Close Menu
এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    What's Hot

    রাজমালা বা ত্রিপুরার ইতিহাস – শ্রী কৈলাসচন্দ্ৰ সিংহ প্রণীত

    August 20, 2025

    আলো হাতে সেই মেয়েটি – তপন বন্দ্যোপাধ্যায়

    August 20, 2025

    গোয়েন্দা গার্গী সমগ্র – তপন বন্দ্যোপাধ্যায়

    August 20, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    • 📙
    • লেখক
    • শ্রেণী
      • ছোটগল্প
      • ভৌতিক গল্প
      • প্রবন্ধ
      • উপন্যাস
      • রূপকথা
      • প্রেমকাহিনী
      • রহস্যগল্প
      • হাস্যকৌতুক
      • আত্মজীবনী
      • ঐতিহাসিক
      • নাটক
      • নারী বিষয়ক কাহিনী
      • ভ্রমণকাহিনী
      • শিশু সাহিত্য
      • সামাজিক গল্প
      • স্মৃতিকথা
    • কবিতা
    • 🔖
    • লিখুন
    • চলিতভাষার
    • শীর্ষলেখক
      • শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
      • মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়
      • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
      • বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • সত্যজিৎ রায়
      • সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
      • জীবনানন্দ দাশ
      • আশাপূর্ণা দেবী
      • কাজী নজরুল ইসলাম
      • জসীম উদ্দীন
      • তসলিমা নাসরিন
      • তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
      • মহাশ্বেতা দেবী
      • মাইকেল মধুসূদন দত্ত
      • মৈত্রেয়ী দেবী
      • লীলা মজুমদার
      • শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
      • সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়
      • সমরেশ মজুমদার
      • হুমায়ুন আহমেদ
    Subscribe
    সাইন ইন
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)

    মাধুকরী – বুদ্ধদেব গুহ

    বুদ্ধদেব গুহ এক পাতা গল্প1301 Mins Read0

    ১. বানজার নদী

    ১

    রেলিং-এ বসে বানজার নদীর যেদিকটা দেখা যাচ্ছে, সেদিকটাতেই কানহা টাইগার প্রিসার্ভ-এর কোর-এরীয়া। ভারী সুন্দর এই নদী বানজার।

    আই-টি-ডি-সি’র মধ্যপ্রদেশের মুক্কি-লজ-এর একটু উপরে কতগুলো পাথরের উপর দিয়ে বয়ে যাওয়াতে সবসময়ই প্রপাতের মতো একটানা আওয়াজ হয় ঝরঝরানির। পেছন থেকে সেই আওয়াজ রোদ-পিছলানো জলের উপর নাচতে নাচতে দৌড়ে আসছে।

    সামনে, পুরনো ভেঙে পড়া কজওয়েটা। আগে তার উপর দিয়েই সরু রাস্তা ছিল। কজওয়ের নিচ দিয়ে কিছুটা বয়ে গিয়েই বাঁক নিয়েছে। বাঁয়ে। রাতের শিশিরে এখনও গা-মাখা, থোরের রঙের পেলব বালির চর। সোনালি চুলের পরিচ্ছন্ন ও চিন্তাশীল একদল হনুমান সেই চর-এর ছির ঘাস-এর মধ্যে কোনও জরুরি ব্যাপার নিয়ে পরামর্শে ব্যস্ত। পশ্চিমের জঙ্গল থেকে প্রায়-উড়াল, বড় বড় বাদামী কাঠবিড়ালিদের লাফানো-ঝাঁপানো চিঁকচিঁক আওয়াজ আর বনে বনে গভীর প্রতিধ্বনি-তোলা, হনুমানদের হুউপ-হুউপ-হুউপ বানজারের জলকে যেন চমকে দিচ্ছে।

    চমকানো, চলকানো নদীতে, বহতা জল যেখানে অগভীর অথবা পাথরের মধ্যে যেখানে সামান্যই জমে আছে; সেই তিরতিরে থির জলে বড় বড় সাদা ফুল ফুটেছে, জল আলো করে। জল-পাথুরে ফুল। মধ্যপ্রদেশের এ অঞ্চলের লোকেরা বলে, গান্ধালা। গাংগারিয়া বলেও একরকমের ফুল ফুটেছে।

    এক বৃদ্ধ বাইগা এবং তার শিশু নাতি, নদীর মধ্যের একটি প্রস্তরময় জায়গাতে বসে আছে ছিপ ফেলে। নদী ও বনের আঙ্গিকের মতো। অবকাশ, দুজনেরই এই নীলাকাশেরই মতো। আকাশ-ছোঁয়া সব বোতল-সবুজ, জলপাই-সবুজ, ঘাস-ফড়িং-সবুজ গাছ ঝুঁকে পড়ে দেখছে সেই প্রায়-উলঙ্গ বুড়ো আর শিশুকে। কে বেশি শিশু দুজনের মধ্যে তাই-ই দেখছে বোধহয়!

    ঠুঠা বাইগা চেঁচিয়ে জিজ্ঞেস করল, বাড়ি কোথায় হে?

    বুড়ো মুখই তুলল না।

    শিশু একবার তুলল।

    কি হে, বুড়ো?

