Close Menu
এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    What's Hot

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১২

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১৩

    December 12, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    • 📙
    • লেখক
    • শ্রেণী
      • ছোটগল্প
      • ভৌতিক গল্প
      • প্রবন্ধ
      • উপন্যাস
      • রূপকথা
      • প্রেমকাহিনী
      • রহস্যগল্প
      • হাস্যকৌতুক
      • আত্মজীবনী
      • ঐতিহাসিক
      • নাটক
      • নারী বিষয়ক কাহিনী
      • ভ্রমণকাহিনী
      • শিশু সাহিত্য
      • সামাজিক গল্প
      • স্মৃতিকথা
    • কবিতা
    • লিখুন
    • চলিতভাষার
    • শীর্ষলেখক
      • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
      • বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
      • শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়
      • বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • সত্যজিৎ রায়
      • সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
      • বুদ্ধদেব গুহ
      • জীবনানন্দ দাশ
      • আশাপূর্ণা দেবী
      • কাজী নজরুল ইসলাম
      • জসীম উদ্দীন
      • তসলিমা নাসরিন
      • মহাশ্বেতা দেবী
      • মাইকেল মধুসূদন দত্ত
      • মৈত্রেয়ী দেবী
      • লীলা মজুমদার
      • শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
      • সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়
      • সমরেশ মজুমদার
      • হুমায়ুন আহমেদ
    • English Books
      • Jules Verne
    • 🔖
    • ➜]
    Subscribe
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)

    অ্যাডভেঞ্চার সমগ্র ১ – হিমাদ্রিকিশোর দাশগুপ্ত

    হিমাদ্রিকিশোর দাশগুপ্ত এক পাতা গল্প504 Mins Read0
    ⤶ ⤷

    অক্টোপাসের লাল মুক্তো – ২

    মিস্টার আকিরা চলে যাবার পর বিকালটা সি-বিচে ঘুরেই কাটিয়ে দিল সুদীপ্তরা। কোনো অভিযানে যাবার আগে একটু হালকা মেজাজে সময় কাটাতে পারলে ভালো। স্নায়ুতন্ত্রের বিশ্রাম হয়, যাতে তারা পরবর্তী সময় অভিযানের কঠিন ধকল সহ্য করতে পারে। সমুদ্রসৈকতে ঘুরতে ঘুরতেই সুদীপ্তদের চোখে পড়েছিল বিরাট বড় হোর্ডিংটা—’শিককু সি-পার্ক।’ সেখানে মেরিন অ্যাকোরিয়াম, স্কুবা ডাইভিং ইত্যাদির ব্যবস্থা আছে। হেরম্যাঁন হোর্ডিংটা দেখে বললেন, ‘ডুবুরি হবার প্রাথমিক পাঠটা চলো আমরা কাল নিয়ে নেব। ক্রিপটিড খুঁজতে আমরা দুজন এর আগে নানা জায়গাতে গেছি। কখনো সিংহ-মানুষের খোঁজে ইজিপ্টের প্রাচীন মন্দিরে, কখনো ইয়েতির সন্ধানে তুষারাবৃত হিমালয়ে, আবার কখনো বা সবুজ মানুষের খোঁজে পিগমি অধ্যুষিত আফ্রিকার অরণ্য প্রদেশে। কিন্তু সমুদ্রের নীচে কখনো যাবার সুযোগ হয়নি। সে সাধটা পূর্ণ করতে হবে।’

