Close Menu
এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    What's Hot

    রবিনসন ক্রুসো – ড্যানিয়েল ডিফো

    August 19, 2025

    দ্য দা ভিঞ্চি কোড – ড্যান ব্রাউন

    August 19, 2025

    এঞ্জেলস এন্ড ডেমনস – ড্যান ব্রাউন

    August 19, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    • 📙
    • লেখক
    • শ্রেণী
      • ছোটগল্প
      • ভৌতিক গল্প
      • প্রবন্ধ
      • উপন্যাস
      • রূপকথা
      • প্রেমকাহিনী
      • রহস্যগল্প
      • হাস্যকৌতুক
      • আত্মজীবনী
      • ঐতিহাসিক
      • নাটক
      • নারী বিষয়ক কাহিনী
      • ভ্রমণকাহিনী
      • শিশু সাহিত্য
      • সামাজিক গল্প
      • স্মৃতিকথা
    • কবিতা
    • 🔖
    • লিখুন
    • চলিতভাষার
    • শীর্ষলেখক
      • শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
      • মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়
      • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
      • বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • সত্যজিৎ রায়
      • সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
      • জীবনানন্দ দাশ
      • আশাপূর্ণা দেবী
      • কাজী নজরুল ইসলাম
      • জসীম উদ্দীন
      • তসলিমা নাসরিন
      • তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
      • মহাশ্বেতা দেবী
      • মাইকেল মধুসূদন দত্ত
      • মৈত্রেয়ী দেবী
      • লীলা মজুমদার
      • শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
      • সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়
      • সমরেশ মজুমদার
      • হুমায়ুন আহমেদ
    Subscribe
    সাইন ইন
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)

    দুই বাংলার দাম্পত্য কলহের শত কাহিনী – সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় ও ইমদাদুল হক মিলন সম্পাদিত

    ইমদাদুল হক মিলন এক পাতা গল্প1423 Mins Read0

    জলপরী, সুবিমল ও একটি ধর্ষণের গল্প – জগন্নাথ প্রামাণিক

    জলপরী, সুবিমল ও একটি ধর্ষণের গল্প – জগন্নাথ প্রামাণিক

    যাব না যাব না করেও বেরিয়ে পড়লাম। অবশ্য আমাকে যে যেতে হবে তার কোন মাথার দিব্যি নেই অথবা না যাওয়াটাই শ্রেয়, (অনেকেই বলেছিল) কিংবা কেন যাচ্ছি, কিসের জন্য যাচ্ছি, কার কাছে যাচ্ছি, গিয়েই বা কি হবে, যেহেতু সমস্যার কোন সমাধান আমি করতে পারিনি। তবু যেতে হয়, এবং এই যাওয়াটা স্বাভাবিক কি অস্বাভাবিক তা আমি বলতে পারব না। অতএব আমি যাচ্ছি…বিজয়ার কাছে।

    এই পৃথিবীর ঘাস ফুল পাতা আলো বাতাসকে ভালবাসার মত কোথাও, কোনখানে, হয়তো বা, তা আমার অনুভূতি, রক্তে কিম্বা অন্য কোথাও কোনও দুর্বলতা যা আমার বিবেক, আমার মনুষ্যত্বকে আলোড়িত করেছে, তাই আমি যাচ্ছি।

    গতকাল সারারাত কখনও বিছানায়, কখনও জানলার ধারে, হাজার হাজার লক্ষ লক্ষ কোটি কোটি নক্ষত্রের দিকে চেয়ে নিজেকে বিশ্লেষণ করার চেষ্টায়, মুখের সিগারেটের ধোঁয়া স্পষ্ট থেকে অস্পষ্ট হতে হতে ক্রমশঃ মিলিয়ে গেছে শূন্যে। জোনাকির নীল আলো ক্ষীণ থেকে ক্ষীণতর হয়েছে, টুকরো মেঘমালা একপ্রান্ত থেকে অন্যপ্রান্তে মিলিয়ে গেছে, রাস্তার কুকুরের কান্না, পাগলের চিৎকার ভয়ার্ত হয়ে কম্পন তুলেছে শিরা-উপশিরায় এক বা একাধিক প্রশ্নের উত্তর খোঁজার। রেস্তোরাঁয় কাঁটা চামচ দিয়ে চিকেন রোস্ট কাটার মত নিজেকে টুকরো টুকরো করে কেটেছি। বিধ্বস্ত করেছি মস্তিষ্কের স্নায়ুতন্ত্রীকে। কবিতায় ডুবিয়েছি মনকে–আজ বা কাল অথবা পরশু পৃথিবী টুকরো হলে / নীল পখি লাল পাখি গ্রহান্তরে উড়ে যাবে। তখন ভীষণ অন্ধকারে ডুবে / শাড়িটা উড়িয়ে দেবে আকাশে / আঁচলের এক প্রান্তে আমি অন্য প্রান্তে তুমি।

    —আমাকে কবে নিয়ে যাবে সুবিদা? কবে আসবে সেদিন? ভিক্টোরিয়া দেখাবে-নতুন হুগলি সেতু?

    —হ্যাঁরে। নিশ্চয়, কেন দেখাব না।

    –সত্যি বলছ?

