Close Menu
এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    What's Hot

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১২

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১৩

    December 12, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    • 📙
    • লেখক
    • শ্রেণী
      • ছোটগল্প
      • ভৌতিক গল্প
      • প্রবন্ধ
      • উপন্যাস
      • রূপকথা
      • প্রেমকাহিনী
      • রহস্যগল্প
      • হাস্যকৌতুক
      • আত্মজীবনী
      • ঐতিহাসিক
      • নাটক
      • নারী বিষয়ক কাহিনী
      • ভ্রমণকাহিনী
      • শিশু সাহিত্য
      • সামাজিক গল্প
      • স্মৃতিকথা
    • কবিতা
    • লিখুন
    • চলিতভাষার
    • শীর্ষলেখক
      • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
      • বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
      • শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়
      • বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • সত্যজিৎ রায়
      • সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
      • বুদ্ধদেব গুহ
      • জীবনানন্দ দাশ
      • আশাপূর্ণা দেবী
      • কাজী নজরুল ইসলাম
      • জসীম উদ্দীন
      • তসলিমা নাসরিন
      • মহাশ্বেতা দেবী
      • মাইকেল মধুসূদন দত্ত
      • মৈত্রেয়ী দেবী
      • লীলা মজুমদার
      • শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
      • সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়
      • সমরেশ মজুমদার
      • হুমায়ুন আহমেদ
    • English Books
      • Jules Verne
    • 🔖
    • ➜]
    Subscribe
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)

    শ্রেষ্ঠ উর্দু গল্প – সম্পাদনা : শহিদুল আলম

    লেখক এক পাতা গল্প766 Mins Read0
    ⤶ ⤷

    ৫.০৯ সেকালের মেয়ে – রাজিয়া সাজ্জাদ জহির

    সেকালের মেয়ে – রাজিয়া সাজ্জাদ জহির

    দূর থেকে ব্যান্ডের শব্দ শোনা যাচ্ছে। বরযাত্রীর দল দরজার কাছে এসে পৌঁছাল বলে। মধ্যের ঘরটায় কাঁদতে কাঁদতে তেরো বছরের কনেটির অবস্থা কাহিল। বাইজি নাচিয়েরা চিৎকার করে, গলা ফাটিয়ে গান জুড়ে দিয়েছে। পানদানির খটখট আর নূপুরের ছমছম আওয়াজে কানে যেন ঝালাপালা লেগে যায়।

    এমন সময় হঠাৎ একটা আর্তনাদের আওয়াজ শোনা গেল। ভয়ে আর আশঙ্কায় এদিক-সেদিক ছুটোছুটি শুরু করে দিল সবাই।

    শোনা গেল, ঘোড়ার পা গর্তের মধ্যে ঢুকে গিয়ে উনিশ বছরের বর গুরুতর জখম হয়েছে। ঘোড়ার পিঠ থেকে পড়ে গিয়ে ভেঙে গেছে ঘাড়খানা। দশ মিনিটের মধ্যে বিয়ে বাড়িতে বিষাদের কালো ছায়া নেমে এল। যত মুখ, তত কথা। নানা জনের নানান মন্তব্য। সবাই কিছু-না-কিছু বলছেই। কিন্তু শুধু একজন ছাড়া। শুধু একজন মৌন-মূক হয়ে বসে। সে বুঝতে পারছিল না, এসব স্বপ্ন, না বাস্তব। বুঝতে পারছিল না সেই অল্প বয়স্কা কনেটি।

    এই ঘটনার পঞ্চাশ বছর পরে আমি তাকে ‘নেংড়ি মামি’ বলে জানতে পেরেছি।

    গল্পটা নতুন– যদিও এর পটভূমিকা অনেকদিন আগেকার। গল্পের প্রধান চরিত্রও অনেক পুরনো কালের। চরিত্রটি আমার মনের প্রচ্ছদে এমন একটা দাগ কেটে দিয়ে গেছে, যা কখনো মিটবার নয়।

    শেষ পর্যন্ত সে বিয়ে আর হয়নি। তাই অনেকে প্রস্তাব দিলেন অন্যত্র বিয়ের ব্যবস্থা দেখতে। কারণ, এখনো সে কুমারী, আদও তো হয়নি– বিয়ে হওয়ায় বাধা কী। কিন্তু নেংড়ি মামি সেই যে বেঁকে বসলেন, তাঁকে আর কেউ রাজি করাতে পারল না।

    যৌবনে তাঁর মুখখানা কেমন ছিল, দেখতে তিনি কেমন ছিলেন, সেসব এখন আমার পক্ষে বলা শক্ত। কিন্তু বার্ধক্যে তাঁকে দেখেছি। সে মুখ চন্দনের মতো উজ্জ্বল। রোদে বসলে গোলাপি আভা ফুটে ওঠে তাঁর গাল দুটিতে। এক খিলি পান চিবোলে গলার ভেতর থেকে লালিমা পষ্ট দেখা যায়। ছোটখাটো ছিপছিপে পাতলা লাজুক দেখতে তিনি। পরনে চুড়িদার পাজামা, ঢিলা কোর্তা, সাদা রঙের মোটা মলমলের ওড়না।