    সুদীপ্তও সমর্থন করল তাঁর প্রস্তাব।

    সুদীপ্তরা যে হোটেলে রাত্রিবাস করছে সেখান থেকে সমুদ্রের পাড় বরাবর পাঁচ কিলোমিটার দূরে পার্কটা। পরিকল্পনা মতো পরদিন সকালে একটা গাড়ি নিয়ে সেখানে পৌঁছে গেল তারা। পার্কের প্রবেশমুখে খুব সুন্দর বিশাল একটা তোরণ। তার বাহু দুটোতে বিভিন্ন সামুদ্রিক প্রাণীর প্রতিকৃতি বসানো। আর তোরণের মাথায় একটা বিরাট হক্টোপাসের মূর্তি। সে তার বাহুগুলো দিয়ে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে আছে তোরণের মাথাটা। ভিতরে ঢুকে টিকিট কাটার পর পার্কের গাইড বলল, ‘আগে আপনারা নীচে নেমে মেরিন অ্যাকোরিয়াম দেখে নিন। তারপর আপনাদের বোটে করে সমুদ্রতে নিয়ে যাওয়া হবে স্কুবা ডাইভিং-এর জন্য।’

    পার্কের বেসমেন্টের ওপর একটা ছোট্ট সামুদ্রিক মিউজিয়াম আছে। সেখানে বিভিন্ন ধরনের ঝিনুক, শামুক, মাছ ইত্যাদির ফসিল রাখা আছে। আর অ্যাকোরিয়াম হল ভূগর্ভে বা বেসমেন্টের নীচে। মিউজিয়াম দেখে নিয়ে অন্য টুরিস্টদের সঙ্গে দল বেঁধে নীচে নামল সুদীপ্তরা। লম্বা একটা টানেল সোজা চলে গেছে। তার দুপাশে বিরাট ঘরের মতো সার সার অ্যাকোরিয়াম। তাতে খেলে বেড়াচ্ছে নানা ধরনের মাছ, সামুদ্রিক প্রাণী। কত রঙের বাহার তাদের; কত অদ্ভুত দেখতে! হাতুড়ির মতো মাথাঅলা ‘হ্যামার শার্ক’, তলোয়ারের মতো মুখঅলা ‘সোর্ডফিশ’, প্যারাশুটের মতো দেখতে জ্যান্ত জেলিফিশ, রঙবেরঙের ছোট-বড় মাছের ঝাঁক। দুপাশে সেসব দেখতে দেখতে হেঁটে যেতে যেতে সুদীপ্তদের মনে হতে লাগল তারা যেন সমুদ্রের নীচ দিয়ে হেঁটে যাচ্ছে। এক সময় টানেলের শেষ প্রান্তে পৌঁছে গেল তারা। সেখানে একটা অ্যাকোরিয়ামের সামনে বেশ ভিড়। দুটো বাচ্চা ছেলে ভয় পেয়ে চিৎকার করছে। তাদের বাবা-মায়েরা শান্ত করার চেষ্টা করছে তাদের। ব্যাপারটা কী? সেখানে পৌঁছে সুদীপ্তরাও থমকে গেল। কাচের বিরাট জলাধারের মধ্যে একটা বিশাল অক্টোপাস! কী ভয়ংকর তাকে দেখতে! আকারে সেটা প্রায় পঁচিশ ফুট হবে। ড্যাবড্যাবে চোখে সে তাকিয়ে আছে, আর মাঝে মাঝে তার বাহুগুলোকে কাচের দেওয়ালের ওপর বোলাচ্ছে সম্ভবত কাচের পর্দা ভেদ করে তার সামনে দাঁড়িয়ে থাকা মানুষগুলোকে নিজের কাছে টেনে নেবার জন্য। অক্টোপাসটার কোলের কাছে একটা বাক্স মতো রাখা। সম্ভবত ওই বাক্সে তাকে খাবার দেওয়া হয়। বাচ্চাগুলো সমেত টুরিস্টরা চলে যাবার পর হেরম্যান বললেন, ‘প্রাণীটা যদি বাচ্চাগুলোর নাগাল পেত তবে কী ভয়ংকর কাণ্ড ঘটত ভাবো! এর ছবি আমি আগে বইতে দেখেছি। ডলফিনি অক্টোপাস। তিরিশ ফুট পর্যন্ত বড় হয়। মাংসাশী প্রাণী। এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলে এদের পাওয়া যায়।’ সুদীপ্ত হেরম্যানের কথায় কিছু একটা বলতে যাচ্ছিল কিন্তু তার আগেই কে যেন বলে উঠল, ‘শুধু বাচ্চা নয়, আপনার মতো শক্তসমর্থ একজন পূর্ণবয়স্ক মানুষকেও অনায়াসে ও পিষে মারতে পারে। জলের নীচে অসীম শক্তি ওদের।’ একটু চমকে উঠে সুদীপ্তরা দেখল সুড়ঙ্গর শেষ মাথায় একটা দরজা খুলে বেরিয়ে এসেছেন মাঝবয়সি একজন ভদ্রলোক। চেহারা দেখে মনে হচ্ছে সম্ভবত তিনি জাপানি হবেন। ভদ্রলোক এরপর তাঁর পিছনে দরজাটা বন্ধ করতে করতে সুদীপ্তদের অবাক করে দিয়ে বললেন, ‘আপনারাই তো আকিরার সঙ্গে কাল সমুদ্রে যাচ্ছেন তাই না?’ হেরম্যান জবাব দিলেন, ‘হ্যাঁ, কিন্তু আপনি জানলেন কীভাবে? আপনার পরিচয়টা?’