    ঠুঠা বলল।

    বুড়ো বলল, কুরসীপার। প্রায়, ফিসস ফিসস করে।

    নানা বিষয়েই প্রৌঢ় ঠুঠা বাইগার বুকের মধ্যে যতখানি উদ্বেল ঔৎসুক্য, ওর গলায় ততখানি জোর নেই। মাঝে মাঝেই, পৃথুর ওকে বলতে ইচ্ছে করে যে, যতখানি ঔৎসুক্য একজন মানুষের বইবার ক্ষমতা থাকে তার চেয়ে বেশি বইতে যাওয়াটা বুদ্ধিমানের কাজ নয়।

    ঠুঠা আবার বলল, পেলে কিছু?

    হ্যাঁ।

    কী?

    সাঁওয়ার।

    আর কিছু না?

    পাড়হেন।

    সাঁওয়ার মাছ দেখতে অনেকটা বাম সাপের মতো হয়। আর পাড়হেন হয় বলাই-পুঁটির মতো।

    বেচবে না কি?

    বুড়ো কথা না বলে, ফাৎনা আর স্রোতের দিকে চেয়ে মুখও না-ঘুরিয়েই মাথা নাড়ল। দু দিকে। নেতিবাচক।

    ঠুঠা আরও কিছুক্ষণ ওদের সঙ্গে কথা-বার্তা চালাবার চেষ্টা করল। কিন্তু ক্বচিৎ হুঁ। হাঁ! পেল উত্তরে।

    পৃথুর মনে হল, গভীর বনের গাম্ভীর্য এবং বানজার-এর শান্ত সম্ৰান্ততা আশ্বিন-সকালের কাচ-পোকা-ওড়া কুচি-কুচি রোদ্দুরে বাইগা-বুড়োর মনকে এক অজাগতিক নির্লিপ্তিতে ভরে দিয়েছে। বুড়ো যেন, নদীরই মতো হয়ে গেছে। নদীকে সকলের দরকার, তাকে সকলেই ডাকে; নদী ডাকে না কাউকেই। সে চলে আত্মমগ্ন হয়ে, আপন খেয়ালে।

    বনের লোকের মনে গভীরতা থাকে। বনেরই মনের মতো। বেশি কথা, ভালবাসে না তারা।

    বাচালতা, শহরেরই রোগ।

    ঠুঠা বাইগা তার বন-ময়ূরী গ্রামকে তো খুইয়েইছে, হাটচান্দ্রায় কাজ করে তার বনজ চরিত্রটাও খুইয়েছে।

    মনে হয়, পৃথুর।

    ওদের দুজনকে মুক্কিতে নামিয়ে দিয়ে মোগাঁও হয়ে মালাঞ্জখণ্ড-এ চলে গেছে জীপটা শর্মা আর কানিটকার সাহেবকে নিয়ে। কিছু কাজ আছে। ওখানে তাঁদের রিস্তেদাররাও আছেন। ওখানেই খাওয়া-দাওয়া সেরে দিনশেষে পৃথুদের আবার তুলে নিয়ে যাবেন ওঁরা।

    হাটচান্দ্রা থেকে মুক্কি অনেকই দূর। প্রায় পাঁচটাকা ভাড়া লাগে, বাসে এলে। একটাই বাস। সকালে হাটচান্দ্রা থেকে ছাড়ে আবার ফিরে যায় রাতে। জঙ্গল পাহাড়ের সান্নাটা এলাকা এসব!

    ওদের আসতে হয়েছে কুলি সংগ্ৰহর উদ্দেশ্যে। হাটচান্দ্রাতে, ওরা যেখানে কাজ করে, সেই ল্যাক-ফ্যাক্টরীর লেবার কনট্রাকটর ভিখু সিং মারকুট্টে লোক। তার ভাই বাগী হয়ে বেহড়ে চলে গেছে। নামী ডাকাত সে। বয়কট করার হুমকি দিয়েছে ভিখু, কোম্পানীকে। রেট বাড়াতে কোম্পানীর কোনওই আপত্তি নেই। রেসিডেন্ট ডিরেকটর উধাম সিং লোকটিও মারকুট্টে।

    ভিখু সিং ইনক্রিমেন্টের পুরোটা নিজেই খেতে চায়। রেট কম, বাড়াতে বলছে সে; কিন্তু নিজে প্রতিমাসে কাট চাইছে। কমিশান হিসেবে। লেবারদের কাছে পৃথুরা এ তথ্য ফাঁস করে দেওয়াতে ভিখু তার নিজস্ব দল নিয়ে চলে যাবে বলেছে মোগাঁও, মালাখণ্ড-এর কাছে। বদলাও নেবে বলেছে।

