Close Menu
এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    What's Hot

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১২

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১৩

    December 12, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    • 📙
    • লেখক
    • শ্রেণী
      • ছোটগল্প
      • ভৌতিক গল্প
      • প্রবন্ধ
      • উপন্যাস
      • রূপকথা
      • প্রেমকাহিনী
      • রহস্যগল্প
      • হাস্যকৌতুক
      • আত্মজীবনী
      • ঐতিহাসিক
      • নাটক
      • নারী বিষয়ক কাহিনী
      • ভ্রমণকাহিনী
      • শিশু সাহিত্য
      • সামাজিক গল্প
      • স্মৃতিকথা
    • কবিতা
    • লিখুন
    • চলিতভাষার
    • শীর্ষলেখক
      • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
      • বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
      • শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়
      • বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • সত্যজিৎ রায়
      • সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
      • বুদ্ধদেব গুহ
      • জীবনানন্দ দাশ
      • আশাপূর্ণা দেবী
      • কাজী নজরুল ইসলাম
      • জসীম উদ্দীন
      • তসলিমা নাসরিন
      • মহাশ্বেতা দেবী
      • মাইকেল মধুসূদন দত্ত
      • মৈত্রেয়ী দেবী
      • লীলা মজুমদার
      • শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
      • সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়
      • সমরেশ মজুমদার
      • হুমায়ুন আহমেদ
    • English Books
      • Jules Verne
    • 🔖
    • ➜]
    Subscribe
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)

    অ্যাডভেঞ্চার সমগ্র ১ – হিমাদ্রিকিশোর দাশগুপ্ত

    হিমাদ্রিকিশোর দাশগুপ্ত এক পাতা গল্প504 Mins Read0
    ⤶ ⤷

    বুরুন্ডির সবুজমানুষ – ৮

    চলতে চলতে সুদীপ্ত হেরম্যানকে জিজ্ঞেস ক্রল, ‘আচ্ছা, তাঁবুর কাছে ওই পায়ের ছাপটা দেখে আপনার ওই প্রাণীটার সম্বন্ধে কী মনে হল?’

    হেরম্যান বললেন, ‘যদিও আমি এই ছাপের ব্যাপারে বিশেষজ্ঞ নই তবে চার আঙুলবিশিষ্ট বানর জাতীয় প্রাণীর কথা শুনিনি। সাধারণত গোরিলা, শিম্পাঞ্জি ইত্যাদি মানুষের কাছাকাছি প্রাণীদের বুড়ো আঙুল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। পায়ের অন্য আঙুল থেকে ওই আঙুলটা একটু তফাতে ছড়ানো হয়, পা দিয়ে গাছের ডাল আঁকড়ে ঝোলার জন্য। এক্ষেত্রে তার ব্যতিক্রম দেখছি। সম্ভবত এই সবুজ বানর বা কলিন্সের গ্রিন ম্যান গাছে চড়তে পারে না। পায়ের ছাপটাও মানুষের পায়ের ছাপের মতো লম্বাটে ধরনের। আরও একটা ব্যাপার হল—পাখি ও কিছু সরীসৃপ ছাড়া সবুজ রং কিন্তু অন্য প্রাণীদের মধ্যে দেখা যায় না। ছাপ দেখে আর ওই রঙের কথা ভেবে মনে হচ্ছে প্রাণীটা কোনো নতুন শ্রেণির দো-পেয়ে প্রাণী। আবার তার যা আকৃতি তাতে সে পৃথিবী থেকে হারিয়ে যাওয়া দানব-বানর “জাইগান্টেপিথিকাস”-এর কোনো উত্তরসূরিও হতে পারে।’