    ভদ্রলোক দরজার চাবিটা পকেটে পুরে হেসে জবাব দিলেন, ‘আকিরা একটা কাজে এসেছিল আমার কাছে। সে বলছিল যে একজন জার্মান আর একজন ভারতীয় তার মুক্তো খোঁজার সঙ্গী হচ্ছেন। আপনাদের চেহারা দেখে আন্দাজ করলাম যে আপনারা তারাই। আমার নাম শিকোকু। আমি এই “সি-পার্কের” মালিক।’

    হেরম্যান-সুদীপ্ত তাঁর সঙ্গে করমর্দন করে নিজেদের নাম-পরিচয় দেবার পর হেরম্যান বললেন, ‘আপনার এই ব্যবসা কত বছরের? কতদিন আছেন এখানে?

    শিকোকু জবাব দিলেন, ‘পার্কটার বয়স কুড়ি বছর হবে। আসলে আমার বাবা পঞ্চাশ বছর আগে শুরু করেন এই প্রোজেক্টটা। তিনি মারা যাবার পর কুড়ি বছর কাজ বন্ধ ছিল। আমিই তারপর পার্কটা গড়ে তুলি। এখনও কাজ চলছে। এই বন্ধ দরজার ওপাশ থেকে সমুদ্রের ভিতর কাচ-ঢাকা একটা টানেল তৈরি হয়েছে। এরপর থেকে আর অ্যাকোরিয়ামে নয় ওই টানেল দিয়ে সমুদ্রের তলদেশে গিয়ে টুরিস্টরা সামুদ্রিক প্রাণী দেখতে পাবে। আমার ঠাকুর্দা, বাবা, আমি, তিনজনেই জাপানি নৌ-বিভাগে ডুবুরির কাজ করেছি। এই পার্ক চালানো ছাড়াও মুক্তো সংগ্রহের ব্যবসাও করি। বোটও ভাড়া দিই। সমুদ্রের সঙ্গে তিন পুরুষের ব্যবসা আমাদের।’

    হেরম্যান শুনে বললেন, ‘আপনাদের সঙ্গে বংশপরম্পরায় সমুদ্রের যোগাযোগ। আচ্ছা, দানব স্কুইড বা দানব অক্টোপাসের ব্যাপারটা আপনি বিশ্বাস করেন?’

