Close Menu
এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    What's Hot

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১২

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১৩

    December 12, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    • 📙
    • লেখক
    • শ্রেণী
      • ছোটগল্প
      • ভৌতিক গল্প
      • প্রবন্ধ
      • উপন্যাস
      • রূপকথা
      • প্রেমকাহিনী
      • রহস্যগল্প
      • হাস্যকৌতুক
      • আত্মজীবনী
      • ঐতিহাসিক
      • নাটক
      • নারী বিষয়ক কাহিনী
      • ভ্রমণকাহিনী
      • শিশু সাহিত্য
      • সামাজিক গল্প
      • স্মৃতিকথা
    • কবিতা
    • লিখুন
    • চলিতভাষার
    • শীর্ষলেখক
      • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
      • বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
      • শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়
      • বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • সত্যজিৎ রায়
      • সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
      • বুদ্ধদেব গুহ
      • জীবনানন্দ দাশ
      • আশাপূর্ণা দেবী
      • কাজী নজরুল ইসলাম
      • জসীম উদ্দীন
      • তসলিমা নাসরিন
      • মহাশ্বেতা দেবী
      • মাইকেল মধুসূদন দত্ত
      • মৈত্রেয়ী দেবী
      • লীলা মজুমদার
      • শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
      • সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়
      • সমরেশ মজুমদার
      • হুমায়ুন আহমেদ
    • English Books
      • Jules Verne
    • 🔖
    • ➜]
    Subscribe
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)