    —হ্যাঁ, সত্যি বলছি।

    —না আমার বিশ্বাস হচ্ছে না, তুমি আমার মাথা ছুঁয়ে দিব্বি কর।

    —এই তোর মাথা ছুঁয়ে…।

    তখন পশ্চিমাকাশে তীব্র আলোর ছটা। আমি পিরামিডের ওপর মাথা রেখে, বিজয়া কাঁপছে যেন ভূমিকম্পে কম্পিত ভূতল।

    .

    স্টপস্টপ-প্লিজ স্টপ। এটা প্রবন্ধ না নিবন্ধ? নাকি পাগলের প্রলাপ। গল্পের কোন মাথা নেই মুণ্ডু নেই। স্রেফ আত্মকথন। যত্ত সব রাবিশ। সেই প্রথম থেকে। ফার্স্ট পার্শেন—আমি আমি। আর আপনাকেও বলি সুনীল দা, দেশে কি লেখকের আকাল পড়ে গেছে? তাচ্ছিল্য, বিরক্তি, উপহাসে বলেন রণধীর চৌধুরী। প্রযোজক কাম পরিচালক। সুনীল বোসের চোখমুখ লজ্জা ও সংকোচে লাল হয়ে ওঠে। কপালের বিন্দু বিন্দু ঘাম রুমাল দিয়ে মুছে ঢোক গিলে বলেন, নামানে সুবিমলবাবুতো ভাল লেখেন টেখেন, তাই–

    এটা ভাল লেখার নমুনা? ধর্ষণের গল্প এইভাবে নিজের কথা দিয়ে আরম্ভ হয়? পাগল নাকি? কি চরিত্র থাকবে আপনাকে তো আমি আগেই বলে দিয়েছিলাম। আপনি কি বলেননি সুবিমলবাবুকে? আবার বলছি শুনুন—

    ১) একজন ধনীর খেয়ালি জেদি ছেলে, যার দু’চারজন সমবয়সী বন্ধুবান্ধব, ড্রাগঅ্যাডিক্ট, কিন্তু ব্রেনি। লেখাপড়া শিখছে কলেজ অথবা য়ুনিভার্সিটিতে। ছেলেটি হবে নায়ক।

    ২) নায়িকা হবে সহপাঠিনী, সুন্দরী, একগুঁয়ে, মধ্যবিত্ত ঘরের মেয়ে।

    ৩) মেয়েটিকে (নায়িকা) দু’জন ভালবাসবে, মানে টুয়াইস হিরো। ওই বড়লোকের ছেলেটি বাদে আর একজন ছেলে, যে শিক্ষিত, আদর্শবাদী কিন্তু গরিব।

    ৪) মেয়েটি বড়লোকের ছেলেটিকে, আই মিন, কি বলব, প্রেফার করবে, কিন্তু গরিব ছেলেটিকে বারবার অপমান করে ফিরিয়ে দেবে বাড়ির দরজা থেকে।

    ৫) একদিন ছেলেটি হুগলি সেতু-মানে ওই বিদ্যাসাগর সেতু কিম্বা আউট্রাম ঘাট অথবা রেসকোর্সে মেয়েটিকে বেড়াতে নিয়ে যাবে। সে সময় প্রকৃতির বর্ণনা থাকবে, ওই সন্ধে কিংবা সন্ধের পরপর, কয়েকজন গুণ্ডা তুলে নিয়ে গিয়ে মেয়েটিকে রেপ করে ঝোঁপের ধারে ফেলে রেখে চলে যাবে।

    ৬) থার্ড পার্শেন, মানে পাবলিক, মেয়েটিকে গোঙাতে দেখে (যন্ত্রণায় ছটফট করবে মেয়েটি, ঘেঁড়াখুঁড়ি পোষাক পরিচ্ছদ) তুলে নিয়ে গিয়ে হাসপাতালে ভর্তি করবে।

    ৭) মেয়েটি—ওই যা হয় আর কি রেপ টেপ কেসে, প্রথমে একটু অ্যাবনরম্যাল, তারপর সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে এসে বড়লোকের ছেলেটির সঙ্গে দেখা করতে যাবে, কিন্তু অপমানিত হয়ে ফিরে আসবে।

    ৮) গরিবের ছেলেটি ততদিনে পাশ-টাশ করে দামি চাকরিতে জয়েন করেছে, সেও আর মেয়েটিকে…নাকি কি করা যায়, আরে চুপ করে বসে আছে কেন সুনীল দা, কিছু বলবেন তো?

    –না না, আমি না। আপনি তো প্লটটা বলছেন ভালই বলুন না।

    ৯) তারপর-তারপর হ্যাঁ, ততদিনে বড়লোকের ছেলেটির কিছুটা বিবেকবোধ জন্মেছে, বিবেক তাড়িত হয়ে মেয়েটির সঙ্গে পুনরায় দেখা করতে যাবে, কিন্তু মেয়েটি অপমান করে তাড়িয়ে দেবে। রাজনীতি-টাজনীতি কিছু রণবীর দা, সুনীল বোস বলেন।

    ১০) হ্যাঁ-হ্যাঁ, অফ কোর্স-সিওর। হসপিটালে রিপোর্টার মানে পেপার নিউজ, রুলিং পার্টি, বিরোধী পার্টি, আই মিন বিরোধী পার্টি মেয়েটিকে নিয়ে একটা বন্ধ দেখাতে পারলে খুব ভাল হয়, তাই না সুনীল দা?

    —হ্যাঁ-তা ঠিক। তারপর একটু চিন্তা করে সুনীল বোস বলেন, তাহলে কিন্তু গল্পের মোড় অন্যদিকে ঘুরে যেতে পারে দাদা

    -কেন-কেন?

