Close Menu
এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    What's Hot

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১২

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১৩

    December 12, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    • 📙
    • লেখক
    • শ্রেণী
      • ছোটগল্প
      • ভৌতিক গল্প
      • প্রবন্ধ
      • উপন্যাস
      • রূপকথা
      • প্রেমকাহিনী
      • রহস্যগল্প
      • হাস্যকৌতুক
      • আত্মজীবনী
      • ঐতিহাসিক
      • নাটক
      • নারী বিষয়ক কাহিনী
      • ভ্রমণকাহিনী
      • শিশু সাহিত্য
      • সামাজিক গল্প
      • স্মৃতিকথা
    • কবিতা
    • লিখুন
    • চলিতভাষার
    • শীর্ষলেখক
      • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
      • বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
      • শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়
      • বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • সত্যজিৎ রায়
      • সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
      • বুদ্ধদেব গুহ
      • জীবনানন্দ দাশ
      • আশাপূর্ণা দেবী
      • কাজী নজরুল ইসলাম
      • জসীম উদ্দীন
      • তসলিমা নাসরিন
      • মহাশ্বেতা দেবী
      • মাইকেল মধুসূদন দত্ত
      • মৈত্রেয়ী দেবী
      • লীলা মজুমদার
      • শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
      • সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়
      • সমরেশ মজুমদার
      • হুমায়ুন আহমেদ
    • English Books
      • Jules Verne
    • 🔖
    • ➜]
    Subscribe
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)