    তখন আমার বয়েস পাঁচ, কি বড় জোর ছয়। আমরা নানার বাড়ি বেড়াতে এসেছি। জিনিসপত্তর গেট পার করে ভেতর-বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। এমন সময় একজন বৃদ্ধা লাঠির ওপর ভর করে ভেতরে ঢুকলেন পেছনের দরজা দিয়ে। মার্কিনের একটা মোটা চাদরে তাঁর আপাদ-মস্তক ঢাকা। কোমরে চাবির গোছা ঝুলছে। হাতে কালো রঙের একটা ঝোলা– তাতে খুব সম্ভব ‘মর্সিয়া’ আর দোয়া-দরুদ লেখা পুঁথিপত্র।

    মা তাঁকে দেখেই শ্রদ্ধাভরে ঝুঁকে পড়ে সালাম করেই জড়িয়ে ধরলেন; তারপর একে একে আমাকে এবং আর সব ছেলে-মেয়েদের ধরে ধরে তাঁর সামনে নিয়ে আসা হল। কত দোয়াই-না তিনি করলেন সবাইকে। কোলে নিলেন। তারপরেই মাকে বললেন, তোর মেয়ে তো বেশ সুন্দর হয়েছে রে, রুকুন! আল্লা করুন যেন তুই ডিপ্‌টি কালেক্টার জামাই পাস্!

    আমি সেই চিরাচরিত লজ্জার অনুকরণ করতে চেষ্টা করলাম। আজো মনে পড়ে, আমার টোপা টোপা গালের ওপর তাঁর সাদা শুকনো চিকন সোহাগ-মাখা আঙুলের ছোঁয়া কী ভালোই-না লেগেছিল। মনে পড়ে, ডান হাতের কড়ে আঙুলে রুপোর আঙটিটা ঠাণ্ডা লেগেছিল গালে। আমায় তিনি বললেন, আমাদের বাড়ি আসিস– পুতুল বানিয়ে দেব, বুঝলি?

    পরের দিন পুতুলের লোভে সকালেই তাঁর বাড়ি পৌঁছে গেছি।

    পেয়ারাবাগানের পাশ কাটিয়ে কিছুদূর গেলেই ইমামবাড়া। তারই গা-লাগা তাঁর ছোট্ট বাড়িখানা। ভেতরে, পেছনের দিকে একটা ছোট কুঠরি, সামনের দিকে একটা বড়। এক ফালি আঙিনার খানিকটা জায়গা জুড়ে ধনে, পুদিনা আর পেঁয়াজ-চারায় ভর্তি সারি দেয়া গাছ। অন্য পাশে একটা কুলগাছ– তাতে দোলনা ঝুলছে। দোলনার দড়ি খানিকটা ছেঁড়া ছেঁড়া। দেয়ালের ওপরে পায়রার খোপ তৈরি করে দেয়া। নিচের মুরগির পানি খাওয়ার মালই বসানো রয়েছে। কুলগাছটায় বাঁধা রয়েছে একটা ছাগল। বড় ঘরের সিঁড়ির কাছে একটি তোতাপাখি– নাম তার মিঠু মিয়া। কাঁচামরিচ কেটে কেটে ছড়িয়ে চলেছে সে। মাঝে মাঝে খাঁচার শিকগুলো ঠোঁট দিয়ে ধরে টানাটানি করছে পাখিটা। তারপর বিরক্ত হয়ে ডাক ছাড়ছে, নেংড়ি মামি, নেংড়ি মামি! নবিজি ভেজো! মিঠুকে রুটি দাও!

    বড় ঘরের ভেতরে দেয়ালের গা-লাগা জলচৌকির একপাশে জায়নামাজ গুটোনো রয়েছে। পুরনো মলিন ‘জুজ্‌দানে’র মধ্যে কোরান শরিফ দেয়ালের ওপর লোহার পেরেকে ঝুলছে। মামি জলচৌকিটায় বসে পাঁচটি মেয়েকে কায়দা-বুগদাদি পড়াচ্ছেন। আমায় দেখেই মুচকি হাসলেন তিনি। বললেন, কে রে, রুকুনের মেয়ে নাকি? আয়, ভেতরে আসছিসনে কেন? দরজায় দাঁড়িয়ে রইলি যে!

    ভয়ে ভয়ে ভেতরে গিয়ে ঢুকলাম আমি। মামি বললেন, তুই ততক্ষণে যত পারিস, দোল খা। আমি এদের ‘সবক্’ দিয়েনি। তারপর তোকে পুতুল বানিয়ে দোব’খন, কেমন?

    দুর্বল দড়ির দিকে তাকিয়ে অনুযোগের সুরে বললাম, নেংড়ি মামি, দড়িটা যে ছিঁড়ে যাবে!

    না রে, না, ছিঁড়বে না। এখনো শক্ত আছে– বোস্ তো তুই!

    দোলনা চড়ে দোল খেতে শুরু করে দিলাম আমি। কুলগাছের নরম ডাল দুলতে থাকল। চোঁ চোঁ চর্‌র্‌র্‌―। নেংড়ি মামি পড়াতে লাগলেন, আলিফ জবর আ, বে জবর বা– ছুঁড়ি, পড়তে পারিসনে, খেতে তো পারিস খুব! মুখ দিয়ে কথাই বেরোয় না যে! এত মেহনতের দাম নেই বুঝি! হ্যাঁ, বল– তে জবর তা, জিম জবর জা–!