    ঠুঠা বলেছে, দেখা যাবে।

    ঠুঠার আদি বাস ছিল এখন যেখানে কানহা টাইগার প্রজেক্টের কোর এরীয়া, তার এক্কেবারে ভিতরে। তাদের গ্রাম অবশ্য নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে অনেকদিন আগেই। মহামারীতে। গ্রামটা মহামারীতে নিশ্চিহ্ন হয়েছে বটে, তবে টাইগার-প্রজেক্ট হওয়ার পর ফরেস্ট ডিপার্টমেন্টও অনেক গ্রাম সরিয়ে নিয়ে গেছেন অন্যত্র। মানুষজন, গোরু-বাছুর, ছাগল-মুরগি সমেত মূল, পুরোপুরি ছিন্ন করে। একদিন যেখানে শিশুর কান্নাহাসির চকিত স্বরে, যুবতীর কলহাস্যে, কুয়োতলার ছলকানো জল, স্নানরতা মেয়েদের পায়ের মল আর ঘড়ার জলজ ধাতব আওয়াজে দারুণ জীবন্ত শব্দমুখর সব প্রেমময়, শান্তির গ্রাম ছিল, আজ সেখানে শুধুই লাল ঘাসের ধু-ধু মাঠে গম্ভীর বারাশিঙা হরিণ লোমের কম্বল গায়ে জড়িয়ে মন্থর পায়ে ঘুরে বেড়ায়। নয়তো কানহা-কিসলীর ভি-আই-পি বাঘেরা আলস্যে শুয়ে থাকে। অথবা শৃঙ্গার করে। শেষ বিকেলের নিস্তেজ শীর্ণ আলোতে পাতা-ঝরা গাছের মরা ডালের উপর ঘুঘু-দম্পতি মাথা ঝুঁকিয়ে ঘুরে ঘুরে বারে বারে অস্তগামী সূর্যকে প্রণাম করে; নামাজ পড়ার মতো করে।

    ঠুঠা বাইগার গ্রামের বাসিন্দাদের সব কলেরাতে খেয়েছিল। চল্লিশ পঞ্চাশ বছর আগে। সময়টা ঠিক জানে না ঠুঠা। সময়ের যে খুবই দাম তা তখন জানত না ওরা। সেই-সময়ের কেউই জানত না। না জেনে, কোনও ক্ষতি বা অসুবিধাও হয়নি কখনও। গ্রাম শেষ হওয়ারও আগে শেষ হয়ে গেছিল গোরু-মোষ সব। “রাইণ্ডারপেস্ট” মহামারীতে। গোরু-মোষের মহামারী সে। মানুষের আর গোরু-মোষ-এর এসব অসুখ-বিসুখের ইংরিজি নামগুলো বুড়ো বয়সে এসেই শিখেছে ঠুঠা।

    গ্রাম নেই; শুধু স্মৃতিটুকু রয়ে গেছে। গন্ধ, শব্দ, বোধ সব ঝুমঝুমির মত বাজে ঠুঠা বাইগার অনুভবে। তাই, ফাঁক-ফোকর একটু করতে পারলেই, কোনও ছুতা পেলেই, ঠুঠা দৌড়ে আসে মুক্কিতে। এখান থেকে লুকিয়ে জঙ্গলে ঢুকে পড়ে; বানজার নদীর পাড়ে। তার পিতা-প্রপিতামহর গ্রাম খোঁজে; খোঁজে শিকড়।

    আশ্চর্য! দশ বছর হল খুঁজছেই ঠুঠা। খুঁজেই চলেছে। কিন্তু আজ অবধিও খুঁজে পেল না গ্রামটাকে। নিশ্চিহ্ন হয়েই হারিয়ে গেল কি? এমন হয় কী করে! ওর গ্রামের নাম ছিল বানজারী, বানজার নদীর ধারে ছিল বলে।

    জঙ্গলের গভীরের যে-কোনও গ্রাম পরিত্যক্ত হলেই জঙ্গল তার পাইক-বরকন্দাজদের সঙ্গে সঙ্গেই পাঠিয়ে দিয়ে, পুরনো দিনের অত্যাচারী জমিদারদের মতো, গ্রামের জবরদখল নিয়ে মিশিয়ে দেয় তার জঙ্গলের খাস-মহল-এর সঙ্গে অঙ্গাঙ্গীভাবে। তাই-ই, চেনা পর্যন্ত যায় না আর পরে। প্রকৃতি, তার সবুজ, হলুদ, লাল, কালো নানা-রঙা নিশান উড়িয়ে দেয় আকাশে আকাশে, বহুবর্ণ গালচে বিছিয়ে দেয় জমিতে, উজ্জ্বল, অগণিত স্পন্দিত তারা আর জোনাকির ঝাড়লণ্ঠন ঝুলিয়ে দেয় আকাশের চাঁদোয়ার নীচে; অন্ধকার রাতে। জঙ্গলের মধ্যে জঙ্গল, গাছের মধ্যে গাছ, পাতার মধ্যে পাতা, ফুলের মধ্যে ফুল, স্মৃতির মধ্যে স্মৃতি সেঁধিয়ে যায়। চেনবার জো-টি পর্যন্ত থাকে না আর।