    মা – আনিসুল হক

    লেখক এক পাতা গল্প410 Mins Read0
    ⤶ ⤷

    ৬৩. মা

    ৬৩
    ১৯৮৫ সাল৷ আগস্ট মাস৷ আগস্ট মাস এলেই ঢাকার মুক্তিযোদ্ধাদের মাথার ভেতরটা কেমন করতে থাকে৷ জায়েদের হাত-পা ঘামতে থাকে দরদর৷ সারা শরীরের জ্বলুনিটা বেড়ে যায়৷ ২৯শে আগস্ট দিবাগত রাতে আজাদ চলে গিয়েছিল৷ ১৪ বছর আগে৷
    সেই রাতটা কাছে আসছে৷ এদিকে শাহজাহানপুরের এক দীনহীন বাসায় থাকা আজাদের মার শরীরটা খুবই খারাপ হচ্ছে৷ হাঁপানির টান যখন ওঠে, তখন তিনি এত কষ্ট পান যে মনে হয় এর চেয়ে মৃত্যুই শ্রেয়৷ এর মধ্যে একটা দিনের জন্যেও, সেই ১৯৬১ থেকে, তিনি স্বামীর মুখ দেখেননি৷ নিজের মুখও তাকে দেখতে দেননি৷ আজাদের মা জায়েদকে ডেকে বলেন, ‘আমার আর সময় নাই৷’
    জায়েদ বলে, ‘আম্মা, ডাক্তার ডাকি৷’
    মা বলেন, ‘ডাকো৷ এত দিন ধরে আমাদের দেখছেন, বিদায় নিই৷’
    তাঁকে যে ডাক্তার দেখতেন, টাঙ্গাইলের লোক, ডাক্তার এস. খান, তাঁকে ডাকা হয়৷ ডাক্তার এসে দেখেন, আজাদের মা শুয়ে আছেন স্যাঁতসেঁতে মেঝের ওপরে বিছানো একটা পাটিতে৷ তিনি বিস্মিত হন না৷ কারণ তিনি জানেন, কেন এই ভদ্রমহিলা মেঝেতে শোন৷ তবে ঘরের অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ তাঁকে চিন্তিত করে৷ গলিটা ময়লা, একধারে নর্দমা উপচে উঠেছে, দুর্গন্ধ ঘরের ভেতরে পর্যন্ত এসে ঢুকছে৷ ঘরটাতেও আলো তেমন নাই৷
    তবে সাফিয়া বেগমের মুখখানা তিনি প্রশান্তই দেখতে পান৷ তিনি তাঁর নাড়ি পরীক্ষা করেন, স্টেথোস্কোপ কানে দিয়ে তাঁর বুকের ভেতরের হাপরের শব্দের মর্ম অনুধাবন করেন৷ রোগীর অবস্থা বেশি ভালো নয়৷ এখনই ক্লিনিকে নিয়ে গিয়ে একটা শেষ চেষ্টা করা যায়৷
    ডাক্তার বলেন, ‘বোন, কী করবা!’
    মা বলেন, ‘আপনাকে দেখলাম৷ দেখতে ইচ্ছা করছিল৷ তাই ডেকেছি৷ আপনার আর কী করার আছে! আমার সময় হয়ে এসেছে৷ আমাকে বিদায় দিন৷ ভুলত্রুটি যা করেছি, মাফ করে দেবেন৷’
    ‘হসপিটালে যাওয়া দরকার৷’
    ‘না৷ দরকার নাই৷’
    ‘আল্লাহ!’ একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে ডাক্তার কিছু ওষুধ দিয়ে বিদায় হন৷
    মা বলেন, ‘উকিল ডাকো৷ গেন্ডারিয়ার জমিগুলো আমি লেখাপড়া করে দেব৷’
    উকিল ডাকা হয়৷
    তিনি গেন্ডারিয়ার জমি তাঁর ভাগ্নে-ভাগি্নদের নামে আর জুরাইনের মাজারের নামে দলিল করে দেন৷
    ২৯শে আগস্ট পেরিয়ে যায়৷ আসে ৩০শে আগস্ট৷ আজাদের ধরা পড়ার ১৪ বছর পূর্ণ হওয়ার দিন৷ তিনি ভাগ্নে-ভাগি্নদের ডাকেন৷ জায়েদকে বলেন, ‘শোনো, আমার মৃত্যুর পরে কবরে আর কোনো পরিচয় লিখবে না, শুধু লিখবে-শহীদ আজাদের মা৷ বুঝলে!’
    ‘জি৷’ জায়েদরা কাঁদতে শুরু করে৷
    তিনি বলেন, ‘শোনো, আসলে আজাদ যুদ্ধের সময়ই শহীদ হয়েছে৷ ওর বউয়ের জন্যে আমি কিছু গয়না রেখেছিলাম৷ এগুলো রেখে আর কোনো লাভ নাই৷ আজাদ তো আসলে যুদ্ধের সময়ই শহীদ হয়েছে৷ এগুলো তোমাদের দিয়ে গেলাম৷ তোমরা বড় হুজুরের সাথে আলাপ করে সৎকাজে এগুলো ব্যয় কোরো৷ আমার যাওয়ার সময় হয়েছে, আমি যাই বাবারা, মায়েরা…’