    মামির হাতে একটা ছোট্ট পাখা। পাখাঁটির চারদিকে কালো কাপড় দিয়ে মোড়া। মধ্যিখানে কালো কাপড়েরই একটা পানের নকশা। পানের মধ্যে আবার সুতো দিয়ে ফুল তোলা। সুতোগুলো ছিঁড়ে এদিকে-সেদিকে বেরিয়ে পড়েছে। কখনো কখনো কোনো মেয়ের পিঠের ওপর বর্ষিত হচ্ছে পাখাঁটি।

    অবশেষে পড়ানোর কাজ শেষ হল। মেয়েরা বই-পত্তর গুটিয়ে নিয়ে চলতে লাগল।

    লাল চুড়িদার পাজামা পরা মেয়েটিকে ডেকে তিনি বললেন, এই, শোন্ তো উমরের মেয়ে! দাঁড়া!

    খোঁড়াতে খোঁড়াতে ঘরের মধ্যে চলে গেছেন তিনি। ঘর থেকে এক টুকরো ভেলি গুড় আর কাগজের মোড়কের মধ্যে কী যেন নিয়ে ফিরে এলেন। একটা বড় কাগজের মধ্যে জিনিস দুটি মুড়ে মেয়েটি হাতে দিয়ে বললেন, মাকে বলিস, কাগজটা যেন আবার আমাকে ফিরিয়ে দেয়। আমার কাছে আর কাগজ নেই। কালকে তুই নিয়ে আসিস যেন, বুঝলি? আর, ওই ছোঁড়াটার জ্বর ছেড়েছে রে?

    মেয়েটি বলল, না। এখনো ছাড়েনি!

    দোলনাটা থামিয়ে মেয়েটির নাকে রুপোর ছোট্ট নোলকটা লক্ষ করছিলাম আমি।

    তাহলে সাঁঝের বেলা ওষুধ নিয়ে যাস। মগরেবের নামাজের আগে তৈরি করে রাখব’খন।

    মেয়েটি চলে গেল। নেংড়ি মামি মিনিটিখানেক মিঠু মিয়াকে আদর করলেন। তারপর, আমার দিকে মন দিলেন, আয়, এখানে বোস্!

    দোলনা থেকে নেমে চৌকিতে গিয়ে বসলাম আমি। মামি আবার খোঁড়াতে খোঁড়াতে ঘরের ভেতর চলে গেলেন। বাইরে বসে বসে চাবির ঝনঝন আর বাক্স খোলা এবং বন্ধ করার খটখট আওয়াজ শুনতে পেলাম। একটু পরে এক হাতে একটা পোঁটলা আরেক হাতে ছোট্ট একটা প্লেট নিয়ে বের হলেন মামি। বললেন, ততক্ষণে তুই খা দেখিনি এগুলো!

    আমার সামনে প্লেটখানা তিনি রেখে দিলেন। তাতে রয়েছে হরেক রকমের খাবার জিনিস। তারপর পোঁটলা খোলা হল। তার ভেতর থেকে বেরুল কাপড়ের একটা সেলাইদানি। সেলাইদানি থেকে বেরুল নানান রঙের কাটা কাপড়। মামি বেশ নিশ্চিন্ত হয়ে পা ছড়িয়ে বসে কাপড় খুঁজতে খুঁজতে বললেন, তোরা বাবা তো চীনা প্লেটে খায় রে, না? আর আমার প্লেট দিল্লি থেকে আনা। তাই তোর জন্যে বের করে দিলাম।… দেখ তো এত বড় নিবি পুতুল?

    হাত দিয়ে মেপে দেখালেন পুতুলের দৈর্ঘ্য। আমি ঘাড় নেড়ে সম্মতি জানালাম। ইয়া হজরত আলি, মুশকিল আসান’ বলে তিনি পুতুল সেলাইয়ে মন দিলেন।

    সাত রাজ্যের লোকের সেলাই করেন নেংড়ি মামি। জীবিকার বেশির ভাগই আসে তাঁর সেলাইয়ের কাজ থেকে। রমজানের সারাটা মাস তিনি পাড়ার যত বিধবা আর অনাথদের কাপড় সেলাই করেন বিনা পারিশ্রমিকে। সব কাজই তাঁর হাতে-সেলাই। বাজার থেকে কখনো সুতো কিনতে হয় না তাঁকে। লোকের কাছ থেকে যতরকমের কাপড় আসে, তার থেকে দশ-বিশটা সুতো বের করে পাকিয়ে নিয়ে তাই দিয়ে সেলাইয়ের কাজ চালিয়ে যান তিনি। এই পাকানো সুতো এত মজবুত হয় যে, বাজারের রিলের সুতোকেও হার মানিয়ে দেয়। তাঁর কাছে যতরকমের কাপড় এসেছে সেলাইয়ের জন্যে, সবরকম থেকেই সুতো বের করে নিয়ে পাকিয়ে রেখেছেন। প্রত্যেকটারই একটা করে অন্তত নমুনা তাঁর সেলাইদানিতে খুঁজলে পাওয়া যাবেই।

    রেশমের চমকদার এক টুকরো কাপড়ের ওপরে আমার নজর পড়ল। মনটা আনন্দে নেচে উঠল কাপড়টা দেখে। বেশ খানিক অনুনয়ের ভঙ্গিতেই বললাম, নেংড়ি মামি, এটা আমি নিই?

