Close Menu
এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    What's Hot

    কিরীটী অমনিবাস ১ – নীহাররঞ্জন গুপ্ত

    September 8, 2025

    কিরীটী অমনিবাস ১৩ – নীহাররঞ্জন গুপ্ত

    September 8, 2025

    কিরীটী অমনিবাস ২ – নীহাররঞ্জন গুপ্ত

    September 8, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    • 📙
    • লেখক
    • শ্রেণী
      • ছোটগল্প
      • ভৌতিক গল্প
      • প্রবন্ধ
      • উপন্যাস
      • রূপকথা
      • প্রেমকাহিনী
      • রহস্যগল্প
      • হাস্যকৌতুক
      • আত্মজীবনী
      • ঐতিহাসিক
      • নাটক
      • নারী বিষয়ক কাহিনী
      • ভ্রমণকাহিনী
      • শিশু সাহিত্য
      • সামাজিক গল্প
      • স্মৃতিকথা
    • কবিতা
    • 🔖
    • লিখুন
    • চলিতভাষার
    • শীর্ষলেখক
      • শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
      • মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়
      • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
      • বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • সত্যজিৎ রায়
      • সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
      • জীবনানন্দ দাশ
      • আশাপূর্ণা দেবী
      • কাজী নজরুল ইসলাম
      • জসীম উদ্দীন
      • তসলিমা নাসরিন
      • মহাশ্বেতা দেবী
      • মাইকেল মধুসূদন দত্ত
      • মৈত্রেয়ী দেবী
      • লীলা মজুমদার
      • শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
      • সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়
      • সমরেশ মজুমদার
      • হুমায়ুন আহমেদ
    Subscribe
    সাইন ইন
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)

    ভাগীরথী অমনিবাস – নীহাররঞ্জন গুপ্ত (অসম্পূর্ণ)

    নীহাররঞ্জন গুপ্ত এক পাতা গল্প284 Mins Read0

    মধুমতী থেকে ভাগীরথী – ২৯

    ।। উনত্রিশ ।।

    বহু বাদানুবাদ আবেদন-নিবেদন এবং তদানীন্তন ব্যবস্থাপক সভায় অনেক তর্কবিতর্কের পর অবশেষে ২৬শে জুলাই ১৮৫৫, ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের জীবনের অতুলনীয় কীর্তি বিধবাবিবাহ আইনটি পাকা হয়—এবং যে সময়ের কথা বলছি সেটা একটি বৎসর পরে ১৮৫৬ ডিসেম্বরের গোড়ার কথা। আইনটি বিধিবদ্ধ ভাবে পাস হবার পর–গুপ্তকবি ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্রূপ করে একটি কবিতা রচনা করেন—

    সাহস কোথায় বল, প্রতিজ্ঞা কোথায়?
    কিছুই না হতে পারে মুখের কথায়।
    মিছি-মিছি অনুষ্ঠানে, মিছে কান হরা।
    মুখে বলা বলা নয়, কাজে করা করা—
    সকলেই তুড়ি মারে, বুঝে নাকো কেউ।
    সীমা ছেড়ে নাহি যাবে, সাগরের ঢেউ ॥
    সাগর যদ্যপি করে সীমার লঙ্ঘন।
    তার বুঝি হতে পারে, বিবাহ ঘটন ॥

    সাগরের ঢেউ সীমা লঙ্ঘন না করলেও বিদ্যাসাগর মশাই কিন্তু সীমা লঙ্ঘন করে সত্যি সত্যিই শেষ পর্যন্ত সমাজের বুকের উপরেই বিধবাবিবাহ ঘটালেন।

    মুখেই যে কেবল নয়—কাজেও যে তিনি করতে পারেন সেটা প্রমাণিত করলেন গুপ্ত কবির ওই ব্যঙ্গোক্তির জবাব দিতে—তাঁর অটল প্রতিজ্ঞা ও সৎসাহসই প্রমাণ করে দিল যা তিনি মুখে বলেন তা তিনি কাজেও করেন—করতে পারেন

