Close Menu
এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    What's Hot

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১২

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১৩

    December 12, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    • 📙
    • লেখক
    • শ্রেণী
      • ছোটগল্প
      • ভৌতিক গল্প
      • প্রবন্ধ
      • উপন্যাস
      • রূপকথা
      • প্রেমকাহিনী
      • রহস্যগল্প
      • হাস্যকৌতুক
      • আত্মজীবনী
      • ঐতিহাসিক
      • নাটক
      • নারী বিষয়ক কাহিনী
      • ভ্রমণকাহিনী
      • শিশু সাহিত্য
      • সামাজিক গল্প
      • স্মৃতিকথা
    • কবিতা
    • লিখুন
    • চলিতভাষার
    • শীর্ষলেখক
      • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
      • বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
      • শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়
      • বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • সত্যজিৎ রায়
      • সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
      • বুদ্ধদেব গুহ
      • জীবনানন্দ দাশ
      • আশাপূর্ণা দেবী
      • কাজী নজরুল ইসলাম
      • জসীম উদ্দীন
      • তসলিমা নাসরিন
      • মহাশ্বেতা দেবী
      • মাইকেল মধুসূদন দত্ত
      • মৈত্রেয়ী দেবী
      • লীলা মজুমদার
      • শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
      • সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়
      • সমরেশ মজুমদার
      • হুমায়ুন আহমেদ
    • English Books
      • Jules Verne
    • 🔖
    • ➜]
    Subscribe
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)

    সূর্যোদয় – আশাপূর্ণা দেবী

    লেখক এক পাতা গল্প101 Mins Read0
    ⤶ ⤷

    সূর্যোদয় – ৫

    পাঁচ

    বহুকাল পরে আজ আহারান্তে পানের খিলি হাতে নিয়ে দোতলায় উঠে এলেন সুনয়নী। দুপুরের অবকাশটা তো তার কাটে কেবল অপ্রয়োজনীয় কাজকে প্রয়োজনীয় করে তোলবার সাধনায়। অবশ্য নীচের তলায় স্বগতোক্তিটা শুনিয়ে এসেছেন, যাই দেখি, বিছানা বালিশগুলো কদিন রোদে পড়েনি—

    চন্দ্রকান্ত বেশ খানিকক্ষণ অস্থির চিন্তায় সময় কাটিয়ে জোর করে মনঃস্থির করে নিজের খাতাপত্র নিয়ে বসেছিলেন তক্তপোষের উপর। জানলামুখো হয়ে। এই জানলাটা দিয়ে বিকেলের আলো আসে, অনেকক্ষণ থাকে আলোটা। সবে দোয়াতে কলম ডুবিয়েছেন, সুনয়নী এসে জানলার কোণের চওড়া বেদীটার উপরই চেপে বসলেন। আলোটা কিঞ্চিত ব্যাহত হলো।

    চন্দ্রকান্ত কিছু বললেন না, শুধু কলমটা হাত থেকে নামিয়ে রাখলেন। বোঝা যাচ্ছে, সুনয়নীর কিছু বক্তব্য আছে।

    হাতের বাড়তি পানের খিলিটা হাতে ধরে সুনয়নী বলেন, জন্মজীবনে আর তোমায় পান খাওয়াটা ধরাতে পারলাম না। একলা খেয়ে সুখ আছে?

    চন্দ্রকান্ত একটু হাসলেন।

    ব্যঙ্গের, না ক্ষোভের, না কৌতুকের?

    বললেন, সুখ নেই, সেটা বুঝতে এতোদিন লাগল?