    —মেয়েটিকে নিয়ে বিরোধীপক্ষ রাজনীতি আরম্ভ করবে। চাকরি দেবে। মানে মেয়েটি এস্টাবলিস্ট হয়ে যাবে।

    -হ্যাঁ, তাও তো বটে, তাহলে কি করা যায়…

    —কেন হোমে পাঠিয়ে দিলে…আই মিন উদ্ধার আশ্রম?

    –ধ্যাৎ, তাহলে স্টোরি একেবারে কেঁচে যাবে। দর্শক খাবে না। আচ্ছা সুবিমলবাবু এরপর আপনি আপনার বুদ্ধি আর লেখার চাতুর্য দিয়ে—মানে আমি বলছিলাম আপনারা লেখক মানুষ—সবকিছুই পারেন, মানে ওই কনক্লসানটুকু পারবেন তো?

    সুবিমল বিষণ্ণ, হতাশ অথচ ন দৃষ্টিতে রণধীরবাবুর মুখের দিকে তাকায়। রণধীরবাবু কিছুটা হতাশ হন। সুনীল বোস সুবিমলের চোখের ভাষা ঠিক ঠিক পড়তে

    পেরেও বুদ্ধি করে বলেন, হা হা নিশ্চয় পারবেন, কেন পারবেন না। উনি খুব ভাল লেখেন। একবার দেখুন না, ওনার গল্প বড় বড় পত্রিকায় ছাপা হচ্ছে। আসলে উনি একটু সিরিয়াস—মানে উঁচু মানের, যাকে বলে ক্লাসিক-টলাসিক…

    —ওসব এখানে চলবে না। এখন যা ইন্ডাস্ট্রির অবস্থা, বলিউড মার্কা মানে বোম্বের মতঝাড়পিট-সেক্স-নাচ-গান… দেখছেন না ম্যাসিমা বাংলা ছবি ফ্লপ করছে…

    সুনীল বোস রণধীরবাবুর কাছে কাজ করছেন বহুদিন। ওনার চরিত্র, মুড, সবকিছুই নখদর্পণে। লোকটি এখন টালিগঞ্জের নামকরা কমার্সিয়াল প্রযোজক কাম পরিচালক। ভদ্রলোক একসময় ভীষণ পরিশ্রম করেছেন। কেরিয়ারিস্ট মনোভাব নিয়ে। নিজেকে তৈরি করেছেন তিল তিল করে। তাই সাকসেস্ এখন হাতের মুঠোয়। ওইসব ক্লাসিক-লাসিক শিল্প-টিল্পর তেমন ধার ধারেন না উনি। ওনার দশ টাকা ইনভেস্ট করলে চাই একশ টাকা। উনি বলেন, সত্যজিৎ, মৃণাল, ঋত্বিক, গৌতম ওনারা সব অন্য জগতের। ট্যালেন্টেড। আমার জন্যে কমার্স। আমার ছবি মানে আনন্দ-ফুর্তি, যাকে বলে অ্যামিউজমেন্ট। আমি চা বইতে বইতে পরিচালক হয়েছি। অত জ্ঞান আমার কোথায়? ওনার থিওরি, মানি ফ্রম মানি। মানি ইজ গ্রেট। তবে ভীষণ আমুদে আর ফুর্তিবাজ লোক। দু’হাতে যেমন রোজগার করেন ওড়ানও তেমনি। বলেন, ‘ঋণং কৃত্বা ঘৃতং পিবেৎ। যাবৎ জিবেৎ সুখং জিবেৎ।‘ আজকাল একটু আধটু অন্যরকম ভাবতে বাধ্য হচ্ছেন। পরিস্থিতির চাপে পড়ে। দর্শক লাইট জিনিষ নিচ্ছে না। তা না হলে নিজেই স্টোরি বানান, স্ক্রিপ্ট করেন। রণধীরবাবু কজি উল্টে ঘড়ি দেখে বলেন, ইস, বড্ড দেরি হয়ে গেল। নটায় পৌষালিকে টাইম দিয়েছিলাম। আমি উঠি সুনীল দা কথা বলতে বলতেই রণধীরবাবু ব্রিফ কে হাতে নিয়ে উঠে দাঁড়ান।

    -হ্যাঁ, হ্যাঁ, আপনি যান। আমি সুবিমলবাবুর সঙ্গে আলোচনা করে নিচ্ছি। সুনীল বোস বিনয়ের সঙ্গে বলেন। বলাবাহুল্য মিস্ পৌষালি ওনার নতুন ছবির নায়িকার জন্যে কনট্রাক্ট ফর্মে সই করেছে গতকালই।

    .

    ২.