    সে যুগে অত বড় সমাজসংস্কার সাধারণ মানুষের চিন্তারও অগম্য ছিল নিঃসন্দেহে; বিদ্যাসাগর মশাই অত্যন্ত দূরদর্শী ছিলেন। সেদিনকার সমাজে বাল্যবিবাহ, বহুবিবাহ ও কৌলীন্য প্রথারই যে অবশ্যম্ভাবী ফল বহু নারীর ভাগ্যে অকাল বৈধব্য—সেটা তিনি বুঝতে পেরেছিলেন বলেই তিনি বিধবাবিবাহের কথাটা বোধহয় চিন্তা করেছিলেন। তাছাড়া আরো ছিল, সমাজে যারা প্রভাব ও প্রতিপত্তিশালী তাদের সামনেও মধ্যে মধ্যে ওই বাল্যবৈধব্যের সমস্যা ঘোর পারিবারিক সংকট রূপে দেখা দিত, তাতে করে মনে হয় তারাও বোধ হয় এই সংকট থেকে মুক্তি পাবার জন্য একটা খুঁজে সমাধান বের করবার চেষ্টা করতেন। যাই হোক বিধবাবিবাহকে আইনসংগত করাবার প্রয়াসে অনেক বাধার সম্মুখীনই তাঁকে হতে হয়েছিল সে সময়—তথাপি বিদ্যাসাগর মশাইকে কেউ নিরস্ত করতে পারেনি।

    যে সময়কার এই কাহিনী তারই কিছুদিন পূর্বে পর পর দুটি বিধবাবিবাহ হয়ে গিয়েছে—তাতেই বোধ করি রাধারমণ মল্লিক মশাই মনের মধ্যে জোর পেয়েছিলেন।

    রাধারমণ মল্লিকের মত সমাজের শীর্ষস্থানীয় কেউ কেউ বিধবাবিবাহ ব্যাপারটা মনের থেকে গ্রহণ করতে পারলেও সমাজের শতকরা নব্বইজন সাধারণ মধ্যবিত্ত ও নিম্ন মধ্যবিত্তের দল ব্যাপারটা ভাল চোখে দেখতে পারেননি—মনে মনে গ্রহণও করতে পারেননি—কাজেই সমাজের মধ্যে একটা সংঘাত চলছিল।

    রাধারমণজননী ভবতারিণী দেবীর কাছে সংবাদটা যথাসময়েই প্রবেশ করেছিল। কথাটা কানে তাঁর তুলেছিল পুত্রবধূ অন্নপূর্ণাই।

    মা, আপনি এখনো জীবিত—তা সত্ত্বেও যা সব ঘটতে চলেছে—

    কি হয়েছে বৌমা? ভবতারিণী শুধান।

    কিছুই কি আপনি শোনেননি?

    কি হয়েছে কি?

    আপনার ছেলে যে—

    কি করেছে আমার ছেলে?

    সুহাসের আবার বিয়ে দেবেন—স্থির করেছেন।

    সে কি!

    হ্যাঁ মা।

    রাধারমণ—এমন বিধর্মী এমন ম্লেচ্ছ হয়ে উঠেছে-

    আমি কিন্তু স্পষ্ট বলে দিচ্ছি মা—সুহাসের আবার বিবাহ দিলে আমি দীঘির জলে ডুবে আত্মহত্যা করবো।

    আমি বেঁচে থাকতে এ অনাসৃষ্টি কাজ হতে দেবো না মা।

    কিন্তু মা-

    তুমি নিশ্চিন্ত থাকো।

    .

    ওই দিন দ্বিপ্রহরে রাধারমণ যখন আহারাদির পর নিজ শয়নকক্ষে বিশ্রাম করছেন—ভবতারিণীর গলা শোনা গেল দরজার বাইরে।

    রাধারমণ—

    কে মা? রাধারমণ তাড়াতাড়ি উঠে বসেন।

    ভবতারিণী এসে কক্ষে প্রবেশ করলেন।

    কিছু বলবে মা?

    হ্যাঁ, এসব কি শুনছি?

    কি শুনছো?

    তুমি নাকি—সুহাসের আবার বিবাহ দেবে?

    কার কাছে শুনলে?

    যার কাছেই শুনে থাকি—কথাটা কি সত্যি?