    চিরদিনই বুঝেছি, কতদিন তো খোসামোদও করেছি, ভুলে গেছ তাই বল। বুড়োমিনসের যে পান খেলে জিভ তেতো হয়ে যায়, এ কখনো শুনিনি।

    চন্দ্রকান্ত এ কথার আর উত্তর দেন না। দেবার আছেই বা কী? প্রশ্ন তো নয়।

    মরুক গে, নিজেই চিবোই।—বলে পানটা মুখে ফেলে আঁচলের খুঁট থেকে এক টিপ দোক্তা বার করে মুখে দিয়ে সোজা জানলার গরাদের ফাঁকে ছপাৎ করে খানিকটা পিক ফেলেন।

    বিচলিত চন্দ্রকান্ত বলে না উঠে পারেন না, ওটা কী হল?

    কী আবার হবে?

    কোথায় পড়ছে না দেখে—

    সুনয়নী ময়লা শাড়ীর কোণ দিয়ে ঠোঁটের ভিজে ভিজে কোণটা মুছে নিয়ে অবহেলার গলায় বলেন, কোথায় আবার পড়তে যাবে, গাছপালার ওপর পড়েছে। জানলার ধার পর্যন্ত তো গাছ।

    তলা দিয়ে কেউ যেতেও পারে।

    তোমার যত ছিষ্টিছাড়া চিন্তা। এখন আবার কে বাগানের ধারে আসতে যাবে?

    আবার একবার ঠোঁটের কোণটা মুছে নিলেন।

    সুনয়নী এমন ময়লা কাপড় পরে কেন? সুনয়নীর কাপড় পরার ভঙ্গী এমন আলুথালু অগোছালো কেন? যখন তখন মাথায় এতোখানি ঘোমটা টানে, অথচ কাঁধ পিঠ প্রায় উন্মুক্ত।

    কিন্তু সুনয়নী এমন গুছিয়ে এসে বসল কেন? শুধুই কি সারাজীবনের চেষ্টায় স্বামীকে পান খাওয়ার অভ্যাস ধরাতে না পারার দুঃখ জানাতে?

    প্রশ্নটা অস্বস্তিতে ফেলল চন্দ্রকান্তকে।

    অথচ এই একটুমাত্র আগে নানা অস্বস্তি জোর করে মন থেকে ঝেড়ে ফেলে খাতাপত্র নিয়ে বসেছিলেন। …ভেবে দেখেছেন—এই বস্তুটার মধ্যেই শান্তি, এর মধ্যে আশ্রয়।

    কিন্তু সুনয়নী সামনে বসে রয়েছেন একটি জিজ্ঞাসা চিহ্নের মত।

    চন্দ্রকান্ত অতএব ওই চিহ্নের দিকে জিজ্ঞাসার দৃষ্টিতে তাকান।

    সুনয়নী আরো একটু এদিকওদিক কথা বলে অবশেষে সেই জিজ্ঞাসার উত্তর দেন। ছোট খুড়ির মেয়ের শ্বশুরবাড়িতে নাকি একটি পরমা—সুন্দরী কন্যা আছে, শুনে পর্যন্ত সুনয়নীর মনপ্রাণ উত্তাল হয়ে উঠেছে। ভাল জিনিস তো বাজারে পড়ে থাকতে পায় না, তাড়াতাড়ি ঘরে তুলতে না পারলে নির্ঘাৎ হাতছাড়া হয়ে যাবে। তাই চন্দ্রকান্তকে বলতে আসা। পিসিমা আর ছোটখুড়ি মারফৎ তাহলে অবিলম্বে কথাটা পাড়ানো হোক। আশ্বাস পেলে কন্যেপক্ষ দস্তুরমাফিক প্রস্তাব করতে আসবে।

    ধৈর্য ধরে কথাটা শুনলেও, প্রায় হাঁ—করেই তাকিয়ে দেখছিলেন চন্দ্রকান্ত সুনয়নীর আহ্লাদে উদ্বেল পানঠাশা শীর্ণ হয়ে যাওয়া মুখটা। পান চিবোনোর জন্যে মুখের পেশীগুলো ওঠানামা করায় রোগাত্বটা আরো ধরা পড়ছে।…

    কথা শেষ হবার পর চন্দ্রকান্ত অবাক প্রশ্ন করলেন, কিন্তু কার জন্যে?