    ভদ্রলোক যেন একটু থমকে গেলেন এ প্রশ্ন শুনে। তারপর জবাব দিলেন, ‘এখানকার ওই ঘটনাটা আপনারাও শুনেছেন তাহলে! সমুদ্রতল পৃথিবীর ওপরের অংশের থেকেও অনেক বেশি রহস্যময়। সেখানে কী আছে আর কী নেই বলা কঠিন। খুঁজলে অনেক কিছুই মিলতে পারে, আবার কিছু না-ও মিলতে পারে। যাক, আজ এলেন ভালো। কাল থেকে পার্ক বন্ধ থাকবে।’ কথা শেষ করে আর দাঁড়ালেন না ভদ্রলোক। জাপানি কায়দায় মাথা ঝুঁকিয়ে বিদায় সম্ভাষণ জানিয়ে এগোলেন অন্যদিকে। সুদীপ্তরাও নীচ থেকে ওপরে উঠে এল।

    গাইড বাইরে অপেক্ষা করছিল। সে তাদের এরপর নিয়ে চলল স্কুবা ডাইভিং-এর জন্য। সি-পার্কের পিছনটা ছুঁয়ে আছে সমুদ্রকে। কিছুটা তফাতে দাঁড়িয়ে আছে একটা যন্ত্রচালিত নৌকা। জনা সাতেক লোক আছে তাতে। হাঁটুজল ভেঙে গাইডের সঙ্গে বোটে উঠল দুজন। বোটে যারা আছে তারা জাপানিজ হলেও চেহারা দেখে মনে হল তাদের মধ্যে একজন ইওরোপিয়ান। বোট চালু হতেই হেরম্যান তার উদ্দেশে সৌজন্যবশত বললেন, ‘আপনিও নিশ্চয়ই ট্যুরিস্ট? কোথা থেকে আসছেন?’

    সোনালি চুলের ছেলেটা জবাব দিল, ‘আমার নাম রাইখ। জন্মসূত্রে আমি জার্মান হলেও কর্মসূত্রে জাপানে থাকি।’

    তাহলে এই সেই রাইখ! যার কথা আকিরা বলেছিলেন! হেরম্যান নিজেদের পরিচয় দিতেই রাইখও চিহ্নিত করতে পারল তাদের। আকিরার মুখে সে-ও শনেছে তাদের কথা। সে বলল, ‘ভালোই হল আপনাদের সঙ্গে আগাম পরিচয় হয়ে। একসঙ্গে তো কাল থেকে বেশ কটাদিন কাটাতে হবে।’

    রাইখের বয়স তিরিশের অনেক নীচেই হবে। হেরম্যান তার উদ্দেশে হেসে বললেন, আপনি ঝিনুক বিশেষজ্ঞ, আর বই লিখেছেন শুনে আমার ধারণা ছিল আপনার বয়স একটু বেশি হবে।’

    রাইখ হেসে জবাব দিল, ‘আমার ঠাকুর্দা নাবিক ছিলেন। অনেক ছোটবেলা থেকেই এসব ব্যাপারে আমার আগ্রহ। বিশেষত শামুক-ঝিনুক নিয়ে।’ রাইখের সঙ্গে সামান্য কিছু কথা বলতে না বলতেই দ্রুতগামী বোট এসে দাঁড়িয়ে পড়ল পাড় থেকে কিছুটা তফাতে সমুদ্রের মধ্যে। এখানেই নামা হবে জলের নীচে।

    প্রস্তুতি শুরু হল সেই মতো। সুদীপ্ত, হেরম্যান, রাইখকে প্রথমে পরানো হল সুইমিং কস্টিউমের মতো পোশাক। নৌকার অন্য দুজনও পরল সে পোশাক। তারা জলের তলায় সুদীপ্তদের সঙ্গে যাবে। একে একে এরপর তাদের পরানো হল পায়ে হাঁসের পায়ের মতো ফ্লিপার, চোখে গগলস। মুখে অক্সিজেনের মাস্ক, পিঠে সিলিন্ডার। কোমরে ধাতব কোমর-বন্ধনিতে দড়ি। একজন ডুবুরি বলল সে প্রথমে যে ভাবে ডুব দেবে ঠিক তেমন ভাবে ডুব দিতে হবে সুদীপ্তদের। নৌকার কার্নিশে সমুদ্রের দিকে পিছন করে বসে উল্টোদিকে ডিগবাজি খেয়ে প্রথমে ডুব দিল সে। তারপর নিখুঁত ভাবে সে কাজটা করল রাইখ। সম্ভবত ব্যাপারটাতে সে ইতিপূর্বে অভ্যস্ত। রাইখের পর তৃতীয় ব্যক্তি হিসাবে তাকে অনুসরণ করল সুদীপ্ত।