    মা—তুমি যা শুনেছো তা সত্যি।

    সত্যি!

    হ্যাঁ-

    তোমার যে এতদূর অধঃপতন হয়েছে আমার স্বপ্নেরও অগোচর ছিল।

    একবার সুহাসের কথাটা ভেবে দেখো মা–কি ওর বয়স—এখনো সারাটা জীবন ওর সামনে পড়ে আছে—

    হতভাগী যেমন ভাগ্য করে এসেছে।

    ওই ভাগ্যের দোহাই দিয়ে তুমি এত বড় অন্যায় আর পাপকে সহ্য করে নেবে মা! না মা, আমি বাপ হয়ে তা পারবো না। ও আমার একমাত্র সন্তান—ওকে আমি সুখী দেখতে চাই—

    রাধারমণ—ছিঃ ছিঃ ছিঃ—এত বড় পাপ—এত বড় অধর্ম—

    এর মধ্যে কিছু ছিঃ নেই মা, এর মধ্যে কোন পাপ বা অধর্মও নেই—এ সম্পূর্ণ শাস্ত্রসম্মত—বড় বড় পণ্ডিত শাস্ত্র ঘেঁটে বিধান দিয়েছেন—

    ওই ঈশ্বর না কে অনামুখো মিনসে—

    এ দেশে তাঁর মত অত বড় পণ্ডিত আর নেই-

    অমন পণ্ডিতের মুখে আগুন।

    এ দেশের বহু তপস্যার ফলে ঈশ্বরচন্দ্রের মত মানুষ জন্মেছে।

    ওই সব মতলব ছাড়ো রাধারমণ, আমি বেঁচে থাকতে অমন পাপ-অনাচার এ গৃহে ঘটতে দেবো না—এই শেষ কথা আমি বলে রাখলাম।

    কিন্তু মা—

    আমার কথা আমি বললাম—আর আমার কিছু বলবার নেই—কথাগুলো বলে ভবতারিণী কক্ষ হতে নিষ্ক্রান্ত হয়ে গেলেন দৃঢ় শান্ত পদে।

    চিরদিনের জেদী মানুষ রাধারমণ, মায়ের এই কথায় তাঁর জেদ যেন আরো বেড়ে যায়—মনে মনে তিনি তখন প্রতিজ্ঞা করেন, সুহাসিনীর বিবাহ তিনি দেবেনই। যত সব অন্ধ সামাজিক কুসংস্কার তিনি মানবেন না।

    মনের মধ্যে সামান্য যেটুকু দ্বিধা ছিল ওই ব্যাপারে—জননীর কথায় সে দ্বিধাটুকুও যেন বিসর্জন দিলেন রাধারমণ।

    এবং পরের দিনই রাধারমণ ঈশ্বরচন্দ্রের সঙ্গে গিয়ে দেখা করলেন।

    ঈশ্বরচন্দ্র বলাই বাহুল্য রাধারমণের সংকল্পের কথা শুনে নিরতিশয় আনন্দিত হলেন। বললেন, আপনাদের মত সমাজে প্রতিপত্তিশালী ব্যক্তিরা যে এ ব্যাপারে এগিয়ে এসেছেন খুবই আনন্দের কথা।

    ঠাকুর মশাই—আপনি একটি ভাল পাত্র আমায় দেখে দিন।

    ঈশ্বরচন্দ্র বললেন, নিশ্চয়ই আমি পাত্রের সন্ধান করবো—কিন্তু শেষ পর্যন্ত আপনি পিছিয়ে যাবেন না তো!

    না—পিছিয়ে আমি যাবো না।

    প্রচণ্ড বাধার সম্মুখীন হয়ত হতে হবে আপনাকে মল্লিক মশাই—

    জানি। আর সে জন্য জানবেন আমি প্রস্তুতও। আমাকে একটি গরিবের ঘরের, সম্ভব হলে শিক্ষিত পাত্র জোগাড় করে দিন।

    বেশ কিছু মোটারকম ব্যয় হতে পারে কিন্তু

    যত ব্যয়ই হোক আমি তার জন্য সম্মত আছি।

    ঈশ্বরচন্দ্রকে প্রণাম করে বিদায় নিলেন রাধারমণ মল্লিক।

    .