    ঠুঠা বাইগার মনে আছে, গ্রামের দু’ প্রান্তে দুটি মস্ত শিমুল ছিল। বয়সের গাছ পাথর ছিল না তাদের। শীতের সকালের রোদে সোনালি বালাপোষ মুড়ে মগডালে বসে বুড়ো বাজ তীক্ষ্ণ স্বরে ডাক পাঠাত দিকে-দিগন্তরে, ধারালো ঠোঁট দিয়ে, ডানা থেকে সোনালি তুলোর মতো রোদ তুলে নিয়ে রোদ ছিটোত কাচের টুকরোর মতো, আর জ্যোৎস্না রাতে নাঙ্গা বাইগীনের ঘোর লাগা সাদা লক্ষ্মীপেঁচা ঘুরে ঘুরে উড়ে উড়ে বসত এসে ওই শিমুলেরই সটান ডালে। মনে আছে। পরিষ্কার মনে আছে, ঠুঠা বাইগার।

    ঠুঠা বাইগা রোদে পিঠ দিয়ে বানজারের ব্রিজ-এর রেলিং-এর উপরে উঠে বসেছিল পা ঝুলিয়ে। পৃথুও বসে ছিল পাশেই।

    মুক্তির চেকনাকার চৌকিদারকে ঠুঠা বলে এসেছিল জীপ থেকে নেমেই, ভাত, ডাল আর আলুর চোকা বেঁধে দিতে হবে ওদের দুজনের জন্যে। আসলে, রাঁধবে চৌকিদারের বউ। চৌকিদারের নাম গিদাইয়া। আর তার বউয়ের নাম রুকমানিয়া। বিহারের আররা জেলায় বাড়ি ওদের।

    ভাবছিল পৃথু, কোথা থেকে কোথায় আসে মানুষ রুজির তাগিদে।

    ঠুঠা একটা চুঠঠা এগিয়ে দিল পৃথুর দিকে। আগুন ধরিয়ে দিতে গেল, দু’হাতের পাতায় হাওয়া আড়াল করে শজারু-মার্কা দেশলাই জ্বেলে। নিভে গেল কাঠিটা। অস্ফুটে দিগবিদিক-জ্ঞানশূন্য হাওয়াটাকে একটা অশ্লীল গাল দিয়ে আবার ঠুঠা দেশলাই জ্বালল। এবার ধরল।

    পৃথু ধুঁয়ো ছেড়ে বলল, ঠিক তো করে এলে সব, পরে আবার বেগড়বাই করবে না তো? কোন গ্রামে গেছিলে? গাওয়ানকে সঙ্গে করে নিয়ে এলেই তো পারতে ঠুঠা। গড়বড়-সড়বড় হলে তো গাল খেতে হবে আমাকেই!

    ফুঃ।

    তোমাকে হাটাচান্দ্রার সকলে তো ভালভাবেই চেনে। পাঠিয়েছে তো বেড়াতেই!

    তাচ্ছিল্যের সঙ্গে স্নেহের হাসি হেসে, বলল ঠুঠা।

    কথাটা গায়ে মাখল না পৃথু। কারণ, কথাটা সত্যি।

    কোন গ্রামে তুমি গেলে তার নামটা অন্তত বলবে তো।

    গ্রাম তো অনেকই আছে এদিকে। মুঞ্জীটোলি, বামনি, বানজার-বামনি। আর এই মুক্তি তো আছেই। সব গ্রামের গাওয়ানদেরই বলে এসেছি। তোমার বাবার আশীর্বাদে এখনও শিকারি ঠুঠা বাইগাকে এদিকের সব গোঁদ ও বাইগারা এক নামেই চেনে। ভালও বাসে। গাওয়ানরা না এলেও চিন্তা নেই কোনওই তোমার।

    এসব অঞ্চল সত্যিই ঠুঠার নখদর্পণে। কিন্তু পৃথু এ নিয়ে মাত্র দুবার এল মুক্কিতে। আশ্বিনের মিষ্টি রোদে পিঠ দিয়ে বানজার নদীর ব্রিজ-এর রেলিং-এর উপরে বসে বেশ ভালই লাগছিল।

    বনে, নির্জনে এলেই ভাল লাগে।

    ঝুলে-পড়া সাদা গোঁফের একজন লম্বা, সামান্য কুঁজো বুড়োকে মুক্কির দিক থেকে আসতে দেখা গেল। খটাং-খটাং আওয়াজ তুলে শীতের শান্ত দিনের জঙ্গুলে মাঝবেলার কাচপোকা-ওড়া শান্তিকে ছিদ্রিত করতে করতে আসছিল লোকটা, নাল-লাগানো নাগরা দিয়ে শক্ত কালো পথের মুখে লাথি মেরে মেরে। আশ্চর্য আঁকা-বাঁকা হাঁটার ভঙ্গি তার।

    দিন দুপুরেই কি মহুয়া খেলো?

    লোকটি, ঠুঠা বাইগাকে দেখতে পেয়েই আনন্দে, বিস্ময়ে চোখ বড় বড় করে বলল, এ হো! ঠুঠা বাইগা!