    এরপর জঙ্গল ভাঙতে ভাঙতে হেরম্যান বললেন, ‘ক্রিপ্টো-জুলজির ব্যাপারে ছাপসংক্রান্ত কয়েকটা ঘটনার কথা বলি—ঘটনাগুলো তোমাদের হিমালয়ের ইয়েতি সংক্রান্ত। আমরা যেমন অজানা প্রাণীর পায়ের ছাপ দেখলাম, তেমনই কোনো অজানা দো-পেয়ের ছাপ হিমালয়ের বুকে ১৮৮৯ সালে প্রথম দেখেন ইউরোপীয় অভিযাত্রী ওয়াডেল। তারপর ১৯২১ সালে রয়েল জিওগ্রাফিক সোসাইটির লেফটেন্যান্ট চার্লস হাওয়ার্ড “এভারেস্ট রিকনয়সান্স” অভিযানে গিয়ে ২১০০০ ফুট উচ্চতায় ‘লাকপা লা’ গিরিসঙ্কটে দেখতে পান কোনো অজানা দো-পেয়ের বিশাল পদচিহ্ন। হাওয়ার্ডের পর ১৯২৫ সালে রয়েল জিওগ্রাফিক সোসাইটির টোমবাজি। জেমু হিমবাহে তিনি দেখলেন সাত ইঞ্চি লম্বা পায়ের ছাপ। আর ১৯৫১ সালে এভারেস্ট এক্সপিডিশনে গিয়ে এরিক শিপটন তুলে আনলেন বরফের মধ্যে আঁকা এক বিশালাকৃতি দো-পেয়ে দানবের পদচিহ্ন। আকারে তা একটা আইস অ্যাক্স বা তুষার গাঁইতির ফলার মতো। পদচিহ্নের পাশে ওই আইস-অ্যাক্স রেখেই ছবি তুলেছিলেন তিনি। ইয়েতির পদচিহ্ন হিসেবে খ্যাত ওই ছটি আলোড় ; ফেলে দিয়েছিল সারা বিশ্বে। হয়তো তুমিও সেই ছবি দেখে থাকবে। এমনটাও তো হতে পারে—তুমি যে ছবি তুললে সেটাও একদিন বিখ্যাত হবে।’

    সুদীপ্ত জানতে চাইল, ‘যাদের কথা আপনি বললেন তাঁরা কী শুধু ছবিই তুলেছিলেন? কেউই চাক্ষুষ দেখেননি প্রাণীটাকে?’

    হেরম্যান বললেন, ‘হ্যাঁ, দুজন এ দাবি করেছিলেন। ইয়েতির কথা মানুষের আলোচনায় প্রথম আসে ১৮৩২ সালে। ওই বছর তোমাদের কলকাতা থেকে প্রকাশিত এশিয়াটিক সোসাইটির জার্নালে নেপাল হিমালয়ের অভিযাত্রী ‘হজসন-এর’ এক প্রবন্ধ ছাপা হয়। তাতে তিনি দাবি করেছিলেন তাঁর সঙ্গীরা নাকি গাঢ় রঙের বিশালাকৃতি এক বানর জাতীয় প্রাণীকে তাদের সামনে দিয়ে দৌড়ে পালাতে দেখেছিল। আর দ্বিতীয়বার এ দাবি করেন ওই টোমবাজি। আমি যেমন প্রাণীটাকে গাছের ডাল ধরে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখেছি, তেমনই টোমবাজি দেখেছিলেন। তিনি দেখেছিলেন মানুষের মতো দেখতে এক ঘন রঙের দো-পেয়ে প্রাণী সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে খর্বাকৃতি এক রডোডেনড্রন গাছের মাথা ধরে ঝাঁকাচ্ছে। সামান্য দূর থেকে মিনিট তিনেক ধরে প্রাণীটাকে পর্যবেক্ষণ করেন তিনি। তারপরই প্রাণীটা বরফাচ্ছাদিত পর্বত কন্দরে অদৃশ্য হয়ে যায়। প্রাণীটা যেখানে দাঁড়িয়ে ছিল সেখানে পৌঁছে ওই পায়ের ছাপের ছবি তোলেন শিপম্যান।’

    হেরম্যান সুদীপ্তর প্রশ্নের জবাব দেবার পর কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে প্রতিজ্ঞাবদ্ধভাবে বললেন, ‘ইজসন, ওয়াডেল, টোমবাজি বা শিপটন যে-কাজটা ইয়েতির ক্ষেত্রে করতে পারেননি, বুরুন্ডির সবুজ মানুষের ক্ষেত্রে সে কাজটাই করে দেখাতে হবে আমাদের। শুধু পায়ের ছাপের ছবি তোলা বা দূর থেকে তাকে দেখা শুধু নয়, তাকে হাজির করাতে হবে সভ্য পৃথিবীর সামনে। নিছক ব্যক্তিগত খ্যাতি লাভের জন্য এ কথা বলছি না, ক্রিপটোজ্যুলজিস্টদের যুগ যুগ ধরে পণ্ডিত প্রবরদের কাছ থেকে যে তাচ্ছিল্য-অপমান হজম করতে হয়েছে, যার থেকে শিপটন বা হেরম্যান কেউই বাদ যাননি—তার বিরুদ্ধে মূর্তিমান প্রতিবাদ হবে বুরুন্ডির সবুজ মানুষ।’ কথাগুলো বলার সময় উত্তেজনায় চক্‌চক্ করে উঠল হেরম্যানের চোখ।