    মা – আনিসুল হক

    লেখক এক পাতা গল্প410 Mins Read0
    ⤶ ⤷

    ৪৩. মা

    ৪৩
    কাজী কামাল দৌড়াচ্ছে ৷ রেললাইন ধরে ৷ বড় রাস্তা পেরিয়ে সে ঢুকে পড়ে দিলু রোডের দিকে ৷ সোজা চলে যায় হাবিবুল আলমদের বাসায় ৷ আলমদের নিচতলার জানালার কাচে টুক টুক করে শব্দ করে ৷ ঘুম ভেঙে যায় আসমার ৷ সে জানালার কাছে এসে জানতে চায়, ‘কে ?’ কাজী কামাল, সম্পূর্ণ জন্মদিনের পোশাকপরা, বলে, ‘একটা লুঙ্গি দ্যান আগে ৷ অবস্থা খারাপ ৷ আজাদের বাসা আর্মি রেইড করছে ৷ আমি স্টেন কাইড়া নিয়া গুলি কইরা পালায়া আসছি ৷’ আসমা তাকে একটা পেটিকোট জানালা দিয়ে ছুড়ে দেয় ৷ তারপর তারা দরজা খোলে ৷ কাজী বলে রেশমাকে, ‘একটা হাতিয়ার দাও ৷ আর তোমরা সবাই পালাও ৷ এই বাড়িতেও আর্মি শিয়োর আসবে ৷’
    হাফিজুল আলম, আলমের বাবা, বলেন, ‘কাজী, তুমি পালাও ৷ এখন আর অস্ত্র নেওয়ার দরকার নাই ৷ আর আমরা দেখি নিজেরা কী করতে পারি ৷’ কাজীকে ওরা ধাক্কা দিয়ে পেছনের দেয়াল পার করিয়ে দেন ৷ হাফিজুল আলমকেও তাঁর মেয়েরা পাশের বাড়ির দেয়ালের ওপারে ঠেলে পাঠায় ৷ কাজী ইস্কাটনের রাস্তায় আসতেই দেখে দুটো ট্রাক আর একটা জিপ দিলু রোডে আলমের বাড়ির দিকেই যাচ্ছে ৷ কাজী পাশের ড্রেনের মধ্যে উপুড় হয়ে শুয়ে পড়ে ৷ জায়গাটা অন্ধকার ৷ তাকে হয়তো দেখা যাবে না ৷ কনভয় পাশ দিয়ে পার হয়ে যায় ৷ গাড়ির শব্দের চেয়ে কাজীর বুকের শব্দ যেন আরো জোরে জোরে বাজে ৷ সেখান থেকে সে যায় সৈয়দ আশরাফুল হকের বাড়িতে ৷ দরজায় নক করে ৷ আশরাফুলের ঘুম ভেঙে যায় ৷ সে জানালা দিয়ে মুখ বাড়িয়ে বলে, ‘কে ?’
    ‘বাবু, শেষ শেষ, সব শেষ…’ কাজী কামালের গলা ৷ আশরাফুল দেখতে পায় গেটের লাইটের আলোয় খালিগা, পেটিকোট পরা কাজীকে ৷
    সে দরজা খোলে ৷ ‘কী হইছে ?’
    ‘আজাদগো বাড়ি রেইড দিছে ৷ আলমগো বাড়িও ঘেরাও দেওয়া শেষ ৷ সব শেষ ৷ সব শেষ…’ কাজী কাঁপছে ৷
    আশরাফুল তাকে নিয়ে লুকিয়ে রাখে গ্যারাজের ওপরে ড্রাইভারদের থাকবার জায়গায়, বলে, ‘এইখানে বইসা থাকো ৷ খাড়াও, তোমারে শার্ট-প্যান্ট আইনা দেই ৷’
    পরে সেই জায়গাটাও নিরাপদ মনে না হওয়ায় কাজী বেরিয়ে পড়ে-এখন যেখানে সোহাগ কমিউনিটি সেন্টার সেখানে-আশরাফুলের বড় ভাইয়ের বাসার উদ্দেশে ৷ তখন ভোর ৫টা ৷ আশরাফুল তার এই চলে যাওয়ার দৃশ্যটা আর কোনো দিন ভুলতে পারবে না ৷ আশরাফুলের দেওয়া শার্ট-প্যান্ট পরে কাজী কামাল দরজা খুলে বেরিয়ে যায়, পেছনে তাকিয়ে হ্যা-হ্যা করে হাসে আর হাত নাড়ে, ‘টাটা টাটা, যাইগা…টাটা…’
    সৈন্যরা আলমদের বাসায় ঢুকে প্রথমেই জানতে চায় রান্নাঘর কোথায়, রান্নাঘরের মেঝের নিচে গোপন কুঠুরিতে প্রচুর অস্ত্রশস্ত্র গোলাবারুদ লুকানো ছিল ৷ শাবল দিয়ে মেঝে ভেঙে তারা এইসব অস্ত্র উদ্ধার করে ৷ আর বাসায় বেড়াতে আসা আলমের চাচা আর চাচাতো ভাইকে ধরে নিয়ে যায় ৷