    না, না, রেখে দে! ওটা দিয়ে থলে বানাতে হবে যে! আল্লারাখাদের বাড়িতে বিয়ে- সেখানে দরকার। তুই নিয়ে কী করবি, শুনি? ছিঁড়ে ফেলবি তো দুদিন পরেই?

    তখন আমার যা রাগ হয়েছিল নেংড়ি মামির ওপর। ভালো কাপড়টা নিজের জন্যে রেখে দিয়ে আমার পুতুলের জন্যে কিনা সত্তরটা তালি মারা আর বাহাত্তরটা সেলাই করা কাপড়। কিন্তু আজকে চিন্তা করলে একথা বুঝতে কষ্ট হয় না, তাঁর মতো একজন গরিব মানুষের পক্ষে এদিক-সেদিক থেকে কাপড় সংগ্রহ করে আল্লারাখাদের বিয়েতে সাতটি থলে আর দুটি জুজ্‌দান তেরি করে দেয়া কম কৃতিত্বের ব্যাপার নয়। প্রতিদানে যে ভালোবাসা আর কৃতজ্ঞতা তিনি পেয়েছিলেন, তার জন্যে তাঁর নির্জন জীবনে শান্তিও কম আসেনি হয়তো।

    .

    মামির খোঁড়া হওয়ার ব্যাপারটাও একটা গল্পের মতোই। বয়স তখন তাঁর গোটা বিশেক। মহরমের সময়ের কথা। সন্ধের দিকে কোনো বৈঠকে যাচ্ছিলেন নেংড়ি মামি। নির্জন পথ। সেই অঞ্চলেরই একজন তাঁর রূপের নেশায় পাগলের মতো ঘুরত। প্রেম নিবেদনও করেছিল বার কয়েক। প্রথম প্রথম তার চেষ্টা ছিল বিয়ের জন্য তাঁকে কোনোরকমে রাজি করানো। কিন্তু কোনোমতেই সম্মতি দেননি তিনি। তাই সে এতদিন অপেক্ষা করছিল সুযোগের। সেদিন তিন-চারজন সঙ্গী নিয়ে সে এই সুযোগের সদ্ব্যবহার করল। আমবাগানের কাছটায় তারা নেংড়ি মামির ডুলি ঘিরে দাঁড়াল। কাহার ছিল দুজন। লাঠি চলতে লাগল। একটা কাহারের ওপর লাঠি ওঠাতেই নেংড়ি মামি তাদের মাঝে এসে দাঁড়ালেন। লোকটা ছিল বেশ তাগড়া জোয়ান। লাঠির পুরো আঘাতটা গিয়ে পড়ল তাঁর ডান পায়ের ওপর। পা-টা ভেঙেই গেল। অজ্ঞান হয়ে পড়ে গেলেন তিনি। ইতোমধ্যে চিৎকার শুনে লোকজন জড়ো হল সেখানে। আক্রমণকারীর দল পালিয়ে গেল।

    পরেরদিন ইমামবাড়ার পেছনে লোকটির মৃতদেহ পাওয়া গেল। হাত দুটো আগুন দিয়ে পুড়িয়ে ফেলেছিল সে। হাতে রুমাল জড়ানো। পরে জানা গেল, লোকটি আত্মহত্যা করেছে বিষ খেয়ে। মরার আগে মামির নামে দু-লাইনের একটা চিঠিও লিখে রেখে গেছে। তাতে করজোড়ে ক্ষমা চেয়েছে সে। আর, লিখেছে, কেয়ামতের দিন যেন তার বিরুদ্ধে আল্লার কাছে তিনি কোনো অভিযোগ না-আনেন।

    নেংড়ি মামিকে এ ঘটনার কখনো কোনো উল্লেখ করতে শুনিনি। তবু কোনোক্রমে এ প্রসঙ্গ উঠলেই তিনি কেঁদে ফেলেন। ঠাণ্ডা একটা নিশ্বাস ফেলে শুধু বলেন, সে চলে গেছে ভালো জায়গায়, আর আমি এখানে পড়ে আছি। আল্লা তাকে নিশ্চয় মাফ করবেন। আমি কক্ষনো প্রতিশোধ নিতে চাইব না।

    গ্রাম, তা-ও আবার সেকালের অজপাড়া-গাঁ। ভাঙা-পা জোড়া দেয়া তাই আর সম্ভব হয়নি। ফলে আজীবন খোঁড়াই রয়ে গেলেন তিনি। এ ঘটনার পর তাঁর দিকে আর চোখ তুলে চাইবার সাহসটুকুও কারো হতো না।

    সারাটা জীবন আশাহত আর নিঃসঙ্গভাবে কাটিয়ে দেয়ার পরেও নেংড়ি মামির চরিত্রে কোমলতা আর রসিকতার ভাবটুকু পুরোপুরিই অটুট রয়েছে। তাঁর প্রতিটি অঙ্গ যেন প্রীতি আর সহানুভূতি দিয়ে গড়া। তারই মিশ্র অভিব্যক্তি তাঁর সারাটা জীবনকে বাঙ্ময় করে তুলেছে।