    সুদীপ্ত তাঁর কথা শুনে মনে মনে বলল, ‘তাই যেন হয়।’

    ম্যাকুইনা অবশ্য হেরম্যান ও সুদীপ্তর সঙ্গে আলোচনায় অংশগ্রহণ করলেন না। তিনি তাদের কিছুটা তফাতে মাসাই রক্ষী দুজনকে নিয়ে চলতে লাগলেন। এক সময় সেই শুকনো নদীখাতের কাছে পৌঁছে গেল তারা। তারপর খাত অতিক্রম করে পশ্চিম পাহাড়ের ঢাল বেয়ে উপস্থিত হল সেই জায়গাতে—যেখানে বিরাট গাছটাতে ঝুলে রয়েছে দুটো কঙ্কাল। তাদের অপর সঙ্গীর সদ্‌গতি গতকাল করেছে ম্যাকুইনা। ম্যাকুইনা জায়গাটাতে পৌঁছে একবার তাকালেন, কিছু দূরে ঝোপের ওপাশে যেখানে গত বিকালে সেই কঙ্কালটাকে কবর দেওয়া হয়েছিল। তারপর সে জায়গা অতিক্রম করে সামনের দিকে এগোল সবাই।

    এ পথ সুদীপ্তদের অচেনা। তারা যত এগোতে লাগল, ততই অন্যান্য গাছ কমে গিয়ে বাড়তে লাগল বাঁশের জঙ্গল। এক সময় জঙ্গল এত ঘন হয়ে এল, ঠিক যেন দুর্ভেদ্য প্রাচীর। যেদিকে চোখ যায় সুদীপ্তদের গতি রুদ্ধ করে দাঁড়িয়ে আছে বাঁশের দেওয়াল। সে অরণ্যে প্রাণের কোনো স্পন্দন নেই। একটা পাখি পর্যন্ত কোথাও ডাকছে না। অজানা কোনো আতঙ্কে যেন স্তব্ধ হয়ে আছে এ অরণ্য। অনেক চেষ্টা করে বাঁশঝাড় কেটে পথ করে নিয়ে মাইল খানেক এগোতেই দুপুর গড়িয়ে গেল। দক্ষিণের জঙ্গল থেকে আকালাদের বন্দুকের শব্দও আর শোনা যাচ্ছে না। হয়তো তারা পুবের দিকে পৌঁছে গেছে। হেরম্যান হিসাব করে দেখলেন এ পাহাড়ের অর্ধেকও তারা অতিক্রম করতে পারেননি। একবার ঘড়ি দেখে নিয়ে ম্যাকুইনার উদ্দেশে বললেন, ‘যা জঙ্গল দেখছি আর যেভাবে আমরা এগোচ্ছি তাতে সন্ধের সময়ও এ পাহাড়ের শেষ প্রান্তে পৌঁছতে পারব কি না সন্দেহ। তাছাড়া এ জঙ্গলে যদি ওই দানব বানর লুকিয়েও থাকে দৈবাৎ তার সাক্ষাত না পেলে তাকে খুঁজে পাওয়াও অসম্ভব বলে মনে হচ্ছে।’

    ম্যাকুইনা বললেন, ‘আমারও তাই মনে হচ্ছে। অসভ্য পিগমিগুলো যদি প্রাণীটার সন্ধান না দেয় তাহলে তাকে খুঁজে বার করাও মুশকিল। ফিরে গিয়ে আমি সে চেষ্টাই করব।’

    হেরম্যান জানতে চাইলেন, ‘কীভাবে কাজটা করবেন আপনি?

    তিনি জবাব দিলেন, ‘দেখি, প্রলোভনে কাজ হয় কি না! ওটুম্বাকে আলাদা তাঁবুতে ডেকে আনতে হবে, হীরে আর তামাকের লোভ দেখাতে হবে।’

    ‘আর তাতে যদি কাজ না হয়?’ আবার জানতে চাইলেন হেরম্যান।

    এ কথা শুনে থমকে দাঁড়িয়ে হেরম্যানের দিকে স্থির দৃষ্টিতে কয়েক মুহূর্ত তাকালেন ম্যাকুইনা। হেরম্যানকে তিনি কী যেন জবাব দিতে গিয়েও চুপ করে গিয়ে শুধু বললেন, ‘আর একটু পথ অন্তত এগোনো যাক।’