    ২৯শে আগস্টের সকাল ১১টার দিকে বদি ধরা পড়ে ঢাকা কলেজের প্রিন্সিপ্যাল জালাল উদ্দিনের বাসা থেকে ৷ প্রিন্সিপ্যালের ছেলে ফরিদ ছিল বদির বন্ধু ৷ প্রচণ্ড মারের মুখে বদি বলে দেয় সামাদ ভাই আর চুল্লু ভাইয়ের নাম ৷ বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে ধরা পড়েন সামাদ ভাই ৷ পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর অমানুষিক নির্যাতন আর জিজ্ঞাসাবাদের মুখে পড়েন সামাদ ভাই, আলতাফ মাহমুদের বাসা চিনিয়ে দিতে সৈন্যরা তাকেই বাধ্য করে সহ্যাতীত নির্যাতনের মুখে ৷
    ৩০শে আগস্টের ভোর ৷ রাজারবাগের বাসায় শিমুল বিল্লাহর মা তখনও ফজরের নামাজ শেষে জায়নামাজে বসে তসবিহ গুনছেন ৷ শিমুল বিল্লাহ, তখন কিশোরী, সকালের রেওয়াজ করছে ৷ শিমুল দেখতে পায়, তাদের বাড়ি ঘিরে ফেলেছে পাকিস্তানি সৈন্যরা ৷ সে দৌড়ে তার মায়ের কাছে যায়, মা মোনাজাত করছেন ৷ পাকসেনারা নেটের দরজা ভেঙে ফেলে বাড়ির ভেতরে ঢুকে পড়ে ৷ তাদের একজন শিমুলের বুক বরাবর অস্ত্র উঁচিয়ে ধরলে শিমুল তারস্বরে চিৎকার করে ওঠে, আর বাড়ির চারদিকে এক দল কাক কা কা রবে ডেকে উঠে পাখার ঝাপ্টায় আকাশ মাতায় ৷ সৈন্যরা ধাতবস্বরে বলে ওঠে, ‘মিউজিক ডিরেক্টর সাব কৌন হ্যায় ? কিধার হ্যায় ?’ তখন, চাল ধোয়া পানির মতো ভোরের পবিত্র আলো সত্তায় মেখে দরজা দিয়ে বেরিয়ে আসেন আলতাফ মাহমুদ : ‘আমি ৷’
    ‘হয়্যার আর দি আর্মস অ্যান্ড এমুনিশেনস ? হাতিয়ার কিধার হ্যায় ?’
    আলতাফ মাহমুদ বুঝতে পারেন, তারা সবকিছু জেনেই এসেছে ৷ তিনি বুঝতে পারেন, এ বাড়ির আর সবাইকে বাঁচাতে হলে সবকিছুর দায়দায়িত্ব তাঁকেই নিতে হবে, যা কিছু তিনি একজীবনে আর একাত্তরের মার্চের পরে করেছেন ৷ তিনি সুর দিয়েছেন আমার ভায়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি গানে, যুক্ত ছিলেন বাম রাজনীতির সঙ্গে, তিনি ২৫ মার্চের রাতে প্রত্যক্ষ করেছেন কীভাবে পাকিস্তানি সামরিক জান্তা পুলিশ ব্যারাকে হামলা চালিয়েছে, আগুন লাগিয়েছে, বাঙালি পুলিশ কীভাবে পাক-আক্রমণ প্রতিরোধ করতে চেয়েছে শুধু রাইফেল দিয়ে, বাঙালি পুলিশেরা পজিশন নিয়েছিল তাদের আর পড়শিদের বাসার ছাদেও, ভোরে টিকতে না পেরে চলে গেছে অস্ত্র আর ইউনফির্ম ফেলে, সেই অস্ত্র আলতাফ মাহমুদ তুলে দিয়েছেন মুক্তিযোদ্ধাদের হাতে ৷ শাহাদত চৌধুরী মেলাঘর থেকে জুলাইয়ে এসেছে তাঁর কাছে, স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের জন্য গান রেকর্ড করে তার টেপ নিয়ে যাওয়ার জন্যে, তাঁর কাছে এসেছে মুক্তিযোদ্ধা গাজী দস্তগীর, ঢাকায় মেলাঘর থেকে খালেদ মোশাররফ আর হায়দার যে ১৭ জনকে পাঠিয়েছিলেন হাবিবুল আলমের নেতৃত্বে , তাদেরই একজন এই দস্তগীর ৷ সামাদ ভাই অনেকবার এসেছে তাঁর কাছে ৷ শাচৌ পূর্বপরিচিত আলতাফ মাহমুদের, যুদ্ধের মধ্যে একদিন রাস্তা থেকে আলতাফ মাহমুদ ধরে আনেন শাচৌ আর আলমকে ৷ তিনি নিজেই যুক্ত হয়ে পড়েন মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে ৷ তাঁর বাড়ি হয়ে ওঠে ঢাকার যুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধাদের আরেকটা দুর্গ ৷ ফতেহ আর বাকেরও এসেছে ৷ অস্ত্র রাখতে হবে, এ প্রস্তাব শুনে আলতাফ মাহমুদ নিজে গাড়ি চালিয়ে গাড়ির বুটে করে নিয়ে এসেছেন দু ট্রাঙ্ক অস্ত্র, সেগুলো পুঁতে রাখা হয়েছে তাঁদের পড়শির বাসার পেছনের লেবুগাছটার নিচে আঙিনায়, মুক্তিযোদ্ধাদের দেখলেই তিনি খুশি হতেন, বলতেন, ‘আমার যা সাহায্য লাগবে তোমরা আমাকে বলবে, আমি অবশ্যই করব ৷’