    সুহাসিনী প্রথম যখন কথাটা শুনেছিল—তার পিতা পুনরায় তার বিবাহ দেবেন স্থির করেছেন, সুহাসিনী কথাটার মধ্যে তত গুরুত্ব আরোপ করেনি।

    সে ভেবেছিল সবটাই বুঝি একটা কথার কথা, সবটাই তার পিতার বুঝি ক্ষণিক একটা খেয়াল মাত্র। কিন্তু কথাটা যখন ক্রমশ দানা বেঁধে উঠতে লাগল—সত্যি কথা বলতে কি সুহাসিনীর মনের মধ্যে—যেন একটা অনাস্বাদিত আনন্দের মৃদু একটা শিহরণ তোলে।

    স্বামী বা স্বামীগৃহের স্মৃতি তার বালিকা-মনের মধ্যে কোন স্থায়ী দাগই কোন দিন কাটতে পারেনি।

    স্বামী কথাটার সত্যিকারের মানে কি—স্বামী বলতে কি বোঝায় এক স্ত্রীলোকের জীবনে, সব কিছুই ছিল তার কাছে অস্পষ্ট। তাছাড়া স্বামীকে ঘিরে যে স্মৃতিটা তার মনের মধ্যে তখনো ছিল সেটার মধ্যে কোথাও কোন আনন্দের লেশমাত্রও ছিল না।

    বরং সত্যি বলতে কি, ছিল একটা অহেতুক ভীতিই।

    কিন্তু ক্রমশ বয়োবৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে একটা অনাস্বাদিত আনন্দানুভূতি যেন তাকে মধ্যে মধ্যে উন্মনা করে তুলত—ভোলনাথের কথায়বার্তায়—ও কাদম্বিনীর কথায়বার্তায়।

    একটি নারীর একটি পুরুষের সঙ্গে যে কি সম্পর্ক—সেটা সে ভাবতে শুরু করেছিল। তার মনের মধ্যে একটা বিচিত্র কৌতূহল থেকে থেকে যেন নাড়া দিয়ে যেত।

    স্ত্রীলোকের স্বামী এই ভাবনাটা তার মনের মধ্যে ক্রমশ এক নতুন রূপ পরিগ্রহ করছিল…..আর ঠিক সেই সময় সে পেল তার মায়ের দিক থেকে প্রচণ্ড বাধা।

    ভোলানাথের সঙ্গে আনন্দচন্দ্রের সঙ্গে তার কথা বলতে ভাল লাগত—কিন্তু মা সে সব পছন্দ করতেন না, মায়ের দিক থেকে বাধা পেয়ে তার মনটা বেশ বিদ্রোহী হয়ে উঠতো। সে বুঝতে পারত না এতে দোষটা কোথায়।

    কই তার তো কখনো সে রকম মনে হয় না।

    সুহাসিনী আরো বেশী করে ভোলানাথের সঙ্গে কথা বলবার জন্য—তার সঙ্গে মিশবার জন্য বেশ সচেষ্ট হয়ে থাকত।

    মায়ের দৃষ্টির আড়ালে সে সুযোগের অপেক্ষায় থাকত।

    মনে মনে সে ভাবত তার আবার বিবাহ হলে বেশ হয়, আসুক তার জীবনে একজন পুরুষ।

    যে হবে তার স্বামী। সে হবে যার স্ত্রী।

    বস্তুত তার পিতা তার আবার বিবাহ দিতে চান কথাটা তার কানে যেতে সে বেশ খুশীই হয়েছিল।

    সমস্ত সংবাদ কাদম্বিনীই সরবরাহ করতো সুহাসিনীকে। সেদিন গিন্নীর সঙ্গে তার পুত্রের কি কথাবার্তা হয়েছে—আড়ালে থেকে সব শুনেছিল কাদম্বিনী।

    সন্ধ্যের দিকে দীঘির ঘাটে সুহাসিনীকে একা রাণার উপর উদাস ভাবে বসে থাকতে দেখে সামনে এসে তার পৃষ্ঠের উপর একখানি হাত রাখলো। চমকে ফিরে তাকাল সুহাসিনী, কে—

    আমি—কি ভাবছিলি রে? মৃদু হেসে প্রশ্ন করে কাদম্বিনী।

    কই না, কিছু না তো কাদুদিদি।

    আর ঠ্যাকার করিস না লো, বল্ কি ভাবছিলি?