    জলে ঝাঁপ দেবার পর কয়েক মুহূর্ত বাহ্যজ্ঞানহীন অবস্থায় ছিল সুদীপ্ত। চোখের পাতা হয়তো আপনা থেকেই বুজে গেছিল। পা মাটিতে ঠেকতেই আপনা থেকেই খুলে গেল তার চোখের পাতা। ভালো করে চারপাশে তাকাতেই বিস্ময়ে সে হতবাক হয়ে গেল। তার চেনা-জানা পৃথিবীর সঙ্গে কোনো মিল নেই এ জায়গার। এ সম্পূর্ণ অচেনা এক জগৎ। তার পায়ের তলায় সাদা বালির গালিচা পেতে রেখেছে কেউ। তার মধ্যে থেকে মাথা তুলে আছে অচেনা সব উদ্ভিদ। জলস্রোতে আন্দোলিত হচ্ছে তারা। জলতলের শুভ্র গালিচার ওপর খেলে বেড়াচ্ছে অসংখ্য শামুক-ঝিনুক আর রঙবেরঙের মাছের ঝাঁক। বেশ কিছু বড় মাছও আছে। তাদেরই একটা সুদীপ্তর গগলস-ঢাকা চোখের ওপর ঠোকর দিয়ে গেল। অদ্ভুত এক পৃথিবী! যেন স্বপ্ন দেখছে সুদীপ্ত। ইতিমধ্যে হেরম্যানও সুদীপ্তর পাশে এসে দাঁড়ালেন। বিস্মিতভাবে তিনিও দেখতে লাগলেন আশ্চর্য জগৎটাকে। তাঁর ফ্লিপারের ওপর দিয়ে হেঁটে গেল কাঁকড়ার মতো দেখতে না-মাছ-না.কাঁকড়া অদ্ভুত এক প্রাণী। শেষ ডুবুরিও নেমে পড়ল। রাইখ তো প্রথমেই নেমেছে। তবে সুদীপ্তরা হাঁটতে যেতেই বুঝতে পারল যে প্রচণ্ড জলের চাপ তাদের ঠেলে ওপরে তুলতে চাচ্ছে। তবে রাইখ কিন্তু অন্য ডুবুরি দুজনের মতো অবলীলায় এদিক-ওদিক যাচ্ছে। একবার সে বেশ বড় একটা মাছকে জড়িয়ে ধরে আবার ছেড়ে দিল। তারপর এগোল সামনে একটা প্রাচীরের দিকে। যতদূর চোখ যায় চলে গেছে সেটা। সম্ভবত সেটা প্রবাল প্রাচীর। জলতলের উপর থেকে ভেসে আসা সুর্যালোকে এক অদ্ভুত লাল আভা ছড়াচ্ছে জলতলের প্রাচীরটা। তার গায়ে অজস্র ফোকর। প্রাচীরের গায়ে জলজ উদ্ভিদের আড়াল থেকে উঁকি দিচ্ছে লাল, নীল, হলুদ, সবুজ, ডোরাকাটা মাছের ঝাঁক। ওই প্রাচীরের গায়ের ছিদ্রগুলো তাদের বাসস্থান। দু-একটা মাছকে চিনতে পারল সুদীপ্ত। ডোরাকাটা ক্লাউন ফিশ, ক্ষুদ্রাকৃতি উজ্জ্বল কমলাবর্ণের প্যারট ফিশ। রাইখ সেই প্রবাল প্রাচীরের কাছে পৌঁছে কী যেন দেখতে লাগল। সুদীপ্ত আর হেরম্যানও সেদিকে কিছুটা এগিয়ে দেখতে লাগল সমুদ্রতলের অদ্ভুত সৌন্দর্য, মাছেদের খেলা। হঠাৎ একসময় তাদের কোমরের দড়িতে টান পড়ল। সঙ্গী ডুবুরি দুজন হাতের ইশারায় বুঝিয়ে দিল তাদের সময় শেষ। এবার উঠতে হবে। মাত্র দশ মিনিট সময় বরাদ্দ সমুদ্রতলে থাকার জন্য। দড়ির টানে এরপর বোটের ওপর উঠে এল সবাই। হেলমেট খোলার পর হেরম্যান মন্তব্য করলেন, ‘অবিশ্বাস্য সুন্দর এক অভিজ্ঞতা হল। সমুদ্রর নীচটা এত সুন্দর হতে পারে জানা ছিল না!’