    তিনি পাকিস্তানি সৈন্যদের বলেন, ‘তোমরা কেন এসেছ, আমি বুঝতে পারছি ৷ আমি ছাড়া আর কেউ জানে না ৷ এসো ৷ এই গাছের নিচে আছে দুটো ট্রাঙ্ক ৷’
    সৈন্যরা তাঁর হাতেই তুলে দেয় কোদাল, একা আলতাফ মাহমুদ খুঁড়তে থাকেন মাটি, কিন্তু তিনি ক্লান্তি বা অনিচ্ছা বোধ করছিলেন, একজন সৈন্য রাইফেলের বাঁট দিয়ে তার মুখে আঘাত করে, তার একটা দাঁত ভেঙে মাটিতে পড়ে যায়, তিনি আবার খুঁড়ে চলেন উঠোন, একজন পাকিস্তানি সৈন্য বেয়নেট চার্জ করলে আলতাফ মাহমুদের কপালের চামড়া কেটে গিয়ে তার চোখের ওপরে ঝুলতে থাকে ৷
    দুই ট্রাঙ্ক অস্ত্র উদ্ধার করে আলতাফ মাহমুদ, তাঁর শ্যালক নুহেল, খনু, লিনু, দিনু বিল্লাহ আর আগের রাতে বেড়াতে এসে কারফিউয়ের ফাঁদে আটকে পড়া মুক্তিযোদ্ধা-শিল্পী আবুল বারক আলভীকে, আর যন্ত্রশিল্পী হাফিজকে, আরো দুজন পড়শিকে ধরে নিয়ে গাড়িতে তোলে মিলিটারিরা, তখন প্রতিবাদে ভীষণ কান্না জুড়ে দেয় আলতাফ মাহমুদের চার বছরের কন্যা শাওন ৷ বাড়ির চারপাশের গাছাছালির ডাল থেকে কাকগুলো আকাশে চক্কর দিতে থাকে আর কা কা রবে পুনর্বার ডেকে ওঠে তারস্বরে ৷
    একই রাতে, ২১টা বাসায় হানা দেয় পাকিস্তানি মিলিটারি ৷ বদি আর সামাদ ভাইয়ের গ্রেপ্তারের খবর পেয়ে ২৯শে আগস্ট বিকালেই মুক্তিযোদ্ধা উলফত চক্কর মেরে ঘুরতে থাকে বিভিন্ন হাইড আউটে, সে বেবিট্যাক্সিতে চড়ে যায় শাহাদত চৌধুরীদের ৩০ হাটখোলার বাসায়, শাচৌ বাড়ি নাই, গতকালই চলে গেছেন মেলাঘর, তাঁর ভাই মুক্তিযোদ্ধা ফতেহকে উলফত পেয়ে যায় গেটের কাছেই, দ্রুত তাকে জানিয়ে দেয় দুঃসংবাদ, রেইড আসন্ন ৷ এই বাড়িটা মুক্তিযোদ্ধাদের একটা অন্যতম আশ্রয়স্থল, একটা দুর্গ, শাচৌ ফতেহর তিন বোন মারিয়াম, ঝিমলি আর ডানা আর তাঁদের বাবা-মা অস্ত্রশস্ত্র রাখা, মুক্তিযোদ্ধাদের দেখভাল করার কাজটা এমনভাবে করতেন যে তাঁরা নিজেরাই হয়ে উঠেছিলেন একেকজন নীরব মুক্তিযোদ্ধা ৷ উলফতের কাছে খবর পেয়ে তার আনা বেবিট্যাক্সিতে চড়েই ফতেহ আর তিন বোন চলে যায় তাদের আরেক বোনের বাসায় ৷ শাহাদত আর ফতেহ চৌধুরীর বাবা অবসরপ্রাপ্ত জেলা জজ আব্দুল হক চৌধুরীর অভ্যাস ছিল রাত ১২টা পর্যন্ত কোরআন শরিফ পাঠ, সেদিন তিনি আর জায়নামাজ থেকে ওঠেন না ৷ পাকিস্তানি আর্মি তাঁর বাসায় হানা দেয় রাত ২টায় ৷ তারা তাঁর কাছে তাঁর পরিচয় জানতে চায় ৷ চৌধুরী সাহেব জানান, তিনি একজন অবসরপ্রাপ্ত জেলা জজ ৷ তখন আর্মি অফিসার তাঁকে স্যালুট করে ৷ জিজ্ঞেস করে, ‘আপনার ছেলেরা কোথায় ?’
    তিনি বলেন, ‘জানি না ৷’
    ‘তারা কি ভারতে গেছে ?’
    ‘যেতেও পারে ৷’
    ‘যুদ্ধে গেছে ?’