    ঠুঠা সঙ্গে সঙ্গে লাফিয়ে নামল ব্রিজ-এর রেলিং থেকে, উত্তেজনায়, তার নাগরার একটি পাটি ছিটকে গেল দূরে। এক পায়ে জুতো নিয়ে নেমেই, বুকে জড়িয়ে ধরল লোকটাকে। অনেকক্ষণ ধরে, ওদের ভাষায় প্রেমময়, উষ্ণ কথাবার্তা বলল দুজনে। তারপর লোকটা আবার তার পথে চলল, ঠুঠার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে।

    ঠুঠাকে খুব খুশি এবং উত্তেজিত দেখাল। ও নিজের মনেই বলল, এবার হয়তো আমার বাপদাদার হারিয়ে-যাওয়া “বানজারী”র হদিস হবে।

    কী করে?

    হবে, হবে।

    এ কে রে ঠুঠা? গুঁফো লোকটা?

    দেবী সিং। এই জঙ্গল পাহাড়ের খুবই নামী শিকারি ছিল একসময়।

    আমার সময়।

    আত্মপ্রসাদের হাসির ঝিলিক লাগল ঠুঠার মুখে।

    আর ছিল আমার দুশমনও। বম্বে, ভোপাল, ব্যাঙ্গালোর, দিল্লি, কলকাতার সব রহিস শিকারিরা এলে বোদে বাঁধার, বোদেকে বাঘ দিয়ে মড়ি করানোর ভার পড়ত আমার অথবা ওরই ওপর। খুবই রেষারেষি ছিল দুজনের মধ্যে।

    মোষকে এরা “বোদে” বলে এদের ভাষায়।

    কোনও কোনও বার একই শিকারির দলের দুজন শিকারি আমাকে আর ওকে আলাদা করে রাখত সঙ্গে। আরে, এই দেবী সিং-ই তো বম্বের ফিলিম অ্যাকটেরেস নূতনজীর স্বামী বাহাল সাহেবকে শিকার খেলাতে নিয়ে গিয়ে বাঘের হাতে জখম করিয়েছিল। বাহাল সাহেব এসেছিলেন সানজানা সাহেবের মেহমান হয়ে। জান হি যাতা থা! নতুনজী এসে প্লেনে করে তাঁকে বম্বে নিয়ে যান ভোপাল হয়ে। তাই-ই রক্ষা। দেবী সিং নিজেও মরো-মরোই হয়েছিল আরেকবার। কত্বদিনের কথা সে সব!

    ওই প্রসঙ্গ উঠতেই, ঠুঠা বাইগার মুখ চোখ উজ্জ্বল হয়ে উঠল। কপালের অজস্র রুখু বলিরেখাতে এক আশ্চর্য তৈলাক্ত চমক লাগল।

    তুমিও কি কম বাহাদুর! আমার বাবাকে পর্যন্ত মেরে দিলে। নতুনজীর স্বামী তো তাও বেঁচে গেছিলেন।

    পৃথু বলল।

    ঠুঠা মুখ ঘুরিয়ে তাকাল পৃথুর দিকে।

    কিন্তু কিছু বলল না।

    এ কথা, আগে ও অসংখ্যবার শুনেছে।

    শহরের শিকারীরা তোমাদের কী হিসেবে রাখত?

    কেন? বোদে বাঁধা, তাকে দানা-পানি দেওয়া, বোদেকে বাঘ মেরে দিলে, তার উপর মাচা বাঁধা, শিকারের সময় বন্দুক রাইফেল বওয়া, আহত বাঘের পায়ের ভাঁজ দেখে, রক্ত দেখে; তাদের হদিস করা। কত্ব কাজ। খিদমদগারিও করতে হত।

    ডিসগাস্টিং। শিকারির চাকর হওয়া! তুমি নিজে এত বড় শিকারি হয়ে? লজ্জা। পৃথু বলল।

    কী করব বলো? এ দেশে কিছু লোক চাকর হয়েই জন্মায়, মরেও চাকর হয়েই। আর কিছু লোক মনিব। জন্মে এবং মৃত্যুতেও।

    শিকার-ফিকার, যাই বলো ঠুঠা, আজকাল আর ভাল লাগে না। ভাল নয়, মারামারি ব্যাপারটা। আদৌ ভাল নয়।

    হ্যাঁ, তা তো বটেই! তুমি হচ্ছ একটি ডরপোক। কথায় বলে, “বাপকা বেটা সিপাহীকা ঘোড়া, কুছ নেহীতো থোড়া থোড়া।” এমন জবরদস্ত বাপের কী বেটাই নিকলালো। দস্যু রত্নাকর এতদিনে বাল্মীকি হল। হাসি পায় তোমাকে দেখে। মাদীন শম্বর মারোনি তুমি? পেটে বাচ্চা ছিল না তার? ভুলে গেছ?

    পৃথু বলতে চাইল, সব সত্যি। কিন্তু মানুষের জীবন বড় লম্বা, বৈচিত্র্যময়! একদিন ময়লা মাড়িয়েছে বলে সে কোনওদিনও মন্দিরে ঢুকতে পারবে না জীবনে, এটা কি কথা? ভাবল, কিন্তু ঠুঠাকে কিছু বলল না। মনের মধ্যে যেসব কথা ওঠে, ভাবনা উথাল-পাথাল করে তা বলার মতো লোক এক জীবনে কজন মেলে?