    রাইখ বলল, ‘হ্যাঁ, খুব সুন্দর। তবে একটা ব্যাপার বেশ অদ্ভুত লাগল

    ‘কী ব্যাপার?’ জানতে চাইল সুদীপ্ত।

    প্রশ্নটা শুনেই রাইখ বলল, ‘না না, তেমন কিছু নয়, আমি আসলে বলতে চাচ্ছিলাম যে সমুদ্রের তলার প্রবাল প্রাচীরটা বড় অদ্ভুত! এত লম্বা প্রবাল-প্রাচীর আগে দেখিনি।’ সুদীপ্ত বলল, ‘আপনি তো একজন মুক্তো বিশেষজ্ঞ। আশা করি আপনার সাহচর্যে

    অনেক কিছু জানতে পারব আমরা।’

    মৃদু হেসে রাইখ প্রশ্ন করল, ‘আপনাদের পেশা কী?’

    হেরম্যান জবাব দিলেন, ‘আমরা ক্রিপ্টোজ্যুলজিস্ট। অর্থাৎ…’

    তিনি কথা শেষ করার আগেই রাইখ বলল, ‘ও শব্দের মানে আমি জানি। অর্থাৎ যাঁরা রূপকথা, উপকথা বা পৃথিবী থেকে হারিয়ে যাওয়া প্রাণী খুঁজে বেড়ান। এবার আমার কাছে স্পষ্ট হল যে কেন আপনারা আকিরার সফরসঙ্গী হচ্ছেন। সেই দানব অক্টোপাসের খোঁজে তো?’

    সুদীপ্ত বলল, ‘ঠিক তাই। আপনি কি ওই প্রাণীর অস্তিত্বে বিশ্বাস করেন??

    কী যেন একটা ভাবতে ভাবতে রাইখ জবাব দিল, ‘সমুদ্রের গভীরে অনেক কিছুই এখনও আমাদের অজানা। তবে দানব অক্টোপাসের গল্প যুগ যুগ ধরে জাহাজিদের মুখে প্রচলিত।’

    কথা বলতে বলতেই বোটে চেপে আবার পাড়ে পৌঁছে গেল সবাই। বোট থেকে নেমে রাইখ বলল, ‘আবার কাল দেখা হবে। আশা করি আমাদের দিনগুলো ভালোই কাটবে।’

    রাইখ চলে যাবার পর সি-পার্ক ছেড়ে সুদীপ্তরাও ফেরার পথ ধরল।

    বিকালবেলা একবার কিছু সময়ের জন্য সুদীপ্তদের হোটেলে এলেন মিস্টার আকিরা। তিনি এসে জানিয়ে গেলেন আয়োজন মোটামুটি সম্পন্ন। তবে বোট জোগাড় করতে বেশ বেগ পেতে হয়েছে তাঁকে। ও জায়গার বদনাম হয়ে যাওয়াতে কেউ সেখানে যেতে চাচ্ছিল না বোট নিয়ে। শেষ পর্যন্ত তিনগুণ ভাড়ার লোভ দেখিয়ে একজনকে রাজি করানো হয়েছে।