    রণধীর চৌধুরী স্টুডিও ছেড়ে চলে যাবার পরই ওনারা দুজনে চুপচাপ বাইরে বেরিয়ে

    এসে বাস ধরার জন্যে স্টান্ডে অপেক্ষা করেন। বাস আসতে দেরি হওয়ায় নীরবতা ভঙ্গ করে সুনীল বোস সুবিমলকে বলেন, আপনি কি ভুল করে অন্য গল্পের ম্যানস্ক্রিপ্ট নিয়ে চলে এসেছিলেন? তা না হলে—পরক্ষণেই নিজেকে সামনে নিয়ে, সুবিমল যা অভিমানী বলেন, আপনি গল্পটা নিয়ে একটু ভাবুন। ভাল টাকা পাবেন। বিশ হাজার তো বটেইউনি যা লোক, ছবি হিট হলে কিছু বাড়তিও পেয়ে যেতে পারেন।

    –না, না, তা কেন হবে। আসলে আমার দ্বারা ওসব ধর্ষণ-উর্ষণ লেখা সম্ভব হয়ে ওঠে না।

    —কেন-কেন? সুনীল বোস বিস্ময়ের সুরে ঘাড় ঘুরিয়ে জিজ্ঞেস করেন।

    -কেন, তা আপনাকে ঠিক আমি বোঝাতে পারব না। ওসব সেক্স, ধর্ষণ, টর্ষণ লিখতে গেলেই কেমন একটা অস্বস্তি, বিষাদ, আমাকে গ্রাস করে ফেলে। আসলে মানবিকতা, মূল্যবোধ, ন্যায়নীতি-াতিগুলোকে লেখার চরিত্র থেকে আলাদা করে দেখাতে পারি না। তাই লিখতে বসলেই সামাজিক দায়বদ্ধতায় আটকে যায় কলম। বিশেষ করে ধর্ষণের কথা লিখতে গেলেই মাথাটা কেমন গুলিয়ে…।

    সুবিমলের মুখের কথা কেড়ে নিয়ে ক্যামেরাম্যান সুনীল বোস বলেন, তা হবে হয়ত। হয়ত আপনার মানবিকতাবোধ কিন্তু তাই বলে, সংসারের প্রতিও তো আপনার কিছু দায়িত্ব কর্তব্য আছে। তা তো অস্বীকার করতে পারেন না? তাছাড়া এ লাইনে প্রচার ও পয়সা দুই-ই আছে।

    –না, তা পারি না ঠিকই। কিন্তু এভাবে অর্থ উপার্জন করতে আমার কেমন ইগোতে লাগে।

    -তাহলে কি আর বলব বলুন। আপনি জ্ঞানী-গুণী লোক। তবু ভেবে দেখবেন আর একবার। সুনীল বোসের গলায় হতাশার সুর। বাস থেকে নেমে কথা বলতে বলতে দু’জনে গালির মুখে একদিকে সুনীল বোস, অন্যদিকে সুবিমল ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়। একই পাড়ায় বাড়ি দু’জনের। কয়েকটা বাড়ির তফাৎ মাত্র। সম্পর্কে সুবিমল সুনীল বোসের দুরাত্মীয়।

    সুবিমল বাড়িতে না ঢুকে একটু এগিয়ে রাস্তার অনতিদুরে শিবানন্দ পার্কে গিয়ে বসে। এখন রাত প্রায় দশটা। রাস্তা দিয়ে ঘরমুখো দু’চারজন অফিস ফেরতা লোকজন। নিঃশব্দ তাদের চলার গতি। বড় কৃষ্ণচূড়ার সান বাঁধানো গোল চাতালে সুবিমল এখন একা। মৃদু মৃদু বাতাসে দুলছে কৃষ্ণচূড়ার পাতা। পার্কের মাঝখানে চৌকো ঝিলে রুপোলি জ্যোৎস্না গলে গলে মিশে যাচ্ছে। জলের ওপরে দেবদারু, ইউক্যালিপটাশ, কাঠালি চাপার ছায়া। সেই জলছায়ায় জলপরীদের বিহার। আজ বিজয়াও এই দ্বীদের মধ্যে। বিজয়া হাসছে খিল খিল করে। তার স্নিগ্ধ হাসিতে ঝরে পড়ছে মুঠো মুঠো মুক্ত। সুবিমল নৈঃশব্দের বুকে ছড়িয়ে দিল নিজেকে। ভিন্ন জগরে অনুভূতিতে সে আপন করে পেতে চাইল বিজয়াকে। হাত বাড়িয়ে ডাকল। বিজয়া আলোর বন্যা ছড়িয়ে হাসতে হাসতে উঠে এল জল থেকে। বিজয়া কাছে এসে বসতেই সুবিমল তার দুটি কোমল হাত তুলে নিল নিজের হাতে। তারপর করতলে চাপ দিয়ে বলল, আমি তোর প্রতি অন্যায় করেছি বিজয়া অন্যায় করেছি, আমায় ক্ষমা কর তুই।

    —কি যাতা বলছ সুবিদা। তোমার কি দোষ, সবই আমার নিয়তি।

    –না না বিজয়া, তোকে নিয়ে যদি না সেদিন সিনেমা দেখতে যেতাম, তাহলে হয়ত…

    –সিনেমাটা উপলক্ষ্য মাত্র। যা ঘটার সেদিন না ঘটলেও অন্যদিন ঘটত।

    —বিজয়া!

    বিজয়ার কথায় বিস্ময়ে সুবিমলের রোম খাড়া হয়। নিজেকে অপরাধীর কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে বলে, মা বাবার কথায় সেদিন আমি কাপুরুষের মত পালিয়ে এসেছিলাম দেশ থেকে কলকাতার হোস্টেলে। যারা তোকে ধর্ষণ করেছিল, তাদের আমি চিনতে পেরেও ভয়ে নাম করিনি। ওরা আমাকে শাসিয়েছিল, নাম করলে আমার বোনকে ধর্ষণ করে..