    পৃথুর মুখে একটু হাসি ঝিলিক মেরেই মরে গেল।

    ঠুঠা বাইগা তাকে ছোট্টবেলা থেকেই কোলে কাঁখে করে মানুষ করেছে। পৃথুদের দু’পুরুষের সঙ্গেই ঠুঠার টিকি-বাঁধা। মোতিনালার গভীর জঙ্গলের মধ্যে পৃথুর ঠাকুর্দা ও বাবার কিছু জোত-জমি ছিল। ঠুঠার বাবার উপরই ভার ছিল দেখাশোনার। পৃথুর বাবার খুবই শখ ছিল শিকারের। শিকারের শখেই বাবা শেষে সর্বস্বান্ত হলেন। সব কিছুই গেল। শেষে প্রাণটাও। এই মুক্কি গ্রামেরই কাছে একটি পিয়ার গাছের মাচায় বসে, মাঘ মাসের গভীর রাতে বড় বাঘকে গুলি করেন বাবা। পৃথু তখন ইংল্যান্ডে। ছাত্র। মাচা থেকে নামতেই, বাঘ তাকে ধরে ফেলে। সেখানেই শেষ। সব শিকারিই জানেন যে এমন করা মুর্খামি। তবুও সব বুদ্ধিমান বিচক্ষণ শিকারিরাও কখনও কখনও মুর্খামি করেন। কুমুদ চৌধুরীরই মতন। মেটাল ফেটিগ-এর মতোই হিউম্যান ফেটিগ বলেও একটা ব্যাপার আছে। মানুষ যেহেতু ভগবান নয়, সেহেতু হিউম্যান এরর বলেও কথা আছে একটা।

    পৃথু রেলিং থেকে লাফিয়ে নেমেই ঠুঠাকে বলল, চলো এবার। খিদে পেয়েছে।

    নাকার দিকে এগোতে লাগল ওরা। খিদে সত্যিই পেয়েছিল।

    নাকার পাশের মাটির ঘরের সামনেটাতে, চৌপাইতে বসে, দু হাঁটুর উপর অ্যালুমিনিয়াম-এর থালা রেখে ঠুঠার পাশে বসে পৃথু খাচ্ছিল। রুষা এইরকম ভাবে, এইরকম জায়গায় পৃথুকে খেতে দেখলে কী যে করত, ভেবেও আতঙ্কিত হয়ে উঠল পৃথু।

    পৃথু মানুষটিই একটু আশ্চর্য প্রকৃতির। ও এক আলাদা মানুষ। অন্য কারও মতোই নয়। কারও সঙ্গে মেলে না ওর স্বভাব। তাই-ই, বড় একা। আরাম, আনন্দ, বিলাস, ব্যসন, ভদ্রলোকি সচেতনতা বলতে যা বোঝা যায় সে সব ব্যাপার ওর মধ্যে একেবারেই নেই। বিবাহিত হওয়ার পর, তার সব নিজস্বতা বোধহয় বাজেয়াপ্ত করে নিয়েছে রুষা। অথবা ও যেহেতু ভারশূন্য থাকতে চায়, নিজেই হয়তো সমর্পণ করে দিয়েছে, অন্য সবকিছুর সঙ্গে, নিজস্বতাও। তাও অনেকইদিন হল। যতটুকু সময় বাড়ির বাইরে থাকে, বা একা থাকে; ততটুকু সময়ই পৃথু তারই মতন করে তাই বাঁচার চেষ্টা করে। সেই সব সময়ে, অনেক দিন বাড়ি ফিরে আসা প্রিয় হারানো-কুকুরের মতো নিজের নিজস্বতার গলকম্বলে আদরের মৃদু আঙুল বোলায় ও নীরব কিন্তু উদ্বেল ভালবাসায়।

    একটি গাড়ি ঢুকল মুক্কি লজ-এ। গড়াই চওকের দিক থেকেই এল গাড়িটা। সঙ্গে মহিলারাও আছেন। কোথা থেকে আসছে কে জানে? মান্দলা? জব্বলপুর? অথবা হয়তো রাইপুরের দিক থেকেই।

    মুক্কি গ্রামটির নাম আজকাল সারা ভারতবর্ষেই ছড়িয়ে গেছে। আই. টি. ডি. সি. ট্যুরিস্ট লজ করেছেন এখানে। দারুণ লজ বানজার নদীর একেবারে উপরেই। বালাঘাট রোডটি গড়াই চওক ছাড়িয়ে বাইহার-এর দিকে যেতে যেতে বানজার-এর উপরের এই ব্রিজটি পেরিয়েছে। এ পথে বানজারের উপর একটিই ব্রিজ। ব্রিজটি পেরুলেই চেক-নাকা এবং চেক-নাকার ঠিক আগেই বাঁদিকে রাস্তা বেরিয়ে গেছে লজ-এ যাবার। পথ থেকে কিছুই বোঝার জো নেই। ছোট্ট চারকোনা সাইন-বোর্ড। একটি বুদ্ধিমান গুঁফো বাঘের ছবি, আর তার নীচে লেখা, “কানহা সাফারি লজ, মুক্কি।” আই. টি. ডি. সি। এ থ্রী-স্টার আরামদায়ক লজ-এ অনেক গণ্যমান্য লোকই এসে থাকেন কানহাকিসলী-ন্যাশনাল পার্ক দেখার জন্যে। থাকতে, দণ্ডও কম লাগে না। মুক্কিতেই ফরেস্ট ডিপার্টমেন্টের অন্য লজ আছে। চমৎকার। পার্ক-এর মধ্যে, একটু হেঁটে গেলেই কানহা এবং কিসলিতেও আছে।