    জায়েদ, টিসু, টগর, তাদের বউ-বাচ্চা, যারা তাঁর পাশে ছিল, তারা কাঁদতে থাকে৷
    তিনি ইশারা করে বলেন, ‘কেঁদো না৷’ তিনি একটা ট্রাঙ্কের চাবি জায়েদের হাতে তুলে দেন৷ পরে, জায়েদ সেই ট্রাঙ্ক খুলে প্রায় একশ ভরি সোনার গয়না দেখতে পায়! আশ্চর্য তো মহিলা, এতটা কষ্ট করলেন, কিন্তু ছেলের বউয়ের জন্য রাখা গয়নায় এই ১৪টা বছর হাত দিলেন না!
    ১৩ই জিলহজ্ব, ৩০শে আগস্ট ১৯৮৫ বিকাল পোনে ৫টায় আজাদের মা শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন৷
    জায়েদ অন্যান্য কৃত্যের সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধা কাজী কামাল বীরবিক্রমকে খবরটা দেওয়ার কর্তব্যটাও পালন করে৷ সেখান থেকে খবরটা পান জাহানারা ইমাম৷ তিনি আবার একে একে খবর দেন ঢাকার আরবান গেরিলাদের৷ হাবিবুল আলম বীরপ্রতীক, হ্যারিস, বাচ্চু, ফতেহ, উলফত, শাহাদত চৌধুরী, চুল্লু, আলভী, আসাদ, শহীদুল্লাহ খান বাদল, হিউবার্ট রোজারিও…
    পরদিন সকালে লাশ নিয়ে যাওয়া হয় জুরাইন গোরস্তানে৷ জাহানারা ইমাম রয়ে যান গাড়ির ভেতরে, গোরস্তানের গেটের বাইরে৷
    জনা-তিরিশেক মুক্তিযোদ্ধা আর কিছু নিকটাত্মীয়ের শবযাত্রীদলটি কফিন বয়ে নিয়ে চলেন৷
    লাশ গোরে নামানোর পরে হঠাৎই রৌদ্রোজ্জ্বল আকাশ থেকে বৃষ্টি নামতে থাকে৷ একটা অচেনা মিষ্টি গন্ধে পুরো গোরস্তানের বাতাস আচ্ছন্ন হয়ে থাকে৷ অনেক মুক্তিযোদ্ধারই মনে হয়, তাদের সহযোদ্ধা শহীদেরা আজ অনেকেই একত্র হয়েছে এই সমাধিক্ষেত্রে, যেন তারা পুষ্পবৃষ্টি বর্ষণ করছে বেহেশত থেকে, যেন তারা মাটি দিচ্ছে কবরে৷ শহীদ জুয়েল, শহীদ বদি, শহীদ বাকের, শহীদ আলতাফ মাহমুদ, শহীদ রুমী, শহীদ বাশার প্রমুখ আর শহীদ আজাদ এখানে উপস্থিত৷
    সহযোদ্ধা শহীদের মাকে সমাহিত করতে এসে ঢাকার আরবান গেরিলা দলের সদস্যরা আচ্ছন্ন হয়ে পড়েন, ঘোরগ্রস্ত হয়ে পড়েন, তাড়িত বোধ করেন; স্মৃতি তাদের দখল করে নেয়, স্বপ্ন আর দুঃস্বপ্ন তাদের জাগিয়ে তোলে, নিশি-পাওয়া মানুষের মতো তারা হাঁটাহাঁটি করেন, ত্রিকালদর্শী বৃদ্ধের মতো তারা একবার কাঁদেন, একবার হাসেন৷ তারা স্মৃতিতর্পণ করেন৷ আজাদের মায়ের শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়ে যাবার পরের কটা দিন তারা একা একা, জোড়ায় জোড়ায়, কিংবা ছোট ছোট গ্রুপে বসে এই কাহিনী স্মরণ করেন৷ বলাবলি করেন৷ ঘাঁটাঘাঁটি করেন৷