    –তুমি ঠিকই করেছ সুবিদা। আমার জন্যে অনিমাদির জীবনটাও হয়ত ফুরিয়ে যেত অকালেই। আমি তো ওদের চিনি। ওরা অনিদিকে ছেড়ে দিত না। আমার মত দুদে, সাহসী, বেপরোয়া মেয়েকে যদি ওরা…।

    —তুই কি বলছিস বিজয়া আমি ঠিক বুঝে উঠতে পারছি না। তাই বলে, অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো কি আমার উচিত ছিল না?

    —হয়ত ছিল। কিন্তু রুখে দাঁড়িয়েই বা কি করতে? তোমার ও তোমাদের সংসারের অনেকের জীবন বিপন্ন হত। অনিদিরও কিছু একটা ঘটে যেতে পারত। তাছাড়া বাবা তো অত কিছু করেও কিছু করতে পারলেন না ওদের। পার্টি, পুলিশ কেউ তো কিছু করল না। এমনকি কেউ অ্যারেস্ট পর্যন্ত হল না। পার্টির ছত্রছায়ায় ওরা এখন দিব্বি বুক ফুলিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে। লজ্জায়, অপমানে বাবা নিরুদ্দেশ হয়ে গেলেন। আমি শেষ পর্যন্ত—তবে শেষটায় তোমাকে একবার দেখার জন্যে মন প্রাণ আকুল হয়ে উঠেছিল। তাই গোপনে মাকে একটা চিঠি লিখেছিলাম, সব শেষ হয়ে গেলেও, তুমি যেন এসে একবার আমাকে দেখে যাও।

    –কিন্তু আমি যে নিরন্তর আজও যুদ্ধ করে চলেছি নিজের সঙ্গে। আমার তো উচিত ছিল, যেখানে তোর কোন কিছু দোষ ছিল না, সেখানে তোর পাশে গিয়ে দাঁড়ানো। বিয়ে করে….

    —হাসালে সুবিদা। আমাদের দেশটা তো, ইউরোপ আমেরিকা নয়। তোমার বিবেক বললেও, প্রাণ চাইলেও, সমাজ, তোমার বাবা, মা, আত্মীয়স্বজন কেউ মেনে নিত না। এক জ্বালা জুড়ালেও হাজার জ্বালায় আমাকে জ্বলে পুড়ে মরতে হত। আমার যা ব্যক্তিত্ব, প্রতিমুহূর্তে অন্তসত্তায় আঘাত লাগত। শেষে গায়ে কেরোসিন ঢেলে কিংবা গলায় দড়ি দিয়ে…তখন তুমি বিপদে পড়তে।

    —বি-জ-য়া!

    –যা সত্যি, তাই বললাম। সত্য আর বাস্তব বড় কঠিন গো সুবিদা। কল্পনায় আবেগে, অনেক কিছু বলা যায়। করেও ফেলা যায় অনেক কিছু। কিন্তু তার পরিণাম হয় ভয়াবহ। যাক, আমি চললাম। আর হয়ত কখনও দেখা হবে না তোমার সঙ্গে। সংসার করেছ, সন্তান হয়েছে, সংসারটা সামলাও। আমার জন্যে খামোকা চিন্তা করে আর শরীর মন খারাপ করো না। অতীত নিয়ে ভেবো না। ওই দেখ, আমার সঙ্গীরা উদগ্রীব হয়ে উঠেছে আমার জন্যে। আমার আর এক মুহূর্ত এখানে থাকা চলবে না। চলি কেমন। বিজয়া উঠে দাঁড়ায়।

    –প্লিজ বিজয়া, আর একটু-আর এক মিনিট বোস। আমার দু-একটা কথা তোকে এখনও জিজ্ঞেস করার আছে।

    —চটপট বলে ফেল, তোমাকে বোধহয় কেউ খুঁজতে আসছে। ওই দেখ টর্চের আলো।

    সুবিমল কি এক ঘোরে গভীর চিন্তায় এতক্ষণ আচ্ছন্ন হয়েছিল। দূর থেকে চার ব্যাটারি টর্চের তীব্র আলো প্রথমে পাশের বেল ফুলের ঝোঁপ ও জলের ওপর, তারপর বিচ্ছুরিত হয়ে তার চোখে এসে পড়ে। চোখ ধাঁধিয়ে দেয়। সে মুহূর্তকাল চোখ বুজে, পুনরায় খুলে বিজয়াকে প্রশ্ন করে, তুই আজও আমাকে তেমনি ভালবাসিস?

    কিন্তু কোথায় বিজয়া! বাহাদুর ততক্ষণে সামনে এসে দাঁড়িয়েছে। যে কনকনে হিমেল বাতাসটা তার সমস্ত অনুভূতি আর সত্তাকে একেবারে আচ্ছন্ন ও অবশ করে দিয়েছিল তা আর নেই। পরিবর্তে সত্তোরতীর্ণ বাহাদুরের স্নেহ কোমল গরম হাতের স্পর্শ তার কাঁধে। বাহাদুর স্নেহার্দ সুরে হিন্দী বাংলায় বলে, বাবুসাব, বহুৎ রাত হো গিয়া। ঘর যাইয়ে। বউদিদিমনি চিন্তা করছেন। সুবিমল বলে, বাহাদুর-দা, বিজয়া-বিজয়া কি চলে গেছে?