    কারো বিয়ে হলে, নেংড়ি মামিই সেখানে সবার আগে গিয়ে হাজির; দেখা গেল, ঢোল নিয়ে এসে বাজাতে বসে গেলেন তিনি। সবসময়, সব অবস্থাতেই তিনি খুশি এবং সব কাজেই তিনি অগ্রণী। কোথাও নব-দম্পতির মধ্যে মনোমালিন্য দেখা দিয়েছে, অমনি নেংড়ি মামি ভীষণ ব্যস্ত। এখান থেকে ওখানে যাচ্ছেন, ওখান থেকে এখানে আসছেন। তখন তাঁর একমাত্র কামনা, তাদের পুনর্মিলন সম্ভাবিত হোক। কোনো বিয়েতে গান-বাজনার আয়োজন হলে, দেখা গেল, তিনিও সেখানে গাইছেন। প্রসবের বেলায়ও তিনি উপস্থিত। কখনো কারো জন্যে হয়তো পথ্য তৈরি করছেন, কারো জন্যে অন্য কিছু। অসুখ-বিসুখে কতজনের জন্যেই-না কতরকমের ওষুধ পিষছেন, কুটছেন, ছাঁকছেন, তৈরি করছেন। কেউ সুস্থ হয়ে উঠলে তার জন্যে পথ্য নিয়ে যাচ্ছেন, জানের ‘সকা’ হিসেবে রুটি দিচ্ছেন ফকিরকে। কেউ বিদেশ যাত্রায় বেরুলে তিনি পীর-ইমামদের স্মরণ করছেন। দুঃখীর দুঃখে কাঁদছেন, সুখীর সুখে হাসছেন। সবারই খবর নিয়ে বেড়াচ্ছেন, অথচ নিজের খবরটি জানাচ্ছেন না কাউকে।

    যখন আমি ছোট ছিলাম, আমার বোধশক্তি অপরিপক্ক ছিল, তখন তাঁকে বুঝিনি। কিন্তু আজকে কারণে-অকারণে কেবল তাঁর কথাই মনে পড়ে যাচ্ছে। কত আন্তরিকতার সাথেই-না তিনি মেয়েদের সুখী-সমৃদ্ধিশালী জীবনের জন্যে প্রার্থনা জানাতেন। মনে হত যেন তাঁর জীবনের সমস্ত দুঃখ-বেদনাকে এই প্রার্থনা দিয়ে ধুয়ে নিচ্ছেন তিনি। যেন বলছেন, আমার জীবনে কিছুই পেলাম না, তবু তোমরাই সবকিছু পেয়ে সুখী হও। তোমাদের সুখ দেখলে আমিও সুখী হব।

    .

    নেংড়ি মামির সাথে কখনো কারো ঝগড়া হত না। একমাত্র ডুলিবাহক কাহার ছাড়া। কখনো কোথাও তিনি পায়ে হেঁটে যেতেন না। দু-পা যেতে হলেও ডুলি নিতেন। ডুলি থেকে নেমে গেট পার হবার সময় কাহার ডাক ছাড়ত, নেংড়ি মামি, আরেক আনা পয়সা পাঠিয়ে দিও। বিশ বছর তোমাকে বয়ে বেড়াচ্ছি।

    অমনি তিনি রেগে যেতেন, ভ্যালা জ্বালাতন দেখছি! কিসের এক আনা পয়সা, শুনি! নিমতলার মজলিস থেকে আসছি, সেখানে নিয়েছ একআনা। আবার এক আনা কিসের? বিশ বছর বয়ে বেড়াচ্ছ, তাতে হয়েছে কী? বিশ বছরে কি আমার ওজন বিশ মণ বেড়ে গেছে নাকি?

    পাড়া-প্রতিবেশী সবাই তাঁর এই ঝগড়ায় মজা পেত খুব।

    এছাড়া, আরো একদল লোকের সাথে তাঁর ঝগড়া হত। এরা তাঁর ছাগলটিকে মার-ধোর করত। ছাগলটিও ছিল যেন বেশ একটা তাগড়া বলদের মতো। যেখানে যখন খুশি ঢুকে পড়ত। লোকে একটুখানি বিড়বিড় করেই চুপ হয়ে যেত। কিংবা চ্যাঁচাতে শুরু করত, উহ্, নেংড়ি মামির ছাগলের জুলুম– আল্লা রে আল্লা, আর সওয়া যায় না। বলি হল তো, ধনেগাছগুলো সব মুড়িয়ে দিলে কমবক্ত। এ ভাই, শিগগির ছাগলটাকে একটু তাড়িয়ে দাও!