    বিচিত্রা সম্পাদক শাহাদত চৌধুরীর চশমার পুরু লেন্স ঝাপসা হয়ে আসে বাষ্পে, তিনি কান্না লুকাতে পারেন না, আরেকটু সাবধান বোধহয় হওয়া উচিত ছিল, এই নির্দেশ হয়তো তাঁরই দেওয়া উচিত ছিল, আর আমরা কী রকম বেপরোয়া হয়ে গিয়েছিলাম, ভেবে দ্যাখো, একদিন প্রকাশ্য দিবালোকে আমরা গাড়িতে যাচ্ছি আর ছেলেমানুষের মতো বাজি ধরছি, চল, এসএমজি পাশে রেখে নিয়ে যাই তো, দেখি না কী হয়, আর সত্যি আমরা এসএমজি পাশে রেখে ট্রিগারে আঙুল ধরে যাচ্ছি, সামাদ ভাই নির্বিকার গাড়ি চালাচ্ছেন, এটা তো ছিল শুধুই অ্যাডভেঞ্চার, খালেদ মোশাররফ বলতেন, কাউবয় অ্যাডভেঞ্চার৷ কাজী কামালের মনে হয়, অবশ্যই প্রত্যেকটা হাইড আউটে সেন্ট্রি রাখা উচিত ছিল, আর ওই রাতে এলএমজির দখলটা পুরোপুরি নিয়ে নিতে পারলে… জুয়েল, আজাদ, বাশার সবাইকে নিয়েই তো বেরিয়ে আসা যেত, হয়তো… সৈয়দ আশরাফুল হকের মনে হয়, কেন তিনি ছাড়তে গেলেন জুয়েলকে, ওই রাতে, আর কেনই বা বদি শেষের দুই রাত তাদের বাসায় না থেকে অন্য জায়গায় থাকতে গেল ? জায়েদ হাহাকার করে ওঠে : ‘দাদা ক্যান আমার কথা বিশ্বাস করল না, কামরুজ্জামানরে দেইখাই তো আমি বুইঝা ফেলছিলাম, ওই বেটা ক্যান ঘুরঘুর করে আমগো বাড়ির চারদিকে৷’ ইব্রাহিম সাবেরের মনে পড়ে, ওইদিন দুপুরবেলা দোকানে তিন যুবকের চোখমুখ দেখেই তিনি বুঝেছিলেন এরা ইনফরমার হতে পারে, তিনি সতর্ক করে দিয়েছিলেন আজাদকে, আজাদ শোনেনি… শহীদুল্লাহ খান বাদল হিসাব মেলাতে পারেন না, ২৭শে মার্চ তারা রওনা দিলেন চার জন, যুদ্ধশেষে ফিরে এলেন দুজন, ‘বদি যে আমাদের দুজনের হাত কেটে রক্তের সঙ্গে রক্ত মিশিয়ে বলে গেল আজ থেকে আমরা রক্তের ভাই, সে কেন আর আসে না, আশফাকুস সামাদ আশফি ভুরুঙ্গামারীর যুদ্ধে শহীদ হয়েছে, সে তো আর আসবে না… যেন এখনও বাদল শুনতে পান স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে প্রচারিত আশফির শহীদ হওয়ার সংবাদটা, সেক্টর টু’তে বসে তারা খবরটা শোনেন, তোপধ্বনি করা হয় এই বীরের সম্মানে, স্তব্ধ হয়ে বসে ছিলেন হায়দার, তাঁর নিজের হাতে গড়া ছেলে!
    নিদ্রাহীনতায় জেগে ওঠেন নাসির উদ্দীন ইউসুফ বাচ্চু, যখন তিনি তাকান বিগত ১৪টা বছরের দিকে, খেই খুঁজে পান না, খালেদ মোশাররফ বলতেন, স্বাধীন দেশ জীবিত গেরিলার চেয়ে পছন্দ করে শহীদ যোদ্ধাদের, কোথায় গেল সেই যুদ্ধ, কোথায় সেই আগুনের পরশমণি ছোঁয়ানো দিনগুলো, যুদ্ধের পরে শুধু ধ্বংসের শব্দ, শুধু অবক্ষয়ের চিত্র, একে একে মরে যাচ্ছে মুক্তিযোদ্ধারা, রক্ষীবাহিনীর হাতে মরল মুখতার, এখানে ওখানে কতজন মরল, কয়েকজন অধঃপাতে গেল, চোখের সামনে একে একে কেবল মুক্তিযোদ্ধাদেরই চলে যাওয়ার ছবি, সার সার৷
    টগরের মাথার ওপর দিয়ে সব পাখি একে একে বিদায় নেয়, যাওয়ার আগে যেন শেষতম পাখিটা বলে যায় বঙ্গবন্ধু নাই, তাজউদ্দীন আহমদসহ চার নেতা নাই, খালেদ মোশাররফ নাই, হায়দার নাই, জিয়াউর রহমান নাই, কে আছে আর মুক্তিযোদ্ধাদের…
    নাসির উদ্দীন ইউসুফ বাচ্চু ঘুমুতে পারেন না, বহু মুক্তিযোদ্ধা বিহ্বলের মতো আচরণ করে, চারপাশের মানুষগুলো তাদের বুঝতে পারে না…তারাও বুঝে উঠতে পারে না চারপাশের জগতকে৷