    বাহাদুর চোখের জল মুছে বলে, হ্যাঁ বাবুসাব, চলা গিয়া। লেকিন আপুনি বাবু ইরকম করলে…যা হবার, যে যাবার সে তো চলা গিয়া। লেকিন, আপুনি শক্ত না হলে পাগল হই যাবেন। সংসার ভি ভেসে যাবে।

    ততক্ষণে সুবিমল কিছুটা সুস্থ হয়ে উঠেছে। নিজের মধ্যে ফিরে গিয়ে বলে, হ্যাঁ, হা বাহাদুরদা শেষ পর্যন্ত আমি বোধহয় পাগলই হয়ে যাব।

    বাহাদুর সুবিমলের হাত ধরে টেনে তুলে বলে, ছিঃ। উ কথা কখনও মুখে আনবেন না বাবু। আপুনি একটা ডাক্টার দেখান। সব ঠিক হহা জায়েগা।

    সুবিমল টলায়মান অবস্থায় পার্কের মোরাম বিছানো রাস্তায় চলতে চলতে বাহাদুরকে বলে, হ্যাঁ, বাহাদুরদা একটা ডাক্তার দেখানো আমার খুব প্রয়োজন।

    প্রসঙ্গত বাহাদুরের ঘর বিহার মুলুকে। পার্কের কোণে যে লায়নস্ ক্লাব আছে, তার নৈশ প্রহরী। থাকে সুবিমলের পাড়ায়। বস্তিতে। রাতে ক্লাব পাহারা, দিনের বেলায় সরকারি ডিপো থেকে দুধ এনে বাড়িতে বাড়িতে দেয়। এতে তার উপরি রোজগার হয়। সুবিমলের বাড়িতেও সে দুধ দিচ্ছে বছর দুই হল। সুবিমলকে সে ভীষণ ভালবাসে। ভালবাসার কারণ; সুবিমলের বয়সী তার একটি ছেলে ছিল। কয়েকবছর আগে বাস অ্যাক্সিডেন্টে মারা গেছে। বিহার মুলুকের বাড়িতে তার ছেলের বিধবা বৌ শিশুপুত্র নিয়ে থাকে।

    সুবিমলের জীবনের সবকিছু ঘটনা সে নিজেই বুঝে নিয়েছে। কারণ রাতে যখন তখন পার্কে বসে সুবিমল বার বার বেঘোরে আবোল তাবোল বকে। সুবিমলকে দেখলেই তার ছেলের কথা মনে পড়ে। বুকের ভেতরে স্নেহ ভালবাসার এক আর্তি অনুভব করে সে। তাই সুবিমলের প্রতি তার এত টান।

    প্রশস্ত গলি পেরিয়ে বাসায় পৌঁছে সুবিমল দেখে, ঘরের ভেতর অন্ধকার। সে দরজার কড়া নাড়ে। সুবিমলের স্ত্রী মাধুরী লাইট অন করে চটপট দরজা খুলে বলে, কি ব্যাপার এত রাত করলে যে? এখন কটা বাজছে জান? ওই দেখ সাড়ে এগারোটা। মাধুরী দেওয়ালে ঘড়ির দিকে চোখ তুলে সুবিমলকে ইঙ্গিত করে। সুবিমল নির্নিমেষ দৃষ্টিতে দরজার কাছে দাঁড়িয়ে মাধুরীর মুখের দিকে চেয়ে থাকে। যেন অনেকদিন দেখেনি তাকে। মাধুরী সুবিমলের বিধ্বস্ত, ক্লান্তিভরা, বিষণ্ণ মুখের দিকে চেয়ে ব্যাপারটা আঁচ করতে পেরে, সুবিমলকে হাত ধরে ঘরে টেনে নিয়ে যায়। চেয়ারে বসিয়ে বলে, নিশ্চয় আজও তুমি পার্কে গিয়েছিলে? আর পারি না বাবা তোমাকে নিয়ে। আমি ভাবলাম সুনীলদার সঙ্গে টালিগঞ্জে গেছ, হয়ত সেখানেই দেরি হচ্ছে। তাই আমি আর খুঁজতে বের হইনি। তারপর কপট রাগের ভান করে বিরক্তির সুরে বলে, এতই যদি বিজয়ার প্রতি তোমার ভালবাসা ছিল, তাহলে আমাকে বিয়ে না করলেই পারতে? দিনের পর দিন তোমার এ পাগলামি আমার আর সহ্য হয় না। এ রকম করলে বুবুনকে নিয়ে আমি বাপের বাড়ি চলে যাব। মাধুরী জানে এ সময় সুবিমলকে সে যদি বিদ্রূপ ও অপমানের কথার চাবুক না মারে তবে সে সম্পূর্ণ প্রকৃতিস্থ হবে না। এ প্রেসক্রিপশান সাইকিয়াটিস্ট ডাঃ অমর ঘোষের। গোপনে মাধুরীকে তিনি বলে দিয়েছেন। মাধুরী দু’চারবার এইরকম কয়েকটা কড়া কথা শোনাবার পর সুবিমল প্রকৃতিস্থ হয় এবং বলে, হ্যাঁ-হ্যাঁ তাই যেয়ো। দিনের পর দিন তোমার এই অপমান আমার আর সহ্য হয় না।

    দু’এক মিনিট স্বামী স্ত্রীতে বাকযুদ্ধ হয়। মাধুরী লক্ষ্য করে সুবিমল আজ যেন অন্যরকম। অন্যদিন সুবিমল মর্মাহত হয়ে ক্ষমা চেয়ে তাকে কাছে টেনে নেয়। কিন্তু আজ তা তো করলই না, উপরন্তু তেজোদীপ্ত কন্ঠে প্রতিবাদের যেন ঝড় বইয়ে দিচ্ছে। তাই মাধুরী নিজেই নরম হয়ে, সুবিমলের কাছে এগিয়ে ডান হাতটা তুলে নিয়ে বলে, তোমার গল্পটা নিল? অ্যাডভান্স করেছে?