    কী কার জন্যে?

    পাত্রী?

    সুনয়নী তাঁর পেটেণ্ট কথাটি ছাড়েন, ন্যাকা। কার জন্যে হামলে মরছি আমি? ননীগয়লানীর ছেলের জন্যে?

    ওঃ। তাহলে তোমার ছেলের জন্যে?

    এতোক্ষণে বুঝলে? পণ্ডিতের মাথা তো, ছোট কথা সহজে ঢুকতে চায় না।

    ঠিকই বলেছ, চন্দ্রকান্ত আবার কলমটা কালিতে ডুবিয়ে বলেন, কথাটা আমার মাথায় সহজে ঢোকবার নয়। তুমি যে এখন নীলকান্তর বিয়ের কথা ভাবতে বসছ, এটা বোঝা শক্ত বৈ কি।

    সুনয়নী মুখ ঘুরিয়ে বলেন, আহা! বলতে মাত্তরই হয়ে যাচ্ছে বিয়ে? বলতে কইতেই দিন যাবে। তবে মেয়ে নেহাৎ ছোট নয়, বারোর কাছে বয়েস, ওরা কি আর বেশীদিন রাখবে? পাকা দেখাটা করে রাখলে বেঁধে রাখা হল।

    তোমার মনে হয় নীলকান্তর বিয়ের উপযুক্ত বয়েস হয়েছে?

    সুনয়নী একটু অপরূপ হাসি হেসে গলা নামিয়ে বলেন, নিজের কোন বয়েসে বিয়ে হয়েছিল মশাই?…তখনই তো বলা হয়েছিল, ‘আলো বাড়াই, তোমায় একটু দেখি।’

    চন্দ্রকান্ত তাকিয়ে দেখলেন।

    চন্দ্রকান্তর কি উচিত ছিল না এই কৌতুকে কৌতুক—হাসি যোগ করা? এই স্মৃতি রোমন্থনের অংশীদার হওয়া? কিন্তু কই তা হলেন? বরং মুখটা অধিক গম্ভীর হয়ে গেল চন্দ্রকান্তের, কাগজে কলমের রেখা টানতে টানতে বললেন, তোমার স্মৃতিশক্তিটা দেখছি খুব প্রখর।

    সুনয়নী ভুরু কুঁচকে তাকালেন, কি শক্তি?

    স্মৃতিশক্তি। পুরানো কথা তো খুব মনে থাকে।

    সুনয়নী অবশ্যই এই গাম্ভীর্য আশা করেন নি, বেজার গলায় বললেন, তোমার মতন নতুন নতুন কথা তো মনে ঢুকছে না, পুরনো নিয়েই আছি।

    হুঁ।…চন্দ্রকান্ত ক্ষুব্ধ হাসি হাসেন, বই টই তো পড়তেও জানতে একসময়। বঙ্কিমবাবুর কী একটা পড়েছিলে মনে হচ্ছে। সে সব ছেড়ে দিয়ে বসে আছ কেন?

    আহা। সে কোন ছোটবেলার কথা। এখন তোমার সংসারে পটের বিবি সেজে নাটক নভেল মুখে দিয়ে বসে থাকলেই চলবে আমার!

    তা বটে!

    চন্দ্রকান্ত একটু রূঢ় হাসি হাসেন, আমার সংসারের ঘুঁটে দেওয়ার দায়টা পর্যন্ত যখন তোমার, তখন আর ওই সব বইটই পড়ার মত বাজে কাজ করবার সময় কোথা! যাক! তোমার কথা হয়েছে?