    কিছু না।

    একটা মৃদু ধাক্কা দিয়ে কাদম্বিনী বললে, ও লো, আর ভাবতে হবে না।

    আমি ভাবছি কে তোমাকে বললে কাদুদিদি!

    ওরে ওই বয়সটাই যে মেয়েছেলের ভাববার, সত্যি—–সুহাস ভাগ্যি করে এসেছিলি বটে তুই!

    ভাগ্য-

    নয়—আবার যে তোর বিয়ের ফুল ফুটতে চলেছে—

    যাঃ, কি যে বল না কাদুদিদি—মেয়েছেলের বুঝি দু’বার বিয়ে হয়—ও কথা বলাও পাপ কাদুদিদি—

    থাম্ লো থাম্‌—জানিসনি নতুন আইন পাস হয়েছে যে—

    নতুন আইন!

    হ্যাঁ—বিধবার আবার বিয়ে-

    ছিঃ!

    হ্যাঁ লো হ্যাঁ—শুনিসনি কিছুই—তোর যে আবার বিয়ে—

    বিয়ে—আমার—

    হ্যাঁ—শাঁখ বাজাব—উলু দোব—মুকুট মাথায় দিবিবর আসবে আবার—

    সুহাসিনী গম্ভীর—কোন সাড়া দেয় না।

    কি রে—একেবারে যে মুখে রা’টি নেই—শুনিসনি তোর বাবা যে তোর আবার বিয়ে দেবেন, পাত্র দেখছেন।

    কি জানি কেন সুহাসিনীর সারাটা শরীর যেন ওই কথায় কদমফুলের মতই শিহরিত হয়ে ওঠে। বুকের মধ্যে যেন ধুপ ধুপ করে। দু চোখের কোণে জল উপচে আসে।

    সুহাসিনী বলে কান্নাধরা গলায়, ছিঃ, ওসব কথা বলতে নেই কাদুদিদি—ও পাপ—

    আরে শাস্ত্র ঘেঁটে নামী পণ্ডিতেরা বিধান দিয়েছেন—বিধবার আবার বিয়ে হতে পারে—ওতে কোন পাপ নেই।

    সুহাসিনীর সর্বশরীর কাঁপছিল—সে আর বসে থাকতে পারে না। দীঘির ঘাট থেকে উঠে অন্দরমহলের দিকে চলে যায়।

    বালিকা—নেহাৎ বালিকা বয়সে বিয়ে হলেও সে স্মৃতি সুহাসিনীর মন থেকে একেবারে মুছে যায়নি।

    সেই লাল বেনারসী পরে—মাথায় মুকুট—চারিদিকে শাঁখ বাজছে—এয়ো স্ত্রীরা উলু দিচ্ছে—রসুনচৌকী বাজছে

    তারপর হঠাৎ একদিন কেমন যেন সব এলোমেলো হয়ে গেল—নিষ্ঠুর এক বিপর্যয়ে সব ছিন্নভিন্ন হয়ে গেল।

    কাদম্বিনী যে মিথ্যা বলেনি—সেটা দু’দিন পরেই জানতে পারল সুহাসিনী, বাড়ির মধ্যে ফিসফাস করে সেই একই কথা। রাধারমণ তাঁর বাল্যবিধবা কন্যার আবার বিবাহ দেবেন—পাত্র দেখছেন।

    মায়ের এবং ঠাকুরমায়ের মত নেই—তাঁরা বিরোধী কিন্তু রাধারমণ দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। সত্যিই অসাধ্য সাধন করলেন রাধারমণ।