    ততক্ষণে, সম্পূর্ণ না-হলেও অন্তত অর্ধেক শেষ হয়ে গেছে। এখন ছাগলটাকে মারেই- বা কে? সারাটা পাড়ার লোকই যে তাঁর কাছে কৃতজ্ঞ। প্রত্যেকেরই তো তিনি কিছু না-কিছু উপকার নিশ্চয়ই করেছেন। তবু যদি কেউ তাঁর ছাগলকে ছোঁয়-ও তাহলে সে ম্যা ম্যা করে বাড়ি চলে যায়। কখনো কখনো অনেকে শুধু এই দৃশ্য দেখার জন্যেই ছাগলটিকে মেরে বসে। নেংড়ি মামি ডাল ধোয়া কিংবা কাপড় সেলাই ফেলে ছাগলটির গলা জড়িয়ে ধরেন। তারপর, বিনিয়ে বিনিয়ে বলতে থাকেন, আমার মেয়েকে কারা ধরে মারল গো! আল্লার বে-গোনাহ অবলা জানোয়ার, তাকে কি কখনো মারতে আছে? তুই-ই-বা কেন কমিনাদের বাড়ি যাস্ বল দেখিনি মা! বাড়িতে থাকতে পারিনে? নে, এখন চাট্টি ভুষি খেয়ে নে!

    বিড়বিড় করে খোঁড়াতে খোঁড়াতে ঘরে মধ্যে ঢুকে মামি ভুষি এনে, ছাগলের সামনে রেখে দেন। ছাগলটি মাথা নড়িয়ে নড়িয়ে ভুষি খেয়ে চলে– ব্যাপারখানা যেন পুরোপুরিই সে আন্দাজ করতে পেরেছে। কখনো-বা ছাগলটির সাথে মামি এমন সব কথাও বলেন, যা আর কারো পক্ষে চিন্তা করাই কঠিন।

    আরো একটি ঘটনা যখনই মনে পড়ে যায়, মনের মধ্যে কেমন এক অদ্ভুত অনুভূতি এসে জড়ো হয়।

    আমাদের বাড়ির গা-লাগা কয়েকটা ঘরের বস্তি ভিখিরিদের। এক ভিখিরির একটি মেয়ে ছিল। বেশ সুন্দরী মেয়েটি। একজনের সাথে প্রেম করত সে। পাড়ার আরো কয়েকজন লোক তার কাছে ভিড়বার চেষ্টা করত। এদেরই একজন হল গুণ্ডা পালোয়ান শরফু। শরফুকে সবাই ভয় করে চলত তার গুণ্ডামির জন্যে। কিন্তু মেয়েটি মোটেই আমল দিত না তাকে। আর, গোপনে গোপনে প্রণয়ীটির সঙ্গে দেখা-সাক্ষাৎ করত। একদিন প্রণয়ী বিদেশে চলে গেল। যাবার বেলায় প্রতিশ্রুতি দিয়ে গেল, অনেক টাকা-কড়ি কামাই করে খুব শিগগিরই ফিরে আসবে সে। কিন্তু যাবার আগে জেনে গেল না, মেয়েটি মা হতে চলেছে।

    কিছুদিন পরেই সবাই জেনে ফেলল ব্যাপারটা। এত বড় কথা কি কখনো লুকোনো থাকে, না থাকা সম্ভব? তার পরে যা টিটকারি-গালমন্দের পালা শুরু হল, তা আর নাই-বা বললাম।

    বেশ মনে আছে, সেদিন সকাল হতে না-হতেই আমাদের বাড়িতে বিচারের আয়োজন হল। জমিদারবাড়ি বলে সবাই ঝগড়া-বিবাদের ফয়সালা সাধারণত করতে আসত এ বাড়িতেই।

    সবাই ততক্ষণে এ সিদ্ধান্তেই উপনীত হতে পেরেছেন, মেয়েটি নাক কেটে না-দিলেও নিদেনপক্ষে যেন তার মাথা মুড়িয়ে দেয়া হয় এবং সেই সঙ্গে একঘরেও করা হয়। তাছাড়া, পাড়ার মধ্যে সে আর থাকতেও পারবে না, নইলে অন্য লোকের মেয়েও নষ্ট হতে পারে।

    এ ধরনের প্রস্তাবে শরফু পালোয়ান সবার আগে সম্মতি জানিয়ে বসল। বাইরে পুরুষ লোক গিজগিজ করছে, ভেতরে মেয়ে। একজন আরেকজনের চেয়ে বেশি জোরে কথা বলার জন্যে যেন প্রতিযোগিতায় নেমেছে। কেবল একজনকেই দেখা গেল মৌন। সম্পূর্ণ বোবা বনে দাঁড়িয়ে রয়েছে সেই অপরাধী মেয়েটি। বেশ মনে পড়ছে, মেয়েটির করুণ নীরবতা আমার কচি মনেও অদ্ভুত অনুভূতি জাগিয়ে দিয়েছিল। আখ চিবাতে চিবোতে একটু একটু করে তার আরো কাছ ঘেঁষতে লাগলাম আমি। মা অমনি বেজায় ধমক দিয়ে উঠলেন, ভাগ এখান থেকে! ওদিকে কোথায় যাচ্ছিস?

    কী আর করা যায়! শেষমেশ ঘড়াঞ্চির আড়ালে গিয়ে লুকিয়ে পড়লাম। হঠাৎ বাইরে থেকে কাহারের ডাক শোনা গেল, সওয়ারি নাবিয়ে নাও!