    এগোতে থাকল সকলে। আরও আধ ঘণ্টা চলার পর সুদীপ্তদের সামনের বাঁশবন হঠাৎই যেন ফাঁকা হতে শুরু করল। তাই দেখে সকলে একটু উৎসাহিত হয়ে উঠল তাহলে কী শেষ হতে চলছে এই অন্তহীন বাঁশবন! আর কিছুক্ষণের মধ্যে তারা উপস্থিত হল একটা উন্মুক্ত স্থানে। না, বাঁশবন শেষ হয়ে যায়নি। বনের ভিতর বাঁশের জঙ্গল কেটে একটা বৃত্তাকার জায়গা কারা যেন সাফ করে রেখেছে। আর সেই বৃত্তের ঠিক মাঝখানে বিরাট লম্বা একটা বাঁশের মাথায় বেশ উঁচুতে ঝুলছে আরও একটা কঙ্কাল! তাহলে কী এটা আরও একটা বধ্যভূমি!

    সুদীপ্তরা গিয়ে দাঁড়াল কঙ্কালটা যেখানে ঝুলছে তার ঠিক নীচে। বাঁশটা যেন স্বাভাবিক নিয়মে এখানে জন্মায়নি, এখানে সদ্য পোঁতা হয়েছে তা দেখেই বোঝা যাচ্ছে। বাঁশের গোড়াতে বেশ কিছুটা জায়গাতে ছড়িয়ে আছে কাঁচা মাটি, তাতে অসংখ্য খুদে-খুদে পায়ের ছাপ। আর সেই ছাপের মধ্যে হঠাৎই একটা বিরাট পায়ের ছাপ দেখে চমকে উঠল সকলে। সেই ছাপ! এরপর ভালো করে মাটির দিকে তাকাতেই বুড়ো আঙুলহীন আরও বেশ কয়েকটা ছাপ দৃষ্টিগোচর হল তাদের।

    ম্যাকুইনা বললেন, ‘তাহলে ওই সবুজ মানুষদের সঙ্গে প্রত্যক্ষ যোগসূত্র আছে পিগমিদের। তাদের সঙ্গে প্রাণীটাও এখানে এসেছিল।’

    সুদীপ্তদের আশ্চর্য হতে আরও কিছুটা বাকি ছিল। এরপর হঠাৎ বাঁশের আগায় ঝুলতে থাকা কঙ্কালটার দিকে তাকিয়ে টোগো বিস্ময়ে বলে উঠল, ‘আরে, এ তো সেই কঙ্কাল, যাকে কাল কবর দেওয়া হল। ওই তো তার সেই জুতো, ভালো করে দেখুন ওর গায়ে এখনও মাটি লেগে আছে! ফাঁস দেওয়া লতাটাও টাটকা!’ তার কথা কানে যেতেই তড়িতাহতের মতো ঝুলন্ত কঙ্কালের দিকে তাকিয়েই দুর্বোধ্য ভাষায় প্রচণ্ড একটা চিৎকার করে স্থির হয়ে গেলেন ম্যাকুইনা। হেরম্যান আর সুদীপ্ত কঙ্কালটার দিকে ভালো করে তাকিয়েই বুঝতে পারলেন—টোগোর কথাই ঠিক, কালকের সেই কঙ্কালটাকেই কবর থেকে তুলে এনে ঝোলানো হয়েছে বাঁশের মাথায়! কী আশ্চর্য ব্যাপার! তবে সবচেয়ে বেশি আশ্চর্য হল টোগো, কারণ ম্যাকুইনা উত্তেজনার বশে আফ্রিকান ভাষায় চিৎকার করে যে-কথা বলে উঠলেন তার মর্ম উদ্ধার করতে অসুবিধা হল না তার। সে অবাক হয়ে তাকাল ম্যাকুইনার দিকে। আর তিনি পাথরের মূর্তির মতো চেয়ে রইলেন ওপর দিকে। শক্ত হয়ে উঠেছে তাঁর চোয়াল, কোনো অজানা শত্রুর প্রতি আক্রোশে যেন আগুন ঠিকরোচ্ছে তাঁর চোখ দিয়ে!

    কয়েক মুহূর্ত নিস্তব্ধভাবে কেটে যাবার পর হেরম্যান মন্তব্য করলেন, ‘এ কঙ্কালটার প্রতি মনে হয় জাতক্রোধ আছে পিগমিদের, মৃত্যুর পরও তাই ওরা ওঁকে শান্তি দিতে চায় না। কবর থেকে তুলে আবার ফাঁসিতে চড়াল।’

    একথা বলার পর সম্ভবত আর কৌতূহল সংবরণ করতে না পেরে ম্যাকুইনার উদ্দেশে বলে উঠলেন, ‘আচ্ছা, লোকটার পরিচয় কী বলুন তো? যে কারণে আপনি কাল ওঁর কবরের ব্যবস্থা করলেন?’

