্যালামিডিস ঠিকই একিলিসকে খুঁজে বের করেন। একিলিসকে খুঁজে বের করতে অবশ্য তাদের বেশ বেগ পেতে হয়েছে। নানান ছলচাতুরিও করতে হয়েছে তাদের। তবু তো খুঁজে পেলেন গ্রিকদের শ্রেষ্ঠ বীরকে। সেটাই তাদের সান্ত্বনা। যাই হোক। মা থেটিস একরকম বাধ্য হয়েই ছেলেকে যুদ্ধে যাওয়ার অনুমতি দেন। দেবতা আর দেবীর সন্তান একিলিস, সাধারন অস্ত্র দিয়ে যুদ্ধ করবেন তা কি হয়? স্বর্গের কামারদেবতা হেফাস্টাসকে দিয়ে বানিয়ে আনেন অস্ত্রশস্ত্র, ঢাল, বর্ম। সবই একিলিসের জন্য। স্বর্গীয় অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে একিলিস চলে যান ট্রয়ের যুদ্ধে।

    এ পর্যন্ত বলেই হঠাৎ খেয়াল হয় মায়ের, রাত অনেক হয়েছে। প্রাসাদের জানালা দিয়ে উঁকি দেন বাইরে। আকাশে তারাদের রাজত্ব চলছে। আর খেয়াল হতেই চুপ হয়ে যান অলিম্পিয়াস।

    কিন্তু আলেকজান্ডারের চোখে তখন ঘুম নেই। প্রয়োজনে সারা রাত গল্প শুনবেন। একিলিসের গল্প শুনতে তার দারুণ লাগে। এর মধ্যেই নিজেকে একিলিস ভাবতে শুরু করেছেন তিনি। মা চুপ হয়ে যেতেই জানতে চাইলেন, তারপর?

    অলিম্পিয়াস আলেকজান্ডারের কপালে চুমু দিয়ে বললেন, বাকিটা কাল রাতে শুনিস। এখন রাত অনেক হয়েছে, ঘুমিয়ে পড়।

    এতে আলেকজান্ডারের কৌতূহল আরো বেড়ে যায়। মায়ের কাছে অনেক অনুনয় করে। মা বলেন, কাল সকালে তোকে ঘোড়দৌড়ে অংশ নিতে হবে। খুব ভোরে উঠতে হবে। এখনই না ঘুমােলে ভোরে উঠতে পারবি না।

    বলেই মা চলে গেলেন নিজের শোবার ঘরে।

    পরের রাতে আবার গল্প শোনার নেশায় পেয়ে বসে আলেকজান্ডারকে। মায়ের মুখে গল্প শোনার মজাই যে অন্যরকম। কাজেই মা অলিম্পিয়াসকে শোনাতে হয় একিলিসের বাকি কাহিনী। আবার একিলিসের কাহিনী শুরু করেন অলিম্পিয়াস—

    কিন্তু ট্রয়ের যুদ্ধে গিয়ে একিলিসের সাথে বিরোধে জড়িয়ে পড়েন আগামেনন। এমনিতেই একিলিস বড় একরোখা স্বভাবের। এবং এজন্য একিলিস প্রতিজ্ঞা করেন আগামেনন তার কাছে ক্ষমা না চাইলে তিনি লড়াইয়ে নামবেন না। কিন্তু যুদ্ধে একিলিসের সহচর প্যাট্রোক্লাস নিহত হন। প্রিয় সহচরের অকাল মৃত্যু কিছুতেই মেনে নিতে পারেন না একিলিস। ক্রোধে, উম্মাদনায়, প্রতিশোধ স্পৃহায় তিনি ভুলে যান তার প্রতিজ্ঞার কথা। যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েন একিলিস। নিজে হত্যা করেন আমাজনীয় রানী পেন্থিসিলীকে। শুধু তাই নয়, ট্রয়ানদের সেরা বীর হেক্টরকেও হত্যা করেন একিলিস। যুদ্ধে একিলিস হয়ে ওঠেন অপ্রতিরোধ্য। তাকে রোখে এমন কোনো বীর নেই ট্রয় নগরীতে। গ্রিক ও ট্রয়ের এই যুদ্ধে দেব—দেবীরা দুভাগে বিভক্ত হয়ে যান। এক দল সমর্থন ও শক্তি যোগান দেন গ্রিকদের এবং আরেকদল ট্রয়ানদের। প্রিয় সহচরের মৃত্যুতে এতটাই উম্মাদ হয়ে গিয়েছিলেন একিলিস যে, ট্রয়ানদের শ্রেষ্ঠ বীর হেক্টরকে হত্যা করেই ক্ষান্ত হলেন না, হেক্টরের মৃতদেহ তার রথের পিছনে বেঁধে ট্রয় নগরী প্রদক্ষিণও করলেন। কিন্তু মা থেটিস এটাকে ভালো চোখে দেখলেন না। তিনি একিলিসকে অনুরোধ করলেন হেক্টরের মৃতদেহ যেন তার বাবা ট্রয়রাজ প্রায়ামের কাছে সমর্পন করেন। মায়ের অনুরোধ ফেলতে পারেননি একিলিস। হেক্টরের মৃত্যুর পর আরো অপ্রতিরোধ্য হয়ে ওঠে গ্রিকরা। তারওপর তাদের শ্রেষ্ঠবীর একিলিস লড়াই করছেন। কাজেই তারা বীরবিক্রমে লড়াই চালিয়ে যেতে লাগল। গ্রিকদের আক্রমণে একরকম কোনঠাসা হয়ে পড়ে ট্রয়ানরা। তারা বুঝতে পারে একিলিসকে না থামানো পর্যন্ত কিছুই করা যাবে না গ্রিকদের বিরুদ্ধে। কিন্তু একিলিস যে স্ট্রিক্স নদীতে ডুব দিয়ে এসেছেন। তিনি যে চিরঞ্জীব। তাহলে উপায়? উপায় একটা ঠিকই বের করে ফেলল ট্রয়ানরা। ঠিকই তারা জানতে পারল একিলিসের পুরো শরীর স্টিক্স নদীতে ডুবলেও পায়ের গোড়ালি ডোবেনি। কাজেই একিলিসকে মারতে হলে ওখানেই আঘাত করতে হবে। কিন্তু কে করবে আঘাত? একিলিসকে আঘাত করার মতো বীর তো ট্রয়ানদের নেই। একিলিসকে আঘাত করার একমাত্র যোগ্যতা ও ক্ষমতা ছিল হেক্টরের। হেক্টর বধ হয়েছেন একিলিসের কাছে। তাহলে? তখনই এগিয়ে এলেন জিউস ও লেটোর পুত্র দেবতা অ্যাপোলো। অ্যাপোলো হচ্ছেন নিরাময়, ভবিষ্যদ্বাণী, সংগীত, ধনুবিদ্যা, যৌবন ও আলোক দেবতা। এই যুদ্ধে দেবতা অ্যাপোলো ছিলেন ট্রয়ানদের পক্ষে। প্যারিসের বেশ ধরে তিনি লড়াই করতে এলেন বীর একিলিসের সাথে। একিলিসও লড়াই চালিয়ে গেলেন। কিন্তু একজন দেবতার সাথে লড়াইয়ে বেশিক্ষণ টিকতে পারলেন না একিলিস। সুযোগবুঝে প্যারিসবেশী অ্যাপোলো একিলিসের পায়ের ঠিক সেখানটাতেই তীর ছুঁড়ে মারলেন, যেখানে স্টিক্স নদীর পানির ছোঁয়া লাগেনি। অ্যাপোলোর তীরে বিদ্ধ হয়েই মৃত্যুবরণ করলেন একিলিস।