    ঘোর লাগা নাসির উদ্দীন ইউসুফ বাচ্চু যান শাহাদত চৌধুরীর বাসায়৷ ‘বাচ্চু আসো, বসো’-শাচৌ বলেন৷
    বাচ্চু বলেন, ‘শাহাদত ভাই, আমি একটা কথা জিজ্ঞেস করতে এলাম৷’
    ‘বসো৷ বসে বলো, কী তোমার কথা ?’ শাচৌ বলেন৷
    বাচ্চু বলেন, ‘শাহাদত ভাই, আচ্ছা বলেন তো এই দেশে আম্মা, মানে জাহানারা ইমামের মতো মা আছেন ?’
    ‘হ্যাঁ৷ বলো৷’
    ‘আজাদের মায়ের মতো মা ছিলেন ?’
    শাচৌ চুপ করে তাকিয়ে থাকেন বাচ্চুর মুখের দিকে৷
    ‘তাঁরা তাদের ছেলেদের হাসিমুখে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিয়েছিলেন, দেশের জন্যে, মানুষের জন্যে, আমাদের সবার ভালো থাকার জন্যে…’ বাচ্চু বলে চলেন৷
    শাচৌ মাথা নাড়েন৷ ‘হ্যাঁ…’
    ‘তাহলে বীরের এ রক্তস্রোত, মায়ের এ অশ্রুধারা, এসব কি ধরার ধুলায় হারা হয়ে যাবে ? শাহাদত ভাই, ইতিহাসে এটা কি হতে দেখেছেন… এত এত লোক আত্মত্যাগ করল, নিজের জীবনের চেয়ে বড় আর কী হতে পারে, সেই জীবন দিয়ে দিল, আর মায়ের কাছে ছেলের চেয়ে বড় ধন আর কী, মায়েরা হাসিমুখে ছেলেদের তুলে দিলেন মৃত্যুর হাতে, সব বৃথা যাবে ?’
    পুরোটা ঘরে তখন অসহ্য নীরবতা৷
    বাচ্চু বলেন, ‘শাহাদত ভাই, আবুল হাসানের একটা কবিতা আছে না, তোমরা আমার না পাওয়াগুলো জোড়া দাও, আমি তোমাদের ভালো থাকা হবো, আছে না ? আছে৷ তাহলে আজাদের মায়ের না পাওয়াগুলো জোড়া দিলে আমাদের সবার ভালো থাকার দিন আসে না ? এই দেশটার ভালো হবে না ? শাহাদত ভাই বলেন৷’
    শাহাদত চৌধুরী মাথা নিচু করে থাকেন৷ বাচ্চুর এই প্রশ্নের জবাব নিশ্চয়ই ‘হ্যাঁ’৷ এই দেশটার একদিন ভালো হবে, এই দেশের মানুষের সবার ভালো হবে, আমাদের সন্তানেরা সবাই দুধভাতে থাকবে, এত এত মানুষের এত এত আত্মত্যাগ বৃথা যেতে পারে না৷ কিন্তু কই, সেই সুসময় তো আসে না…
    নীরবতা, পাথরের মতো নীরবতা নেমে আসে ওই ঘরটায়, তাদের বুকের ওপর, সমস্তটা দেশের ওপর৷ শাহাদত চৌধুরীর মনে পড়ে, আলমও প্রায়ই বলে, ‘আমরা তো যুদ্ধ শেষেই পাস্ট টেন্স হয়ে গেছি৷ এখন আমার পরিচয় কী ? হাবিবুল আলম বীরপ্রতীক, মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন৷ ১৭ ডিসেম্বর থেকেই আমাদের অতীত ইতিহাস করে দেওয়া হয়েছে৷’ শাহাদত চৌধুরীরও মনে হয়, মুক্তিযুদ্ধকে জাতির সত্তায় বপন করতে দেওয়া হয়নি৷ খালেদ মোশাররফ তো বলতেনই, স্বাধীন দেশ জীবিত গেরিলা চাইবে না, তার চাই শহীদ…
    খানিকক্ষণ নীরব থেকে শাচৌ বলেন, ‘বাচ্চু, তুমি বসো৷ তোমার মনের কথাগুলো লিখে ফেলো৷ সামনে আমার বিজয় দিবস সংখ্যা, ওতে আমি তোমার এই কথাগুলো ছাপব৷’
    তাকে টেবিলে বসিয়ে কাগজ কলম ধরিয়ে দেন তিনি৷
    সারা রাত জেগে বাচ্চু লিখে ফেলেন তাঁর মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক আবেগময় স্মৃতিগাথা : ঘুম নেই৷