    ‘আমার জানামতে গ্রামে গেছে থাকতে ৷ তবে যুদ্ধে গেলে যেতেও পারে ৷ আমি তাদের সিকিউরিটি দিতে পারব না, তাই তাদের আটকে রাখতেও পারি না ৷’
    অফিসারটি বিস্মিত হয়ে চৌধুরী সাহেবের দিকে তাকিয়ে থাকেন, তারপর বলেন, ‘আপনার কথা আমি আমার ওপরের অফিসারকে জানাব ৷’
    আর রাত ২টায় বাসা ঘেরাও করে কাউকে না পেয়ে বাড়ির জামাতা করাচি থেকে বেড়াতে আসা বেলায়েত হোসেন চৌধুরীকে ধরে নিয়ে যায় পাকবাহিনী ৷
    ধানমন্ডি ২৮-এর আশ্রয়স্থলটাও তল্লাশির আওতায় পড়ে, কাউকে না পেয়ে মালি জামানকে প্রচণ্ড মারধর করে আর্মিরা ৷ রাত ২টায় হানা দেয় চুল্লু ভাইয়ের ভাই এএসএইচকে সাদেকের বাসায়, ধরে নিয়ে যায় চুল্লু ভাইকে, কিন্তু ওয়ারড্রবের ভেতরে কাপড়ের আড়ালে রাখা অস্ত্রশস্ত্র উদ্ধার করতে পারে না ৷ ফতেহ আলী চৌধুরী বোনদের বড় বোনের বাড়িতে নামিয়ে দিয়ে সঙ্গে সঙ্গে চলে যায় এলিফ্যান্ট রোডে জাহানারা ইমামের বাসার খোঁজে, কিন্তু সে বাসাটা চিনত না বলে খুঁজে না পেয়ে ফিরে যায়, আর রাত ২টায় চারদিক থেকে কণিকা নামের বাসাটা ঘিরে ফেলে আর্মিরা, ধরে নিয়ে যায় রুমী, জামী, তাদের বাবা শরীফ ইমাম, কাজিন মাসুম, বন্ধু হাফিজকে ৷ স্বপনের বাড়ি ঘেরাও হওয়ার সময় টের পেয়ে স্বপন বাড়ির পেছনের গোয়ালে ঢুকে পড়ে গরুর পেছনে আশ্রয় নিলে কোনোমতে বেঁচে যায় ৷ মেলাঘরের আরেক গেরিলা উলফতকে না পেয়ে তার বাড়ি থেকে পাকসেনারা ধরে নিয়ে যায় তার বাবা আজিজুস সামাদকে ৷
    এইসব খবর নিয়ে ফতেহ, তার ভাই ডাক্তারির ছাত্র মোরশেদ আর তার ইডেন কলেজের অধ্যাপিকা সহমুক্তিযোদ্ধা জাকিয়া চলে যায় সীমান্ত পেরিয়ে মেলাঘরে ৷
    সেখানে আলম আর শাচৌ ইতিমধ্যে পদোন্নতি পাওয়া লে. কর্নেল খালেদ মোশাররফ আর মেজর হায়দারকে শোনাচ্ছে ঢাকায় সেক্টর টু-র গেরিলা ওয়ারফেয়ারের সাফল্যের একেকটা অভিযানকাহিনী, তাঁদের দুজনই দারুণ খুশি এই সাফল্যে, এবং তাঁরা রাজি ঢাকার গেরিলাদের হাতে আরো ভারী অস্ত্র আর গোলাবারুদ দিতে, তাঁদের পাশে দাঁড়িয়ে আছে শহীদুল্লাহ খান বাদল, পরিকল্পনা হচ্ছে আর কী কী করা যায় ঢাকায় ৷
    একটা সিগারেট ধরাবেন বলে শাচৌ বেরিয়ে আসেন তাঁবু থেকে, তার মাথায় চিন্তা, ৬ই সেপ্টেম্বরের আগেই ঢাকায় পৌঁছতে হবে ৷ সিগারেট ধরিয়ে একরাশ ধোঁয়া ছাড়তেই তিনি ধোঁয়ার কুন্ডলীর ভেতর দিয়ে সামনে দেখতে পান, পাহাড় থেকে নেমে আসছে ফতেহ ৷ আরে, ফতেহ এখানে কেন ? ওর তো ঢাকার অ্যাকশনে থাকার কথা ৷
    ফতেহ বলে, ‘সব শেষ হয়ে গেছে ৷’
    এই বিয়োগান্ত খবর শুনে খালেদ মোশাররফ আর হায়দার থমকে থাকেন, তারপর খালেদ মোশাররফের চাউনির বাইরে চলে যান হায়দার, ঢুকে পড়েন নিজের তাঁবুতে, দাঁড়িয়ে থাকে বিপন্ন বাদল, আর যে-মেজর হায়দারকে কেউ কোনো দিনও এক ফোঁটা জল ফেলতে দেখেনি, সেই শক্ত যোদ্ধাটি সোজা বিছানায় চলে যান, বালিশ চাপা দেন মুখে, তারপর হাউমাউ করে কাঁদতে থাকেন : মাই বয়েজ, মাই বয়েজ…,
    পুরো মেলাঘরে নেমে আসে শোকের ছায়া ৷