    ম্যাকুইনা কঙ্কালের থেকে দৃষ্টি সরিয়ে নিয়ে ফিরে তাকালেন হেরম্যানের দিকে। তারপর হেরম্যান আর সুদীপ্তকে হতচকিতে করে ঠান্ডা গলায় জবাব দিলেন, ‘ম্যাকলাস ডায়ার-আমার বাবা।

    ‘আপনার বাবা? তিনিও কী সবুজ বানরের সন্ধানে এখানে এসেছিলেন?’ বিস্মিত কণ্ঠে জানতে চাইলেন হেরম্যান।

    ম্যাকুইনা এ প্রশ্নের কোনো জবাব না দিয়ে শুধু বললেন, ‘আমরা এবার তাঁবুর দিকে ফিরব।’ এই বলে ঝুলন্ত কঙ্কালটার দিকে আর একবার তাকিয়ে নিয়ে ফেরার পথ ধরলেন তিনি। তবে ফেরার সময় কেমন যেন একটা অস্বস্তি হতে লাগল সুদীপ্তদের। মনে হতে লাগল কেউ যেন আড়াল থেকে অনুসরণ করছে তাদের।

    ফিরতি পথে সুদীপ্তরা এক সময় উপস্থিত হল সেই গাছের কাছে, যেখানে দুটো কঙ্কাল ঝুলছে। সুদীপ্তরা একবার গিয়ে দাঁড়াল ঝোপের আড়ালে সেই কবরের জায়গাতে। শূন্য কবর, তার চারপাশে ঝুরো মাটিতে জেগে আছে পিগমিদের পদচিহ্ন আর বুড়োআঙুলহীন সেই অদ্ভুত ছাপ! অনেকক্ষণের নীরবতা কাটিয়ে ম্যাকুইনা বলে উঠলেন, ‘প্রাণীটাকে সম্ভবত পিগমিরা পোষ মানিয়েছে, ও ওদের সঙ্গেই ঘোরে দেখছি।’

    ম্যাকুইনার কথা শুনে হেরম্যান বললেন, ‘কিন্তু আমাদের এ পাহাড়ে পদার্পণের খবর হয়তো এতক্ষণে ওটুম্বার কানে পৌঁছে দিয়েছে পিগমিরা। তারা নিশ্চয়ই বুঝতে পেরেছে কঙ্কালটাকে কারা গাছ থেকে নামিয়ে কবর দিয়েছিল। তবে আমার ধারণা ওরা এ ব্যাপারটা আজই বুঝতে পেরেছে, নইলে ওটুম্বা আমাদের সঙ্গে সকালবেলা ভালো ব্যবহার করত না। আমরা প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করেছি—এ ব্যাপারটা ও নিশ্চয়ই স্বাভাবিকভাবে নেবে না।

    ম্যাকুইনা আবার ফেরার জন্য পা বাড়িয়ে বললেন, ‘আমাদের আর পাহাড়ের নীচে গ্রামের পাশের তাঁবুতে ফেরা ঠিক হবে না। ওরা অসভ্য জাতি, ওটুম্বারা সন্দেহবশত আমাদের তাঁবু আক্রমণও করে বসতে পারে। আমরা ফিরব পাহাড়ের মাথায় মাসাইদের তাঁবুর কাছে পুরোনো জায়গায়। আকালারাও সরাসরি ওখানেই ফিরবে। তাকে তাই নির্দেশ দেওয়া আছে। তারপর টোগো আর আকালা গ্রামে যাক ওটুম্বার কাছে। ওরা তাকে জানাক—আমরা ভালো শিকার পাচ্ছি না, তাই কালই এ তল্লাট ছেড়ে চলে যাব। ওটুম্বা যেন পাহাড়ের মাথায় তাঁবুতে এসে তার প্রাপ্য রাইফেল আর আজকের শিকার করা পশুর চামড়া নিয়ে যায়।’

    হেরম্যান চলতে চলতে প্রশ্ন করলেন, ‘ওকে ওপরের তাঁবুতে ডেকে কী করবেন?’ ম্যাকুইনা বললেন, ‘হীরের লোভ দেখিয়ে সবুজ বানরের খবর জানার চেষ্টা করব। ওরা যে তার খবর জানে এ ব্যাপারে আমরা নিশ্চিত।’

    ‘যদি ও খবর না দেয়, অথবা যদি এমন হয় যে, আমরা এ পাহাড়ে এসেছি জেনে ওটুম্বা আমাদের কাছে না এসে টোগো আর আকালাকে আক্রমণ করে বসে—তখন?’ ‘ওটুম্বা যদি মুখ না খোলে তাহলে আর কী করব? ওকে ছাড়া ওই প্রাণীকে এখানে খুঁজে পাওয়া যাবে বলে মনে হচ্ছে না। বিশেষত, ওরাই যদি প্রাণীটাকে কোথাও লুকিয়ে রাখে!’