    সুবিমল গম্ভীরভাবে বলে, না।

    —তাহলে উপায়? তিন মাস ভাড়া বাকি। আজ বাড়িওয়ালা এসেছিল। বলেছে ভাড়া দিতে না পারলে যেন অন্য ঘর দেখে। বুবুনের স্কুলের মাইনেও দুমাস বাকি পড়ে গেছে। বাজারে আর ধারের কোন জায়গা নেই। আমি কি যে করি। মাধুরী একের পর এক আর্থিক পরিস্থিতির কথা বলে যায়। কিন্তু সুবিমল নিরুত্তর।

    এক সময় টিং টিং শব্দ করে ঘড়িতে বারটা বাজে। মাধুরী বিচলিত হয়। সে জানে সুবিমল যা অভিমানী এখন আর কোন উত্তর দেবে না। স্বামীর প্রতি মমতা আর ভালবাসায় চোখ ঝাঁপসা হয়ে আসে। নিজেকে সামলে নিয়ে দাঁড়িয়ে বলে, আমি খাবার আনছি, তুমি হাত মুখ ধুয়ে এস। সুবিমল মাধুরীর অন্তর্দাহ কোথায় ভালভাবে বোঝে। তাই চেয়ার থেকে উঠে নিঃশব্দে বাথরুমের দিকে এগিয়ে যায়।

    বিছানায় শুয়ে সুবিমলের ঘুম আসে না। সুনীল বোস, রণধীর চৌধুরী, ধর্ষণের গল্প, বিজয়া, মাধুরী, বাহাদুর, বুবুনের স্কুলের মাইনে, বাড়িভাড়া প্রভৃতি হাজার চিন্তা ক্রমান্বয়ে ঘুরে ফিরে আসে। আসে যায়-আবার আসে। চিন্তা তার মস্তিষ্কের স্নায়ু কোষকে উত্তপ্ত করে। যখন ঘুম এল তখন রাত প্রায় চারটে। তাও পাতলা, ছেঁড়া ছেঁড়া। ঘুমের মধ্যে সুবিমল আবার দেখতে পায় বিজয়াকে। তবে অন্যরকমভাবে। নাইট শো সিনেমা দেখে বিজয়া আর সে হেঁটে চলেছে গ্রামে ঢোকার আলপথ ধরে। নির্মল আকাশে মাঘী পূর্ণিমার চাঁদ। জ্যোৎস্না যেন গলে গলে পড়ছে দুব্বো ঘাসের মাথায়, ধান, আলু সর্ষেক্ষেত্রে বুকে। অদ্ভুত সুন্দর মায়াময় পৃথিবী। পৃথিবীর এমন সুন্দর রূপ গ্রামের ছেলে হয়েও ইতিপূর্বে সে কোনদিন দেখেনি, উপলব্ধি করেনি। রাস্তার পাশে বুড়ো আশুধ গাছ। গাছের কোটর থেকে বেরিয়ে ডানা ঝাঁপটাতে ঝাঁপটাতে একটি লক্ষ্মী পেঁচা উড়ে যায়। বিজয়া লক্ষ্য করে বলে, আজ লক্ষ্মী পুজো, দেখ কি উড়ে গেল? সুবিমল বলে, লক্ষ্মী পেঁচা। বিজয়া মুখে আঙুল তুলে বলে, ইস নাম করে ফেললে। আজ না পুজো। দিলে তো সাঁতটা মাটি করে। কথা বলতে বলতে ওরা এসে পড়েছিল বটপুকুরের পাড়ে। বটপুকুরের বটগাছটা অনেক দিনের পুরনো। জনশ্রুতি দু’আড়াইশো অথবা তারও পূর্বের। ঝুরি, গাছের পাতা, কুল ঝোঁপ, সেঁকুল ঝোঁপ ঘিরে কিছুটা পথ ঘন ছায়ার অন্ধকারে আবৃত। ছায়া দু’জনের শরীর স্পর্শ করতেই কোন কিছু বুঝে ওঠার পূর্বেই হিংস্রপশুর মত কারা যেন ঝাঁপিয়ে পড়ে ওদের ওপর। চিৎকার করার সুযোগ না দিয়ে গামছা, দড়ি দিয়ে বেঁধে, বিজয়াকে টেনে নিয়ে যায় সামান্য দূরে। সুবিমল স্পষ্ট দেখে, প্রথমে ওরা শাড়ি পরে ব্লাউজ মাংসল জায়গা শকুনের মত খুবলে খুবলে খাচ্ছে। তারপর একে একে চারজন বলাৎকার করল বিজয়াকে। মুখে কালিঝুলি মাখায় ওরা ভেবেছিল চিনতে পারবে না। কিন্তু আবাল্য পরিচিত কণ্ঠস্বর, হাত, পা, শরীরের গঠন কি লুকানো যায়? সে সহজেই চিনে নেয় নিমাই, কালু, ঝন্টে আর পদাকে। কামনা চরিতার্থ করার পর হিংস্র পশুদের সেই শানি—। মুহূর্তে দৃশ্যপট পরিবর্তন হয়। সুন্দর সাজানো গোছানো ঘরে, অদ্ভুত গোল হাঁড়ির মত মাথা, চওড়া গোঁফ, পুরুষ্টু মাংসলহাত একজন লোক, মাধুরীকে জাপটে ধরে শুইয়ে দিল নরম গদিওয়ালা বিছানায়। তারপর একে একে খুলে ফেলল শরীরের সব কিছু আবরণ। সে স্পষ্ট দেখতে পায় মাধুরীর গোল দুধসাদা দুটি স্তন খামচে ধরে দলাই মলাই করছে দৈত্যাকৃতি লোকটি। কিন্তু কি আশ্চর্য মাধুরী কোন বাধা দিচ্ছে না। মাধুরীর দু’হাতে একশ টাকার দুটি নোটের বান্ডিল। মুখে একই সঙ্গে রমণ ও গুপ্তধন পাওয়ার স্নিগ্ধ কোমল পরিতৃপ্ত হাসি। শরীরের শক্ত দড়ির বাঁধন ঘেঁড়ার জন্যে সুবিমল প্রাণপণ চেষ্টা করে ঠোঁটের ওপর ঠোঁট চাপে। ঠোঁট কেটে লাল রক্তের ফোঁটা বিন্দু বিন্দু আকারে ঝরে পড়ে—প্রথমে পাঞ্জাবিতে, পাঞ্জাবি বেয়ে ট্রাউজারে। ট্রাউজার সিক্ত হলে মাটিতে। হঠাৎ সুবিমল পেয়ে গেছি, পেয়ে গেছি, ইউরেকা-ইউরেকা, শব্দে ভয়ঙ্কর চিৎকার করে উঠে বসে বিছানায়। তীব্র চিৎকারে মাধুরীর ঘুম ভেঙে যায়। ক্ষিপ্রগতিতে উঠে বসে সুবিমলকে জড়িয়ে ধরে ভয়ার্ত গলায় জিজ্ঞেস করে, কি পেয়ে গেছ?