    নেংড়ি মামি মোটা মার্কিনের চাদরে পবিত্র পাতলা দেহটা ঢেকে ডুলি থেকে নেমে পড়লেন। গেট পার হয়ে বাড়ির মধ্যে ঢুকে একনজর তাকিয়ে নিলেন মেয়েটির দিকে দরজার কাছে দাঁড়িয়ে সে থরথর করে কাঁপছে। তাকে দেখে মামি বললেন, আহা বেচারা, বাছাধন!

    তারপর, নানির পালঙের উপর গিয়ে বসলেন তিনি। অনেকক্ষণ ধরে হাসতে হাসতে এদিক-সেদিকের নানান কথা পাড়তে থাকলেন– যেন গুরুত্বপূর্ণ তেমন কিছুই হয়নি। পাঠান বউ এগিয়ে এসে সবকিছু খুলে বলতে চাইল তাঁকে। আমাদের বাড়িতে রান্নার কাজ করে সে। প্রথম স্বামীর মৃত্যুর পরে দ্বিতীয় স্বামীকে তালাক দিয়ে এখন তৃতীয় জনের ফিকিরে ঘোরে। নেংড়ি মামি হাতের ইশারায় বাধা দিলেন তাকে। বললেন, থাক, থাক, জানি বাছা, সব জানি।

    ব্যস্, এক মিনিটে তার সব উত্তেজনা ঠাণ্ডা। বার থেকে শরফুর গলার আওয়াজ পেয়ে মামি বড় খালাকে জিজ্ঞেস করলেন, কাজু, বাইরে কথা বলছে, ওটা কে? শরফু না?

    খালা বেশ আদবের সাথে জবাব দিলেন, জি হ্যাঁ।

    তারপর, শরফুর মাথা মুড়িয়ে দেয়ার প্রস্তাবটি তিনি নেংড়ি মামিকে বুঝিয়ে বললেন, আর নিজের সম্মতির কথাটাও সেই সঙ্গে জুড়ে দিলেন।

    সবকিছু শোনার পর মামি কোমরবন্ধ থেকে কৌটো খুললেন, একটুখানি দোক্তা বের করে তিনি মুখে পুরে দিলেন। আস্তে করে একবার শুধু বললেন, হুঁ―। তারপর, কৌটো যথাস্থানে বন্ধ করে রাখলেন তিনি। পালঙ থেকে নেমে লাঠিটা নিয়ে চলতে লাগলেন গেটের দিকে। ঘড়াঞ্চির পেছন থেকে সবকিছুই দেখতে পাচ্ছি আমি। মামির প্রতিটি পদক্ষেপে অপরাধী মেয়েটির মুখখানা আরো যেন ফ্যাকাশে হয়ে যাচ্ছে। সবাই নীরব। প্রত্যেকের দেহমনে শুধু প্রতীক্ষার উমেদারি। প্রতীক্ষা ফলাফলের। নেংড়ি মামি সদর দরজার আড়ালে গিয়ে ডাক দিলেন, শরফু!

    শরফু গেটের বাইরেই দাঁড়িয়েছিল। সাড়া দিল, জি।

    মামি একটু কেশে গলাটা পরিষ্কার করে নিলেন, দেখ, শরফু, মরণকালে তোর সাথে ইমান ছাড়া আর কিছুই যাবে না, মনে রাখিস। সত্যি কথাটা ইমানদারের মতোই বলবি– তুই কেন বেচারি অভাগিনীর এত শত্রুতা করছিস? ও তোকে পাত্তা দেয়নি বলেই নয় কি? সবকিছুই আমি জানি কিন্তু বলে দিচ্ছি, শরফু; সেসব কথা বলার জন্যে যেন আমায় আবার মুখ খুলতে না হয়। হুঁ। আর আমি যদি মিথ্যে বলে থাকি, তাহলে হজরত আব্বাসের কসম, তুই বলে দে, কোনটা মিথ্যে বলছি। আমার পাকা চুলের এতটুকুও তোকে খাতির করতে হবে না। হুঁ, বল্!

    বাড়ির ভেতরে, বাড়ির বাইরে সবার মুখে যেন তালা-চাবি লেগে গেল। নেংড়ি মামি প্রত্যেকের ওপরে একবার করে নজর বুলিয়ে নিলেন। সবাই চুপ। সত্যি কথাটা কেই-বা অস্বীকার করতে পারে! শরফুর কীর্তির কথা কারো তো আর অজানা নয়। তাই তার সপক্ষেই-বা কার কী বলার থাকবে!

    নেংড়ি মামি ঘুরে দাঁড়ালেন। চলতে চলতে বললেন, তুই একবার নিজের দিকে তাকিয়ে দেখ! এই হতচ্ছাড়াটা তবু একজনের জন্যে মরতে পারল। আর তুই! তোর জন্যে কিই-বা আর বলব, বল। যা, এখন আর বেশি বাড়াবাড়ি করিনে, বলে দিচ্ছি! ডুলিটা ডেকে দিয়ে যা!