    সুনয়নী কণ্ঠস্বরে জ্বলে ওঠেন।

    চন্দ্রকান্ত ওঁকে নির্বোধ ভাবলেও, তেমন নির্বোধ তো আর নয় সত্যি। এ অপমান বোঝবার ক্ষমতা আছে।

    জ্বলে উঠে দাঁড়িয়ে বলেন, ঝকমারি হয়েছে আমার আহ্লাদ করে তোমার সঙ্গে একটা পরামর্শ করতে আসা। বেশ…নীলের বিয়ের ব্যবস্থা আমিই করব। কোন জন্মে সেই দুটো মেয়েকে গোত্তর পাল্টে বাড়ি ছাড়া করে দেওয়া হয়েছে। আর কোন কাজ হয়েছে বাড়িতে? তুমি না হয় নিজের মহিমায় ডুবে বসে আছো, সাধ আহ্লাদ নেই, আমি তুচ্ছ মেয়েমানুষ, আমার সে সব আছে।

    চন্দ্রকান্তর মুখে এসে যাচ্ছিল, শশীকান্তের বিয়ের আগে সেজখুড়ি ঠিক এই ভাষাই প্রয়োগ করেছিলেন। কিন্তু সামলে গেলেন। বিধবা সেজোখুড়ির সঙ্গে তুলনা করলে হয়তো বা দেওয়ালে মাথা খুঁড়তে বসবেন সুনয়নী।

    সুনয়নী চলে যাচ্ছিলেন ঘর থেকে, রাতদিনের ঝি টেঁপির মা দরজার বাইরে থেকে বলে উঠল, ছোট বৌদিদি, পিসিমা বলে পাঠালো ও পাড়া থেকে গৌরবাবুর পরিবার দেকা করতে এয়েছে—

    চমৎকার।

    সুনয়নী আবার বসে পড়ে বলেন, আমি পারব না সেই মেম সায়েবের সঙ্গে দেখা করতে।

    চন্দ্রকান্ত চঞ্চল হয়ে উঠে পড়েন।

    বিব্রতভাবে বলেন, গৌর—আমাদের গৌরমোহনের স্ত্রী। তিনি আবার মেমসায়েব হলেন কবে?

    যতকাল কলকাতাবাসিনী হয়েছেন। সুনয়নী তেতো গলায় বলেন, আমি বাবা গেঁয়ো ভূত, ওসব সেমিজ—বডিস পরা কলকত্তাই মেয়েছেলের সঙ্গে কী কথা কইব? নেমে গিয়ে বল গে—ছোট বৌ পেট ব্যথায় ছটফট করছে। শুয়ে আছে।

    বাঃ।

    চন্দ্রকান্ত গাঢ় গভীর গলায় বলেন, ইচ্ছে করে নিজেকে ছোট কোর না ছোটবৌ। পিসি খুড়িমারা সবাই গেঁয়ো, দ্যাখো গিয়ে তাঁরা কী রকম গল্প জুড়ে দিয়েছেন।

    ওঁদের কথা বাদ দাও।

    সুনয়নী জানলার রেলিং চেপে শক্ত হয়ে বসে থাকেন।

    চন্দ্রকান্ত হতাশ হয়ে বলেন, আমি গিয়ে মিছে কথা বলতে পারব না।

    ওঃ! তাওতো বটে। মহাপুরুষ মানুষ! বেশ সত্যি কথাটাই বলগে গিয়ে, আমার মুখে চুনকালি মাখাতে।

    চন্দ্রকান্ত অস্থির হন।

    গৌরের স্ত্রী কী ভাবছে সুনয়নীর নামতে দেরী দেখে! কী ভাববে সুনয়নীর না আসায়! সরে এসে প্রায় অনুনয়ের গলায় বলেন, কী ছেলেমানুষী হচ্ছে? তুমি দেখা না করলে কী মনে করবে?

    তা কী করা যাবে?

    সুনয়নী শক্ত মুখে বলেন, আমায় অসভ্য ছোটলোক ভাববে, আর কী হবে?…মেম সাহেবের ঢং তো জানি, হাত ধরে কথা বলবেই বলবে। এই পড়ন্ত বেলায় আবার ডুব দিয়ে মরতে হবে আমায়।

    চন্দ্রকান্ত বসে পড়েন।

    গৌরের স্ত্রী তোমার হাত ধরলে ডুব দিতে হবে?