    ⤶ ⤷
    1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11 12 13 14 15 16 17 18 19 20 21 22 23 24 25 26 27 28 29 30 31 32 33 34 35 36 37 38 39 40 41 42 43 44 45 46 47 48 49 50 51 52 53 54 55 56 57 58 59 60 61 62 63 64 65
    Share. Facebook Twitter Pinterest LinkedIn Tumblr Email Reddit VKontakte Telegram WhatsApp Copy Link
    Previous Articleবাগানবাড়ি রহস্য – আনিসুল হক
    Next Article মাসুদ রানা ৪৪৮ – মৃত্যুঘণ্টা

    Related Articles

    হরিনারায়ণ চট্টোপাধ্যায়

    ভয় সমগ্র – হরিনারায়ণ চট্টোপাধ্যায়

    December 9, 2025
    হরিনারায়ণ চট্টোপাধ্যায়

    কিশোর অ্যাডভেঞ্চার সমগ্র – হরিনারায়ণ চট্টোপাধ্যায়

    December 9, 2025
    সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়

    প্রকাশ্য দিবালোকে – সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়

    November 18, 2025
    সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়

    তারপর কী হল – সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়

    November 17, 2025
    মাইকেল মধুসূদন দত্ত

    শর্ম্মিষ্ঠা নাটক – মাইকেল মধুসূদন দত্ত

    November 11, 2025
    সত্যজিৎ রায়

    মানপত্র সত্যজিৎ রায় | Maanpotro Satyajit Ray

    October 12, 2025
    Add A Comment
    Leave A Reply Cancel Reply

    Generic selectors
    Exact matches only
    Search in title
    Search in content
    Post Type Selectors
    Demo

    Your Bookmarks


    Reading History

    Most Popular

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025

    দোকানির বউ

    January 5, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025
    Demo
    Latest Reviews

    বাংলা গল্প শুনতে ভালোবাসেন? এক পাতার বাংলা গল্পের সাথে হারিয়ে যান গল্পের যাদুতে।  আপনার জন্য নিয়ে এসেছে সেরা কাহিনিগুলি, যা আপনার মন ছুঁয়ে যাবে। সহজ ভাষায় এবং চিত্তাকর্ষক উপস্থাপনায়, এই গল্পগুলি আপনাকে এক নতুন অভিজ্ঞতা দেবে। এখানে পাবেন নিত্যনতুন কাহিনির সম্ভার, যা আপনাকে বিনোদিত করবে এবং অনুপ্রাণিত করবে।  শেয়ার করুন এবং বন্ধুদের জানাতে ভুলবেন না।

    Top Posts

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025

    দোকানির বউ

    January 5, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025
    Our Picks

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১২

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১৩

    December 12, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram Pinterest
    • Home
    • Disclaimer
    • Privacy Policy
    • DMCA
    • Contact us
    © 2025 Ek Pata Golpo. Designed by Webliance Pvt Ltd.

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.

    • Login
    Forgot Password?
    Lost your password? Please enter your username or email address. You will receive a link to create a new password via email.
    body::-webkit-scrollbar { width: 7px; } body::-webkit-scrollbar-track { border-radius: 10px; background: #f0f0f0; } body::-webkit-scrollbar-thumb { border-radius: 50px; background: #dfdbdb }