    বিদ্যাসাগর মশাইয়ের চেষ্টাতে ছ-সাত মাসের মধ্যেই একটি সুপাত্র স্থির করে ফেললেন।

    কৃষ্ণকিশোর চৌধুরী, খানাকুল কেষ্টনগর বাড়ি, গরিবের ছেলে কিন্তু লেখাপড়া করছে হিন্দু কলেজে—বয়সও বেশী নয়, তেইশ-চব্বিশ—পালটি ঘর।

    রূপবান— স্বাস্থ্যবান।

    স্থির হয়েছে নগদ পাঁচ হাজার টাকা দেবেন রাধারমণ পাত্রের পিতা যুগলকিশোরকে।

    বিদ্যাসাগর মশাই-ই বিবাহের দিন স্থির করে দিয়েছেন।

    বাড়ির মধ্যে একটা থমথমে ভাব।

    1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11 12 13 14 15 16 17 18 19 20 21 22 23 24 25 26 27 28 29 30 31 32
    Share. Facebook Twitter Pinterest LinkedIn Tumblr Email Reddit VKontakte Telegram WhatsApp Copy Link
    Previous Articleআমি বীরাঙ্গনা বলছি – নীলিমা ইব্রাহিম
    Next Article অশান্ত ঘূর্ণি (অখণ্ড) – নীহাররঞ্জন গুপ্ত

    Related Articles

    নীহাররঞ্জন গুপ্ত

    কিরীটী অমনিবাস ১ – নীহাররঞ্জন গুপ্ত

    September 8, 2025
    নীহাররঞ্জন গুপ্ত

    কিরীটী অমনিবাস ১৩ – নীহাররঞ্জন গুপ্ত

    September 8, 2025
    নীহাররঞ্জন গুপ্ত

    কিরীটী অমনিবাস ২ – নীহাররঞ্জন গুপ্ত

    September 8, 2025
    নীহাররঞ্জন গুপ্ত

    কিরীটী অমনিবাস ১২ – নীহাররঞ্জন গুপ্ত

    September 8, 2025
    নীহাররঞ্জন গুপ্ত

    কিরীটী অমনিবাস ৩ – নীহাররঞ্জন গুপ্ত

    September 8, 2025
    নীহাররঞ্জন গুপ্ত

    কিরীটী অমনিবাস ৪ – নীহাররঞ্জন গুপ্ত

    September 8, 2025
    Add A Comment
    Leave A Reply Cancel Reply

    Demo
    Most Popular

    কিরীটী অমনিবাস ১ – নীহাররঞ্জন গুপ্ত

    September 8, 2025

    অনুরাধা

    January 4, 2025

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025
    Demo
    Latest Reviews

    বাংলা গল্প শুনতে ভালোবাসেন? এক পাতার বাংলা গল্পের সাথে হারিয়ে যান গল্পের যাদুতে।  আপনার জন্য নিয়ে এসেছে সেরা কাহিনিগুলি, যা আপনার মন ছুঁয়ে যাবে। সহজ ভাষায় এবং চিত্তাকর্ষক উপস্থাপনায়, এই গল্পগুলি আপনাকে এক নতুন অভিজ্ঞতা দেবে। এখানে পাবেন নিত্যনতুন কাহিনির সম্ভার, যা আপনাকে বিনোদিত করবে এবং অনুপ্রাণিত করবে।  শেয়ার করুন এবং বন্ধুদের জানাতে ভুলবেন না।

    Top Posts

    কিরীটী অমনিবাস ১ – নীহাররঞ্জন গুপ্ত

    September 8, 2025

    অনুরাধা

    January 4, 2025

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025
    Our Picks

    কিরীটী অমনিবাস ১ – নীহাররঞ্জন গুপ্ত

    September 8, 2025

    কিরীটী অমনিবাস ১৩ – নীহাররঞ্জন গুপ্ত

    September 8, 2025

    কিরীটী অমনিবাস ২ – নীহাররঞ্জন গুপ্ত

    September 8, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram Pinterest
    • Home
    • Disclaimer
    • Privacy Policy
    • DMCA
    • Contact us
    © 2025 Ek Pata Golpo. Designed by Webliance Pvt Ltd.

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.

    Sign In or Register

    Welcome Back!

    Login below or Register Now.

    Lost password?

    Register Now!

    Already registered? Login.

    A password will be e-mailed to you.