    ⤶ ⤷
    1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11 12 13 14 15 16 17 18 19 20 21 22 23 24 25 26 27 28 29 30 31 32 33 34 35 36 37 38 39 40 41 42 43 44 45 46 47 48 49 50 51 52 53 54 55 56 57 58 59 60 61 62 63 64 65
    Share. Facebook Twitter Pinterest LinkedIn Tumblr Email Reddit VKontakte Telegram WhatsApp Copy Link
    Previous Articleবাগানবাড়ি রহস্য – আনিসুল হক
    Next Article মাসুদ রানা ৪৪৮ – মৃত্যুঘণ্টা

    Related Articles

    হরিনারায়ণ চট্টোপাধ্যায়

    ভয় সমগ্র – হরিনারায়ণ চট্টোপাধ্যায়

    December 9, 2025
    হরিনারায়ণ চট্টোপাধ্যায়

    কিশোর অ্যাডভেঞ্চার সমগ্র – হরিনারায়ণ চট্টোপাধ্যায়

    December 9, 2025
    সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়

    প্রকাশ্য দিবালোকে – সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়

    November 18, 2025
    সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়

    তারপর কী হল – সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়

    November 17, 2025
    মাইকেল মধুসূদন দত্ত

    শর্ম্মিষ্ঠা নাটক – মাইকেল মধুসূদন দত্ত

    November 11, 2025
    সত্যজিৎ রায়

    মানপত্র সত্যজিৎ রায় | Maanpotro Satyajit Ray

    October 12, 2025
    Add A Comment
    Leave A Reply Cancel Reply

    Generic selectors
    Exact matches only
    Search in title
    Search in content
    Post Type Selectors
    Demo

    Your Bookmarks


    Reading History

    Most Popular

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025

    দোকানির বউ

    January 5, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025
    Demo
    Latest Reviews

    বাংলা গল্প শুনতে ভালোবাসেন? এক পাতার বাংলা গল্পের সাথে হারিয়ে যান গল্পের যাদুতে।  আপনার জন্য নিয়ে এসেছে সেরা কাহিনিগুলি, যা আপনার মন ছুঁয়ে যাবে। সহজ ভাষায় এবং চিত্তাকর্ষক উপস্থাপনায়, এই গল্পগুলি আপনাকে এক নতুন অভিজ্ঞতা দেবে। এখানে পাবেন নিত্যনতুন কাহিনির সম্ভার, যা আপনাকে বিনোদিত করবে এবং অনুপ্রাণিত করবে।  শেয়ার করুন এবং বন্ধুদের জানাতে ভুলবেন না।

    Top Posts

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025

    দোকানির বউ

    January 5, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025
    Our Picks

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১২

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১৩

    December 12, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram Pinterest
    • Home
    • Disclaimer
    • Privacy Policy
    • DMCA
    • Contact us
    © 2025 Ek Pata Golpo. Designed by Webliance Pvt Ltd.

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.

    • Login
    Forgot Password?
    Lost your password? Please enter your username or email address. You will receive a link to create a new password via email.
    body::-webkit-scrollbar { width: 7px; } body::-webkit-scrollbar-track { border-radius: 10px; background: #f0f0f0; } body::-webkit-scrollbar-thumb { border-radius: 50px; background: #dfdbdb }