    ⤶ ⤷
    1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11 12 13 14 15 16 17 18 19 20 21 22 23 24 25 26 27 28 29 30 31 32 33 34 35 36 37 38 39 40 41 42 43 44 45 46 47 48 49 50
    Share. Facebook Twitter Pinterest LinkedIn Tumblr Email Reddit VKontakte Telegram WhatsApp Copy Link
    Previous Articleঅ্যাডভেঞ্চার সমগ্র ২ – হিমাদ্রিকিশোর দাশগুপ্ত
    Next Article নেকড়ে খামার – হিমাদ্রিকিশোর দাশগুপ্ত

    Related Articles

    হিমাদ্রিকিশোর দাশগুপ্ত

    নেকড়ে খামার – হিমাদ্রিকিশোর দাশগুপ্ত

    December 10, 2025
    হিমাদ্রিকিশোর দাশগুপ্ত

    অ্যাডভেঞ্চার সমগ্র ২ – হিমাদ্রিকিশোর দাশগুপ্ত

    December 9, 2025
    হিমাদ্রিকিশোর দাশগুপ্ত

    জাদুকর সত্যচরণের জাদু কাহিনি – হিমাদ্রি কিশোর দাশগুপ্ত

    December 9, 2025
    হিমাদ্রিকিশোর দাশগুপ্ত

    আঁধার রাতের বন্ধু – হিমাদ্রিকিশোর দাশগুপ্ত

    December 9, 2025
    হিমাদ্রিকিশোর দাশগুপ্ত

    সূর্যমন্দিরের শেষ প্রহরী – হিমাদ্রিকিশোর দাশগুপ্ত

    December 9, 2025
    হিমাদ্রিকিশোর দাশগুপ্ত

    অ্যাডভেঞ্চার ভয়ংকর – হিমাদ্রিকিশোর দাসগুপ্ত

    December 9, 2025
    Add A Comment
    Leave A Reply Cancel Reply

    Generic selectors
    Exact matches only
    Search in title
    Search in content
    Post Type Selectors
    Demo

    Your Bookmarks


    Reading History

    Most Popular

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025

    দোকানির বউ

    January 5, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025
    Demo
    Latest Reviews

    বাংলা গল্প শুনতে ভালোবাসেন? এক পাতার বাংলা গল্পের সাথে হারিয়ে যান গল্পের যাদুতে।  আপনার জন্য নিয়ে এসেছে সেরা কাহিনিগুলি, যা আপনার মন ছুঁয়ে যাবে। সহজ ভাষায় এবং চিত্তাকর্ষক উপস্থাপনায়, এই গল্পগুলি আপনাকে এক নতুন অভিজ্ঞতা দেবে। এখানে পাবেন নিত্যনতুন কাহিনির সম্ভার, যা আপনাকে বিনোদিত করবে এবং অনুপ্রাণিত করবে।  শেয়ার করুন এবং বন্ধুদের জানাতে ভুলবেন না।

    Top Posts

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025

    দোকানির বউ

    January 5, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025
    Our Picks

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১২

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১৩

    December 12, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram Pinterest
    • Home
    • Disclaimer
    • Privacy Policy
    • DMCA
    • Contact us
    © 2025 Ek Pata Golpo. Designed by Webliance Pvt Ltd.

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.

    • Login
    Forgot Password?
    Lost your password? Please enter your username or email address. You will receive a link to create a new password via email.
    body::-webkit-scrollbar { width: 7px; } body::-webkit-scrollbar-track { border-radius: 10px; background: #f0f0f0; } body::-webkit-scrollbar-thumb { border-radius: 50px; background: #dfdbdb }