    এরপর একটু থেমে তিনি বললেন, ‘আপনার গাইড আর আকালাকে চট করে ওরা আক্রমণ করবে বলে মনে হয় না। আমরা যেমন ওদের ব্যাপারে সতর্ক ওরাও তেমনি। ঠিক যে-কারণে ওরা মাসাইদের তাঁবু গ্রামের পাশে ফেলতে দিল না। তাছাড়া “আগুন-ছোঁড়া লাঠি”-র ক্ষমতা সম্বন্ধে ওরা ওয়াকিবহাল। দেখলেন-না তাই, ওটার ওপর ওটুম্বার কেমন লোভ!’ এরপর আর কেউ কোনো কথা না বলে চলতে লাগল

    সুদীপ্তরা যখন পুবের পাহাড়ে মাসাইদের ছাউনিতে ফিরে এল তখনও সূর্য ডুবতে ঘণ্টাখানেক বাকি। বেশ দ্রুত ফিরছে তারা। সুদীপ্তদের কিছুক্ষণ আগে সেখানে আকালাও তার দলবল নিয়ে ফিরেছে। সঙ্গে বেশ কিছু শিকার, দুটো হাটারি চিতাও আছে তার মধ্যে। ম্যাকুইনা আকালাদের ডেকে সুদীপ্তদের একটু দূরে দাঁড়িয়ে মিনিট পাঁচেক কী সব আলোচনা করে নিলেন। তারপর হেরম্যানকে বললেন, ‘আপনার গাইড টোগো আকালা এবার ওটুম্বার কাছে পাঠানো যাক! সঙ্গে আরও দু-জন লোকও যাক। আমাদের তাঁবু দুটোও তো খুলে আনতে হবে।’

    ম্যাকুইনার কথা শুনে হেরম্যান তাকালেন টোগোর দিকে। টোগো এবার হঠাৎ বলে উঠল, ‘না, আমি নীচে যাব না।’ টোগোর অনিচ্ছা প্রকাশের কারণ বুঝতে না পেরে হেরম্যান আর সুদীপ্ত তাকিয়ে রইল তার দিকে।

    ম্যাকুইনা টোগোর কথা শুনে কয়েক মুহূর্ত চুপচাপ কী যেন চিন্তা করার পর হেরম্যানকে বললেন, ‘আপনার গাইড যদি না যেতে চায় তাহলে আমার কিছু বলার নেই। আকালা তাহলে একলাই যাবে। ও ভাঙা-ভাঙা বান্টু ভাষাতেও বলতে পারে।’ কথাগুলো বলার পর একটু থেমে ব্যঙ্গের সুরে বললেন, ‘আমার মনে হয় ওর সঙ্গে আপনার যে পয়সার চুক্তি হয়েছে তাতে আর ওর মনঃপূত হচ্ছে না। অথবা ও সত্যিই ভয় পাচ্ছে ওই আধা-জন্তু, আধা-মানুষগুলোর কাছে যেতে! ও তো আর মাসাই নয়। আসলে এদের মতো গাইডরা আপনাকে মাসাইমারার ওয়াচটাওয়ার থেকে নীচে জেব্রার পাল দেখাতে পারে, কিন্তু এসব অভিযানের পক্ষে এরা অনুপযোগী। একটু খোঁজখবর করলেই মাসাই গাইড পেয়ে যেতেন আপনি।’

    হেরম্যান সঙ্গে সঙ্গে ম্যাকুইনার কথার প্রতিবাদ করে বললেন, ‘না, সম্ভবত আপনি ঠিক বলছেন না। আপনার মাসাই রক্ষীদের তুলনায় ও কম সাহসী নয়। আর জঙ্গল সম্পর্কে ওর অভিজ্ঞতা প্রচুর। আমরা আপনাদের মতো দলে ভারী নয়, টোগোই কিন্তু আমাদের নিরাপদে গ্রেট রিফটে এনেছে। ওর যেতে না চাওয়ার পিছনে অন্য কোনো কারণ থাকতে পারে।’ এই বলে টোগোর দিকে তাকালেন হেরম্যান।