    গলগল করে ঘামতে ঘামতে সুবিমল বলে–ধর্ষণের গল্পের প্লট।

    1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11 12 13 14 15 16 17 18 19 20 21 22 23 24 25 26 27 28 29 30 31 32 33 34 35 36 37 38 39 40 41 42 43 44 45 46 47 48 49 50 51 52 53 54 55 56 57 58 59 60 61 62 63 64 65 66 67 68 69 70 71 72 73 74 75 76 77 78 79 80 81 82 83 84 85 86 87 88 89 90 91 92 93 94 95 96 97 98 99
    Share. Facebook Twitter Pinterest LinkedIn Tumblr Email Reddit VKontakte Telegram WhatsApp Copy Link
    Previous Articleপ্রিয় – ইমদাদুল হক মিলন
    Next Article গোপনে – ইমদাদুল হক মিলন

    Related Articles

    ইমদাদুল হক মিলন

    ইমদাদুল হক মিলনের বিবিধ রচনা

    July 10, 2025
    ইমদাদুল হক মিলন

    অন্তরে – ইমদাদুল হক মিলন

    July 10, 2025
    ইমদাদুল হক মিলন

    এসো – ইমদাদুল হক মিলন

    July 10, 2025
    ইমদাদুল হক মিলন

    প্রিয় হুমায়ূন আহমেদ – ইমদাদুল হক মিলন

    July 10, 2025
    ইমদাদুল হক মিলন

    গোপনে – ইমদাদুল হক মিলন

    July 10, 2025
    ইমদাদুল হক মিলন

    প্রিয় – ইমদাদুল হক মিলন

    July 10, 2025
    Add A Comment
    Leave A Reply Cancel Reply

    Demo
    Most Popular

    রবিনসন ক্রুসো – ড্যানিয়েল ডিফো

    August 19, 2025

    অনুরাধা

    January 4, 2025

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025
    Demo
    Latest Reviews

    বাংলা গল্প শুনতে ভালোবাসেন? এক পাতার বাংলা গল্পের সাথে হারিয়ে যান গল্পের যাদুতে।  আপনার জন্য নিয়ে এসেছে সেরা কাহিনিগুলি, যা আপনার মন ছুঁয়ে যাবে। সহজ ভাষায় এবং চিত্তাকর্ষক উপস্থাপনায়, এই গল্পগুলি আপনাকে এক নতুন অভিজ্ঞতা দেবে। এখানে পাবেন নিত্যনতুন কাহিনির সম্ভার, যা আপনাকে বিনোদিত করবে এবং অনুপ্রাণিত করবে।  শেয়ার করুন এবং বন্ধুদের জানাতে ভুলবেন না।

    Top Posts

    রবিনসন ক্রুসো – ড্যানিয়েল ডিফো

    August 19, 2025

    অনুরাধা

    January 4, 2025

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025
    Our Picks

    রবিনসন ক্রুসো – ড্যানিয়েল ডিফো

    August 19, 2025

    দ্য দা ভিঞ্চি কোড – ড্যান ব্রাউন

    August 19, 2025

    এঞ্জেলস এন্ড ডেমনস – ড্যান ব্রাউন

    August 19, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram Pinterest
    • Home
    • Disclaimer
    • Privacy Policy
    • DMCA
    • Contact us
    © 2025 Ek Pata Golpo. Designed by Webliance Pvt Ltd.

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.

    Sign In or Register

    Welcome Back!

    Login below or Register Now.

    Lost password?

    Register Now!

    Already registered? Login.

    A password will be e-mailed to you.