    লজ-এর উল্টোদিকেই বান্‌জার নদীর এপারে কান্‌হা-প্রিসার্ভ-এর কোর্‌-এরীয়া। টাইগার-প্রোজেক্ট। বনে বনে পথ চলে গেছে কিস্‌লি। তারপর হাঁলো নদী পেরিয়ে ইন্দ্রা হয়ে চিরাইডোংরি হয়ে সেই মান্দ্‌লা। টাইগার-প্রোজেক্ট-এর ফিল্ড-ডিরেকটর-এর হেডকোয়ার্টাস্‌ও মান্দ্‌লাতেই। সেখান থেকে প্রায়ই তত্ত্বতালাশ করতে আসতে হয় তাঁকে এখানে। আসেন অবশ্য গড়াই হয়ে নয়, মান্দ্‌লা থেকে নাইনপুর রোড ধরে চিরাইডোংরি এবং ইন্দ্রা হয়ে, যখন ইন্দ্রার কাছে হাঁলো নদী জীপে পেরুনো যায়। অন্য সময় আসতে হয় মোতিনালা হয়ে। অনেকই ঘুর পড়ে। সীওনী হয়েও আসা যায়। তাও বহু দূর। রুডইয়ার্ড কিপলিং-এর মোগলির সীওনী।

    এই সুন্দরী “বান্‌জার” আর “হাঁলো” নদী ঘিরে রেখেছে কান্‌হা-কিস্‌লিকে। বড় সুন্দর নদী এ দুটি, মধ্যপ্রদেশেই পৃথুর জন্ম। এই-ই ওর দেশ; পিতৃভূমি। মাতৃভূমিও। এত সুন্দর, পৃথুর চোখে, ভারতের আর কোনও প্রদেশকেই লাগে না। এমন সুন্দর সুন্দর লোহা আর ম্যাঙ্গানিজের সব আকর-বওয়া লাল-নীল নদী। দারুণ ব্যক্তিত্বসম্পন্ন নর্মদা। এমন মাথা উঁচু করা সব পাহাড়। এমন গহীন্‌ জঙ্গল। এখানের সহজ, সরল চমৎকার সব আদিবাসীরা। ছত্তিশগড়িয়া, গোন্দ্‌; বাইগা। পৃথুর খুবই ভাল লাগে। মধ্যপ্রদেশের শব্দ-গন্ধ, বংশপরম্পরের স্মৃতি। জন্ম এখানে; মরতেও চায় এখানেই।

    মধ্যপ্রদেশ ট্যুরিজম্‌ ডেভালাপমেন্ট কর্পোরেশনের কর্তাই বোধহয় হয়ে গেছেন এতদিনে মিঃ বি. কে. বাগচী। তাঁর সঙ্গেও বহুদিন আগে থেকে আলাপ আছে পৃথুর। চিরিমিরির লাহিড়ীদেরও অনেকেরই সঙ্গে। এসব চেনা-জানা সব পৃথুর বাবার সূত্রেই। ওর বাবা খুবই মিশুকে প্রকৃতির লোক ছিলেন। দিল্‌দরিয়া। সবসময়ই সাঙ্গ-পাঙ্গ থাকত সঙ্গে। পৃথু একেবারেই উল্টো। বড়লোক, উদার সরল বাবার অনেকই মোসাহেব ছিল। মোসাহেবী ভালও বাসতেন উনি। সেই সব মোসাহেবরাই বাবাকে সর্বস্বান্ত করলেন। পুরোটা দোষ অবশ্য পৃথু তাঁদেরই উপর দিতে রাজি নয়। যাঁরাই সংসারে সর্বস্বান্ত হন, দেখা যায় সর্বস্বান্ত হওয়ার এক স্বাভাবিক প্রবণতা থাকেই তাঁদের মধ্যে।

    এখন আর সেই সব ‘ফস্‌লি বটের’দের দেখা যায় না। সকলেই গুছিয়ে নিয়েছেন। বাড়ি, জমি, ক্ষেতি, মার্সিডিস ট্রাক্‌। একজন তো সিনেমা হল পর্যন্ত করে নিয়েছেন একটা। বাবার অবস্থা দেখে শুনেই হয়তো পৃথু লোকজন এড়িয়ে চলে। কথা বলে শুধু নিজের সঙ্গেই।

    বাবা যাদের সম্বন্ধে শেষ জীবনেও শ্রদ্ধাশীল শুধু তাঁদেরই কারও কারও সঙ্গে এখনও সামান্য সম্পর্ক আছে শুধু পৃথুর। মিঃ বাগচী, চিরিমিরির লাহিড়ীদের কেউ কেউ তাঁদেরই মধ্যে পড়েন।