    ম্যাকুইনা আবার বিদ্রুপের স্বরে বললেন, ‘নিয়ে এসেছে তো ঠিকই, কিন্তু ফিরিয়ে নিয়ে যায় কি না দেখুন। মাঝপথে ছেড়ে না পালায়।’

    টোগো এবার ম্যাকুইনার দিকে তাকিয়ে বলল, ‘যদিও আপনি আমার মালিক নন, আপনাকে জবাবদিহি করার কোনো প্রয়োজন পড়ে না, তবুও বলি আমার সম্বন্ধে আপনার ধারণা যে মিথ্যে তা সময় এলেই বুঝতে পারবেন। বরং নিজের লোকেদের কথা ভাবুন! ওরা না আপনাকে ছেড়ে পালায়। আমার মালিকের সাথে আপনার যখন কথা হয়েছে, আমি নীচে যাচ্ছি, তবে আমার কথাটা খেয়াল রাখবেন।’

    টোগোর কথা বলার ধরন দেখে হঠাৎ দপ্ করে যেন জ্বলে উঠল ম্যাকুইনার চোখ, কিন্তু পরমুহূর্তে তিনি নিজেকে সামলে নিয়ে দুর্বোধ্য হেসে বললেন, ‘বাঃ, এই তো সাহসীর মতো কথা! দাঁড়াও, তোমাদের সাথে যাবার জন্য অন্য দু-জন সঙ্গীর ব্যবস্থা করি।’ এই বলে তিনি পা বাড়ালেন, কয়েক পা দূরে দাঁড়িয়ে থাকা আকালার মাসাই দঙ্গলের দিকে।

    টোগো সেই সুযোগে চাপা স্বরে হেরম্যানকে বললেন, ‘আফ্রিকাভারের মতিগতি আমার ভালো ঠেকছে না। আমি নীচে যাচ্ছি, কিন্তু আপনারা সাবধানে থাকবেন। ওর কয়েকজন লোকও বেপাত্তা দেখছি।’

    টোগোর কথা শুনে হেরম্যান তাকে কী একটা জিজ্ঞেস করতে যাচ্ছিলেন, কিন্তু তার আগেই ম্যাকুইনা আবার মুখ ফেরালেন তাদের দিকে। মিনিটখানেকের মধ্যেই টোগো, আকালা আর তার দু-জন সঙ্গীর সঙ্গে রওনা হল পাহাড়ের নীচে ওটুম্বার সন্ধানে।

    তারা চলে যাবার পর ম্যাকুইনা গিয়ে ঢুকলেন কাছের একটা তাঁবুতে। হেরম্যান আর সুদীপ্ত বাইরে দাঁড়িয়ে রইল। তাঁদের তাঁবু নীচ থেকে ফেরার সময় টোগোরা সঙ্গে আনবে।

    ম্যাকুইনা তাঁবুতে ঢোকার পর হেরম্যান সুদীপ্তকে বললেন, ‘টোগো মনে হয় কিছু আঁচ করেছে তাই সাবধানে থাকতে বলল। আমারও যেন মনে হচ্ছে কিছু ঘটবে!’

    সুদীপ্ত বলল, ‘আমরা সংখ্যায় অল্প। কাজেই সকলের একসাথে থাকাই বাঞ্ছনীয়। যদি বিপদটা পিগমিদের দিক থেকে আসে তবে সেটা ম্যাকুইনার ওপরও আসবে। সেক্ষেত্রে নয় একসাথে লড়া যাবে। কিন্তু ম্যাকুইনা যদি বিপদের কারণ হন তবে?’

    হেরম্যান বললেন, ‘আমিও সেই আশঙ্কাই করছি। তবে ঘাবড়ালে চলবে না। আমাদের যে-কোনো ঘটনার জন্য তৈরি থাকতে হবে।’ কথাগুলো বলার পর হেরম্যান আস্কারি আর তুতসি কুলিদের কাছে ডেকে নিলেন। সকলকে সতর্ক থাকার নির্দেশ দিয়ে তাদের নিয়ে ঢালের ধারে বসলেন টোগোদের ফেরার প্রতীক্ষায়।

    মিনিট চল্লিশ পর টোগোরা ফিরে এল। সঙ্গে ওটুম্বা আর তার চারজন দেহরক্ষী। টোগোরা সুদীপ্তদের তাঁবু দুটো আর ম্যাকুইনার তাঁবুও তুলে এনেছে।

    তারা আসবার পর ম্যাকুইনা তাঁবু ছেড়ে বেরিয়ে এলেন।

    হেরম্যান টোগোকে বললেন, ‘ওরা কী আমাদের পশ্চিমের পাহাড়ে যাবার ব্যাপারটা জেনে গেছে?’