    শরফু মাথা হেঁট করে সরে পড়ল। যেন দাবার ছক থেকে আস্ত মন্ত্রীটাই সরে গেল, মাত হয়ে গেল পুরো জনতাই। তারপর মেয়েটিকে ডাক দিলেন তিনি, চল্ পোড়ারমুখী আমার সাথে! নিজেও ডুবলি, কপালটাকেও ভাঙলি

    নেংড়ি মামি আগে আগে, পেছনে মেয়েটি। মেয়েটির পেছন দিকে জামাটার এক জায়গায় ছেঁড়া। তারই ফাঁক দিয়ে দেখা যাচ্ছে ফর্সা পিঠের ওপর সাপের মতো এঁকে বেঁকে পড়ে রয়েছে বেণি-গাঁথা চুলের রাশ। দুজনে ডুলিতে উঠেই সেই মুহূর্তে রওয়ানা হয়ে গেল। এ-ওর মুখের দিকে অবাক হয়ে তাকিয়ে রইল। কারো মুখে কোনো কথা ফুটল না।

    অবশেষে মামির বাড়িতেই একটি মেয়ে জন্মাল তার। পাড়ার সবাই ঘটা করে দেখতে এল। কারো সাহসই হল না নেংড়ি মামির বাড়িতে এমন দিনে অনুপস্থিত থাকার। ঢোল বাজল। খাওয়া-দাওয়ার ব্যবস্থা হল। এমনকি, কিছুদিন পরে মেয়েটির প্রণয়ীও ফিরে এল। যথারীতি বিয়েও হয়ে গেল তাদের। আমরাও তাদের বিয়ের ফুর্তিতে যোগ দিলাম। এককথায়, সবকিছুরই শুভ পরিণতি স্বচক্ষে দেখতে পেলাম আমরা।

    .

    নেংড়ি মামি যখন মারা গেলেন, আমার বয়েস তখন সতেরো কি আঠারো। মৃত্যুর খবর নিয়ে চিঠি আসার পর বারবার শুধু একথাই ভেবেছি, গ্রামে এখন না-জানি কী ভীষণ নীরবতা নেমে এসেছে। কারণ, আজকে সেখান থেকে একজন সংবেদনশীল এবং হিতৈষী বন্ধু চলে গেছেন। চলে গেছেন একজন পূর্ণবিকশিত মানুষ।

    অনুবাদ : নেয়ামাল বাসির

    ⤶ ⤷
    1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11 12 13 14 15 16 17 18 19 20 21 22 23 24 25 26 27 28 29 30 31 32 33 34 35 36 37 38 39 40 41 42 43 44 45 46 47 48 49 50 51 52 53 54 55 56 57
    Share. Facebook Twitter Pinterest LinkedIn Tumblr Email Reddit VKontakte Telegram WhatsApp Copy Link
    Previous Articleআমার বোকা শৈশব – আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ
    Next Article এসো বিজ্ঞানের রাজ্যে – আবদুল্লাহ আল-মুতী

    Related Articles

    হরিনারায়ণ চট্টোপাধ্যায়

    ভয় সমগ্র – হরিনারায়ণ চট্টোপাধ্যায়

    December 9, 2025
    হরিনারায়ণ চট্টোপাধ্যায়

    কিশোর অ্যাডভেঞ্চার সমগ্র – হরিনারায়ণ চট্টোপাধ্যায়

    December 9, 2025
    সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়

    প্রকাশ্য দিবালোকে – সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়

    November 18, 2025
    সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়

    তারপর কী হল – সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়

    November 17, 2025
    মাইকেল মধুসূদন দত্ত

    শর্ম্মিষ্ঠা নাটক – মাইকেল মধুসূদন দত্ত

    November 11, 2025
    সত্যজিৎ রায়

    মানপত্র সত্যজিৎ রায় | Maanpotro Satyajit Ray

    October 12, 2025
    Add A Comment
    Leave A Reply Cancel Reply

    Generic selectors
    Exact matches only
    Search in title
    Search in content
    Post Type Selectors
    Demo

    Your Bookmarks


    Reading History

    Most Popular

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025

    দোকানির বউ

    January 5, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025
    Demo
    Latest Reviews

    বাংলা গল্প শুনতে ভালোবাসেন? এক পাতার বাংলা গল্পের সাথে হারিয়ে যান গল্পের যাদুতে।  আপনার জন্য নিয়ে এসেছে সেরা কাহিনিগুলি, যা আপনার মন ছুঁয়ে যাবে। সহজ ভাষায় এবং চিত্তাকর্ষক উপস্থাপনায়, এই গল্পগুলি আপনাকে এক নতুন অভিজ্ঞতা দেবে। এখানে পাবেন নিত্যনতুন কাহিনির সম্ভার, যা আপনাকে বিনোদিত করবে এবং অনুপ্রাণিত করবে।  শেয়ার করুন এবং বন্ধুদের জানাতে ভুলবেন না।

    Top Posts

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025

    দোকানির বউ

    January 5, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025
    Our Picks

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১২

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১৩

    December 12, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram Pinterest
    • Home
    • Disclaimer
    • Privacy Policy
    • DMCA
    • Contact us
    © 2025 Ek Pata Golpo. Designed by Webliance Pvt Ltd.

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.

    • Login
    Forgot Password?
    Lost your password? Please enter your username or email address. You will receive a link to create a new password via email.
    body::-webkit-scrollbar { width: 7px; } body::-webkit-scrollbar-track { border-radius: 10px; background: #f0f0f0; } body::-webkit-scrollbar-thumb { border-radius: 50px; background: #dfdbdb }