    একিলিসের করুণ কাহিনী শুনে চোখ ভিজে আসে কিশোর আলেকজান্ডারের। চুপ করে থাকেন অনেকক্ষণ। মা অলিম্পিয়াস কখন তাকে রেখে চলে গেছেন নিজের ঘরে, বলতেও পারবেন না। সেই রাত, সারারাত ঘুমুতে পারেননি আলেকজান্ডার। কেবলই একিলিসের কথা ভেবেছেন। এই একিলিসকেই তিনি আদর্শ হিসেবে নিয়েছেন।

    ⤶ ⤷
    1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11 12 13 14 15 16 17 18 19 20 21 22 23 24 25
    Share. Facebook Twitter Pinterest LinkedIn Tumblr Email Reddit VKontakte Telegram WhatsApp Copy Link
    Previous Articleবিচিত চিন্তা – আহমদ শরীফ
    Next Article কমিউনিকেশন হ্যাকস – আয়মান সাদিক ও সাদমান সাদিক

    Related Articles

    হরিনারায়ণ চট্টোপাধ্যায়

    ভয় সমগ্র – হরিনারায়ণ চট্টোপাধ্যায়

    December 9, 2025
    হরিনারায়ণ চট্টোপাধ্যায়

    কিশোর অ্যাডভেঞ্চার সমগ্র – হরিনারায়ণ চট্টোপাধ্যায়

    December 9, 2025
    সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়

    প্রকাশ্য দিবালোকে – সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়

    November 18, 2025
    সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়

    তারপর কী হল – সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়

    November 17, 2025
    মাইকেল মধুসূদন দত্ত

    শর্ম্মিষ্ঠা নাটক – মাইকেল মধুসূদন দত্ত

    November 11, 2025
    সত্যজিৎ রায়

    মানপত্র সত্যজিৎ রায় | Maanpotro Satyajit Ray

    October 12, 2025
    Add A Comment
    Leave A Reply Cancel Reply

    Generic selectors
    Exact matches only
    Search in title
    Search in content
    Post Type Selectors
    Demo

    Your Bookmarks


    Reading History

    Most Popular

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025

    দোকানির বউ

    January 5, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025
    Demo
    Latest Reviews

    বাংলা গল্প শুনতে ভালোবাসেন? এক পাতার বাংলা গল্পের সাথে হারিয়ে যান গল্পের যাদুতে।  আপনার জন্য নিয়ে এসেছে সেরা কাহিনিগুলি, যা আপনার মন ছুঁয়ে যাবে। সহজ ভাষায় এবং চিত্তাকর্ষক উপস্থাপনায়, এই গল্পগুলি আপনাকে এক নতুন অভিজ্ঞতা দেবে। এখানে পাবেন নিত্যনতুন কাহিনির সম্ভার, যা আপনাকে বিনোদিত করবে এবং অনুপ্রাণিত করবে।  শেয়ার করুন এবং বন্ধুদের জানাতে ভুলবেন না।

    Top Posts

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025

    দোকানির বউ

    January 5, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025
    Our Picks

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১২

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১৩

    December 12, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram Pinterest
    • Home
    • Disclaimer
    • Privacy Policy
    • DMCA
    • Contact us
    © 2025 Ek Pata Golpo. Designed by Webliance Pvt Ltd.

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.

    • Login
    Forgot Password?
    Lost your password? Please enter your username or email address. You will receive a link to create a new password via email.
    body::-webkit-scrollbar { width: 7px; } body::-webkit-scrollbar-track { border-radius: 10px; background: #f0f0f0; } body::-webkit-scrollbar-thumb { border-radius: 50px; background: #dfdbdb }