    টোগো বলল, ‘না, খবরটা সম্ভবত নীচের গ্রামে এখনও এসে পৌঁছয়নি। ওরা কিছু বলেনি এ ব্যাপারে। তবে ওপরে আসতে কিছুটা ইতস্তত করছিল। ওদের এখানে ডাকার পিছনে আমার কোনো দুরভিসন্ধি নেই, এ ব্যাপারে আমাকে শপথ করতে হয়েছে ওদের কাছে।’

    ম্যাকুইনা সুদীপ্তদের কাছে এসে দাঁড়িয়ে টোগোর কথা শুনে মুচকি হেসে বললেন, ‘তাই নাকি!’ তারপর তাকালেন ওটুম্বা আর তার সঙ্গীদের দিকে।

    ⤶ ⤷
    1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11 12 13 14 15 16 17 18 19 20 21 22 23 24 25 26 27 28 29 30 31 32 33 34 35 36 37 38 39 40 41 42 43 44 45 46 47 48 49 50
    Share. Facebook Twitter Pinterest LinkedIn Tumblr Email Reddit VKontakte Telegram WhatsApp Copy Link
    Previous Articleঅ্যাডভেঞ্চার সমগ্র ২ – হিমাদ্রিকিশোর দাশগুপ্ত
    Next Article নেকড়ে খামার – হিমাদ্রিকিশোর দাশগুপ্ত

    Related Articles

    হিমাদ্রিকিশোর দাশগুপ্ত

    নেকড়ে খামার – হিমাদ্রিকিশোর দাশগুপ্ত

    December 10, 2025
    হিমাদ্রিকিশোর দাশগুপ্ত

    অ্যাডভেঞ্চার সমগ্র ২ – হিমাদ্রিকিশোর দাশগুপ্ত

    December 9, 2025
    হিমাদ্রিকিশোর দাশগুপ্ত

    জাদুকর সত্যচরণের জাদু কাহিনি – হিমাদ্রি কিশোর দাশগুপ্ত

    December 9, 2025
    হিমাদ্রিকিশোর দাশগুপ্ত

    আঁধার রাতের বন্ধু – হিমাদ্রিকিশোর দাশগুপ্ত

    December 9, 2025
    হিমাদ্রিকিশোর দাশগুপ্ত

    সূর্যমন্দিরের শেষ প্রহরী – হিমাদ্রিকিশোর দাশগুপ্ত

    December 9, 2025
    হিমাদ্রিকিশোর দাশগুপ্ত

    অ্যাডভেঞ্চার ভয়ংকর – হিমাদ্রিকিশোর দাসগুপ্ত

    December 9, 2025
    Add A Comment
    Leave A Reply Cancel Reply

    Generic selectors
    Exact matches only
    Search in title
    Search in content
    Post Type Selectors
    Demo

    Your Bookmarks


    Reading History

    Most Popular

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025

    দোকানির বউ

    January 5, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025
    Demo
    Latest Reviews

    বাংলা গল্প শুনতে ভালোবাসেন? এক পাতার বাংলা গল্পের সাথে হারিয়ে যান গল্পের যাদুতে।  আপনার জন্য নিয়ে এসেছে সেরা কাহিনিগুলি, যা আপনার মন ছুঁয়ে যাবে। সহজ ভাষায় এবং চিত্তাকর্ষক উপস্থাপনায়, এই গল্পগুলি আপনাকে এক নতুন অভিজ্ঞতা দেবে। এখানে পাবেন নিত্যনতুন কাহিনির সম্ভার, যা আপনাকে বিনোদিত করবে এবং অনুপ্রাণিত করবে।  শেয়ার করুন এবং বন্ধুদের জানাতে ভুলবেন না।

    Top Posts

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025

    দোকানির বউ

    January 5, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025
    Our Picks

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১২

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১৩

    December 12, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram Pinterest
    • Home
    • Disclaimer
    • Privacy Policy
    • DMCA
    • Contact us
    © 2025 Ek Pata Golpo. Designed by Webliance Pvt Ltd.

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.

    • Login
    Forgot Password?
    Lost your password? Please enter your username or email address. You will receive a link to create a new password via email.
    body::-webkit-scrollbar { width: 7px; } body::-webkit-scrollbar-track { border-radius: 10px; background: #f0f0f0; } body::-webkit-scrollbar-thumb { border-radius: 50px; background: #dfdbdb }