    না দিলে পিসিমাদের দিকে কিছু করতে পারব?

    চন্দ্রকান্ত রাগটা চেপে ধরে বলেন, পিসিমা বলেছেন একথা?

    সুনয়নী মুখ ফিরিয়ে বলেন, মুখে কি আর বলতে এসেছেন? ভাবে বুঝতে হয়।…ছোঁয়া গেলে নিজে তো ডুব দেন।

    চন্দ্রকান্ত ভুলে যান নিচের তলায় কেউ দর্শনার্থী। কেমন একটা স্খলিত বিষণ্ণ স্বরে বলেন, এর অর্থ কী বলতে পারো? গৌরমোহন কি পতিত?

    তা বেম্ম আর পতিতে তফাৎ কি?

    বেম্ম! গৌরমোহন ব্রাম্ম? এমন অদ্ভুত কথা কে বলেছে তোমায়?

    না বললে আর বোঝা যায় না?

    সুনয়নী মুখটা বিকৃত করে বলেন, কলকাতায় বাস করলে জাত ধম্ম কিছু থাকে নাকি? হেঁশেলে রাঁধুনী বামুন, ঠিকে ঝিয়ের হাতে জল বাটনা! এখানে এসেও গায়ে জামা সেমিজ! ভগবান জানে সেখানে জুতো মোজাও পরে কিনা—বেম্ম খেষ্টান আর কাকে বলে!

    চন্দ্রকান্ত অস্থির পদক্ষেপে ঘরে ঘুরে বেড়ান। সুনয়নীর দিকে তাকিয়ে দেখতেও ইচ্ছে হয় না আর। এই সময় আবার টেঁপির মা সিঁড়ি থেকে ডাক দেয়, কইগো ছোটবৌদি, নামলে নি? পিসিমা ব্যস্ত হতেচে।

    অতএব সুনয়নীকে উঠতেই হয়।

    পরিণামটাও তো চিন্তা করতে হবে।

    সহজ মানুষ এই মাত্র হয়তো দোতলায় উঠল অকস্মাৎ। এমন পেটব্যথা করল যে নীচে নামতে পারছে না এরকম ঘটনার সংবাদে আবার সদলবলে সবাই ছুটে দেখতে না আসে!—হয়তো পিসিমাদের সঙ্গে তিনিও এসে হাজির হবেন। ঘরের দৃষ্টি ছুঁয়ে লেপে এক করবেন। দরকার নেই বসে থেকে।

    সুনয়নীকে অগ্রসর হতে দেখে চন্দ্রকান্ত আস্তে বলেন, একখানা ফর্সা কাপড় পরে গেলে হত না?

    সুনয়নীর চোখে আবার ফস করে আগুন জ্বলে ওঠে, কেন? নইলে তোমার বন্ধুর পরিবার তোমার পরিবারকে বাড়ির ঝি ভাববে? ভাবুক। আমার অমন লোক দেখানো ঠাট আসে না। গেরস্ত ঘরের বৌ—ঝির কাপড়ে তেল হলুদের দাগ থাকে না? সর্বদা ধোপ—দুরস্ত হয়ে বসে থাকে?

    তরতরিয়ে নেমে যান।

    চন্দ্রকান্ত শুনতে পান, সিঁড়িতে টেঁপির মার উদ্দেশ্যে একটি কলকণ্ঠ ঝঙ্কৃত হচ্ছে—আর বলিসনে ভাই, একেবারে মরণের ঘুম ঘুমিয়ে মরেছিলাম! তোর ছোড়দাবাবু ডেকে দিল তাই—

    চন্দ্রকান্ত কি কালি শুকিয়ে যাওয়া কলমটা ফের দোয়াতে ডুবিয়ে তাঁর ভাবী উপন্যাসের ছক আঁকতে চেষ্টা করতে বসবেন?