    মধ্যপ্রদেশে, ট্যুরিজম্‌ ডেভালাপ্‌ মেন্ট-এর ব্যাপারে মিঃ বাগচী যেমন পাগলের মতো খাটেন, তা দেখে শুনে পৃথু বুঝতে পারে, কতখানি ভালবাসেন তিনি তাঁর কাজকে এবং এই প্রদেশকে। আসলে, যে-কোনও মানুষই যে-কাজ করেন, তা ভালবেসে না করলে তাতে বোধহয় সিদ্ধি আসে না। যদিও পৃথুর চাকরিটা দায়িত্বর এবং কাজ তাকে করতেই হয় কিন্তু নিছক নিছক টাকা রোজগারের জন্যে যে কাজ, তার কিছুমাত্রও করতে ইচ্ছে করে না। টাকা রোজগার না করতে হলে, জীবনটা বেশ আজকের আশ্বিনের মিষ্টি রোদের সকালেরই মতো ঠুঠা বাইগার সঙ্গে বান্‌জার-এর তীরে তীরে অথবা কান্‌হার জঙ্গলের ধানী লাল ঘাসের মাঠে শিশির মাড়িয়ে আল্‌তো সুখের পা ফেলে ফেলে হেঁটে বেড়িয়ে কাটিয়ে দিত। নদী থেকে নদীতে, মাঠ থেকে মাঠে, সকাল থেকে সন্ধে। চারদিকেই বড়ই দৌড়াদৌড়ি; তাড়াহুড়ো।

    এই পৃথিবীতে, পৃথু সম্পূর্ণই বেমানান।

    1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11 12 13 14 15 16 17 18 19 20 21 22 23 24 25 26 27 28 29 30 31 32 33 34 35 36 37 38 39 40 41 42 43 44 45 46 47 48 49 50 51 52 53 54 55 56 57 58 59 60 61 62 63 64 65 66 67 68 69 70 71 72 73
    Share. Facebook Twitter Pinterest LinkedIn Tumblr Email Reddit VKontakte Telegram WhatsApp Copy Link
    Previous Article২৫টি ভয়ংকর বাঘ – সম্পাদনা : বুদ্ধদেব গুহ
    Next Article ঋজুদা সমগ্ৰ ৫ – বুদ্ধদেব গুহ

    Related Articles

    বুদ্ধদেব গুহ

    বাবলি – বুদ্ধদেব গুহ

    May 28, 2025
    বুদ্ধদেব গুহ

    ঋজুদা সমগ্ৰ ১ – বুদ্ধদেব গুহ

    May 28, 2025
    বুদ্ধদেব গুহ

    ঋজুদা সমগ্র ২ – বুদ্ধদেব গুহ

    May 28, 2025
    বুদ্ধদেব গুহ

    ঋজুদা সমগ্র ৩ – বুদ্ধদেব গুহ

    May 28, 2025
    বুদ্ধদেব গুহ

    ঋজুদা সমগ্র ৪ – বুদ্ধদেব গুহ

    May 28, 2025
    বুদ্ধদেব গুহ

    অবেলায় – বুদ্ধদেব গুহ

    May 28, 2025
    Add A Comment
    Leave A Reply Cancel Reply

    Demo
    Most Popular

    রাজমালা বা ত্রিপুরার ইতিহাস – শ্রী কৈলাসচন্দ্ৰ সিংহ প্রণীত

    August 20, 2025

    অনুরাধা

    January 4, 2025

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025
    Demo
    Latest Reviews

    বাংলা গল্প শুনতে ভালোবাসেন? এক পাতার বাংলা গল্পের সাথে হারিয়ে যান গল্পের যাদুতে।  আপনার জন্য নিয়ে এসেছে সেরা কাহিনিগুলি, যা আপনার মন ছুঁয়ে যাবে। সহজ ভাষায় এবং চিত্তাকর্ষক উপস্থাপনায়, এই গল্পগুলি আপনাকে এক নতুন অভিজ্ঞতা দেবে। এখানে পাবেন নিত্যনতুন কাহিনির সম্ভার, যা আপনাকে বিনোদিত করবে এবং অনুপ্রাণিত করবে।  শেয়ার করুন এবং বন্ধুদের জানাতে ভুলবেন না।

    Top Posts

    রাজমালা বা ত্রিপুরার ইতিহাস – শ্রী কৈলাসচন্দ্ৰ সিংহ প্রণীত

    August 20, 2025

    অনুরাধা

    January 4, 2025

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025
    Our Picks

    রাজমালা বা ত্রিপুরার ইতিহাস – শ্রী কৈলাসচন্দ্ৰ সিংহ প্রণীত

    August 20, 2025

    আলো হাতে সেই মেয়েটি – তপন বন্দ্যোপাধ্যায়

    August 20, 2025

    গোয়েন্দা গার্গী সমগ্র – তপন বন্দ্যোপাধ্যায়

    August 20, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram Pinterest
    • Home
    • Disclaimer
    • Privacy Policy
    • DMCA
    • Contact us
    © 2025 Ek Pata Golpo. Designed by Webliance Pvt Ltd.

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.

    Sign In or Register

    Welcome Back!

    Login below or Register Now.

    Lost password?

    Register Now!

    Already registered? Login.

    A password will be e-mailed to you.