    বেলা পড়ে গেছে।

    যে জানলাটা দিয়ে শেষবেলা পর্যন্ত আলো আসে, একটু আগে যার নীচে থেকে উঠে গেছেন, সেই জানলাটার বাইরে চোখ মেলে বসে থাকেন চন্দ্রকান্ত।

    এখানে আকাশে অপরূপ বর্ণচ্ছটা। শুধু এই বিচিত্র বর্ণাভার পিছনে আলোর আশ্বাস নেই। অন্ধকারের ইসারা।

    ক্রমশঃই ঘরের ভিতরটা অন্ধকার হয়ে আসছে। ও—পিঠের আবছা আলো যেন সমস্ত দিগন্তটাকে একটা বিষণ্ণতায় মুড়ে ফেলে নিরুপায় চোখে বিদায় নিচ্ছে।…হঠাৎ চোখে পড়ল, জানলায় লাগানো তারের জালতির গায়ে দড়ির টুকরোর মত খানিকটা লম্বা হয়ে ঝুলছে সুনয়নীর ফেলা পানের পিক।

    ⤶ ⤷
    1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11 12
    Share. Facebook Twitter Pinterest LinkedIn Tumblr Email Reddit VKontakte Telegram WhatsApp Copy Link
    Previous Articleঘর – আশাপূর্ণা দেবী
    Next Article জোচ্চোর – আশাপূর্ণা দেবী

    Related Articles

    হরিনারায়ণ চট্টোপাধ্যায়

    ভয় সমগ্র – হরিনারায়ণ চট্টোপাধ্যায়

    December 9, 2025
    হরিনারায়ণ চট্টোপাধ্যায়

    কিশোর অ্যাডভেঞ্চার সমগ্র – হরিনারায়ণ চট্টোপাধ্যায়

    December 9, 2025
    সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়

    প্রকাশ্য দিবালোকে – সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়

    November 18, 2025
    সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়

    তারপর কী হল – সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়

    November 17, 2025
    মাইকেল মধুসূদন দত্ত

    শর্ম্মিষ্ঠা নাটক – মাইকেল মধুসূদন দত্ত

    November 11, 2025
    সত্যজিৎ রায়

    মানপত্র সত্যজিৎ রায় | Maanpotro Satyajit Ray

    October 12, 2025
    Add A Comment
    Leave A Reply Cancel Reply

    Generic selectors
    Exact matches only
    Search in title
    Search in content
    Post Type Selectors
    Demo

    Your Bookmarks


    Reading History

    Most Popular

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025

    দোকানির বউ

    January 5, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025
    Demo
    Latest Reviews

    বাংলা গল্প শুনতে ভালোবাসেন? এক পাতার বাংলা গল্পের সাথে হারিয়ে যান গল্পের যাদুতে।  আপনার জন্য নিয়ে এসেছে সেরা কাহিনিগুলি, যা আপনার মন ছুঁয়ে যাবে। সহজ ভাষায় এবং চিত্তাকর্ষক উপস্থাপনায়, এই গল্পগুলি আপনাকে এক নতুন অভিজ্ঞতা দেবে। এখানে পাবেন নিত্যনতুন কাহিনির সম্ভার, যা আপনাকে বিনোদিত করবে এবং অনুপ্রাণিত করবে।  শেয়ার করুন এবং বন্ধুদের জানাতে ভুলবেন না।

    Top Posts

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025

    দোকানির বউ

    January 5, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025
    Our Picks

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১২

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১৩

    December 12, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram Pinterest
    • Home
    • Disclaimer
    • Privacy Policy
    • DMCA
    • Contact us
    © 2025 Ek Pata Golpo. Designed by Webliance Pvt Ltd.

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.

    • Login
    Forgot Password?
    Lost your password? Please enter your username or email address. You will receive a link to create a new password via email.
    body::-webkit-scrollbar { width: 7px; } body::-webkit-scrollbar-track { border-radius: 10px; background: #f0f0f0; } body::-webkit-scrollbar-thumb { border-radius: 50px; background: #dfdbdb }